Anjali 2014 Magazine, BATJ

Page 1



Anjali

Puja … 11:30 AM AM 12:30 PM 11:30 … Anjali Puja ………………… :30 PM Prasad & An Lunch jali ……………… 12 … 1:00 PM … 1:00 PM Prasad & Lunch … Cultural Program … 3:00 PM 30 PM ral Program … 2: ltu Cu Puja & Arati … 5:00 PM i ……… 5:00 PM

Puja & Arat

Cultural Program

Akanksha Mukherjee, Ashmita Paul, Rittvika Krishnamoorthy

Vandana Agamani

Biswanath Paul, Bhaswati Ghosh, Meeta Chanda, Pranesh Kundu, Rita Kar, Sanjib Chanda, Viswa Ghosh Accompaniment by Keiko Chattopadhyay, Mrinmoy Das

Koto Ensemble

Arunansu Patra, Eddie Mascal-Robson, Johan Standar, Taro Shishikura, Zerric Mitchel

Folk Dance

Akanksha Mukherjee, Ashmita Paul, Maya Ghose, Khushi Bhowmik, Malini Takeshi, Sneha Kundu, Zinnia Dhar

Song

Udita Ghosh

Contemporary Dance

Mohima Kundu

Red & Black Band

Saxophone - Nishant & Cindy, Piano - Risako & Nishant, Drum - Mayank

Dance

Bithika Washizawa, Mitali Dey, Syamali Baidya, Sraboni Mukherjee, Soma Bhowmik, Tuli Patra

Taiko

Yokohama Taiko Ensemble

Songs

Reimi Das

Bharatnatyam

Kalakshetra, Dance group from India

Stage, Light and Sound management

Anirban Mukherjee, Sanjib Chanda, Biswanath Paul, Madhab Ghose, Prabir Patra, Pranesh Kundu, Partha Kumar and Rita Kar

Master of Ceremonies

Sabby Ray, Hiya Bhattacharjee, Keiko Chattopadhyay

Program coordinated by Rita Kar

Venue: Main Auditorium, Ota Kumin Plaza Hall, 3-1-3 Shimo-Maruko, Ota-Ku, Tokyo 146-0092 © Bengali Association of Tokyo, Japan (BATJ). All rights reserved. Disclaimer: The articles compiled in this magazine are personal opinion of the authors and in no way represent any opinion of BATJ.


Anjali

www.batj.org


জাপানের ট�োকিও বেঙ্গলী এস�োসিয়েশনের আয়�োজিত দুর্গাপূ জার পঁচিশ বছর পূ র্ণ হ�োল । এই উপলক্ষ্যে অঞ্জলির পাঠক পাঠিকাকে জানাই আমাদের সাদর সম্ভাষণ । আজ অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের দিন, কারণ এই রজতজয়ন্তী পালনের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ধারাবাহিকতা । ট�োকিও শহরে অনু ষ্ঠিত সর্বভারতীয় বার্ষিক উৎসবগুলির মধ্যে দুর্গাপূ জা আজ এক অন্যতম উৎসব হিসাবে পরিগণিত । সারাদিনব্যপী এই অনু ষ্ঠানে য�োগদান করে থাকেন কয়েক’শ ল�োক যাদের মধ্যে আছেন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মানু ষ, এবং কিছু জাপানি ও ভারত প্রেমী অন্যান্য বিদেশীরা । সময় দেখতে দেখতে চলে যায়, তবু পঁচিশ বছর আবার কিছু কম সময়ও নয়। এই দীর্ঘ সময়ে বহু বাঙ্গালী পরিবার এখানে এসেছেন কর্মসূ ত্রে, কিছু দিন থেকে আবার ফিরে গিয়েছেন নিজ নিজ জায়গায় । প্রথম দিকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের অনেকেই ভারতীয় সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্মসূ ত্রে জাপানে এসেছিলেন । স্বাভাবিক কারণেই জাপানে তাঁদের থাকার মেয়াদ কয়েক বছরের বেশী ছিল না । বিভিন্ন সময়ে অল্পদিনের জন্য আসা সেইসব পরিবার তাঁদের উৎসাহ এবং আন্তরিকতা দিয়ে বিদেশে ভারতীয় সংস্কৃ তি প্রচারের যে বুনিয়াদ তৈরি করে গিয়েছেন তারই এক পরিণত রূপ আমাদের আজকের দুর্গোৎসব । আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে জাপানে প্রবাসী ভারতীয়দের জীবনযাত্রা ও সর্বোপরি দৃষ্টিভঙ্গী বেশ কিছু টা অন্যরকম ছিল । জাপানে দীর্ঘস্থায়ীভাবে বসবাস করার কথা তখন অনেকে ভাবতেন না । তাই শুরুর দিকে শুধু নিজেদের সাংস্কৃ তিক অভাবব�োধকে পূ রণ করার তাগিদই ছিল পুজ�োর মূ খ্য উদ্দেশ্য । মুষ্টিমেয় জনসংখ্যা কারণে সেই সময় আনু ষ্ঠানিকতার প্রয়�োজন ও প্রয়াস - দুইই ছিল সীমিত । সবকিছু ই হত ক্ষু দ্র পরিসরে । আজ পুজ�োর আয়�োজন হয় অনেক বড় মাত্রায় । তবু দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে যে বৈশিষ্ট্যকে আমরা ধরে রাখতে পেরেছি, তা হ�োল এক একান্ত ঘর�োয়া পরিবেশ । আজকের তাগিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আরও এক গুরু দায়িত্ব – জাপানে ভারতীয় সংস্কৃ তির যথার্থ প্রদর্শন । আজকের এই উৎসব যে পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে তার জন্যে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত, কিন্তু উত্তর�োত্তর এর মান বৃদ্ধি পাক, জাপান ভারত মৈত্রী বন্ধনে এক গুরুত্বপূ র্ণ ভূমিকা পালন করুক, এবং এই পরম্পরা দীর্ঘস্থায়ী হ�োক সেই কামনা করি । সকলের সহয�োগিতা ও আমাদের নিষ্ঠা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে আরও দৃ ্ঢ় করতে সক্ষম করবে ও আমাদের সঠিক পথে চালনা করবে বলে আশা রাখি । শারদীয় শুভেচ্ছা সহ ।।

www.batj.org

Durga Puja 2014


The Bengali Association of Tokyo is celebrating its 25th year anniversary of Durga Puja festival this year. We take this opportunity to convey our best wishes to the readers of Anjali. Any Silver Jubillee is a time to rejoice and be rightfully proud for attaining the landmark of stability. Durgapuja is now considered to be one of the important annual Indian festivals held in Japan. Today, the day long festival is attended by few hundred people comprising of Indians from different parts of India, Japanese and other foreigners living in Japan. Time flies, yet twenty five years is a long time indeed. During this period, many Bengali families came to Japan mostly in connection with their work. They generally came here on foreign assignment either from government or from the private sector. After living here for a short while most of them returned back to their usual place of residence. As a matter of fact, many of them did not stay here for more than few years. During their short stay, those Indians out of their sheer enthusiasm and dedication could lay the foundation of a very strong Indian culture which has culminated to the events today. Twenty five years ago, Indians living in Japan generally had a slightly different lifestyle, as well as, a different mindset, too. Not many people were keen to live in Japan for a long time. Thus in the early days of Durgapuja, the main drive was to fulfill the cultural want of a small group of individuals. There was neither a need nor the capacity to bring about a more organized effort. Thus everything was done at a much smaller scale. Despite becoming larger in scope now, we have been able to retain the homely atmosphere with which it started. Along with the success and growth of this festival, our responsibility has also increased manifold in ensuring the accurate presentation of the cultural heritage of India in Japan. We are indeed very happy and proud for taking part in launching this festival and bringing it to its current state. At the same time, we also wish that this event goes on to attain much higher quality, and eventually plays an important role in bridging India and Japan. Your cooperation will boost our confidence and guide us in the right direction towards achieving this goal. We thank our well wishers who contributed to this volume and made it a success. To Anjali’s readers, we convey our best regards.

Anjali

www.batj.org


As we are celebrating the 25th anniversary of our Durgapuja festival this year, it was quite obvious for us to use this as a theme for Anjali. A recollection of twenty five years could have been nostalgic to many families who lived here in different timelines. Unfortunately, such a compilation requires involvement of many people currently living in different geographies. Due to lack of bandwidth, we had to restrict our scope within few articles on this topic. Anjali’s continuing success is made possible by the overwhelming support of many well wishers. The Embassy of India in Tokyo extends their gracious support for which we are very thankful. We hope to receive the same patronage in the future as well. We would like to thank all advertisers who have sponsored this year’s publication. We are thankful to Amitava Ghosh, Biswanath Paul, Byomkesh Panda, Neelanjan Bhattacharjee, Sanjib Chanda & Syamal Kar who, on behalf of BATJ, collected advertisements from our sponsors. Anjali continues its multi-lingual nature through articles written in four different languages by contributors from Japan and all over the world. We sincerely thank each of the contributors for their effort. Every year we are noticing an increased interest among readers and contributors. We are thankful to all of them. We thank Mrs. Bhaswati Ghosh and Mr. Viswa Ghosh who helped us in proof reading. We also thank PrintPac for their support in printing Anjali. At different stages of this process, we received valuable advices from many people. We tried to incorporate their suggestions as much as possible, and hereby convey our sincere thanks to all of them.

Editorial Team

Editorial Team Ranjan Gupta Ruma Gupta Sanjib Chanda Meeta Chanda Sudeb Chattopadhyay Keiko Chattopadhyay

Integration & Design Cover Design Nishant Chanda

Sanjib Chanda

(Online versions of Anjali magazine are available at BATJ website and Anjali 2014 will also be available later.)

www.batj.org

Durga Puja 2014

5


ত�োওকিওর দু র্গোৎসবের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে স্মৃতির পাতা থেকে - সু দেব চট্টোপাধ্যায়...................................................................................10 লহ প্রণাম - রুমা গুপ্ত..................................................................................................................................................................................12 নারা সেনসেই ও আন্তর্জাতিক বঙ্গ বিদ্যা সম্মেলন - মাসাহিক�ো ত�োগাওয়া........................................................................................................13 ভাল তুমি বেসেছিলে এই শ্যাম ধরা - মঞ্জুলিকা হানারি (দাশগুপ্ত)...................................................................................................................14 বঙ্গ রমণীর ইতস্তত জাপান দর্শন - শুভা চক্রবর্তী দাশগুপ্ত...............................................................................................................................15 স্যার আশুত�োষ মুখ�োপাধ্যায় - শ্রীকান্ত চট্টোপাধ্যায়...........................................................................................................................................16 পঁয়ত্রিশ বছর আগের এক দিন - তপন কুমার রায়.........................................................................................................................................21 তুরুপের তাস - অরুণ গুপ্ত...........................................................................................................................................................................23 কূল ছেড়ে এসে মাঝ দরিয়ায়, পিছনের পানে চাই… - শুভা ক�োকুব�ো চক্রবর্তী..................................................................................................24 জল স্পর্শ করব�ো না আর চিত�োর রানার পণ - ভাস্বতী ঘ�োষ (সেনগুপ্ত)........................................................................................................26 ক্ষু দ্‌দা দেখে অবাক হয়ে যান - অনু পম গুপ্ত...................................................................................................................................................................28 সিনাই-এর সূ র্যোদয় - গ�ৌতম সরকার...........................................................................................................................................................30 তবু নিশ্চু প ! - সু মন কুমার সাহু...................................................................................................................................................................34 অন্তরাল - দু হিতা সেনগুপ্ত.................................................................................................................................................................................................34 নিশীথে স্বপ্নভঙ্গ - তুষার কান্তি সেনগুপ্ত.........................................................................................................................................................35 দেশের নেতা - নমিতা চন্দ...........................................................................................................................................................................35 আমার ছেলেবেলার পূ জা - পূ র্ণিমা ঘ�োষ.........................................................................................................................................................36 লেডি লিবার্টি - ডঃ হেমন্ত কুমার সরকার......................................................................................................................................................37 ত্রিপ�োলিতে দ�োসরা জুন - জ্যোতির্ময় রায়......................................................................................................................................................37 অর্থ-নীতি - বিশ্বনাথ পাল..................................................................................................................................................................................................38 25 Years of Durga Puja in Tokyo - Rita Kar ����������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 39 Healthy Relationships: Their challenges and solutions - Swami Medhasananda ��������������������������������������������������������������������������� 40 India, as a part of me - Koji Sato ��������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 44 Matrimony Bengal - Sougata Mallik ������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 46 Homeopathy - Dr. P.S Krishnamurthy ��������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 48 The Fund Manager Dada - Tapan Das ���������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 51 So far, so close……No matter what…… - Ahnick Bhunia ���������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 53 Kaleidoscope: New York and Los Angeles - Shoubhik Pal ������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 56 SMILE - Jayeeta Sen ���������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 57 The Nature of Happiness - Udita Ghosh ������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������ 58 They Play the Trick - Dipankar Dasgupta ��������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 58 Destiny - Soumitra Talukder ���������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� 59 ドゥルガ・プジャ 25年目… - チャットパダイ 啓子...........................................................................................................60 Durga

Puja

25周年を祝して - 神戸朋子...................................................................................................................................62

ニランジャナスクールの子供たち - 三橋裕子..........................................................................................................................63 タンプーラとともに・・・ - 奥田由香.......................................................................................................................................64 アルナーチャラへの旅~シュリー・ラマナ・マハルシの生誕祭へ - 新田ゆう子.........................................................66 世界遺産 アジャンタ、エローラ - 羽成千亜希......................................................................................................................68 東京、ムンバイ、バンクーバー - 辻 しのぶ..........................................................................................................................70 不思議な油、ギーって何? - 小沢泰久.......................................................................................................................................71 インド~そして~宙そら - 山田 さくら...................................................................................................................................72 アートオブリビング - アミト・カナスカル...............................................................................................................................74

6

Anjali

www.batj.org


नवरात्रि : स्रोत की ओर एक यात्रा - पुर्निमा शाह............................................................................................................................. 75 बटे र की दम ु क्यों नहीं होती – सुरेश ऋतुपर्ण.................................................................................................................................... 76 “प्रकाश मंत्र” - सुनील शर्मा................................................................................................................................................................... 77 वो- नीलम मलकानिया........................................................................................................................................................................... 78 कुछ कहना चाह्ता है मन... - सारिका अग्रवाल................................................................................................................................ 80 कवि मन्सूर की कलम से- मन्सूर....................................................................................................................................................... 81 मेरा शौक – घुड़सवारी - शुन निशिमोतो, कक्षा 5.............................................................................................................................. 82 Adults are so strange - Akanksha Mukheree, Grade IV............................................................................................................................ 82 My trip to Shikine-jima Island - Anushka Mandal, Grade IV................................................................................................................... 83 Summer Camp – 2014 - Yui Nishimoto, Grade III........................................................................................................................................ 83 Creation of Gravity - Krish Kothari, Grade VI............................................................................................................................................... 84 My Travelogue of Last Summer - Sneha Pal, Grade VI.............................................................................................................................. 84 The Unforgettable Journey - Sneha Kundu, Grade VI ............................................................................................................................ 85 I am From - Anika Sen Mitra, Grade VII............................................................................................................................................................ 85 Maharana Pratap - An Idol for Today’s Generation - Aashi Dwivedi, Grade IX............................................................................... 86 The Evolution of Football - Arunit Baidya, Grade IX................................................................................................................................... 87 THE NEFILIBATIC NOMAD - Utsho Bose, Grade IX..................................................................................................................................... 88 Genetic Mutations: Are the X-men really possible? - Arunangsu Patra, Grade IX.......................................................................... 89 It Works! - Nishant Chanda, Grade VIII............................................................................................................................................................ 91 How the Theory of Gravity was discovered - Amartya Mukheree, Grade X..................................................................................... 92 Overthinking - Aakriti Naarang, Grade XII...................................................................................................................................................... 93 Drawings....................................................................................................................................................................................................................... 94 New Born...................................................................................................................................................................................................................... 99 Photography................................................................................................................................................................................................................. 99

Arts................................................................................................................................................................................................................................ 101 Statement of Accounts.......................................................................................................................................................................................... 106 Anjali Editorial Team............................................................................................................................................................................................. 106

www.batj.org

Durga Puja 2014

7




তোওকিওর দুর্গ োৎসবের রজতজয়ন্তী উপলক

স্মৃতির পাতা থেকে   - সু দেব চট্টোপাধ্য

ত�োওকিওতে দু র্গাপুজ�ো আমরা আরম্ভ করি ১৯৯০ সালে । অবশ্য তার আগে অনেকদিন থেকেই ত�োওকিওবাসীরা, বিশেষকরে দিদি-বউদিরা, প্রধানত শিউলিবউদি এবং মঞ্জুলিকাদি আমাকে

ধরেছিলেন দু র্গাপুজ�োর প�ৌর�োহিত্য করতে। ১৯৮১ সাল থেকে আমি ত�োওকিওতে সরস্বতী পুজ�ো আরম্ভ করি, তাই দিদি-বউদিদের বক্তব্য ছিল, সরস্বতী পুজ�ো করছই যখন দু র্গাপুজ�োয় এত আপত্তি কেন । আসলে নিজস্ব কুসঙ্কারের জন্যই আমি মন ঠিক করে উঠতে পারিনি বেশ কিছু দিন । আমাদের কলকাতার বাড়িতে বাবা নিয়মিত দু র্গাপুজ�ো করতেন, তাই পূ জাপদ্ধতি অজানা ছিল তা নয় । আমদের বাড়ীতে পূ র্বপুরুষের মতামত অনু যায়ী বার�োয়ারি

পুজ�োর প�ৌর�োহিত্য করা বারণ ছিল । সেটাই ছিল আমার প্রধান সমস্যা । আমিও তাই বউদিদের আবেদনে চট করে সম্মতি দিতে পারিনি । বছর দু য়েক সময় লেগেছে বাড়ীর মত পাল্টাতে, বিশেষ করে আমার মাকে ব�োঝাতে । শেষপর্যন্ত মা-ই আমাকে পুর�োহিত দর্পণ থেকে মন্ত্র হাতে লিখে পাঠিয়েছিলেন। আজও আমি সেই মার হাতের লেখা মন্ত্র পড়ে পুজ�ো করি। এবছর আমার মা চলে গিয়েছেন আমাদের ছেড়ে তাই এবার আমি পুজ�ো করতে পারব না, মার কথা মনে করেই কাটবে ঐদিন। শরৎকাল জাপানেও অনেক উৎসবের সময়, তাই প্রথম অসু বিধে হয় হল ভাড়া করা নিয়ে । তিন থেকে ছয় মাস আগে থেকে ব্যাবস্থা না করলে উপায় নেই, তাও আবার লটারি জিততে হবে, তবেই পাওয়া যাবে এক দিন হল ব্যাবহার করার অনু মতি । এ ব্যাপারটা অবশ্য আমি এখন পুর�োপুরি আমার স্ত্রী কেইক�োর উপর ছেড়ে দিয়েছি এবং প্রতিবছর এই কঠিন কাজটা ওকেই সামলাতে হয়। দ্বিতীয় সমস্যা হল প্রদীপ জাতীয় আগুনের ব্যাবহার। প্রথমদিকে আমরা ধূ পধু ন�ো প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজ�ো করতাম, কারণ অনেক হলে তখনও কানশি-ক্যামেরা অর্থাৎ হলের ভিতরে আমরা 10

কি করছি না করছি সবকিছু ই হলের ম্যানেজাররা তাদের অফিসে বসে দেখার ব্যাবস্থা ছিল না । আসলে ধূ পধু ন�ো প্রদীপ জ্বালিয়ে পূ জা করতে গেলে এখানকার নিয়ম অনু যায়ী দমকলকে আগে থেকে খবর দেয়া দরকার। তাদের অনু মতি ছাড়া আগুন জালান�ো একদম বারণ, এবং সেই অনু মতি পাওয়াও অনেক ঝামেলা। শেষপর্যন্ত এই আগুন জ্বালান�োর ব্যাপারটা আমাদের এখন পুর�োপুরি বাদ দিতে হয়েছে, পুজ�োর ব্যাপারে এটাই আমার একমাত্র আফশ�োষ। আমাদের প্রথম দু র্গাপুজ�ো হয় ওতা-কুর মিনেমাচি বুঙ্কাকাইকান হলে । এই হলে আমরা তখন নিয়মিত সরস্বতী পুজ�ো করতাম তাই জায়গাটা অনেকেরই পরিচিত ছিল । সেজন্যই এই হলটাতেই দু র্গাপুজ�ো-সঙ্ক্রান্ত আমাদের লটারির ভাগ্য প্রথম পরীক্ষা করেছিলাম । ভগবানের ইচ্ছেয় যেদিন আমরা পুজ�ো করতে চেয়েছিলাম সেদিনই পাওয়া গিয়েছিল হল ব্যাবহারের অনু মতি। এই হলটার আরেকটা সু বিধে ছিল রান্না করার জায়গা। প্রথমদিকে দিদি-বউদিরা দু পুরের খাবার নিজেরাই রান্না করতেন, তাই রান্নার জায়গাটার বিশেষ প্রয়�োজন ছিল । এখন অবশ্য এ ব্যাপারটা ক্যাটারারের হাতে ছেড়ে দেওয়াতে রান্নার জায়গা আর দরকার হয় না । আমার মনে হয় এ পর্যন্ত পুজ�োর হলের মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় ছিল শিনাগাওা-কুর ওইমাচি ক্যুরিয়ান এক্সহিবিশন হল। JR ওইমাচি স্টেশনের ঠিক উপরেই অবস্থিত বেশ বড় এই হলের প্রধান আকর্ষণ ছিল ট্রেনে যাতায়াতের সু বিধে। সেই কারণেই ব�োধহয় সে বছর সব মিলে প্রায় সাড়ে চারশ ল�োক আমাদের পুজ�োয় য�োগদান করেছিলেন। এই হলটাও এক বছর আগে থেকে আয়�োজন না করলে পাওয়া যায় না এবং খালি শিনাগাওা-কুর ল�োকেরাই লটারিতে য�োগদান করতে পারেন। আমি থাকি ওতাকুতে কাজেই আমি লটারিতে য�োগদান করতে পারিনি। সেবছর পুজ�োর দিন প্রথমে যিনি ভাড়া নিয়েছিলেন, ক�োন কারণে তাকে ক্যান্সেল করতে হয় এবং তার পরিবর্তে ঠাকুরের ইচ্ছেতেই আমরা হলটা ভাড়া নিতে পারি। সেই বছরের পুজ�োর কথা এখনও অনেকের মনে আছে এবং তারা অনেকেই এই হল সম্বন্ধে প্রতি বছর আমাদের জিজ্ঞেস করেন। আমাদের প্রথম পুজ�োর ঠাকুর ছিল ফ্রেমে বাঁধান�ো ছবি । তখন বাঙ্গালী ল�োকসংখ্যাও কম ছিল তাই আমাদের আর্থিক সামর্থ্যও ছিল পরিমিত। আরেকটা অসু বিধে হল কলকাতার মতন এখানে নদীতে ঠাকুরকে বিসর্জন দেওয়া যায় না । শেষপর্যন্ত আমার বাড়িতে রাখার কথা ভেবেই ছবির ঠাকুর ব্যাবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ধীরে ধীরে ল�োকসংখ্যা বেড়েছে, আমাদের পুজ�ো-সঙ্ক্রান্ত আয়ব্যায়ের পরিমাণও বেড়েছে সেইসঙ্গে। এখন প্রতি পাঁচ-ছ বছর অন্তর নতুন প্রতিমা আনা হয় কলকাতা থেকে। প্রথমে সেই প্রতিমা কারুর গ্যারাজে রাখা হত। এখন প্রতিমা ট্রাঙ্করুম ভাড়া করে রাখা হয়। সেইজন্য দরকার হয় হাল্কা এবং মজবুত বাক্সর। এই বাক্স

Anjali

www.batj.org


তোওকিওর দুর্গোৎসবের রজতজয়ন্তী উপলক্ এখন নতুন ঠাকুর এলে জাপানেই তৈরি করা হয়। গত বছর প্রায় ছয় বছর পরে এ পর্যন্ত আনান�ো প্রতিমার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিমা আনান�ো হয়েছে। সেই প্রতিমাই এবার পুজ�ো করা হবে। বিসর্জন দেওয়া যায়না বলে এ পর্যন্ত ব্যাবহার করা পুরান�ো প্রতিমাগুলি আমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী এক জাপানীর ভারত-সঙ্ক্রান্ত মিউজিয়ামে রাখা আছে। ইচ্ছে করলে সেখানে গিয়ে আমাদের দু র্গোৎসবের ইতিহাসের খ�োঁজ নেওয়া যায়। পুজ�োর অন্যান্য আকর্ষণ বলতে কালচারাল প্রোগ্রাম।

www.batj.org

প্রথমদিকে ত�োওকিওবাসী বাঙ্গালীরাই গান, নাচ, নাটক ইত্যাদির আয়�োজন করতেন নিজেদের আনন্দের জন্য। সব কিছু তেই একটা ঘর�োয়া পরিবেশ ছিল। এখন অবশ্য সেই পরিবেশ বেশ কিছু ই পাল্টেছে। স্টেজের এলাহি আল�োর ব্যাবস্থা, উন্নত সাউন্ড সিস্টেম ইত্যাদি না থাকলে আজকাল মনস্তুষ্টি হয় না, বাইরে থেকে নামকরা গ্রুপকে ডাকতে হলে এ ছাড়া উপায়ও নেই । আজকাল আর একটা বড় আকর্ষণ হচ্ছে ভারত সরকার এবং নমস্তে ইন্ডিয়ার যু ক্তপ্রয�োজনায় অনু ষ্ঠিত প্রতি বছর বিভিন্ন গ্রুপের ল�োকনৃ ত্য। সেদিক থেকে বলতে গেলে গত বছর সবচেয়ে ভাল হলের আয়�োজন করা গিয়েছিল। আশা করছি এবারের হল গতবারের তুলনায় আরও ভাল হবে। দু র্গাপুজ�ো নিয়ে বলতে গেলে আমাদের শারদীয় পত্রিকা অঞ্জলির কথা না বলে শেষ করা যাবে না। আমরা অঞ্জলি প্রকাশ আরম্ভ করি উনিশ বছর আগে থেকে। এই পত্রিকার বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, জাপানী ভাষায় লিখিত প্রবন্ধ পড়ে জাপানের বাইরের পাঠকেরাও আজকাল নিয়মিত আনন্দ উপভ�োগ করেন। আমরাও চেষ্টা করি এই পত্রিকার সেই বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রাখতে। আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী বিজ্ঞাপনদাতাদের বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যাপারেও অঞ্জলি এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। প্রথমে আমরা আরম্ভ করেছিলাম সাদাকাল�ো প্রিন্টে, এখন প্রায় পুর�োপুরি রঙিন প্রিন্টে প্রকাশ করা হচ্ছে গত দু বছর হল। এটাই আমাদের স্ট্যান্ডার্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবমিলে আমরা ত�োওকিওবাসী বাঙ্গালীরা চেষ্টা করে চলেছি দু র্গোৎসবে যারা অংশগ্রহণ করেন তাদের যথাসম্ভব আনন্দ দিতে। ঘর�োয়া পরিবেশের বার�োয়ারী পুজ�ো এই আমাদের ট্র্যাডিশন হয়ে উঠেছে। আশা করি ঠাকুরের ইচ্ছেয় সেই ট্র্যাডিশন সমানেই চলবে। 

Durga Puja 2014

11


লহ প্রণ

স্বর্গীয় ডঃ ৎসু য়�োশি নারা (জন্ম ১১ই ডিসেম্বর ১৯৩২ মৃ ত্যু ২০শে জানু য়ারী ২০১৪) জাপানের বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ ও বাংলা ভাষার বিশেষজ্ঞ ডঃ ৎসু য়�োশি নারা ২০শে জানু য়ারী আমাদের ছেড়ে অমৃ তল�োকে যাত্রা করেছেন । জাপান ও ভারতের মধ্যে মৈত্রীর সেতুবন্ধন রচনায় তাঁর অবদান সর্বজনবিদিত । তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথমবার ভারতে যান ইন্দোআর্য ভাষা নিয়ে গবেষণা করার উদ্দেশ্যে । তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাতত্ত্বের অধ্যক্ষ ছিলেন ভারতের বিখ্যাত ভাষাতত্ত্ববিদ্‌ খয়রা অধ্যাপক ড: সু কুমার সেন । তাঁর কাছেই ড: নারা নিয়েছেন বাংলা ভাষাতত্ত্বের পাঠ, আর শিখেছেন অবহট্‌ঠ দ�োঁহা । ভারতীয় ভাষা ও সংস্কৃ তির ওপর রচনা করেছেন অজস্র বই ও গবেষণাপত্র, যার মধ্যে Avahatta & Comparative Vocabulary of New Indo-Aryan শির�োনামের বইটি বিশেষভাবে উল্লেখয�োগ্য। চর্চা করেছেন দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি ভাষাও । খাসি, মুন্ডা ও সাঁওতালি ভাষা যে ভাগের অন্তর্ভুক্ত সেই অস্ট্রোএশিয়াটিক এবং হিমালয় অঞ্চলে প্রচলিত ভাষা নিয়ে কাজ করেছেন । কাজ করেছেন আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে প্রচলিত কয়েকটি ভাষা নিয়েও । ভারতীয় ভাষার অক্ষরের জন্ম এবং বিবর্তনের ইতিহাস নথিবদ্ধ করেছেন এবং তারই সূ ত্র ধরে মনিপুরি ভাষার নিজস্ব অক্ষরের পুনর্জন্ম ও পুনর্ব্যবহার শুরু হয় । ড: নারার কর্মময় জীবনে সাফল্য ও অর্জনের তালিকাটি বিরাট, স্বল্প পরিসরে যার সম্পূর্ণ বিবরণ তুলে ধরা সম্ভব নয় । ভাষাতত্ত্বে পাণ্ডিত্য ছাড়াও, আধ্যাত্মিকতার অনেক উঁচু স্তরের মানু ষ ছিলেন তিনি । সর্বধর্ম সমন্বয় সাধনের সংকল্পে অবিচলিত থেকে নিজের জীবনে ধর্মের সর্বোচ্চ আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সাথে সক্রিয়ভাবে সহয�োগিতা করেছেন । এর অন্যতম দৃষ্টান্ত জাপানের রামকৃ ষ্ণ মিশনের সাথে তাঁর গভীর সম্পর্ক । ড: নারার জীবন এক নিঃস্বার্থ সেবার প্রতিচ্ছবি । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য । বহু অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায় ভূ ষিত করে । সে বছরই জাপান সরকার তাঁকে Order of the Sacred Treasure, Gold Rays with Neck Ribbon দিয়ে সম্মানিত করে ভাষাবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা ও

শিক্ষাদানে তাঁর বহুদিনের অবদানের জন্য । ড: ৎসু য়�োশি নারাকে আমি সম্বোধন করতাম নারা সেনসেই বলে । ১৯৮৩ সালে জাপানে আসার পর নারা সেনসেই-এর সাথে চাক্ষু ষ সাক্ষাত হলেও, আমার ননদাই শ্রী কল্যাণ দাশগুপ্তর সাথে তাঁর বহুদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সূ ত্র ধরে সেনসেই-এর নাম আমি অনেক আগে থেকেই শুনে আসছি । অগাধ পাণ্ডিত্য ছাড়াও জেনেছি তাঁর পর�োপকারী মহৎ হৃদয়ের কথা । প্রথম আলাপের দিন থেকে তিনি আমার কাছে এক অপরিসীম আনন্দের প্রতীক হয়ে থেকেছেন । পরে বুঝেছি তাঁর শান্ত সমাহিত আনন্দময় ব্যক্তিত্বের উৎস প্রোথিত ছিল মহৎ আধ্যাত্মিক চিন্তাধারার মধ্যে । আমাদের পরিবারে নারা সেনসেই-এর ভূ মিকা ছিল অভিভাবকের মত । যত দিন গেছে আমরাও ধীরে ধীরে অন্তর্ভূক্ত হয়ে গিয়েছি নারা পরিবারের একান্ত আপনজনের তালিকায় । সবসময় ওনার কাছ থেকে পেয়েছি মূ ল্যবান উপদেশ । জীবনে চলার পথে দু ঃসহ সময়কে পেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি ওনারই সহায়তায় । ২০০৪ সালে আমাদের পরিবারে এক মর্মান্তিক দু র্ঘটনা ঘটে । সেই শ�োকে আমরা যখন মূ হ্যমান, মানসিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত, তখন সেনসেই আমাদের উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করেন । সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করেন জীবন সম্পর্কে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা । সে সময় সেনসেই-এর শেখান�ো মন্ত্র আজও আমি প্রাত্যহিক পূ জার সময় উচ্চারণ করি । মনে পড়ে বেশ কিছু বছর আগে “অঞ্জলি” পত্রিকার সম্পাদক মণ্ডলীর হয়ে গিয়েছিলাম নারা সেনসেই-এর একটি সাক্ষাতকার নেওয়ার জন্য। সেনসেই-এর অফিস ঘরে বসে সেদিন মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনেছিলাম ওনার প্রথম ভারত ভ্রমণের বিবরণ । ভারতে পা দিয়েই সেনসেই-এর মনে হয়েছিল এ জায়গার সাথে ওনার জন্মজন্মান্তরের সম্পর্ক । শ্রীরামকৃষ্ণের ভাবধারায় অনু প্রাণিত হয়ে ভারতবর্ষকেই কর্মস্থল হিসেবে বেছে নেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন। সামগ্রিকভাবে নারা সেনসেই-এর জীবন ও কর্মকাণ্ডে এক ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্বশান্তিকামী চিন্তার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় । আমাদের দু র্ভাগ্য যে পার্থিব জীবনে নারা সেনসেই-এর সান্নিধ্য থেকে চিরতরে বঞ্চিত হলাম । আজ মনে হচ্ছে উনি যখন আমাদের মধ্যে ছিলেন, তখন সেই সময়ের সঠিক সদ্‌ব্যবহার করতে পারিনি । ওনার কাছ থেকে যা কিছু শিখে নেওয়া বা জেনে নেওয়া উচিত ছিল, কিছু ই করা হয়নি । তবে সেনসেই নিজের জীবনে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা আমাদের সকলকে পথের দিশা দেবে বলে আমার বিশ্বাস । তাঁর প্রদর্শিত পথ কিছু টাও যদি অনু সরণ করতে পারি, সেনসেই-এর প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন সম্ভবপর হবে । আজ নারা সেনসেই-এর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে গিয়ে তাঁর জীবনদর্শনের যে মূ লমন্ত্রটি আমাকে সব চাইতে বেশি প্রভাবিত করেছে, তা অল্প কথায় বলার জন্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে চাই --“যত দিন রাখ�ো ত�োমা মুখ চাহি ফুল্লমনে রব এ সংসারে । ডাকিবে যখনই ত�োমার সেবকে দ্রুত চলি যাইব ছাড়ি সংসারে” ।। আজীবন কর্মব্যস্ত ও সদা আনন্দময় নারা সেনসেই-এর সার্বিক জীবন ও শেষ যাত্রা যেন এই কথাগুলিরই বাস্তবায়িত রূপ । সেনসেই আপনাকে জানাই আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম ।

12

Anjali

- রুমা গুপ্ত

www.batj.org


নারা সেনসেই ও আন্তর্জাতিক বঙ্গ বিদ্যা �������������������������� নারা সেনসেইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয় আমি যখন সবে আমার মাস্টার্সের পড়া শুরু করেছি। ১৯৮৯ সালে ওনার গ্রীষ্মকালীন বাংলাভাষার ক্লাশে অংশ নিয়েছিলাম । হাইস্কুলের ছাত্রাবস্থায় শ্রীরামকৃ ষ্ণ পরমহংসের কথামৃতের অনু বাদকরূপে এবং জাপানের ইসকন মন্দিরে চৈতন্য মহাপ্রভুর পরিচয়দাতা হিসেবে ওনার সঙ্গে আমি পরিচিত ছিলাম। কিন্তু বই পড়ে ওনার সম্বন্ধে যে ধারণা ছিল, সাক্ষাতে সেই ধারণা একদম বদলে গেল। আসলে উনি খুবই সাধারণ প্রকৃতির স্নেহশীল, অমায়িক ও মার্জিত মানু ষ ছিলেন। তারপর ১৯৯২ সালে আমি যখন কলকাতায় পড়তে যাই, তখন নারা সেনসেই আমাকে বলেছিলেন ‍‍“ভারতবর্ষে গেলে টাকা ধার করেও যতটা সম্ভব বই কিনে আনবে।” এই আধু নিক ইন্টারনেটের যু গেও নারা সেনসেইয়ের এই বাণী খুবই মূ ল্যবান বলে আমি মনে করি। আমি যখন কলকাতায় পড়াশুনা করছি, একদিন কী মনে করে নারা সেনসেই কবে কলকাতায় আসবেন তা জানবার জন্য কলকাতাবাসী আরেকজন জাপানী ছাত্রের সঙ্গে আই.এস.আই.এর গেস্টহাউজে যাই। গিয়ে দেখি নারা সেনসেই সেদিন সকালেই কলকাতা এসে পৌঁছেছেন। আমাদের দেখে খুব একটা বিস্মিত না হয়েই তিনি বললেন “আমার ফ্লাইটের তারিখ হঠাৎ বদলে-যাওয়াটা ত�োমরা বেশ বুঝতে পারলে ত�ো!” ওনার সঙ্গে যেন আগে থেকে সাক্ষাতের কথা ঠিক ছিল। আমার মনে হয় যেন আমি ওনার মনের ডাকে সেখানে গিয়েছিলাম। নারা সেনসেইয়ের সঙ্গে এরকম মনের টান কয়েকবারই আমার ঘটেছিল। আমার পুরন�ো বন্ধু আকিয়�োশি হির�োৎসু একজন আল�োকচিত্র শিল্পী । আমরা নারা সেনসেইয়ের কাছে একসঙ্গে বাংলাভাষা পড়েছি। হির�োৎসু কলকাতা শহরের উপর একটা ছবির বই বের করেন এবং তাঁর অনু র�োধে নারা সেনসেই তাতে বাঙালি সংস্কৃ তি, মনন, বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে লেখেন। বন্ধু র অনু র�োধে আমাকেও সম্পাদনার কাজে সাহায্য করতে হয়েছিল। বইটি যখন প্রকাশিত হয় তখন নারা সেনসেই রাজপ্রাসাদে জাপানের সম্রাটের কাছে বইটি দেখাতে নিয়ে যান। পরে উনি ফ�োনে জানালেন “আজ সম্রাটের কাছে গিয়ে কলকাতা বইটি দেখিয়ে এসেছি।” এমন একটা সম্মানজনক ঘটনা, কিন্তু সেনসেই এত সহজভাবে বললেন যেন খুব কাছের ক�োন�ো প্রতিবেশীর বাড়ি গিয়ে এসেছেন। এইভাবে যে ক�োন�ো বিশেষ ঘটনাও নারা সেনসেই সহজভাবে প্রকাশ করতেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার পর নারা সেনসেইএর কাছে অনেকে আধ্যাত্মিক উপদেশ নেবার জন্য আসতেন বলে শুনেছি। তাই পরের দিকে সম্মেলনে ওনার সঙ্গে আমার সাক্ষাতের সু য�োগও কমে এসেছিল। ২০১০ সালে দিল্লিতে আয়�োজিত ১ম বঙ্গবিদ্যা সম্মেলনে নারা সেনসেইয়ের উপস্থিতির কথা না জেনে আমি পরিচিত একজনের আহ্বানে অংশগ্রহণ করেছিলাম। প্রবন্ধ পড়ার দিন সকালে আমি যখন হ�োটেলের ঘরে প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন ঘরের ফ�োনটা বেজে উঠল। সেটা নারা সেনসেইয়ের ফ�োন ছিল। উনি জিজ্ঞাসা করলেন “আর কিছু ক্ষণ পরে ত�ো ত�োমার পেপার পাঠ আছে। প্রস্তুত ত�ো?” ওনার ফ�োন পেয়ে আমি খুবই অবাক হই। এই সম্মেলনে আর একটি ঘটনা আমার মনে গভীর রেখাপাত করেছিল। সেটা হল�ো, অন্তিমদিনের মিটিংয়ে নারা সেনসেইকে এই আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা সম্মেলনের সভাপতি পদে অভিষিক্ত করা হয়। বাংলাদেশের এবং ভারতবর্ষের বাংলা গবেষকদের উদ্যোগে এই

www.batj.org

প্রথম আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা সম্মেলন বাস্তবায়িত হয়, আর তার প্রথম সভাপতি পদে জাপানের নারা সেনসেইকে অভিষিক্ত করা হল�ো----এটা একটা স্মরণীয় ঘটনা বলে আমি মনে করি। তারপর এই বঙ্গবিদ্যা সম্মেলন নারা সেনসেইয়ের মহান নেতৃত্বে ২০১১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ২০১৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়�োজিত হয়। এই সম্মেলন বিশ্বব্যাপী বাংলা গবেষকদের মিলনকেন্দ্র হয়ে ওঠে। এই সম্মেলনে তর্ক ও গল্পপ্রিয় বাঙ্গালি, যাঁরা একবার কথা শুরু করলে সহজে থামতে চান না, তাঁদের সামনে ধীরস্থির নম্রভাবে আল�োচনারত নারা সেনসেইকে দেখে আমি জীবনের শিক্ষালাভ করেছিলাম। এই সম্মেলনে নারা সেনসেইয়ের সান্নিধ্যে আসতে পেরে আমার মূ ল্যবান অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে কলকাতায় আয়�োজিত বঙ্গবিদ্যা সম্মেলনের উদ্বোধন অনু ষ্ঠানে নারা সেনসেই সম্মেলনের সভাপতি রূপে আরও ১০ জন বিশেষ অতিথির সঙ্গে মঞ্চে ভাষণ দিয়েছিলেন । কিন্তু মঞ্চে উপবিষ্ট সকলে একজন একজন করে ভাষণ দিতে শুরু করলে নির্ধারিত সময় দু পুর ১২টা পেরিয়ে দেড়টা বেজে গেল । তখনও সবার বলা শেষ হয়নি । এদিকে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে যাঁদের বলা হয়ে গেছে তাঁরা ধীরে ধীরে মঞ্চ থেকে নেমে মধ্যাহ্ন ভ�োজনে যেতে শুরু করলেন । ক্রমশঃ শ্রোতারাও একজন একজন করে উঠতে শুরু করলেন । আয়�োজকরাও ধৈর্য্য হারিয়ে এক এক জন করে উঠে খেতে চলে গেলেন । মঞ্চের উপর নারা সেনসেইকে নিয়ে শুধু মাত্র ৩ জন রয়ে গেলেন । দূ র জাপান থেকে আগত নারা সেনসেই-এর শারীরিক ক্লান্তি ও স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে আমি ওঁকে মঞ্চের পর্দার পেছন থেকে বললাম, “আর কেউ নেই । চলু ন, খেয়ে আসবেন”। কিন্তু নারা সেনসেই বললেন, “আমি এখান থেকে উঠে গেলে, ভাষণ শ�োনার কেউ থাকবে না”। শেষ জনের বলা শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি মঞ্চের উপরেই ছিলেন । ১৯৫৮ সালে নারা সেনসেইয়ের সঙ্গে এক জাহাজে কলকাতায় পড়তে গিয়েছিলেন নাগা ক�োকি। তিনি সর্বোদয় পত্রিকায় নারা সেনসেইয়ের স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন, জীবনের শেষদিকে নারা সেনসেই জাপানীর বৈশিষ্ট্যকে বিশ্বনাগরিক হয়ে জীবনে কীভাবে প্রয়�োগ করবেন, সেই চিন্তাভাবনায় মগ্ন ছিলেন। সেইজন্য পরবর্তী আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা সম্মেলনটা জাপানে আয়�োজন করার জন্য আগ্রহী ছিলেন তিনি। তিনি তাঁর অনু সারীদের পরবর্তী সম্মেলনের জন্য নানাভাবে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। শেষে আরেকটা ঘটনা লিখেই আজ শেষ করব। ২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জাপানে আসেন, তখন প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছায় হির�োশিমা আসেন পিস মিউজিয়াম ও পিস পার্ক দেখতে। নারা সেনসেই তাঁকে অভ্যর্থনা জানান এবং নিজের পরিচিত হির�োশিমার নাগরিকদের ডেকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য সংবর্ধনাসভার আয়�োজন করেছিলেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ওসাকাতে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা থাকার কারণে, মিউজিয়াম দেখার পরই ওসাকা চলে যাবার কথা। কিন্তু নারা সেনসেইয়ের আমন্ত্রণে তিনি পরিকল্পনা বদলে সংবর্ধনাসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। তাতে সরকারি কর্মকর্তাগণ খুবই অপ্রস্তুত ব�োধ করেছিলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাগরিকদের সঙ্গে মেলামেশা করে আর হির�োশিমার ওক�োন�োমিয়াকি খেয়ে তৃপ্তিব�োধ করেছিলেন। নারা সেনসেইয়ের মধ্যে এইরকম এক অদ্ভু ত আকর্ষণী শক্তি ছিল। 

Durga Puja 2013 2014

13


ভাল তুমি বেসেছিলে এই শ্যাম ধর   - মঞ্জুলিকা হানারি (দাশগ বছর শুরু হতেই চলে গেলেন নারা সেনসেই -- ডঃ ৎসু য়�োশি নারা । আমরা হারালাম একজন বাংলা প্রেমী তথা ভারত বন্ধু । খবরটা পেয়ে অবধি কত স্মৃতিই যে ঘুরে ফিরে আসছে । মনে হচ্ছে এই ত�ো সেদিন কলকাতাতে সেনসেই-এর সঙ্গে আলাপ হ�োল । আসলে ওঁর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় সেই ১৯৬১ সালের ক�োনও এক সময় । সময়টা আজ আর মনে পড়েনা । তবে এইটুকু মনে আছে যে আমি তখন এম. এ পড়ি বাংলা নিয়ে আর উনি ডঃ সু কুমার সেনের কাছে বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা করছেন বা শেষ করেছেন । থাকতেন গ�োলপার্কের রামকৃ ষ্ণ মিশনের গেস্টহাউসে । পরিচয় হওয়ার আগেই ওঁর কথা শুনেছিলাম । একজন বিদেশী বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা করছেন জেনে বাংলা ভাষার ছাত্রী হিসাবে যথেষ্ট ক�ৌতূ হল আর আগ্রহ ছিল ওঁর সম্বন্ধে । কিন্তু তখন এখনকার মতন অচেনা কার�োর সঙ্গে হুট্‌হাট্‌করে দেখা করা বা আলাপ করার সু য�োগ ছিলনা আমাদের । কাজেই ওই শ�োনার মধ্যেই সব ইচ্ছা সীমাবদ্ধ ছিল । এর কিছু দিন পরে ক�োনও কারণে আমার ওঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতে হয়েছিল । সে সময় গেস্টহাউসে কার�োর সঙ্গে দেখা করতে হলে গেটের দার�োয়ানদের কাছে অনেক জবাবদিহি করতে হ�োত বিশেষ করে দর্শনার্থী যদি কম বয়সী মেয়ে হ�োত । তারা সন্তুষ্ট হলে তবেই খাতায় সই করে ভিতরে ঢ�োকার অনু মতি মিলত�ো । যাইহ�োক, সব ঝামেলা পেরিয়ে ওঁর ঘরের দরজায় বেল বাজালাম । মনে মনে তখন গুরুগম্ভীর চেহারার এক ভদ্রল�োকের ছবি আঁকতে আঁকতে নানান চিন্তার ভিড় মাথায় জমছে । বেশ অস্বস্তি ব�োধ করছি । নার্ভাসও লাগছে । একে বিদেশী তায় সম্পূর্ণ অচেনা । কি জানি কীভাবে নেবেন আমার এই বিনা ন�োটিশে হঠাৎ আসাটা । তখন বাড়ীতে বাড়ীতে এত ফ�োন ছিলনা ---আমাদেরও ছিলনা । আর খবর না দিয়ে হঠাৎ চলে আসাটাই রীতি ছিল । তার জন্য কেউ কিছু মনে করতেন না । অবশ্য খ�োঁজখবর করে ফ�োন করাটা আমার পক্ষে অসম্ভব ছিলনা । কিন্তু সে সব করতে যাবার মতন সময়ও ছিলনা । তাছাড়া একটা ভয়, একটা সংক�োচ মনের মধ্যে ছিল আর সেই সঙ্গে ছিল অধীর উত্তেজনা আর আগ্রহ ---যার কথা এতদিন শুনেছি তাঁর সঙ্গে দেখা হবে, পরিচয় হবে । যাইহ�োক, মাথা ভরা হাজারটা চিন্তা নিয়ে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে ত�ো আছি, অথচ দরজা আর খ�োলেনা ! ঘরে আছেন সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত । কারণ বেল বাজান�োর পরে সাড়া পেয়েছি । আমার উৎকন্ঠা যখন চরমে উঠেছে, অধৈর্য্য হয়ে ফিরে যাবার কথা ভাবছি, তখনই শুনি কেউ বলছেন, “ক্ষমা করবেন, অনেকক্ষণ আপনাকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছি”। বাংলা কথা শুনে ফিরে তাকাই । দরজা খুলে সামনে দাঁড়িয়ে দেরি করার জন্য যিনি ক্ষমা চাইছেন, তাঁকে দেখে আমি আমার চ�োখকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছিনা । ক�োথায় গুরুগম্ভীর চেহারা ? আমার কল্পনাকে ভেঙেচুরে সামনে দাঁড়িয়ে র�োগা মতন ছ�োট�োখাট�ো চেহারার অল্প বয়সী এক ভদ্রল�োক । বয়স ব�োধহয় ত্রিশের ক�োঠাতেও পৌঁছায়নি । আমাকে দেখে হাত জ�োড় করে নমস্কার করে বললেন, “আমি ৎসু য়�োশি নারা । আপনি”? তাড়াতাড়ি নিজের হতচকিত ভাব সামলে নিজের পরিচয় দিলাম আর সেই সঙ্গে আসার কারণটাও জানালাম । কারণ শুনে ঘরে এসে বসতে বললেন । কিন্তু আমার তাড়া ছিল । দরজার সামনে দাঁড়িয়েই প্রয়�োজনীয় কথাবার্তা সেরে একটা ঘ�োরের মধ্যে বিদায় নিলাম । সেই প্রথম দেখা । আর আমি প্রথম পরিচয়ে মুগ্ধ । এত ভদ্র অমায়িক ব্যবহার আর কথাবার্তা ---তাও আবার বাংলাতে । 14

মুগ্ধ না হয়ে উপায় কি ! সেই শুরু । এরপর কলকাতাতে থাকাকালীন বেশ কয়েকবারই দেখা হয়েছে । আমাদের বিয়ের সাক্ষীও ছিলেন সেনসেই । বিয়ের পরে আমার জাপানে আসার কয়েক বছরের মধ্যে উনিও জাপানে ফিরে আসেন । এবার ওঁর উৎসাহে শুরু হ�োল জাপানী ভাষা শিক্ষা । আমি নিজে অবশ্য শুরু করেছিলাম, কিন্তু সেরকম ভাবে শেখাটা এগ�োচ্ছিলনা । আমার অবস্থা দেখে এবার সেনসেই এসে হাল ধরলেন । আমার জাপানী ভাষার প্রথম শিক্ষক নারা সেনসেই । ওঁর উৎসাহ আর নিষ্ঠা দেখে অবাক হতাম আবার লজ্জাও পেতাম । সেইজন্য পড়াশুনাটা ঠিক মতন করতে হয়েছে, মানে বাধ্য হয়েছি । ১৯৬৪ সালের কথা । তখন এত�ো বাংলা ভাষা বা বাংলা সংস্কৃ তি চর্চার ক�োনরকম সু য�োগই ছিলনা এখানে । আমার বাংলা চর্চা তখন রেডিও জাপানের ১৫ মিনিটের বাংলা প্রোগ্রামে । ভারতীয় দূ তাবাসে বেশ কিছু বাঙালী ছিলেন সপরিবারে তখন । কিন্তু সংস্কৃ তি চর্চা বলতে যা ব�োঝায় তা একেবারেই ছিলনা । আমি সেখানে যেতাম শুধু বাংলা বলার অভ্যাস রাখতে । বাংলা আমার মাতৃভাষা, তায় বাংলার ছাত্রী আমি । বাংলা ভাষা ভাল�োবাসি মনেপ্রাণে । বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃ তি ছেড়ে থাকতে আমার কষ্ট হ�োত । মনে হ�োত যেন দম বন্ধ হয়ে যাবে । মন খারাপ করে থাকতাম, কিন্তু ক�োনও উপায় বার করতে পারিনি । নারা সেনসেই ফিরে এসে আমার অভাবব�োধটা বুঝতে পেরে সাহায্যের হাত বাড়ালেন । যখন যেখানে পেরেছেন নানাভাবে বাংলা নিয়ে কাজের সু য�োগ করে দিয়েছেন । ট�োকিও ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন স্টাডিজের আজিয়া আফ্রিকা কেনকিউজ�োও-তে যখন প্রথম বাংলা ভাষা শেখান�ো শুরু হ�োল, তখন সেনসেই-এর সঙ্গে নানা কাজ করেছি । পড়ান�োর জন্য বাংলা ভাষার বই তৈরি করা, লাইব্রেরির বই গ�োছান�ো আর তার লিস্ট তৈরি করা ইত্যাদি । তারপর বাংলা ক্লাশ শুরু হলে সেখানে পড়ান�োর সু য�োগও এল�ো । কি উৎসাহ আর উদ্দীপনায় যে সেসব দিন কেটেছে তা বলার না । অল্প দিনের জন্যে হলেও বাংলা ভাষার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থেকে কাজ করতে পেরে কি আনন্দ যে পেয়েছি ! সেসব দিনের কথা আমৃ ত্যু আমার মনের মনিক�োঠায় জমা থাকবে । তা সম্ভব হয়েছিল নারা সেনসেই ছিলেন বলে । সংসারের নানান চাপে পড়ে আর আগের মত�ো ওঁর সঙ্গে নিয়মিত কাজ করা হয়ে ওঠেনি । তবে য�োগায�োগটা সব সময়ই ছিল । ওঁর কাছে সব সময় কত রকমভাবে যে অসংখ্য সাহায্য পেয়েছি, তা বলে শেষ করা যাবেনা । প্রয়�োজনে অপ্রয়�োজনে সব সময়ই বন্ধু র মতন হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন । সে ঋণ যেমন শ�োধ করার নয়, তেমনই ভ�োলার নয় । সেনসেই-এর সঙ্গে শেষ দেখা ওঁর মৃ ত্যুর কয়েক মাস আগে । অসু স্থ ছিলেন, কিন্তু শয্যাশায়ী ছিলেন না । অসু স্থ শরীর নিয়ে তখনও কত কাজ করে চলেছেন । বই নিয়ে অনেক কথা হ�োল । তখন ত�ো বুঝিনি সেটাই শেষ দেখা । প্রকৃতির নিয়মে একদিন সব পাট চুকিয়ে জীবনের এই রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে মানু ষকে বিদায় নিতে হয় । এর ব্যতিক্রম নেই । কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি আত্মা অবিনশ্বর । তার মৃ ত্যু হয়না । সেই বিশ্বাস নিয়ে নারা সেনসেই-এর আত্মার শান্তি কামনা করছি । “ত�োমার আপন ছিল এই শ্যাম ধরা । ---------------------ত�োমার সে হাসিটুকু, সে চেয়ে দেখার সু খ সবারে পরশি চলে বিদায় গাহিয়া” ।।

Anjali

www.batj.org


বঙ্গ রমণীর ইতস্তত জাপান   - শুভা চক্রবর্তী

প্র

থমবার জাপানে এসেছিলাম ১৯৯১ সালে । মুগ্ধ বিস্ময়ে অনু ভব করেছিলাম জাপানের সু বিদিত সূ ক্ষ্ম স�ৌন্দর্যব�োধ, সদ্যফ�োটা চেরিফুলের মতন, নীল জলে মাকড়সার জালের চেয়েও হাল্কা সাদা সবুজ পাখনা মেলে জলপরিদের মত ভেসে বেড়ান�ো সু মিদা নদীর ছ�োট ছ�োট মাছের মতন । পৃথিবীর আধু নিকতম শহর ট�োকিয়�োর তাক লাগিয়ে দেওয়া স্থাপত্যের আড়ালে আবডালে, দৈনন্দিনের আওতায় ঘুরে ফিরে আসে এই স�ৌন্দর্যব�োধ, কখন�ো বা চতুর্দিকে প্যাস্টেল রঙের নিখুঁত খেলায়, রাতের শহরের অলিতে গলিতে ঝুলন্ত বড় বড় লন্ঠনের রূপকথায়, আবার কখন�ো বা শারীরিক ক�োন�ো মূ দ্রায়, হয়ত বা চপস্টিক দিয়ে ছ�োট টুকর�ো খাবার মুখে ত�োলার ক�োন�ো ভঙ্গিতে । অনু ভব করেছিলাম একটি জীবনদর্শনের, যেটির শিকড় সম্ভবত খুবই গভীরে । সমাজের পরতে পরতে যেন জড়িয়ে আছে সেই ব�োধ, যার বাহ্যিক প্রকাশ নিয়মানু বর্তিতাকে স্বতঃস্ফূর্তরূপে জীবনের অংশ করে নেওয়া, নির্লিপ্তির আবহে নিজেকে ঘিরে ফেলা । ভিনদেশী কারুর পক্ষে সেই ব�োধটিকে ছু ঁতে পারা প্রায় অসম্ভব - তাকে যেতে হবে শান্ত, প্রসন্ন, সবুজে ঘেরা নানান মন্দিরে, ফুজি-সানের পাদদেশে, তাকিয়ে থাকতে হবে বহুদিন ধরে ব�োঝার অপেক্ষায় । একটি সংস্কৃ তি তার সবচেয়ে জরুরি ঐশ্বর্যটি সম্ভবত কখন�োই কারুর সামনে মেলে ধরে না, রেখে দেয় একান্ত নিভৃতে তুমি তার সন্ধান পেলে পাবে, না পেলে পাবে না । ২০১৩-য় আবার ফিরে আসা । এবার আরেকটু বেশি সময়ের জন্য, রীতিমত রেসিডেন্স কার্ড হাতে নিয়ে । ক্ষীণ আশা, এবার হয়ত�ো আরেকটু ভিতরে ঢুকতে পারব, আশ্চর্য এই দেশটিকে আরেকটু বেশি ছু ঁতে পারব । ক্ষীণ, কারণ ভাষাজ্ঞানহীন মানু ষ আর কতদূ রেই বা যেতে পারবে ? যা হ�োক, পঞ্চেন্দ্রিয়কে নির্ভর করে যাত্রা শুরু হল । আকুতাগাওয়ার শিনসু কের মতন আমিও দৈনন্দিন জীবনে মানু ষকে জানতে বইয়ের জগতে পাড়ি দিলাম জাপানি গল্প উপন্যাস ইংরাজি, ফরাসি অনু বাদে যা কিছু পাওয়া যায় পড়ে ফেলতে চেষ্টা করলাম । আবিষ্কার করলাম আরেকটি সম্পূর্ণ অন্য জগৎ যেখানে সেই সূ ক্ষ্ম স�ৌন্দর্যব�োধ মিশে গেছে একটি গাঢ় অন্ধকারময় অতলের ইঙ্গিতে । তীব্র তার আকর্ষণ । লেখার ধরন সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র । আমি অবশ্য সমসাময়িক ক�োন�ো লেখকের কথা বলছি না কারণ বিশ্বায়নের যু গে হয়ত বা সবচেয়ে অনূ দিত আধু নিক লেখককে ক�োন�ো বিশেষ দেশের লেখক রূপে ঠিক তেমন করে আর চেনা নাও যেতে পারে । আক্ষেপ হল, এই বিশ্বায়নের যু গেও ইংরেজিতে অনূ দিত জাপানি সাহিত্যের খুব ছ�োট একটা অংশই আমার দেশে পৌঁছায় । অনলাইন আনিয়ে নেওয়া যায় নিশ্চয়ই, কিন্তু তার আগে সাধারণ পাঠককে জানতে হবে ত�ো ! সেই জানান�োর দায় কে নেবে ?

আরেকটি মেয়ের ইদানীং ক�োন�োকিছু ই আর পছন্দ হচ্ছে না নেহাতই য�ৌবনের ধর্ম । একটি ছেলের গান বাজনার, লাগামছাড়া জীবনের দিকে ঝ�োঁক, অন্যটি ঝাঁকড়া চুলে হাত চালিয়ে আগে সব কিছু বুঝে নেয় । আবার আর একজন পার্ট-টাইম চাকরি করে, গম্ভীর ভাব, কদিন আগে খুব গেম খেলত বললে বিরক্ত হয় । মেয়েদের মধ্যে একজন বেশ যাকে বলে কেতাদু রস্ত - তাকে সেদিন দেখি এস্কালেটরে স�োজা-উল্টো হয়ে সিঁড়ি লাফাতে লাফাতে নামছে । আরেকজন শান্তশিষ্ট, চিড়িয়াখানায় যেতে এখনও তার ভাল�ো লাগে, ছ�োটবেলায় খরগ�োশের গায়ে হাত দেওয়ার স্মৃতি আজও তার কাছে স্পষ্ট । ঐ যে যাদবপুরের অর্ণব গান শ�োনে, বই পড়ে, অর্ক ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে এসে সাহিত্য পড়ছে, ক�োয়েল কী যেন করবে ভেবে পাচ্ছে না, দেবলীনা একটু আলাদা, চ�োখদু ট�ো খুঁজছে অন্য ক�োনও দেশ । যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের প্রত্যেকের চরিত্রে বৈশিষ্ট্য থাকলেও একে অপরের থেকে তাদের এতটা আলাদা মনে হত না । বাইরে থেকে দেখা কী একেই বলে ? ওখানে ছাত্রছাত্রীদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অঢেল সময়, রাজনীতি করার, আড্ডা দেওয়ার, প্রেম করার, কবিতা লেখার । এখানে সময় বড় কম-- তবে তার বদলে ছেলেমেয়েরা পাবে নিশ্চিন্ত জীবন, একটা চাকরি । ওখানে বিশ্ববিদ্যালয় যেন একটা দ্বীপ, বাইরে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত অথবা এতটাই আলাদা যে মানিয়ে নিতে অনেক সময় লেগে যাবে । রাস্তায় বেরিয়ে বাড়ি ফিরি - চারিদিকে ফুল, বাড়ির সামনে, ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে, সর্বত্র । নীচে বাড়িওয়ালার সব্জির দ�োকান— তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে র�োজই একটু গল্প হয়, ভাষা না জানলেও আমরা দিব্যি কথ�োপকথন চালিয়ে যাই-- যেমন হতে পারত ওদেশে । পাড়া থেকে একটু বেরলেই শহরের মাঝখানে পৌঁছে যাওয়া যায় । বিশাল সমস্ত দ�োকানপাট, তুমি যা চাও তাই পাবে । তবে ত�োমাকে জানতে হবে এই এত বস্তুর সমাহারে তুমি ঠিক কী চাও ? চ�োখের দৃষ্টি হারিয়ে যায় - এত বস্তুও আছে পৃথিবীতে ! মনের মধ্যে গুনগুন করে ওঠে “আমি বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই, বঞ্চিত করে বাঁচালে আমায়...” । ক্লান্ত হয়ে ক�োনও এক কিস্‌সাতেনে ঢুকে পড়ি । মাসান�োবু ফুকুওকার “ওয়ান স্ট্র রেভ�োলু শন” খুলে আবার পড়তে বসি । “কৃষিকাজের উদ্দেশ্য ফসল উৎপাদন নয়, মানু ষকে শ�োধন করে, তাকে পূ র্ণরূপ প্রদান করা ।” স্বাভাবিক কৃষিকাজের কথা বলে, পৃথিবীর মানু ষকে যিনি আজকের দিনে সবচেয়ে প্রয়�োজনীয় বার্তা প্রেরণ করেছিলেন, শিক�োকুর পাহাড়ের গায়ে তাঁর ক্ষেত । এই জাপানের-ই মানু ষ তিনি, যে জাপানে রয়েছে আজকের দিনের সেই ইলেক্ট্রনিক মক্কা । না, বেরিয়ে পড়া যাক আবার রাস্তায় । 

বইয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে বাইরে এলে আবার সব এল�োমেল�ো হয়ে যায় । এ দেশ ত�ো আমার দেশও হতে পারত-- মানু ষে মানু ষে ত�ো তেমন তফাত কখন�োই থাকে না । ক্লাসে বসে আছে ইউকা-সান, ইউকি-সান, কানা-সান, শিহ�ো-সান, ক�ৌসাকু-সান, মিকাক�ো-সান, ত�োদ�ো-সান, ইউত�ো-সান, রেইমি-সান -- ওরা ত�ো হতে পারত ক�োয়েল, মহুয়া, দেবলীনা, রিয়া, পার্থ, দেবশ্রী, সু মিত, রাজা, দীপা । ওরা সকলে ঠিক করেছে নিজেদের মত করে বেঁচে থাকবে । চাকরি করবে, তবে তার আগে পৃথিবীকে দেখবে, জানবে । জাপানি ছেলেমেয়েদের প্রত্যেকেরই খুব প্রত্যক্ষভাবে স্বতন্ত্র এক একটি চেহারা রয়েছে । একজন খুব ছটফটে, সব কাজে এগিয়ে আসে, পৃথিবীটাকে সামান্য হলেও পাল্টান�ো যায় বলে মনে করে, আরেকজন আপন মনে থাকে, সাজগ�োজ করতে খুব ভাল�োবাসে । আবার www.batj.org

Durga Puja 2013 2014

15


স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়

বাংলার নবজাগরণ ও শিক্ষাজগত   - শ্রীকান্ত চট্টো ১৭৫৭’র পলাশীর যু দ্ধের পরপরই ইস্ট ইন্ডিয়া ক�োম্পানী পূ র্ব ভারতে রাজত্ব করতে শুরু করে এবং পরবর্তী ১০০ বছরে ব্রিটিশ আধিপত্য প্রায় সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৫৮ সালে ক�োম্পানীর হাত থেকে সরিয়ে ভারতের শাসনভার ব্রিটিশ সরকার সরাসরি গ্রহণ করে। ইস্ট ইন্ডিয়া ক�োম্পানী তাদের রাজত্ব চালান�োর জন্য যে ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রয়�োজন তারই প্রচলন করেছিল। শিক্ষার ব্যাপক প্রসার বা মান�োন্নয়নের বিশেষ ক�োন চিন্তা তাদের ছিল না বলা যায়। তবে প্রয়�োজনের খাতিরে শিক্ষাক্ষেত্রে কিছু কিছু পরিবর্তন ক�োম্পানীর রাজত্বের প্রথম দিক থেকেই আসতে শুরু করে। ব্রিটিশ ভারতের শিক্ষাজগতের অনান্য পরিবর্তন আল�োচনা করার আগে আশুত�োষের প্রসঙ্গে ফিরে যাওয়া যাক।

আশুত�োষের উজ্জ্বল ছাত্রজীবন ও কর্মজীবনের সূ চনা

বাংলার নবজাগরণ ও জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার ক্রম বিবর্তনের সূ চনা উনিশ শতকের শেষার্ধে যে সব বাঙ্গালী মনীষী বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে স্যার আশুত�োষ মুখ�োপাধ্যায়ের ভূ মিকা ছিল দু ঃসাহসী এবং বহুমুখী অভিনবত্বে উজ্জ্বল। ১৮৬৪ সালের ২৯ শে জুন আশুত�োষের জন্ম হয়, এই বছর তাঁর জন্মের সার্ধশতবর্ষ পূ র্ণ হল। এই দীর্ঘ সময়ে বাংলার এবং ভারতের ইতিহাসে পরিবর্তন এসেছে প্রচুর এবং সেই পরিবর্তনের যে সব মঙ্গলজনক দিক তার বীজ বহু ক্ষেত্রেই উনিশ শতকের বাঙ্গালী মনীষীরা বপন করেছিলেন। আশুত�োষের কর্মবহুল জীবন এবং তাঁর জীবদ্দশায় বাংলার সমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থায় যে সব যু গান্তকারী পরিবর্তনের সূ চনা হয় তাতে তাঁর অবদান এই প্রবন্ধের মূ ল বিষয়বস্তু। উনিশ শতকের শুরুতে বাঙ্গালীর নতুন চিন্তা ও কর্মপ্রচেষ্টার ব্যাপকতা ছিল আশ্চর্য্যজনক। তার পরিধি ছিল স্থবির সমাজের প্রায় সমস্ত দু র্বলতার কারণ অনু সন্ধান ও সম্ভাব্য প্রতিকারকে জড়িয়ে। প্রায় সব বাঙ্গালী মনীষীই সমাজব্যবস্থার প্রয়�োজনীয় সংস্কারে উপযু ক্ত শিক্ষার প্রসার এবং শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনের ওপর জ�োর দিয়েছেন। রাজা রামম�োহন রায় (১৭৭২-১৮৩০) ১৮১৭ সালে হিন্দু কলেজ স্থাপনে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। হেনরি লু ই ভিভিয়ান ডির�োজিও (১৮০৯-৩১) হিন্দু কলেজের শিক্ষক হিসেবে তাঁর স্বপ্লায়ু জীবনে মুক্তচিন্তার যে আল�োক জ্বালিয়ে গিয়েছিলেন তার মঙ্গলময়ী প্রভা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে বাঙ্গালী যু বসমাজের যাত্রাপথের দিশারী হয়। কর্মবীর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-৯১) তাঁর বহুবিধ সংস্কারউদ্যোগের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে, বিশেষত স্ত্রীশিক্ষার প্রসারে, বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। নবাগত বিদেশীদের মধ্যেও কেঊ কেঊ বাংলার প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় যু গ�োপয�োগী পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে ব্যবসায়ী ডেভিড হেয়ার (১৭৭৫-১৮৪২), যাজক উইলিয়াম কেরী (১৭৬১-১৮৩৪) ও আলেকজান্ডার ডাফ (১৮০৬-৭৮) এবং ইস্ট ইন্ডিয়া ক�োম্পানির সরকারী আইন উপদেষ্টা জন ড্রিঙ্কওয়াটার বেথু নের (১৮০১-৫১) নাম সু পরিচিত। 16

আশুত�োষের পরিবারের আদি বাসস্থান হুগলি জেলার জিরাট গ্রামে। কিন্তু আশুত�োষের পিতা, লব্ধপ্রতিষ্ঠ ডাক্তার, গঙ্গাপ্রসাদ প্রথমে উত্তর এবং পরে দক্ষিণ কলকাতায় বসবাস করতেন। আশুত�োষের জন্ম কলকাতায় এবং তাঁর শিক্ষা ও কর্মজীবন কলকাতাতেই। তাঁর মা জগত্তারিণী দেবী অত্যন্ত তেজস্বী ও স্বাধীনচেতা মহিলা ছিলেন। বিদ্যোৎসাহী উচ্চমধ্যবিত্ত গঙ্গাপ্রসাদ মেধাবী আশুত�োষের প্রতিভার বিকাশে সবিশেষ যত্নশীল ছিলেন। দক্ষিণ কলকাতার সাউথ সু বার্বন স্কুল থেকে ১৮৭৯ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে আশুত�োষ প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্ত্তি হন এবং ১৮৮৪ সালে গণিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে বি এ পাশ করেন। তাঁর পরীক্ষার এই সাফল্য এতই অসামান্য ছিল যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সমাবর্তনে উপাচার্য্য এইচ জি রেনল্ডস্‌ আশুত�োষের কৃতিত্বের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। ১৮৮০ সালে এফ এ ক্লাসের ছাত্র আশুত�োষ ইংল্যান্ডের Messenger of Mathematics জার্নালে “Extensions of a Theorem of Salmon” নামে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করেন এবং বি এ পাশ করার বছরেই London Mathematical Society তাঁকে সভ্য হিসেবে মন�োনীত করে। ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান অর্জন করেন। ১৮৮৫ সালে গণিতে এম এ পরীক্ষায় আশুত�োষ আবারও প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন এবং সমাবর্তনে উপাচার্য্য সি পি ইলবার্ট আবার তাঁর উজ্জ্বল সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। প্রসঙ্গত তিনি আরও জানান যে আশুত�োষ আইন পড়া শুরু করেছেন এবং সেখানেও মেধাভিত্তিক একটি স্বর্ণপদক ইত�োমধ্যেই পেয়েছেন। আইনের ছাত্র আশুত�োষ ১৮৮৬ সালে Natural Sciences, অর্থাৎ Physics এ এম এ এবং প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি (ইংরেজিতে এই বৃত্তি Premchand Roychand Scholarship বা PRS নামেই সমধিক পরিচিত) পরীক্ষায় পাশ করেন। ১৮৮৮ সালে আইনের ডিগ্রী বি এল পাশ করে আশুত�োষ কলকাতা হাই ক�োর্টে আইনজীবী হিসেবে তাঁর পেশাগত জীবন শুরু করেন। ১৮৯৪ সালে তিনি আইনের ডক্টরেট ডিগ্রী Doctor in Law অর্জন করেন। ১৮৯৮ সালে টেগ�োর ল প্রোফেসর হিসেবে আশুত�োষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি বক্তৃ তা দেন যেগুলি পরে The Law of Perpetuities in British India নামে প্রকাশিত হয়। ১৮৯৪ সালে আশুত�োষ কলকাতা হাই ক�োর্টের বিচারকের পদ গ্রহণ করেন এবং অন্যান্য বহুবিধ দায়িত্ব সত্ত্বেও, ১৯২৩ সালে অবসর না নেওয়া পর্য্যন্ত এই পদে কাজ করেন। ১৯২০ তে কয়েক মাসের জন্য তিনি বাংলার প্রধান বিচারপতি হিসেবে কাজ করেন। বিচক্ষণ বিচারক হিসেবে আশুত�োষ প্রায় ২০০০ মামলায় রায় দেন যার মধ্যে বেশ কিছু পরবর্তী সময়ে অন্য অনেক মামলায় কাজে

Anjali

www.batj.org


স্যার আশুতোষ ম ুখোপাধ্যায়

লাগে। আইনজীবী হিসেবেও আশুত�োষের পসার ছিল ব্যাপক, কিন্তু তিনি অনেক অল্প বেতনে এবং অল্প বয়সে যে জজিয়তি করতে রাজী হন তার কারণ এই ব্যবস্থায় তাঁর পক্ষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে বেশী সময় দেওয়া সম্ভব ছিল। হাইক�োর্ট থেকে অবসর নেবার পরের বছর আশুত�োষ উকিল হিসেবে একটি মামলার দায়িত্ব নিয়ে পাটনা যান। এই মামলায় তাঁর পারিশ্রমিক ঠিক হয়েছিল আড়াই লাখ টাকা! উকিল হিসেবে তাঁর খ্যাতি কতটা ছিল পারিশ্রমিকের এই পরিমাণটি তার সাক্ষ্য বহন করে। পেশায় আইনজীবী হলেও গণিতশাস্ত্রের প্রতি আশুত�োষের আকর্ষণ কখনও কমে নি। ১৮৮০ থেকে ১৮৯১ এর মধ্যে তিনি উচ্চতর গণিতে কুড়িটির মত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন এবং আইনজীবিকার পাশাপাশি গণিতজ্ঞদের নানা সম্মেলনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে গণিতের বিভিন্ন শাখায় নিজের অবদানসম্বলিত বক্তৃ তাদি দেন। এ ছাড়াও গণিতশাস্ত্রে আশুত�োষের অসাধারণ ব্যুৎপত্তির পরিচয় বহন করছে ১৮৯৩ এ প্রকাশিত An Elementary Treatise on the Geometry of Conics। ১৮৭৬ সালে, প্রধানত ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের উদ্যোগে, বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার উচ্চতর কেন্দ্র হিসেবে কলকাতায় The Indian Association for the Cultivation of Science প্রতিষ্ঠিত হয়। আশুত�োষ ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৯ পর্য্যন্ত এখানে গণিত ও পদার্থবিদ্যার বিভিন্ন শাখায় নিময়িত পড়াতেন। মেধাবী ছাত্র ও প্রতিভাধর গণিতজ্ঞ হিসেবে আশুত�োষ প্রতিষ্ঠালাভ করেছিলেন তাঁর জীবনের প্রথম তিন দশকের মধ্যেই। আধু নিক বিজ্ঞানচর্চায় আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা ভারতে উনিশ শতকের শেষ দু ই দশকের আগে বিশেষ হয় নি বলা যায়। এই প্রসঙ্গে এটা হয়ত অনেকেরই জানা নেই যে যে পাঁচজন বিজ্ঞানীর অবদানে ভারতীয় গবেষণা বিশ্বের বিজ্ঞানসভায় পরিচিতি পেতে শুরু করে তাঁদের মধ্যে আশুত�োষ ছিলেন একজন (অন্য চার জনের নাম আচার্য্য জগদীশচন্দ্র বসু , আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার এবং ডঃ প্রমথনাথ বসু )। ‘বিজ্ঞানলক্ষীর প্রিয় পশ্চিমমন্দির’ থেকে ‘জয়মাল্যখানি’ এনে ‘দীনহীনা জননীর লজ্জানত শিরে’ পরান�োর জন্য রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রিয় বন্ধু আচার্য্য জগদীশকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তাঁর ‘কল্পনা’ কাব্যগ্রন্থে। আশুত�োষের পান্ডিত্যের স্বীকৃতি দেশ বিদেশের নামী প্রতিষ্ঠান থেকে আসে। লন্ডনের রয়্যাল এশিয়াটিক স�োসাইটি, এডিনবরার রয়্যাল স�োসাইটি, আইরিশ রয়্যাল একাডেমি ও প্যারিসের স�োসাইটি দ্য ফিজীক্‌তাঁকে ফেল�ো নির্বাচিত করে। নবদ্বীপের সংস্কৃ ত পরিষদ থেকে তাঁকে ‘কাব্যবাচস্পতি’ ও ‘সরস্বতী’ উপাধি দেওয়া হয়। তাঁর মস্ত গ�োঁফের সঙ্গে এই শেষ উপাধিটির অসামঞ্জস্য তাঁকে এনে দেয় সু রসিক বাঙ্গালীর দেওয়া ‘সগুম্ফ-সরস্বতী’ উপাধি! মাতৃভাষা এবং মাতৃভূ মির মর্যাদা রক্ষায় আশুত�োষের নির্ভীক বজ্রকন্ঠ ছিল সদাস�োচ্চার। তাঁর দেশবাসী তাই তাঁকে বঙ্গ-শার্দূল বা বাংলার বাঘ বলেও সম্মান জানায়। আশুত�োষ নিজে ১৯০৮ সালে ক্যালকাটা ম্যাথামেটিক্যাল স�োসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং আমৃ ত্যু এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেন। ১৯১১ সালে ব্রিটিশ সম্রাট তাঁকে নাইট (স্যার) উপাধি দেন। Indian Science Congress এর প্রথম অধিবেশন হয় কলকাতায় ১৯১৪ সালে স্যার আশুত�োষের সভাপতিত্বে। বাংলার সাধারণ মানু ষের কাছে অবশ্য আশুত�োষের খ্যাতি প্রধানত দেশের শিক্ষাজগতে তাঁর বহুমুখী অবদানের জন্য। এই বিষয়টিতে যাবার আগে ইংরেজ রাজত্বের প্রথম একশ’ বছরের শিক্ষানীতির দু -একটি দিক দেখে নেওয়া যাক।

ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনে ক�োম্পানীর উদ্যোগ ১৮১৩ সালে ব্রিটিশ সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া ক�োম্পানীর চার্টার পুনর্বহাল করার সময়, ক�োম্পানীর রাজত্বের প্রথম চার দশকের অভিজ্ঞতার আল�োকে, ভারতে শিক্ষাবিস্তারের প্রয়�োজনীয়তা এবং তাতে ক�োম্পানীর দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে। শিক্ষার মান�োন্নয়নের www.batj.org

জন্য এই চার্টার বার্ষিক এক লক্ষ টাকার বাজেটও ধার্য্য করে। ১৮১৭ সালে কলকাতার হিন্দু কলেজের স্থাপনায় এই বাজেটের বরাদ্দ কাজে লেগেছিল। ব্রিটিশ সরকারের উল্লেখয�োগ্য পরবর্তী পদক্ষেপ আসে ১৮৩৫ সালে যখন ইংরেজি ভাষাকে ভারতের উচ্চশিক্ষার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ঘ�োষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্ত শাসকের দিক থেকে হয়ত যু গ�োপয�োগী ছিল কিন্তু এর প্রেরণা এসেছিল গভর্নরের আইন উপদেষ্টা লর্ড টমাস ব্যাবিংটন মেকলের সু চিন্তিত কিন্তু পক্ষপাতদু ষ্ট অভিমত থেকে - যা Macaulay’s Minutes নামে নথিভূ ক্ত হয়ে আছে বিদেশী শাসক ও শাসিত ভারতীয়দের অসম এবং অবজ্ঞাপূ র্ণ সম্পর্কের একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে। মেকলের মতে ভারতীয়দের মাতৃভাষাগুলি ছিল ‘language of slaves’। তিনি আরও একধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেছিলেন ইউর�োপের ভাল ক�োনও পাঠাগারের একটি ‘শেলফ’ এ রাখা সাহিত্যকীর্তির গুণগত মান ভারত এবং আরব দেশের সম্পূর্ণ সাহিত্যভান্ডারের চেয়ে উচ্চতর। মেকলে অবশ্য প্রাচ্যবিদ্যাবত্তায় তাঁর নিজের পান্ডিত্যের অভাব তাঁর Minutes এ স্বীকার করেন। তবে তিনি যে তাঁর নিজের দেশে এবং ভারতবর্ষে প্রাচ্যবিদ্যাবিশারদদের সঙ্গে আল�োচনা করেই তাঁর অভিমত প্রকাশ করছেন এ কথাও বলেন। প্রসঙ্গত মনে রাখা ভাল যে মেকলেরই একজন স্বনামধন্য দেশবাসী স্যার উইলিয়াম জ�োন্স ১৭৮৪ সালে কলকাতায় প্রাচ্যবিদ্যা চর্চার জন্য এশিয়াটিক স�োসাইটি স্থাপনের প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন এবং এখানেই, ১৭৮৬ সালে, তিনি প্রথম তাঁর গবেষণালব্ধ অভিমত প্রচার করেন যে ক্লাসিকাল লাতিন এবং গ্রীক ভাষা খুব সম্ভব সংস্কৃ ত ভাষা থেকে উদ্ভূ ত এবং অনেক দিক থেকে সংস্কৃ ত লাতিন ও গ্রীক ভাষার তুলনায় মার্জিততর। সময়ের ব্যবধানে বিচ্ছিন্ন এবং অসংলগ্ন এইসব প্রস্তাবগুলি ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে শাসকদের উদাসীনতারই পরিচয় বহন করে। শিক্ষার প্রসার ও মান সম্পর্কে নতুন চিন্তা ও পরিকল্পনার প্রয়�োজনীয়তা আছে এই উপলব্ধি থেকেই ইস্ট ইন্ডিয়া ক�োম্পানীর ব�োর্ড অফ কন্ট্রোলের সভ্য স্যার চার্লস উড ১৮৫৪ সালে লন্ডন থেকে কলকাতায় গভর্ণর লর্ড ডালহ�ৌসির কাছে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে একটি বিস্তারিত সু পারিশমালা পাঠান যেটা Wood’s Despatch on Education নামে পরিচিত। এই সু পারিশগুলির ভিত্তিতেই পরবর্তী কয়েক দশক ধরে একটি সর্বভারতীয় শিক্ষানীতি দানা বাঁধে যার প্রভাব শিক্ষার সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ে বলা যায়। এই ডেসপ্যাচের সু পারিশগুলির মধ্যে অন্তত দু টি এই প্রবন্ধের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। প্রথমটি হল শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজির সঙ্গে মাতৃভাষাগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং দ্বিতীয়টি হল লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ধাঁচে কলকাতা, বম্বে এবং মাদ্রাজে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা। এই দু টি বিষয়ের অগ্রগতিতেই আশুত�োষের অবদান অসাধারণ। তাই সেই প্রসঙ্গে যাওয়া যাক। ১৮৫৭ সালে প্রস্তাবিত এই তিনটি বিশ্বাবিদ্যালয় তিনটি শহরে স্থাপিত হয়।

বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব, বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার প্রস্তাব ও জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসে বিশ শতকের প্রথম দশককে একটি ক্রান্তিকাল বলা যেতে পারে। ইংরেজি শিক্ষিত বাঙ্গালী তাদের প্রতি শাসকশেণীর ঊদ্ধত এবং বৈষম্যমূ লক ব্যবহারে যখন ক্ষু ব্ধ ও বিরক্ত তখনই জর্জ ন্যাথানিয়েল কার্জন (১৮৫৯-১৯২৫) ভাইসরয় হিসেবে কলকাতায় এলেন ১৮৯৮ সালে। শিক্ষিত ভারতীয়ের প্রতি কার্জনও বন্ধু ভাবাপন্ন ছিলেন না কারণ অন্য অনেক ইংরেজের মত তিনিও মনে করতেন যে শিক্ষিত ভারতীয়রা ইংরেজ শাসনের সু ফলগুলির প্রতি যথেষ্ট কৃ তজ্ঞ নয়। ১৮৯৮ থেকে ১৯০৫ পর্য্যন্ত কার্জন বড়লাট হিসেবে ভারতে ছিলেন এবং ভাল�োমন্দ মিশিয়ে অনেক পরিবর্তন তিনি আনতে চেষ্টা করেছিলেন। এর মধ্যে যে দু টি পরিবর্তন-প্রস্তাব শিক্ষিত বাঙ্গালীকে বিশেষভাবে নাড়া দিয়েছিল তা

Durga Puja 2014

17


স্যার আশুতোষ ম ুখোপাধ্যায়

ছিল ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার প্রস্তাব এবং ‘বঙ্গভঙ্গ’ প্রস্তাব। এ দু টি প্রস্তাবই ১৯০৪ সালে আইনসভার অনু ম�োদন পেয়ে সরকারী সিদ্ধান্তরূপে গৃহীত হয়। বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব বাঙ্গালী সমাজের চ�োখে দেখা দেয় ইংরেজের হিন্দু-মুসলমান সামাজিক বিভেদব�োধকে বাড়িয়ে নিজেদের কাজে লাগান�োর অপচেষ্টা হিসেবে, আর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার প্রস্তাব দেখা দেয় উচ্চশিক্ষাব্যবস্থায় সরকারী কর্ত্তৃত্বকে সর্বগ্রাসী করে ত�োলার অভিসন্ধি হিসেবে। বঙ্গভঙ্গের বিরূদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয় তাতে সমস্ত বাঙ্গালী সমাজ জড়িয়ে পড়েছিল বলা যায়, যদিও অনেক শিক্ষিত বাঙ্গালী মুসলমানের কাছে এই প্রতিবাদ তাদের আর্থিক এবং সামাজিক অগ্রগতির প্রতি হিন্দু বাঙ্গালীর উদাসীনতার পরিচয় বহন করে এনেছিল। এই দিক থেকে দেখলে এই সময় থেকেই ব্রিটিশের ‘divide-and-rule’ নীতি বিশেষভাবে ফলপ্রসূ হতে শুরু করে এবং এর সমাপ্তি হয় ১৯৪৭ সালে ‘divide-and-quit’ এর বঙ্গ- এবং ভারত-ব্যবচ্ছেদে। শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবের বিরূদ্ধে জাতীয়তাবাদী নেতৃবৃ ন্দ এবং সাধারণ মানু ষের প্রতিবাদ শাসকশ্রণীর বিরাগ ও বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে ঠিকই, কিন্ত বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থা কী হবে এবং কী ভাবে হবে তা নিয়ে ক�োন সু নির্দ্দিষ্ট চিন্তা বা পরিকল্পনা সেই মুহূর্তে ছিল না। রবীন্দ্রনাথ ‘ইউনিভার্সিটি বিল’ নামে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধে লিখেছিলেন “বিশেষ প্রয়�োজন হইয়াছে – নিজেদের বিদ্যাদানের ব্যবস্থাভার নিজেরা গ্রহণ করা”। পরে একটি জনসভায় তিনি আরও একধাপ এগিয়ে এইমত ব্যক্ত করেন যে “আমাদের শিক্ষাকে স্বাধীন করিবার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করিবার সময় এখন উপস্থিত হইয়াছে”। এই প্রতিবাদী চিন্তার অঙ্গ হিসেবে এসে পড়ে বিদেশী-শিক্ষা বর্জনের প্রয়�োজনীয়তা। ইংরেজি-মাধ্যম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘গ�োলদীঘির গ�োলামখানা’ বলে অভিহিত করা চালু হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সেরা ছাত্র ১৯০৫ সালের শেষের দিকে আসন্ন এম এ এবং পি আর এস পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান জানান। পরে অবশ্য নেতাদের পরামর্শে এই প্রস্তাব কার্য্যকরী করা হয় নি, যদিও কলকাতা এবং মফস্বলের স্কুলকলেজের প্রায় ৫০,০০০ মত ছাত্র-ছাত্রী স্কুল-কলেজ ছেড়ে বেরিয়ে আসে বিদেশী-শিক্ষা বর্জনের প্রতীকি প্রতিবাদে। যে সব গঠনমূ লক ধারণা এই আন্দোলন থেকে আসে তার মধ্যে ছিল মাতৃভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা, ইংরেজিভাষা শেখা বাধ্যতামূ লক করা এবং একটি জাতীয় শিক্ষা-পরিষদ গঠন করা। এই ঘটনাগুলি বর্তমান প্রবন্ধের মূ ল বিষয়বস্তু নয় বলে এদের বিশদে আার না গিয়ে আশুত�োষ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাওয়া যাক।

শিক্ষাসংস্কারের মহাযজ্ঞে আশুত�োষের নির্ভীক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আশুত�োষ দেশব্যাপী এই প্রতিবাদ আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে পারেন নি। স্বদেশের মর্য্যাদা রক্ষার খাতিরে স্কুল-কলেজ বর্জনের সিদ্ধান্তকে আশুত�োষ ‘জাতীয়-সর্বনাশ’ বলে অভিহিত করে বলেছিলেন যে তাঁর নিজের উদ্দ্যেশ্য হবে দেশের তরুণ সম্প্রদায়কে ভৃত্যসু লভ মন�োভাব এবং একগুঁয়েমি এই দু টি প্রবণতা থেকে সরিয়ে আনা। দেশের এই প্রতিবাদ আন্দোলনের মধ্যেই শিক্ষাসংস্কার বিল বঙ্গীয় আইনসভায় আল�োচনার জন্য আসে এবং আশুত�োষ এই সভার সভ্য হিসেবে দিনের পর দিন এই বিলের সমাল�োচনায় অংশ নিয়ে এর গঠনমূ লক দিকগুলির সংরক্ষণ এবং নেতিবাচক দিকগুলির পরিবর্তনে সচেষ্ট হন। আইনসভার এই বিতর্কগুলি আশুত�োষের প্রখর বুদ্ধিমত্ত্বা, গভীর স্বদেশপ্রেম, যু ক্তিবাদী বাগ্মীতা এবং শক্তিশালী শাসকের থেকে কতটা ন্যয্য প্রাপ্য আদায় করা সম্ভব তার সম্বন্ধে দু র্লভ বাস্তববাদিতার পরিচয় বহন করে।

শাসন ভারতবাসী বিশেষত বাঙ্গালীর কাছে গভীরভাবে নিন্দিত, ঠিক সেই সময়, ১৯০৬ সালে, ভাইসরয় লর্ড মিন্টো আশুত�োষকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য হিসেবে মন�োনীত করেন। এই সিদ্ধান্তটি আশুত�োষকে একই সঙ্গে একটি বিশাল সু ্য�োগ এবং একটি গুরু দায়িত্বভার এনে দেয়। ১৯১৪ সাল পর্য্যন্ত তিনি একটানা এই পদে থেকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক ও সু দূরপ্রসারি পরিবর্তন আনতে সাহায্য করেন। মনে রাখা দরকার যে এই সময় উপাচার্য্যের পদ ছিল অবৈতনিক। ১৯২১ সালে আবারও আশুত�োষ উপাচার্য্য পদে আসেন, কিন্তু সে কথায় পরে আসা যাবে। উপাচার্য্য হিসেবে আশুত�োষের অন্যতম প্রথম কাজ ছিল যেসব স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষাবর্জনের ডাকে বেরিয়ে এসেছিল তাদের এবং তাদের ‘প্রশ্রয়দাতা’ স্কুল-কলেজগুলিকে সরকারী শিক্ষার আওতা থেকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত থেকে বড়লাটকে বিরত করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থায় মাতৃভাষার অন্তর্ভূক্তি নিয়ে আল�োচনা বেশ কয়েক বছর ধরে চলেছিল এবং ১৮৯০ এর দশকে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের মত নেতাদের পৃষ্ঠপ�োষকতা সত্ত্বেও এটা গ্রহণয�োগ্য হয়নি। উপাচার্য্য হিসেবে আশুত�োষ উচ্চশিক্ষাকেন্দ্রে মাতৃভাষাগুলি ব্যবহার দেশবাসীর ‘ন্যায্য অধিকার’ হিসেবে আদায় এবং প্রচলন করে যান। কিন্তু আশুত�োষ বিজ্ঞানশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজিভাষাকেই রাখেন যাতে ‘পশ্চিমের আল�ো পশ্চিমের জানালা দিয়েই ছাত্রদের কাছে পৌঁছয়’। এখানে মজার ব্যাপার এই যে, জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের বির�োধী আশুত�োষের হাত ধরেই জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের দু টি মূ ল লক্ষ্য – মাতৃভাষার স্বীকৃতি এবং ইংরেজি শিক্ষা বজায় রাখা – পূ র্ণতা পেল! আশুত�োষের আগে পর্য্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাজ ছিল কেবলমাত্র স্কুল-কলেজগুলির পরীক্ষাদি পরিচালনা করা। শিক্ষাদানের ক�োনও ভূ মিকা তাদের ছিল না। ১৯০৪ এর ইউনিভার্সিটি আইনের সু য�োগ নিয়েই আশুত�োষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি বিষয়ে স্নাতক�োত্তর শিক্ষাদানের ব্যবস্থা চালু করেন। ১৯০৮ থেকে ১৯১২ সালের মধ্যে কলাশাখায় গণিত, দর্শনশাস্ত্র এবং অর্থনীতি সহ নয়টি বিষয়ে পড়ান�ো ও গবেষণার ব্যবস্থা হয়। ১৯০৯ সালে আইন কলেজের জন্ম হয়। এই সব বিষয়ের বিভিন্ন শাখায় কয়েকটি প্রোফেসর (চেয়ার) নিয়�োগ করারও ব্যবস্থা হয় সরকারী অনু দানে। তবে ভারতীয় ভাষাগুলি বিশ্ববিদ্যালয়-স্তরে পড়ান�ো শুরু হতে আরও এক দশক সময় লেগেছিল। বিজ্ঞানশাখায় উচ্চতর শিক্ষাদান অবশ্যই ছিল আরও ব্যয়সাপেক্ষ। ১৯১১ সালে রাজধানী দিল্লীতে স্থানান্তরিত হয়ে যাওয়ায় সরকারের সঙ্গে সরাসরি য�োগায�োগ করার সু য�োগ অনেকটা ক্ষীণ হয়ে যায়। এ ছাড়া সরকারবির�োধী আন্দোলনে বাংলার নেতৃত্ব শাসক ইংরেজকে করে দেয় বাংলা-বিদ্বেষী। তাই অতিরিক্ত সরকারী আর্থিক সাহায্যের সম্ভাবনা প্রায় বিলু প্ত হয়ে যায়। কিন্তু সহজে হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র আশুত�োষ ছিলেন না। তাই বিজ্ঞানশাখায় স্নাতক�োত্তর শিক্ষাদানের সংকল্প তিনি ত্যাগ করেননি। দেশের অবস্থাপন্ন শিক্ষানু রাগী বন্ধুবান্ধব বা পরিচিত মানু ষের কাছে তিনি উচ্চশিক্ষার নামে সাহায্যের আবেদন রাখলেন এবং অনেকটা অভাবনীয়ভাবেই সাহায্য এল একাধিক সু প্রতিষ্ঠিত মানু ষের কাছ থেকে। প্রথিতযশা আইনজ্ঞ তারকনাথ পালিত এবং রাসবিহারী

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আশুত�োষের ছাত্রজীবনে যে সম্পর্ক শুরু হয়েছিল তা বিভিন্নভাবে আমৃ ত্যু বজায় ছিল। ১৮৮৯ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভ্য মন�োনীত হন, এছাড়া তিনি ব�োর্ড অফ স্টাডিজ ইন ম্যাথামেটিক্স এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেশ কয়েক বছর কাজ করেন। যখন ব্রিটিশ 18

Anjali

www.batj.org


স্যার আশুতোষ ম ুখোপাধ্যায়

ঘ�োষ দু জনেই জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষার জন্য আশুত�োষের প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানাতে তাঁরা এগিয়ে আসেন। ১৯১২ সালে তারকনাথ দু -দফায় ১৪ লক্ষ টাকারও বেশী বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেন বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রসারে কাজে লাগান�োর জন্য। কথায় বলে ‘জহুরী রতন চেনে’। জহুরী আশুত�োষের উদ্যোগে এই অর্থে রসায়ন শাস্ত্রে এবং পদার্থবিদ্যায় পালিতের নামে দু টি অধ্যাপক পদ সৃষ্টি করা হয় যার প্রথমটি আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় এবং দ্বিতীয়টিতে সি ভি রমণের মত দু ই রত্নকে দেওয়া হয়। রমণের পর এই পদে এসেছিলেন আধু নিক বিজ্ঞানের আর এক দিকপাল, ডক্টর মেঘনাদ সাহা। এঁদের সবাইকে নিয়ে আসেন আশুত�োষ, যদিও যখন তাঁরা তাঁদের পদে য�োগ দেন তখন আশুত�োষ আর উপাচার্য্য নন। আশুত�োষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিরলস কাজ করে যেতেন সম্ভবত শিক্ষার প্রসার এবং মান�োন্নয়নের প্রতি আন্তরিক কর্তব্যব�োধ থেকে, শুধু উচ্চপদের দায়িত্বব�োধ থেকে নয়। বাংলার গভর্ণর লিটন আশুত�োষের এই আগ্রহ লক্ষ করে মন্তব্য করেছিলেন “Asutosh …….. represented the University so completely that, for many years, Asutosh was in fact the University and the University Asutosh”। রাসবিহারী ঘ�োষ ১৯১৪ সালে প্রায় সাড়ে দশ লক্ষ টাকা দেন যার থেকে ঘ�োষ-অধ্যাপক নামে আরও চারটি চেয়ার সৃষ্ট হয় ফলিত গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং উদ্ভিদবিদ্যায় যেগুলি পান গণেশ প্রসাদ, ডি এম বসু , পি সি মিত্র এবং এস পি আগারকার। ১৯১৪’র মার্চ মাসে আপার সারকুলার র�োডে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। এই বিজ্ঞান কলেজ ভারতে আধু নিক বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে। পি সি রায়, সি ভি রমন ছাড়াও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের মধ্যে ছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু , মেঘনাদ সাহা, শিশির মিত্র, নিখিলরঞ্জন সেন, ফণীন্দ্রনাথ ঘ�োষ ও জ্ঞানচন্দ্র ঘ�োষের মত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষক-গবেষকরা। এঁরাও সবাই বিজ্ঞান কলেজে এসেছিলেন আশুত�োষেরই উদ্যোগে। বিজ্ঞান চর্চার এই অসাধারণ সু য�োগগুলি অতি অল্পসময়ের মধ্যে সৃষ্টি হয় প্রয়�োজনীয় অতিরিক্ত সরকারী অনু দান ছাড়াই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শাখাও কিন্তু অবহেলিত ছিল না। ১৯২০-২১ সালে খয়রার কুমার গুরুপ্রসাদ সিংহ প্রায় ছ’লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেন যার থেকে ফাইন আর্টস, ভাষাতত্ত্ব, কৃষিবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নে পাঁচটি চেয়ার সৃষ্ট হয়। কলাশাখার বিভিন্ন বিভাগে যে সব পন্ডিত অধ্যাপক ছিলেন তাঁদের মধ্যে ভাষাতাত্ত্বিক সু নীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়, দীনেশচন্দ্র সেন ও সু কুমার সেন, দার্শনিক ব্রজেন্দ্রনাথ শীল ও সর্বপল্লি রাধাকৃ ষ্ণণ, ইতিহাসবিদ এইচ সি রায়চ�ৌধু রী এবং রমেশচন্দ্র মজুমদার প্রমুখ। ডক্টর রাধাকৃ ষ্ণণ আশুত�োষের সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছিলেন “genius anticipates experience will deliver”। আশুত�োষ অপেক্ষাকৃ ত অজ্ঞাত শিক্ষক-গবেষকের মধ্যেও যে প্রতিভার আভাস খুঁজে পেতেন তার অন্যতম উদাহরণ রাধাকৃ ষ্ণণ নিজে। আশুত�োষ তাঁকে মহীশূ র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ লেকচারারের পদ থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন পন্ডিত-প্রবর আচার্য্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের জায়গায়! রাধাকৃ ষ্ণণ পরে অক্সফ�োর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক এবং স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের কৃ তী ছাত্র, ভারতের প্রথম রাষ্টপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ এক সময় কলকাতা হাইক�োর্টে ওকালতি করতেন। একবার জজ আশুত�োষের এজলাসে তাঁর কেস পড়ে। কেসটা শেষ হবার দু -একদিন পরে আশুত�োষ রাজেন্দ্রপ্রসাদকে ডেকে পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কলেজে পার্ট-টাইম পড়াবার প্রস্তাব দেন এবং তাঁর সবিস্ময় সম্মতিক্রমে তাঁকে নিয়�োগ করেন। বহুভাষাবিদ ডক্টর মহম্মদ শহীদু ল্লাহ্‌ প্রথম জীবনে সংস্কৃ ত, তুলনামূ লক ভাষাতত্ত্ব এবং আইনে ডিগ্রী করে বসিরহাট ক�োর্টে পসারহীন উকিল হিসেবে কাজ করছিলেন। এক বন্ধু র পরামর্শে তিনি আশুত�োষের সঙ্গে দেখা করে পরামর্শ চান। আশুত�োষ তাঁকে ওকালতি ছেড়ে অধ্যাপক দীনেশচন্দ্র সেনের কাছে গবেষণাসহায়ক হিসেবে কাজ করার পরামর্শ এবং প্রয়�োজনীয় নিয়�োগ দেন। শহীদু ল্লাহ্‌সাহেব পরে প্যারিসের স�োরব�োঁ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বনামধন্য অধ্যাপক এবং গবেষক www.batj.org

হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেন। অবিভক্ত বাংলার আর একজন কৃ তী সন্তান (পরে শেরে-এ-বাংলা) ফজলু ল হকসাহেব ছিলেন গণিতের মেধাবী ছাত্র। আইনে ডিগ্রী করার পর তিনি আশুত�োষের জুনিয়র হিসেবে কলকাতা হাইক�োর্টে ওকালতি শুরু করেন এবং পরে বিশেষ পসার অর্জন করেন। আশুত�োষের পরিবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সারাজীবন এতই ঘনিষ্ঠ ছিল যে ১৯৫৩ সালে আশুত�োষের পুত্র শ্যামাপ্রসাদের আকস্মিক মৃ ত্যুর খবরে তিনি ঢাকা থেকে শ্যামাপ্রসাদের বড় ভাই রমাপ্রসাদকে লিখেছিলেন ‘পৃথিবীতে আমার একমাত্র ভাইয়ের মৃ ত্যু আমাকে উন্মাদ করে তুলেছে। বিশ্বাস কর, আমার এ বেদনা ত�োমাদের চেয়েও কম হৃদয়বিদারক নয়’।

উপাচার্য্য হিসেবে আশুত�োষের দ্বিতীয় পর্ব এবং তাঁর জীবনের শেষ পর্ব ১৯১৪ সালের পর উপাচার্য্য না থাকলেও আশুত�োষ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে এবং নানাবিধ সংস্কারে নিয়মিত সময় দিতেন। ইংরেজ শিক্ষাবিদ মাইকেল স্যাডলারের নেতৃত্বে শিক্ষাসংস্কার সংক্রান্ত একটি কমিশন (১৯১৭-১৯) অনেকগুলি সু চিন্তিত এবং ভবিষ্যতমুখী সু পারিশ বিবেচনার জন্য সরকারকে দেয়। আশুত�োষ এই কমিশনের একজন উৎসাহী সদস্য ছিলেন এবং সু পারিশগুলির প্রস্তুতিতে তাঁর অবদান ছিল প্রভূ ত কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যত সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব সু চিন্তিত মতামত ও পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনে সরকারী আর্থিক অনু দান বাড়াতে সরকার উৎসাহী ছিল না। তা সত্ত্বেও ১৯২১ সালে সরকারের আমন্ত্রণে আশুত�োষ আবারও উপাচার্য্য হতে রাজী হন। কিন্ত সরকারের শিক্ষানীতির অনু দারতায় হতাশ হয়ে উপাচার্য্য হিসেবে ১৯২২ সালে তিনি একটি জ্বালাময়ী ভাষণে সেনেটের সদস্যদের বলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অনু গত সন্তান’ হিসেবে, প্রয়�োজনব�োধে, তাঁরা যেন নির্দ্বিধায় সরকারী শিক্ষানীতির বির�োধিতা করেন। ব�োধগম্য কারণেই সরকার এতে বিরক্ত হয়। তা সত্ত্বেও আশুত�োষের কর্মক্ষমতা ও য�োগ্যতার ওপর পরিপুর্ণ আস্থা থেকে ভাইসরয় লিটন ১৯২৩ সালে কতকগুলি শর্তসাপেক্ষে আশুত�োষের মেয়াদ বাড়ান�োর প্রস্তাব দেন। এর মধ্যে প্রধান শর্ত ছিল সরকারী নীতির বির�োধিতা থেকে বিরত থাকার আশ্বাস দেওয়া। স্বাধীনচেতা বঙ্গশার্দূল এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জবাব দেন এই ভাষায় - ‘It may not be impossible for you to secure the services of a subservient Vice-Chancellor, prepared always to carry out the mandates of your government and act as a spy on the senate. ….. He will certainly not enjoy the confidence of Bengal. …. I send you without hesitation the only answer which an honourable man can send, which you and your advisers expect and desire. I decline the insulting offer you have made to me.’ স্বল্পস্থায়ী এই দ্বিতীয় পর্বে আশুত�োষ তাঁর দীর্ঘদিনের একটি প্রচেষ্টার সাফল্য দেখে যেতে পেরেছিলেন। এই দু ই বছরে ভারতীয় মাতৃভাষার অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যতালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়। তাঁর এই সাফল্যের মূ ল্যায়ন করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, “দেশে বিদ্যাশিক্ষার যে সরকারি কারখানা আছে তার চাকায় সামান্য কিছু বদল করতে হলে অনেক হাতুড়ি পেটাপেটির দরকার হয়। সে খুব শক্ত হাতের কর্ম। সেই শক্ত হাতই ছিল আশু মুখুজ্জে মশায়ের। বাঙ্গালীর ছেলে ইংরেজিবিদ্যায় যতই পাকা হ�োক, তবু শিক্ষা পুর�ো করার জন্যে তাকে বাংলা শিখতেই হবে, ঠেলা দিয়ে মুখুজ্জেমশায় বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়কে এতটা দূ র পর্য্যন্ত বিচলিত করেছিলেন”। পরের বছর ১৯২৪ সালে উকিল আশুত�োষ একটি মামলার ভার নিয়ে পাটনায় যান, কিন্তু মামলা শেষ হবার আগেই ২৫শে মে হঠাৎ তাঁর মৃ ত্যু হয়। তাঁর মৃ ত্যুতে বাংলার শিক্ষা এবং সমাজজীবনের এক অপূ রণীয় ক্ষতি হয়। ১৯১৭-১৯ এর শিক্ষা কমিশনের সহকর্মী হিসেবে আশুত�োষকে কমিশনের নেতা সু পন্ডিত স্যাডলার খুব ঘনিষ্ঠভাবে জানার সু য�োগ পেয়েছিলেন। আশুত�োষের মৃ ত্যুতে তিনি তাঁর শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বলেন, “In Asutosh Mookerjee India has lost one of her greatest men; the world one of its

Durga Puja 2014

19


স্যার আশুতোষ ম ুখোপাধ্যায়

commanding personalities. He was mighty in battle. He could have ruled an empire. But he gave the best of his powers to education because he believed that in education rightly lies the secret of human welfare and the key to every empire’s moral strength”.

মানু ষ আশুত�োষ কথায় বলে ‘দ�োষে-গুণে মানু ষ’। আশুত�োষের চরিত্রেও নানা বৈপরীত্য ছিল। কিছু কিছু ব্যাপারে তিনি তাঁর সময়কার উচ্চমধ্যবিত্ত হিন্দু ব্রাহ্মণের রক্ষণশীল মানসিকতার ঊর্দ্ধে ছিলেন না। যেমন তিনি সমুদ্র পেরিয়ে বিদেশে যান নি, এমন কি বড়লাটের বিশেষ উপর�োধেও। আবার তিনি তাঁর বাল্য-বিধবা কন্যা কমলার দ্বিতীয়বার বিবাহ দিয়েছিলেন রক্ষণশীল সমাজের হৃদয়হীন নানা কটূ ক্তি এবং আপত্তি সত্ত্বেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তা হিসেবে তাঁর দু র্নাম ছিল স্বজনপ�োষক বলে। এ বিষয়ে তাঁর আত্মীয়স্বজন, এমন কি পুত্রদের, কারুর কারুর পরীক্ষার ফলাফল পাল্টান�োর নানা গুজব শ�োনা যেত। বন্ধু রবীন্দ্রনাথের জামাই নগেন গাঙ্গুলীকে অধ্যাপক হিসেবে নিয়�োগ দেওয়ার জন্য আশুত�োষ নিজে উদ্যোগী হয়েছিলেন এ কথা

সমসাময়িক অনেকেরই জানা ছিল। অবশ্য পরিবার-প�োষণের একটা ধারা হয়ত বাঙ্গালী চরিত্রে আছে। রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীর নামও বাঙ্গালীর ব্যঙ্গে হয়েছিল ‘বিশ্ব বা রথী’!!

উপসংহার আশুত�োষের অপেক্ষাকৃ ত স্বল্পায়ু জীবন অবশ্যই সাফল্যে ভরা। অবহেলিত মাতৃভাষাকে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রমে মর্য্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন - এটা তাঁকে দেশবাসীর হৃদয়ে অমরত্ব দিয়েছে বলা যায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আশুত�োষের আবক্ষ একটি মূ র্তি আছে তার নীচে ইংরেজিভাষায় এই ছ�োট্ট পংক্তিটি তাঁর সেই শ্রেষ্ঠ অবদানের স্বীকৃতি ঘ�োষণা করছে ‘বিমাতার কক্ষে মাতার কন্ঠস্বর’ সসম্মানে শ্রবণে আনার জন্য। “His noblest achievement, surest of them all, A place for his mother tongue In stepmother’s hall.”

মন্তব্য ও তথ্যসূ ত্রাদি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃ তি-বলয়ের বাইরে, বিদেশে বসে বাংলা-কেন্দ্রিক বিষয়ের চর্চা পরভৃত হয়ে করা ছাড়া উপায় থাকে না। তবুও দূ রকে-নিকট-করা আন্তর্জালের (ইন্টারনেট) কল্যাণে অনেক মূ ল্যবান প্রকাশনা বা মন্তব্য ঘরে বসে দেখার সু য�োগ হয়। কলকাতা এবং ঢাকার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সাহিত্য-বিষয়ক রচনা নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে থাকে। তারই কিছু -কিছু র ওপর এবং ইন্টারনেট-সূ ত্রে পাওয়া প্রাসঙ্গিক তথ্যাদির সাহায্য নিয়ে এই প্রবন্ধটি লেখা হয়েছে। যে সব বিশেষজ্ঞের লেখা বিশেষ কাজে লেগেছে তাঁদের তালিকা নীচে দেওয়া হল। সন-তারিখের হিসেব দেওয়া সম্ভব হল না তার প্রধান কারণ দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চিত পত্র-পত্রিকার প্রিন্ট-আউটের সবগুল�োতে সন-তারিখ নেই। ক�োথাও ক�োথাও ক�োন লেখকের নামও নেই। D.P. Sengupta, ‘Sir Ashutosh Mookerjee - Educationist, leader and institution-builder’, Current Sciences, vol. 78, No. 12, 25 June, 2000. Sir Asutosh Mookerjee: Mathematician, Jurist and Educationist. (http:www.vigyanprasar.gov.in/ radioserials/asutosh mookerjee pdf) Downloaded 30 July 2014 University of Calcutta, about the University (http://caluniv.ac.in/about/defining-Events.html) Downloaded 2 August 2014. Sonku Bilas Roy and Subir K. Sen, ‘Scientific research papers by native Bengali authors during the nineteenth century’, Current Science, vol, 99, No. 12 25 December 2010. S. C. Ghosh, ‘Calcutta University and Science’, Indian Journal of History of Science, 29(1), 1994. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শিক্ষার স্বাঙ্গীকরণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পশ্চিম-যাত্রীর ডায়ারি। আনিসু জ্জমান, ‘জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ’, আনিসু জ্জামান (সম্পাদক), সার্ধশতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ - বাংলাদেশের শ্রদ্ধাঞ্জলি, বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ ১৪১৯। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫০১-১৭। সন্দীপ দাস, ‘এক মহাজীবনের নাম শ্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখ�োপাধ্যায়’, দেশ, ৪ঠা জুলাই, ২০০১, পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৭-২৯। কুলদা রায় ও এম এম আর জালাল, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বির�োধিতা এবং রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য মিথ্যা মিথ’, জনকন্ঠ, ১১ অক্টোবর, ২০১১।

[Srikanta Chatterjee is an Emeritus Professor of Economics at Massey University, New Zealand] 20

Anjali

www.batj.org


পঁ য়ত্রিশ বছর আগের এক দ   - তপন কুমার রা

রিহরকে যেমন একদিন নিশ্চিন্দিপুর ছাড়তে হয়েছিল সাংসারিক ও সামাজিক কারণে, আমাকেও আমাদের য�ৌথ পরিবারের মধ্য কলকাতার বাসস্থান সু ন্দরীম�োহন অ্যাভিনিউ-এর পাট এবার পাকাপাকিভাবে গ�োটাতে হ�োল । বাড়ীতে আমাদের ঘরে যা কিছু আসবাব ও অন্য জিনিসপত্র ছিল, সবকিছু গ�োছগাছ করে নিয়ে এলাম। কয়েকমাস আগে একদিন এই কাজটা করতে গিয়ে কালঘাম ছু টে গিয়েছিল । ভারী আসবাবপত্র কন্ট্রাকটারের ল�োকজন ট্রাকে চাপিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যাবার পর ঘন্টা কয়েক পরিশ্রমের পর প্রচুর ধু ল�ো ঘেঁটে অনেক অনাবশ্যক কাগজপত্তর ফেলে দিয়েও কিছু ছবি, পুর�োন�ো অ্যালবাম, কিছু স্মৃতি জড়ান�ো চিঠি ইত্যাদি কয়েকটা ব্যাগে ভরে নতুন বাসস্থানে নিয়ে এলাম । এর মধ্যে চ�োখে পড়ল�ো একটা ১৯৭৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারী, রবিবারের (২৮শে মাঘ ১৩৮৫) আনন্দবাজার পত্রিকা । কাগজটার বয়স প্রায় পঁয়ত্রিশ বছরের কিছু বেশী । কাগজটা একেবারে হলদে হয়ে ভাঁজে ভাঁজে ফেটে গেছে । খুব সাবধানে একটা বড় খামে ভরে এবাড়ীতে নিয়ে এসেছি । কাগজটা যত্ন করে রাখার কারণ হ�োল ওর

প্রথম পাতার একটি ছবি । দু টি শিশু একটা বাগানে বিরাট একটা ডালিয়া ফুলের পাশে খেলছে । ওই শিশু দু টির মধ্য একজন হ�োল আমার কন্যা । ওর তখন বয়স চার ছাড়িয়েছে । আগের শুক্রবার অর্থাৎ ন’তারিখে আমরা আলিপুরের হর্টিকালচারে ফুলের প্রদর্শনী দেখতে গিয়েছিলাম । পৌঁছতেই কয়েকজন ফ�োট�োগ্রাফার আমাদের অনু মতি নিয়ে আমার কন্যা এবং আরেকটি বাচ্চা মেয়ে য�োগাড় করে ওদের নিয়ে রীতিমত ফ�োট�ো সেশন করে ফেলল�ো । ওদের ছবি ত�োলা হলে আমরা ফুলের সমার�োহ দেখে ফিরব�ো । সে সময় একজন ফ�োট�ো গ্ রাফ া র ভদ্রল�োক আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, “আজ রাত্রে দূ রদর্শনে খবর দেখবেন”। আ রেকজ ন বললেন, “ এই র�োববার যদি ভুট্টোর ফাঁসি না হয়, আনন্দবাজারের প্রথম পাতায় ছবি থাকবে । যতদূ র মন পড়ে ওনার নাম দেবীপ্রসাদ সিংহ । তখন দূ রদর্শন ছিল সাদা কাল�ো । সন্ধ্যেবেলা সাতটা আর রাত ন’টার সময় ইংরেজী খবর হ�োত । ছন্দা সেন খবর শুরু করলেন www.batj.org

বনফুলের মৃ ত্যু সংবাদ দিয়ে । ওনার লেক টাউনের বাড়ীতে ফুলে ঢাকা দেহর ছবি । খবর শেষ হ�োল পুষ্প প্রদর্শনীর খবর দিয়ে । আমার কন্যা তার সঙ্গীর সঙ্গে ফুলের মধ্যে দ�ৌড়ে একদিক থেকে আরেক দিকে গেল । পরিচিত কয়েকজনকে ফ�োন করে ন’টার সময় ইংরেজী খবরটা দেখতে বললাম । কয়েকদিন হ�োল কাগজটা দেখতে দেখতে মনটা যেন পঁয়ত্রিশ বছর পিছিয়ে গেল । কাগজটা মাত্র ছ’পাতার । রবিবাসরীয়টা এর সঙ্গে ছিলনা । প্রথম পাতায় রাজনীতির খবর । কয়েকটা হেডিং বেশ ইন্টারেস্টিং । ‘ইরানে রক্তক্ষয়ী যু দ্ধে কয়েক শ হতাহত’। রাজকীয় বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষু ব্ধ সেনানীর লড়াই । প্রধানমন্ত্রী শাপুরকে গদি ছাড়তে আদেশ করেছেন বাজারগান । এর পর ‘অটল চীন ঘুরে এলে ক�োসিগিন আসবেন’, ‘ভুট্টোকে বাঁচাতে ব্রেজনেভের আবেদন’, ‘বিহারে বিদ্ যুৎ ধর্মঘট ম�োকাবিলায় সেনাবাহিনী’, ‘কমলকুমার মজুমদারের মৃ ত্যু’, ‘সঞ্জয় গান্ধী রাজনীতি ছাড়েননি’, ‘ওড়িষ্যার পঞ্চায়েত নির্বাচন আরও ছ’মাস পিছিয়ে গেল’, ‘নানা রাজ্যে আত্মকলহে কংগ্রেস-ই নেতৃত্ব বিচলিত’, ‘পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারে জনসমর্থন আছে কিন্তু কাজ তেমন হচ্ছেনা’ ইত্যাদি । দ্বিতীয় ও তৃতীয় পাতা বিজ্ঞাপনে ভর্তি । কেবল দ্বিতীয় পাতার নিচে

গ�োয়েন্দা রিপ ও অরণ্যদেব ।

চতুর্থ পাতায় সম্পাদকীয়, সম্পাদক সমীপেষু , সন্তোষ কুমার ঘ�োষের কলাম, প্রথম পাতার সংবাদের শেষাংশ, আর বিধানসভার কার্যবিবরণী । সম্পাদকীয়তে প্রথমটি শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ আর পরেরটায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পাঁচটির মধ্যে মাত্র একটি টেস্টে হারিয়ে বাকী তিনটিতে ড্র করার জন্য সমাল�োচনা । সম্পাদক সমীপেষু তে জনৈক আবু তাহের, কলি-২৩ থেকে অভিয�োগ করেছেন উর্দু ভাষী মুসলমানদের ছ’টি কাগজ আছে কলকাতায়, অথচ আনন্দবাজার বাঙালী মুসলমানদের জন্য কিছু লেখেনা কেন । একজন মহিলা রাস্তায় মহিলাদের জন্য প্রস্রাবাগার কম থাকার জন্য পুরসভার দৃ ষ্টি আকর্ষণ করেছেন । মজার ব্যাপার হ�োল এই সব চিঠির সঙ্গে সু ন্দর সু ন্দর ব্যঙ্গ চিত্র (সম্ভবত চন্ডী লাহিড়ির আঁকা) রয়েছে ।

Durga Puja 2013 2014

21


পঁয়ত্রিশ বছর আগের এক দ এই পাতার একদম ডান দিকে বিধানসভার খবর । সেসময় বির�োধী নেতা ছিলেন কাশীকান্ত মৈত্র । মরিপঝাঁপি নিয়ে ওনার প্রশ্ন কেমন সু ন্দর ডজ্‌ করে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি ব�োস । অরাজকতার জন্য উত্তরে বলছেন ‘কংগ্রেসী পুলিশ’ ওনার কথা শ�োনেনা । জনসংঘের হরিপদ ভারতীও কম যেতেননা । সে সময় সি,পি,আই বির�োধী দলে ছিল । আনন্দবাজার গ�োষ্ঠী আয়�োজন করেছিলেন কলকাতার প্রথম বইমেলা। বাংলা ভাষার মুদ্রণের দু ’শ বছর পূ র্তি উপলক্ষ্যে ময়দানে বিশাল আয়�োজন । কলেজ স্ট্রিটের প্রায় সমস্ত প্রকাশনা সংস্থা এই উপলক্ষ্যে ময়দানে তাঁবু গেড়ে ছিলেন । প্রথম পাতার নিচে ডান দিকে অনেকটা জায়গা জুড়ে বইমেলার ঘ�োষণা । পঞ্চম পাতায়

এন জি সি বাদ দিলে বেশিরভাগই বেসকারী । এক্সাইড, গেস্ট-কিন্সউইলিয়ামস্‌, লারসেন টুব্রো, খৈতান ফ্যান, অলউইন রেফ্রিজারেটর, গ�োদরেজ আলমারী, অ্যাসপ্রো, নাম্বার টেন সিগারেট বাদ দিলে প্রচুর বাঙালী ব্যবসার বিজ্ঞাপণ । পিসি চন্দ্র, প্রিয়গ�োপাল বিষয়ী, ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়, অন্নপূ র্ণা মিষ্টান্ন, তারামার্কা পাটবীজ, আরও অনেক যেগুল�ো ব্যক্তিগত কলামে আছে । সমস্ত ছাপা ব্লক দিয়ে সাদা কাল�ো । এছাড়া থিয়েটারের বিজ্ঞাপণ দ্বিতীয় পাতায় নিচের দিকে । বিশ্বরূপায় সাহেব বিবি গ�োলাম, পরিচালনা: রাসবিহারী সরকার, পটেশ্বরী সু প্রিয়া দেবী । য�োগেশ মাইমের সরীসৃ প । মুদ্রারাক্ষস, অভিনয়ে শম্ভু মিত্র । মহেন্দ্র গুপ্তের তত্ত্বাবধানে স্টারে কৃষ্ণকান্তের উইল, নেতাজী মঞ্চে জ্ঞানেশ মুখার্জীর কলরব, বয়েজ হল: ঘটকালী, রঙমহলে রবি ঘ�োষের পরিচালনায় ছদ্মবেশী, হেমাঙ্গ বিশ্বাসের তেলেঙ্গানা, কমল মিত্র, তরুণ কুমার পার্ট করছে রঙ্গনায় দেবনারায়ণ গুপ্তের পরিচালনায় শরৎচন্দ্রের চন্দ্রনাথ । তপন থিয়েটারে সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের নহবৎ । তৃপ্তি মিত্র, অজিতেশ পার্ট করছেন রামম�োহন মঞ্চে থানা থেকে আসছি। অ্যাকাডেমীতে চেতনা গ�োষ্ঠীর মারীচ সংবাদ । সারকারীনায় সম্রাট ও সু ন্দরী, নাটক নির্দ্দেশনা সমর মুখার্জী । এর সঙ্গে রবিবাসরীয় পেলামনা । আফশ�োস রয়ে গেল । বিজ্ঞাপণগুল�ো দেখলে সেই সময়কার কলকাতার সমাজের একটা চিত্র পাওয়া যায় । সমাজটা তখন�ো এত ক্রেতা সমাজ হয়ে ওঠেনি । সাধারণ কিছু সাবান, তেল, সু গন্ধী ছাড়া নিত্যপ্রয়�োজনের সামগ্রী প্রায় নেই বললেই চলে । টিভি চালু হলেও টিভির বিজ্ঞাপণ একটাও দেখলাম না । তখনও কলকাতায় বহুতল বাড়ীর রমরমা হয়নি । ব্যক্তিগত কলামে বাড়ী-জমি বিক্রির কিছু বিজ্ঞাপণ থাকলেও ফ্ল্যাট বাড়ী প্রায় সবই ভাড়ার জন্য । বাড়ীর সবাই মিলে পাঁচ সিকে বা স�োয়া দু ’ টাকার টিকিট কেটে হাতিবাগান বা ভবানীপুরের ক�োনও থিয়েটার বা সিনেমা হল-এ নিপাট বাংলা বই দেখে ফিরত�ো । এক টাকা পঁচিশ পয়সাকে সাধারণ বাঙালী তখনও পাঁচ সিকে বলা ছাড়েনি ।

বিজ্ঞাপণ ছাড়া প্রথম পাতার খবরের শেষাংশ আর নিচের দিকে সামান্য খেলার খবর । শেষ পাতা অর্থাৎ ছ’য়ের পাতা খেলার খবর । ‘কানপুরেই কি গাভাস্কারের শেষ টেস্ট’? কিরমানী, চন্দ্রশেখর, বিশ্বনাথ ও গাভাস্কার ব�োর্ডের অনু মতি চেয়েছেন প্যাকার সিরিজে খেলার জন্য । পাকিস্তান ব�োর্ডের মত ভারতীয় খেল�োয়াড়দের ছাড়ার আবেদন করেছেন । বছরে আড়াই লাখ টাকা আর তার সঙ্গে সস্ত্রীক যাতায়াতের খরচ প্যাকার দেবেন বলেছেন । এছাড়া ডেভিস কাপে গ�ো হারান হারার খবর আছে । এর পর আসি বিজ্ঞাপণের কথায় । সরকারি সংস্থা যেমন বিদ্যুৎ পর্ষদ, হাউসিং ব�োর্ড, ইস্টার্ণ ক�োলফিল্ড, এন টি সি এবং ও

22

সে সময় খবরের কাগজ ছাপা হ�োত হাত দিয়ে টাইপ সেটিংএ । প্রুফ টেনে রাত দু ট�োর পরে ছাপার জন্য মেশিনে যেত । অবাক লাগে সারা কাগজে একটাও বানান কিম্বা অন্য ভুল চ�োখে পড়ল�ো না । সেই কালি ঝুলি মাখা লু ঙ্গি পরা র�োগা র�োগা মানু ষগুল�ো কি করে এ অসাধ্য সাধন করত�ো ভাবলে অবাক লাগে । দেখলাম তখন কাগজটার দাম দিয়েছিলাম ছত্রিশ পয়সা । আজকের মুদ্রায় এই দাম আর গ�োনাও যাবেনা । একটা পুর�োন�ো কাগজে কন্যার ছবি থাকার জন্য যত্ন করে রেখে দেওয়ার ফল হিসেবে “পঁয়ত্রিশ বছর আগের এক দিন” ফিরে পেলাম । তাই হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ইচ্ছে হ�োল । অর্থনীতির পণ্ডিতরা কি বলতে পারবেন আজকের হিসেবে ওই ছত্রিশ পয়সার মূ ল্য কত ? 

Anjali

www.batj.org


তুরুপের তাস   - অরুণ গ

রা

মরতন প�োদ্দার পাড়ার ল�োকের কাছে ম্যাজিশিয়ান বলেই পরিচিত । আসল পেশা চাকরি হলেও সেটা বলবার মত তেমন কিছু নয় । নিজে অকৃতদার বলে চাকরির টাকায় একা ল�োকের খরচা চালাতে ক�োনও বেগ পেতে হয়না । ইতিমধ্যে উনি পাড়ায় বেশ কয়েকটা ম্যাজিক শ�ো করেছেন । বলাবাহুল্য, সেসব শ�োতে আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন । য�ৌবন বয়সে জ্যাঠামশাই রবিরতনের কাছে ম্যাজিক শিখেছেন এবং সেগুল�োই নিয়মিত চর্চা ক’রে আজকে নিজেকে ম্যাজিশিয়ান বলে পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন । রবিরতন মারা যাওয়ার আগে তার ভাইপ�োকে হাত সাফাইয়ের এমন একটা নতুন দিক উন্মোচন ক’রে দিয়েছিলেন যেটা তার মতে ক�োনও বড় ম্যাজিশিয়ানের পক্ষেও সম্ভব নয় । শেখান�োর আগেই নিষেধ ক’রে দিয়েছিলেন “এই খেলা সব জায়গায় দেখাস না । এটা ত�োকে অন্য ম্যাজিশিয়ান থেকে স্বতন্ত্র রাখবে”। প্রথম প্রথম পাড়া বা অফিসের ক�োনও ফাংশনে ম্যাজিক দেখিয়ে রামরতন ক�োনও পারিশ্রমিক নিতেন না । কিন্তু ইদানিং নিতে বাধ্য হচ্ছেন । কারণ একটা ‘শ�ো’ অরগানাইজ করতে খরচ কিছু কম হয় না । দর্শকদের নিরিখে রামরতনের ম্যাজিক যে শুধু ফল্ট ফ্রি তাই নয়, নান্দনিকতার দিক থেকেও প্রশংসার দাবি রাখে । এ যাবৎ রামরতন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ম্যাজিক দেখিয়েছেন । তার ইচ্ছে বাংলার বাইরেও অনু ষ্ঠান করেন । কিন্তু কিভাবে সেটা রূপায়ণ করা যায়, তা জানেন না । অফিসের সহকর্মী ইন্দ্রনীলের দিল্লির কালীবাড়ির কর্মকর্তাদের সঙ্গে জানাশুনা আছে । সে-ই বলল�ো, “দাদা, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় । আপনার ইচ্ছে আছে আর আমার কাছে এর উপায় আছে । এবার দু র্গোপুজ�োয় দিল্লির কালীবাড়িতে আপনার একটা ‘শ�ো’এর বন্দোবস্ত ক’রে দিচ্ছি । এ ব্যাপারে আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন”। ইন্দ্রনীল যে ফালতু কথা বলার ছেলে নয়, তার প্রমাণ পাওয়া গেল কালীবাড়ির সেক্রেটারী কাছ থেকে রামরতনের নামে যখন নিমন্ত্রণ আসল�ো । চিঠিটা পেয়ে নিজের চ�োখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না । তাই বার বার চিঠিটা পড়তে লাগলেন । সম্পূ র্ণ নিশ্চিন্ত হয়ে চেয়ার থেকে নেমে একটা প্রকাণ্ড লাফ দিলেন । কর্তৃপক্ষ দু ’ দিনের থাকা খাওয়া ছাড়া দু ’ পিঠের ট্রেন ভাড়া পর্যন্ত দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । কর্তৃপক্ষের এই বদান্যতায় রামরতন যার পর নাই খুশী । অষ্টমীর দিন সকালে রামরতন তার সহকারী পিন্টুকে নিয়ে দিল্লি পৌঁছান । স্টেশন থেকে সটান দিল্লির কালীবাড়ি গিয়ে অফিসে নিজের পরিচয় দিতেই ওরা ওদের থাকার জন্য একটা ঘরের ব্যবস্থা ক’রে দেন । যাত্রার ধকল কাটিয়ে স্নান আহারাদি সেরে সামান্য বিশ্রামের পর রামরতন পিন্টুকে নিয়ে মক্‌ প্র্যাকটিস শুরু ক’রে দেন । দিল্লিতে যতগুল�ো খেলা দেখাবেন তার প্রত্যেকটি বার দু য়েক ক’রে সড়গড় ক’রে নেন । প্রত্যেক ‘শ�ো’এর আগে নিয়ম ক’রে উনি এটি ক’রে থাকেন । এবারও তার ব্যতিক্রম হ�োল না ।

www.batj.org

সন্ধ্যে সাতটার সময় স্টেজে উঠে লক্ষ্য করলেন প্রচুর জনসমাগম হয়েছে । চিত্তরঞ্জন পার্ক বাঙালী অধ্যুষিত বলে রামরতন ইচ্ছে করেই খেলা দেখান�োর সময় বাংলাতেই সব কথা বলেন । একেকটা খেলা শেষ হচ্ছে আর দর্শকদের করতালি কানে তালা লাগিয়ে দিচ্ছে । ঘন্টা দেড়েক খেলা দেখান�োর পর খেলা শেষ হলে যখন স্টেজ থেকে নামতে যাবেন, এমন সময় দর্শকের আসনে বসা প্রায় মাঝবয়সী এক ভদ্রল�োক অতি দ্রুত পায়ে স্টেজে এসে মাইক হাতে নিয়ে বললেন, “এইমাত্র আপনারা ওনার স�ৌজন্যে যা কিছু খেলা দেখলেন, তার সবক’টি খেলা আমি নির্ভুলভাবে দেখাতে পারি, অবশ্যই যদি অনু মতি মেলে” । ভদ্রল�োকটির কথায় দর্শদের মধ্যে স�োরগ�োল পড়ে যায় । দর্শকের আসন থেকে অনেকেই দাবী করতে থাকেন, “হ্যাঁ হ্যাঁ, আমরা দেখতে চাই, দেখতে চাই”। সেই দাবী এতটাই স�োচ্চার হ�োল যে অনু ষ্ঠানের আয়�োজকদের বাধ্য করল�ো পুনরায় ম্যাজিক ‘শ�ো’এর অনু ষ্ঠান করতে । ভদ্রল�োক পিন্টুকে সহকারী ক’রে রামরতনের দেখান�ো প্রত্যেকটি ম্যাজিক নিপুণভাবে ক’রে দেখালেন । দর্শকরা স্তম্ভিত হয়ে সেই খেলাগুল�ো দেখলেন । রামরতনের বিস্ময়ের ঘ�োর কাটতেই চায়না । খেলা শেষে দর্শকদের অভিনন্দন কুড়�োতে কুড়�োতে ভদ্রল�োকটি যখন স্টেজ থেকে নেমে যাচ্ছেন, তখন রামরতন স্টেজে উঠে তার উদ্দেশ্যে বললেন, “একটু দাঁড়ান প্লিজ । আপনি আমার সব খেলা খুব নিখুঁতভাবে দেখিয়েছেন, তার জন্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন অবশ্যই আপনার প্রাপ্য । কিন্তু এবার যে খেলাটি আমি দেখাব�ো তা যদি ক’রে দেখাতে পারেন, তবে আপনার কাছে হার মানতে আমি বাধ্য হব”। ভদ্রল�োকটি সম্মতিসূ চক ঘাড় নাড়েন । দর্শকদের মধ্যে টান্‌ টান্‌ উত্তেজনা । রামরতন তার ম্যাজিক-গুরু জ্যাঠামশাইয়ের কাছ থেকে শেখা হাত সাফাইয়ের সেই চমকপ্রদ খেলাটি দেখালেন । খেলা দেখে দর্শকদের চ�োখের পলক পড়েনা । তারা কয়েক মিনিটের জন্য ইংরেজীতে যাকে বলে মেজ্‌ম্‌রাইজড্‌হয়ে গেলেন । এরপর শুধু করতালির আওয়াজ । ভ্রদ্রল�োকটি সম্বিৎ ফিরে পেয়ে রামরতনের কাছে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, “কি সেজদা, আমায় চিনতে পারনি ত�ো ? আমার অনু মান সত্যি, এ খেলা তুমি ছাড়া আর কার�োর পক্ষে দেখান�ো সম্ভব ছিল না । আমি জানি বাবা একমাত্র ত�োমাকেই হাতে ধরে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন । এই খেলাটা বাবা এক দক্ষিণ ভারতীয় যাদু করের কাছ থেকে শিখেছিলেন । আমি অনেক পীড়াপীড়ি করা সত্ত্বেও বাবা এই খেলাটি আমাকে শেখাতে চান নি” । রামরতনের মুখে ক�োনও কথা নেই, উনি চুপ ক’রে সব শুনে যাচ্ছেন । ভদ্রল�োকটি আবার বললেন, “দূ র থেকেই আমি ত�োমায় চিনতে পেরেছিলাম । শুধু শেষের ম্যাজিকটা দেখার জন্য ত�োমার অন্যান্য খেলাগুল�ো দেখিয়ে ত�োমাকে প্রভ�োক করেছিলাম” । রামরতনের বিস্ময়ের ঘ�োর কাটতে চায় না । হ্যাঁ, ঠিকই ত�ো ! এ ত�ো তারই জ্যাঠতুত ভাই অরূপরতন ! বহু বছর না দেখা হলে যা হয় । স্টেজে দু জনে দু জনকে জড়িয়ে ধরলেন । দর্শকদের মধ্যে আনন্দের লহর বয়ে গেল । 

Durga Puja 2013 2014

23


কূল ছেড়ে এসে মাঝ দরিয়ায়, পিছনের পানে চাই

মা

- শুভা কোকুবো চক্রব

র্চ ২০১৪. ২০টা বছর কেটে গেল এই দেশে,এই জাপান দেশে । বিয়ের আগেও কয়েকবার এই দেশে আসা নাচের সূ ত্রে মমদির সাথে মানে Mamata Shankar Ballet Troupe’এর সদস্য হিসেবে । উত্তরে হ�োক্কাইড�োর আবাসিরি থেকে দক্ষিণে ওকিনাওয়া. ছ�োট-বড় কত শহরের কত মঞ্চে অনু ষ্ঠান । নিজের শহর,পরিচিত রাস্তাঘাট,আপনজন আর তার মাঝে অনায়াস বিচরণ । মনের সু খে দ�ৌড়ে বেড়ান�ো সকাল থেকে রাত্তির অবধি । মমদির স্কুল “উদয়ন”এ বাচ্চাদের নাচ শেখান�ো, প্রায় ১২০০ ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে দিন কেটে যেত�ো ক�োথা দিয়ে টেরও পেতাম না । সঙ্গে কলেজ ছিল, ছিল বিদেশ এবং স্বদেশে শ�ো -ওয়ার্কশপ, আন্টির (গুরু থাঙ্কমনি কুট্টি)কাছে নাচ শেখা । এ ত�ো সেই সু মনের গানের মত�ো, - “এ শহর জানে আমার প্রথম সবকিছু …” । ঠিক ২০বছর আগে আমার সেই প্রিয় পরিচিত জগত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসে পৌঁছলাম এই দেশে । নতুন মানু ষজন, নতুন ভাষা, নতুন সমাজ-সংস্কৃ তি, রীতিনীতি ...সব নতুনের মধ্যে পরে দমআটকা অবস্থা । পদে পদে ধাক্কা, দ্বন্দ, বিধ্বস্ত...আমার নাচ আমাকে বাঁচিয়ে রাখে । আমার ভালবাসা, আমার প্যাশন আর অবশ্যই আমার প্রফেশন । মনে পড়ে, বাড়ির কাছে একটা বড় জায়গা, সেখানে তখন নতুন সব বাড়ি উঠছে । মাঝখানে একটা ছ�োট্ট পুকুরের মত আর তার ওপরে একটা ছ�োট স্টেজ । দু পুরবেলা পিঠে একটা ব্যাগ ফেলে হেঁটে বা সাইকেলে চলে যেতাম ওখানে । পিঠের ব্যাগে থাকত একটা ব্যাটারিভরা ক্যাসেটপ্লেয়ার আর কিছু ক্যাসেট । মনের সু খে প্র্যাকটিস্ করতাম । ২/৩ঘন্টা ক�োথা দিয়ে কেটে যেত, টেরও পেতাম না । ওটাই ছিল আমার ওই দিনগুল�োতে বাঁচার আনন্দ । প্রথম অনু ষ্ঠানের ডাক আসে ফুকুশিমা থেকে. মন প্রাণ উজাড় করে দিই সেদিন স্টেজে । অনু ষ্ঠানের পর এক মহিলা গ্রীনরুমে দেখা করতে আসেন । “ক�োথাও নাচ শেখান ?” উত্তরে বলি আপাতত নিজেই প্র্যাকটিস করছি । ক�োথায় কিভাবে শূ রু করব�ো জানিওনা । ভিসিটিং কার্ড আদানপ্রদান হয়। আমি পরদিন টয়�োটা শহরে ফিরে আসি । তার ঠিক ২দিন পর Toyota International Association (TIA) থেকে ফ�োন পাই । “এখানে একটা নাচের ক্লাস খুলুন । আপনি এই শহরে আছেন আর আমরা কিছু জানিই না. ফুকুশিমার সেই মহিলার কথা বলেন TIAর প্রিন্সিপাল । আমি একেবারে আকাশ থেকে পড়ি । মানে সেই ফুকুশিমার মহিলা নিজে থেকেই ফ�োন করেছেন TIA তে । সেই ১৯৯৭এর এপ্রিল থেকে শুরু হয় কাবুকি দেশের ছেলে মেয়েদের ভারতীয় নাচ শেখান�ো । নাম হয় “TIA ইন্ডিয়ান ডান্স সার্কেল” । আমার কেমন মনে হয় যার যার নিজের দেশের শিল্প-সংস্কৃ তি কমবেশি হলেও জন্ম থেকেই তার রক্তে থাকে । না শিখলেও না চর্চা করলেও, তাইত�ো আমাদের ভারতীয়দের, ঢাকের বাজনা শুনলে আপনা আপনিই শরীরটা দু লে ওঠে তালেতালে বা সানাই শুনলে মনটা ভারী হয় । তাই সেই দেশের ছেলেমেয়েদের নাচ শেখান�ো আর একদম আলাদা পরিবেশে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েদের শেখান�োর মধ্যে অনেক ফারাক থাকে । এটাই স্বাভাবিক, তবে ধৈর্য রাখতে হয় । আমার ক্লাস ছিল ভারতীয় সংস্কৃ তির ক্লাস । তাতে নাচ ত�ো ছিলই তাছাড়া আরও কিছু টুকিটাকি. যেমন দেখা হলে হাত জ�োড় করে নমস্কার বলা । ক্লাসে স্লিভলেস বা হাফ প্যান্ট না পরা. এখানে ত�ো নাচে ম�োজা বা তাবি’র প্রচলন আছে. ভারতীয় নাচে তা চলবেনা, সে বাইরের তাপমাত্রা ৩ই হ�োক বা ৩০ ইত্যাদি ইত্যাদি । আর মাঝে মাঝে কিছু tips. যেমন সকালের সূ র্যপ্রনাম । শীতে চায়ের মধ্যে আদা কুচি দিয়ে খাওয়া বা লম্বা চুলে হাতখ�োপা করার পদ্ধতি । এরকমই ছ�োটখাট�ো কিছু জিনিস যা আমি ছ�োটবেলা মা-দিদাকে দেখে শিখতাম। ছেলেমেয়েদের অসম্ভব ইচ্ছা আর অধ্যাবসায় আমাকে অবাক করে । আমি শেখান�োর থেকে শিখি 24

বেশি । একাগ্রতা, অনু শীলন, পারফেকশন...চলতে থাকে । ভারতনাট্যমে দেবদাসীর ইতিহাস থেকে নাট্যশাস্ত্র, ফ�োক, রাবীন্দ্রিক, নজরুলগীতির সঙ্গে সঙ্গে মডার্নও আসে । আমি এক ফাঁকে একটু জাপানি নাচ শিখি আমারই প্রয়�োজনে, ইচ্ছে ভারত-জাপান মেলবন্ধন । প্রথম কবে মা-বাবুর হাত ধরে নাচের স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম তা মনে নেই । পরে মায়ের কাছে শুনেছি তখন আমার বয়স ছিল ৩ । নাচ মানে ত�ো শুধু সেজেগুজে স্টেজে ওঠা নয় -শরীরের এক্সারসাইজও । ফিট থাকে শরীর । পায়ের পাতায় ব্যথা ছিল – এখন অনেক কম । বা পিঠের ব্যথা আর টের পাইনা কিম্বা শীতকালে সর্দিকাসি অবধারিত ছিল এক বছর ধরে আর নেই... একেকজন এসে বলে যায় ক্লাসের পরে । আস্তে আস্তে মেয়েগুল�ো সাল�োয়ার কামিজ, শাড়িতে কেমন অভ্যস্ত হয়ে ওঠে । ১৯৯৯র ডিসেম্বরে কলকাতার উদয়উত্সবে অনু ষ্ঠান করার আমন্ত্রণ আসে । আমার নিজের দেশের সংস্কৃ তিত�ো রইলই. জাপানের স�ৌন্দর্যকেও কলকাতায় পৌঁছে দেবার ল�োভ সংবরণ করতে পারিনা. জাপানের ৪টা ঋতুকে নিয়ে তৈরী হয় অনু ষ্ঠান । ‘The Essence Of Japan’ জাপানের চার ঋতু ‘হারু, নাত্সু ,আকি, ফুয়ু (বসন্ত, গ্রীষ্ম, শরত, শীত)’র সঙ্গে য�োগ করি tsuyu বা বর্ষা । শুরু হয় otsukimi দিয়ে । স্টেজে হালকা নীলরঙে স্পট দিয়ে পূ র্নিমার গ�োল চাঁদ দেখান�ো হয় তার সামনে থাকে একগুচ্ছ কাশফুল আর সাদা দাংগ�ো. শরতকালের otsukimi ব�োঝাতে একটা জাপানি মিউজিক বেছে নিই । মেয়েরা ঢ�োকে পরনে শাড়ী আর হাতে প্রদীপ নিয়ে । বসন্তে আর বর্ষায় কবিগুরুর গানে মেয়েরা নাচে কিম�োন�ো পরে । হাতে থাকে জাপানি ছাতা। একদম শেষে হলের পেছন থেকে দর্শকদের মধ্যে দিয়ে মেয়েরা ইউকাতা পরে হাতে উচিওয়া (জাপানি হাতপাখা) নিয়ে বনওদ�োরি নাচতে নাচতে ঢ�োকে । দর্শকরা নিজের নিজের আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে পরে হাততালি দিতে থাকে । দু ট�ো দেশ কেমন মিলেমিশে এক হয়ে যায় । ভাষার দরকার হয়না, সঙ্গীতের এমনই জ�োর । ভাবি, জাপানে নাচ শেখাতে শুরু করে মনে মনে যে ছবি এঁকেছিলাম সেই “ভারত-জাপান মেলবন্ধন” ব�োধহয় একেই বলে । TIA থেকে বেড়িয়ে নিজস্ব স্কুল তৈরী হয় । “TIA ইন্ডিয়ান ডান্স সার্কেল” থেকে নাম পাল্টে হয় “ইন্ডিয়ান ক্লাসিকাল ডান্স ট্রুপ” । এরমধ্যে ভাষাটা আরও একটু রপ্ত হয় । একটা খবরের কাগজে ৫০পর্বে ১বছর ধরে একটা লেখা বার হয় আমার । তার দু বছর পর একটা বই ছাপা হয় । এরপর থেকে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি থেকে বিভিন্ন বিষয়ে স্পীচ দেবার আমন্ত্রণ আসতে থাকে । বিভিন্ন বিষয় বলতে ভারতের নারী, কিম্বা ভারতের শিক্ষা-ব্যবস্থা, ভারতের ভাষা, শিল্প-সংস্কৃ তি ইত্যাদি ইত্যাদি । কখনও স�োজাসু জি আমন্ত্রণ, আবার কখন�ো টয়�োটা ইন্টারন্যাশনাল এস�োসিয়েশন বা নাগ�োয়া ইন্টারন্যাশনাল এ স � োসিয় ে শ ন - এ র মাধ্যমে আমন্ত্রণ আসতে থাকে । ভারতে জন্মেছি বলে ভারতের সবকিছু ই জানি তাত�ো নয় । তাই একেকটা সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশুন�ো করি । অনেক না-জানাকে জানতে পারি. আনন্দ পাই ।

Anjali

www.batj.org


গতবছর ফেব্রুয়ারী মাস নাগাদ হঠাৎ নাগ�োয়া ইন্টারন্যাশনাল এস�োসিয়েশন থেকে এক চিঠি । খুলে পড়তে গিয়ে নিজের চ�োখকে বিশ্বাস হয়না । “সেকাই কাতার�ো মাইস্টার” অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে. আমাকে ? কেন? আমি কি এমন করলাম? জানান�ো হল সেইযে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে স্পীচ দিচ্ছি বা এপর্যন্ত দিয়েছি তার খবরাখবর এরা রাখে আর আমাকে বেস্ট লেকচারারের অ্যাওয়ার্ড “সেকাই কাতার�ো মাইস্টার” হিসেবে সিলেক্ট করেছে । আমাকে কি করতে হবে? জানান�ো হয় আমাকে সম্বর্ধনা জানান�ো হবে, আর সেটা প্রায় ২৫০জন দর্শকের মাঝখানে । আমাকে দেড়ঘন্টা সময় দেওয়া হবে, তারমধ্যে লেকচারের একটা পার্ট থাকতে হবে । লেকচারের থিম আমি ঠিক করতে পারি. আর আমার প্রফেশন মানে নাচ নিয়েও কিছু করা যেতে পারে । যখন যেখানে স্পীচ দিয়েছি আর তারপর প্রশ্ন-উত্তরের সময় খেয়াল করেছি জাপানিরা ভারতীয় কাস্টসিস্টেম নিয়ে জানতে উদগ্রীব । তখন কম সময়ের

মধ্যে ছ�োটখাট উত্তর দিয়েছি বটে কিন্তু মনের ক�োথাও একটা খটকা ছিল । কেমন যেন অসমাপ্ত থেকে যেত. তাই আমি বেছে নিলাম ওই সাবজেক্টটাই । তবে শুধু ভারত নয়, এই কাস্টসিস্টেম বা

www.batj.org

কূল ছেড়ে এসে মাঝ দরিয়ায়, পিছনের পানে চাই… মিবুনসেইদ�ো পৃথিবীর সর্বত্র আছে, জাপানকেও তার থেকে আলাদা করা যায়না । বিভিন্ন বই ঘাঁটি, জানা হয় অনেক অজানা । টানা ৫০মিনিট ধরে চলে আমার স্পীচ । উপসংহারে বলি, আমি ভারতীয়, তুমি জাপানি, সে ইটালিয়ান কিম্বা তুমি জাতধর্মে বড়, আমি ছ�োট...সে বিচারের আগে আমরা মানু ষ । বুদ্ধের শিষ্য আনন্দ যেমন বলেছেন “যেই মানব আমি সেই মানব তুমি...”. আমরা ইচ্ছে করলেই পারি পাশাপাশি হাত ধরে বন্ধু -পরিবারের মত চলতে । আজকে এখানে উপস্থিত এই ২৫০ জন থেকেই শুরু হ�োক সেই পথচলা । এরপর চন্ডালিকা পরিবেশন করি স্টেজে । অনু ষ্ঠানের শেষে হলের বাইরে এসে দাঁড়াই দর্শকদের বিদায় জানাতে, আমি আর আমার গ্রুপের সদস্যরা । জলভরা চ�োখে শুভেচ্ছা

ভালবাসা জানিয়ে যান বেশিরভাগ দর্শক । নাগ�োয়া ইন্টারন্যাশনাল এস�োসিয়েশন থেকে শুভেচ্ছাবার্তা আসে চিঠিতে, মেইলে, ফ�োনে মনে শান্তি পাই । এখানে ইন্ডিয়ান রেস্টুরান্টগুল�োতে নাচের অনু ষ্ঠান হ�োতে দেখি মাঝেমধ্যে । চন্দন ধু পের গন্ধ আর চিকেন তন্দুরীর গন্ধ মিলেমিশে একাকার । জাপানিতে একটা কথা আছে kowai mono shirazu । বাংলায় এর অর্থ - না জানলে ক�োন�ো ভয় থাকেনা । দেবদাসীরা মন্দিরে ঈশ্বরের কাছে নাচ দিয়ে যে পূ জা করতেন সেই শাস্ত্রীয় নৃত্যের এমন দশা দেখে ডুকরে কান্না পায় । নিজের দেশের শিল্প-সংস্কৃ তির মান নামতে দেখে চ�োখে জল আসে । পাবলিসিটির জায়গা কি ওটা ? আজ ২০বছরেও ত�ো পারিনি । কিছু করার আগেই মমদির, আন্টির মুখগুল�ো মনে আসে । নিজের পিঠে আঁটা “ভারতীয়” তকমা বা আইডেন্টিটিকে সম্পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে চলার চেষ্টা করে চলেছি সেই ২০বছর আগে থেকে, আজও । এভাবেই যেন ভারতের মান উঁচু করে পৌঁছে দিতে পারি দিকদিগন্তে । এগিয়ে যেতে পারি সামনে এই প্রার্থনাই জানাই সর্বশক্তিমান পরম ঈশ্বরের কাছে । 

Durga Puja 2013

25


জল স্পর্শ করবো না আর চিতোর রানার প   - ভাস্বতী ঘোষ (সেনগু

রা

না উদয় সিংহের পর মহারানা প্রতাপ রাজা হলেন । সেই সময় সমানেই ম�োগল সেনা আক্রমণ করে চলেছে । চিত�োর ও মেবার দখলের জন্য আকবর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । এদিকে প্রতাপ ত�ো কিছু তেই বশ্যতা স্বীকার করবে না, তাই বিখ্যাত হল্‌দিঘাটীর যু দ্ধ ১৫৭৫ সালে । সেখানে পাঁচ হাজার রাজপুত সেনা আর বাইশ হাজার ম�োগল সেনা যু দ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন । বিভিন্ন পাহাড় ও টিলার পেছন থেকে রাজপুতদের আক্রমণ ক�ৌশলে আঠার�ো হাজার ম�োগল সেনা প্রাণ হারাল�ো । শেষে আকবরের সেনাপতি মান সিংহ মহারানা প্রতাপের ঘ�োড়া চেতককে আক্রমণ করলেন ও চেতকের একটি পা ক্ষতবিক্ষত হ�োল । তবুও চেতক মহারানাকে নিয়ে সাত ক্রোশ পথ ছু টে একটি সু রক্ষিত স্থানে পৌঁছে দিল । তার পর একটি নদীর ধারে মাঝরাতে বিশ্বস্ত চেতক প্রাণ হারাল�ো । চেতকের কাহিনী ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত ।

প্যালেস’ (মহারাজা উদয় সিংহের নামে বিখ্যাত) দেখা যায় । সে এক মন�োরম দৃ শ্য ! মহারানা প্রতাপ চেতকের ওপর তল�োয়ার হাতে –সেই মূ র্তি, চেতকের অন্তিম শয্যার ফলক ইত্যাদি দেখে রীতিমত শিহরণ জাগে, র�োমাঞ্চ লাগে এমনই স্থানমাহাত্ম্য। ঐ স্থানটিতে

ইতিহাস যেন প্রাণে সাড়া জাগায় । ঐ বিশাল এলাকাটির পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও সংরক্ষণ জাপানের সঙ্গে তুলনীয় । তাই মনে হয়েছে হয়ত�ো এটি সামরিক প্রথারই অঙ্গ । সামরিক মানসিকতা জাতিকে

চিত�োরগড় থেকে রানা প্রতাপ রাজধানী সরিয়ে নিয়ে এসে উদয়পুরে নতুন রাজধানী করলেন । বার বার ম�োগল সেনার আক্রমণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি বশ্যতা স্বীকার করেন নি । রাজপুত বীরদের মধ্যে রানা প্রতাপকে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামী বলা হয় যিনি ভারতবর্ষকে অন্য ক�োনও বহিরাগত শক্তির অধীনে যেতে দেবেন না এবং ভারতবর্ষ স্বাধীন থাকবে ---এই ছিল তাঁর পণ । তাই তিনি জানপ্রাণ দিয়ে লড়েছেন । রানা প্রতাপ কি করে এই বিশাল অঞ্চলকে সু রক্ষিত করে রেখেছিলেন তা এখন বিস্ময় মনে হয় । রানা প্রতাপের বীরত্ব, আত্মসম্মানব�োধ, দেশের প্রতি মর্যাদা, সামরিক কুশলতা, সর্বোপরি মানসিক দৃ ঢ়তা ---এই সব কিছু কে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে উদয়পুরেই একটি এলাকায় টিলার উপর রানা প্রতাপের স্মারক তৈরী করা হয়েছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে । এই স্থানটি দর্শন করতে হলে প্রবেশমূ ল্য দিয়ে নিয়মকানু ন মেনে (চটি জুত�ো খুলে, ক�োনও রকম খাদ্যসামগ্রী বা ন�োংরা না ফেলা ইত্যাদি) যেতে হয় । টিলার ওপর থেকে এক দিকে উদয়পুর শহর ও অন্য দিকে ‘লেক 26

Anjali

www.batj.org


জল স্পর্শ করবো না আর চিতোর রানার প দৃ ঢ়তা, আত্মসম্মানব�োধ ও স্বদেশপ্রেমের শিক্ষা দেয় । ঐ এলাকায় চারিদিকে ঢাল ও তল�োয়ার দিয়ে সু ন্দরভাবে পুরাতন ও নতুনকে একত্রভাবে সাজান�ো হয়েছে । এবার আসি ‘সিটি প্যালেস’ অর্থাৎ শহরের মাঝখানে বিশাল প্রাসাদের কথায় । এটিও এত বড় যে একে ‘সিটি উইদিন অ্যা সিটি’ বলা হয় । এই বিশাল এলাকায় গাইড ছাড়া ঢুকলে হারিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে । প্রবেশপথ বেশ কয়েক ভাগে বিভক্ত । এগুলিকে বড়া প�োল, ত্রি প�োল ---এইভাবে নামকরণ করা হয়েছে । প্রাসাদটি চাক্ষুস দেখা এক অভিজ্ঞতা । সু রজ গ�োখড়া, ম�োর চক্‌, দিলখুশ্‌ মহল, ম�োতি মহল, কৃ ষ্ণভিলাস, শম্ভু ভিলাস ---এই রকম অসংখ্য মহল দেখতে দেখতে রাজপুত কলা কুশলতার প্রশংসা না করে উপায় নেই । শত্রুকে আটকে দেওয়ার জন্য বা মেরে ফেলার জন্য সিঁড়ির মুখের ছাতটি এত নীচু যে অন্যমনস্ক হলেই মাথায় আঘাত বা প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে । বিভিন্ন ফটকের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করা যেন এক ‘জিগস্‌পাজল্‌’ খেলা । কায়দা না জানলে ভুল হওয়া স্বাভাবিক । কয়েকটি মহলে আয়না এমনভাবে লাগান�ো যে ধাঁধাঁয় পড়ে যেতে হয় । এই রকমই মহলে রানী পদ্মিনীর প্রতিবিম্ব আয়নায় দেখে আলাউদ্দিন খিলজী মুগ্ধ । স�ৌন্দর্য্যে পাগল হয়ে তিনি পদ্মিনীকে পাবার আশায় যে ছলে পড়েছিলেন, তা ইতিহাসে পাওয়া যায় । রাজপুত নারীরা নিজেদের কখনও বিদেশীর কাছে সমর্পণ করেনি । বিখ্যাত ‘জওহর ব্রত’ আমাদের সকলেরই জানা । এই সব দেখতে দেখতে হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে, ক�োথায় যেন অতীত বর্তমানকে ছাপিয়ে হাতছানি দিচ্ছে, শুনতে পাচ্ছি সেই ঘ�োড়ার পদধ্বনি অথবা রাজপুত নারীদের সম্ভ্রমব�োধ ও বীরত্ব --“পাঠান পতির ললাটে সহসা মারেন রানী কাঁসার থালাখানা, রক্তধারা গড়িয়ে পড়ে বেগে পাঠান পতির চক্ষু হ�োল কানা ।।

উদয়পুর শহরে মহিলারা নিশ্চিন্তভাবে সর্বত্র ঘ�োরাফেরা করে ---এটি দেখে খুব ভাল লাগল�ো । মহারানা প্রতাপের পর তাঁর ছেলে রানা সংগ্রাম যু দ্ধ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন আর তাঁর রানী শকুন্তলা মনমরা হয়ে পড়তেন । তাই তাঁর মন�োরঞ্জনের জন্য রানীর সখীদের নামে রাজপ্রাসাদ তৈরি করে দিলেন ---‘সহেলিয়�োঁ কি বাড়ী’ । সেখানে রানী নিজের সখীদের নিয়ে আম�োদ করতেন । অপূ র্ব উদ্যান, নানা ধরণের ফ�োয়ারা সবই পুরাতন প্রযু ক্তি বিদ্যায় তৈরি ---শাওন ভাঁদ�ো, কমল কলইয়াঁ, বিন বাদল বর্‌সাত, রাসলীলা প্রভৃতি । অপূ র্ব উদ্যানের মাঝেই দরবার বসত�ো । রানী ও সখীরা রানাকে নিজেদের আবেদন জানাতেন । তাই প্রাসাদ প্রাঙ্গনে রানী, তাঁর কন্যা ও সখীদের বসার জন্য বিশেষ সিংহাসন শ্বেতপাথরের তৈরি ও সাথে গ�োলাপের বাগান ।

পাহাড়, পাথর আর রুক্ষ জঙ্গল ---এই হ�োল ম�োটামুটি উদয়পুর থেকে মাউন্ট আবু পর্যন্ত একই চিত্র । কাঁটাগাছ, ঝ�োপঝাড় – তার সাথে দূ র দূ রান্ত পর্যন্ত শুষ্ক জমি । হঠাৎ ক�োথাও ক�োথাও জলের দেখা পাওয়া যায় । এই হ�োল রাজপুতানা । কেমন যেন একটা অদ্ভূ ত অনু ভূতি । ১৫৬৮ থেকে এত বছরের পুর�োন�ো কাহিনী যেন পাথরে পাথরে লেখা । এই মাটি ও রাজপুতানা সব কিছু র সাক্ষী । রাজপুত বীরদের কাহিনী ও সাথে সামরিক মানসিকতা উদয়পুর শহরের চারপাশে লক্ষণীয় । মেবার এক্সপ্রেসে করে এবার ফিরে আসার পালা । ট্রেনে বসে বার বার মনে পড়ছে আমরা কি আত্মবিস্মৃত জাতি ? আমাদের অতীত, ঐতিহ্য, গ�ৌরবময় ইতিহাস, অগণিত বীর য�োদ্ধা যাঁরা দেশের মর্যাদা রক্ষা করতে আত্মত্যাগ করেছেন; সেই ভারত যা ইতিহাস বইয়ের পাতায় আজ, কীভাবে একে আগামী প্রজন্মের কাছে আকর্ষণীয় করে ত�োলা যায় -- এই রকম নানা চিন্তার ঢেউ যখন মনে ত�োলপাড় করছে, তখনই মনে হ�োল আরেকবার ফিরে যাই সেই ‘অমর চিত্রকথা’র গল্পে, ‘কথা ও কাহিনী’ বইয়ে বীর রাজপুত যু গে । “যে পথ দিয়ে পাঠান এসেছিল সেই পথ দিয়ে ফিরল�ো নাক�ো তারা”। 

www.batj.org

Durga Puja 2014

27


ক্ষু দ্‌দা দেখে অবাক হয়ে যান   - অনু পম গু সু ন্দরী কন্যার জন্য সু পাত্র খ�োঁজার সংগ্রাম, ভ�োটে জেতার সংগ্রাম, সি বি আই-এর হাত থেকে বাঁচার সংগ্রাম, বস্‌কে তেল দিয়ে ওপরে ওঠার সংগ্রাম এবং একই সঙ্গে সু ন্দরী পি এ-কে নিয়ে ট্যুরে যাওয়ার সময় ওয়াইফদের আটকান�োর সংগ্রাম – সবই করতে হয় । তবে শেষের সংগ্রামটি ব�ৌদি শক্ত হাতে করতে পেরেছিলেন বলে গৃহে শান্তি রক্ষার জন্য শনি /সত্যনারায়নের পুজ�ো করতে হয়নি বা ক�োনও ‘বাবার থান’এ ঢিল বাঁধতেও হয়নি । জাপানের কিন্তু সংগ্রাম “চলেনি, চলছেও না,” আর চলবেইবা কেন ? স্কুলে ভর্তি করান�ো ক�োনও সমস্যাই নয় । বিশেষ করে শেষের বিষয়টি সম্পর্কে বলা যেতে পারে যে জাপানের মহিলারা কেউ হাউসওয়াইফ নয়, তারা তাদের বসের সঙ্গে ক�োম্পানীর উন্নতির জন্য ট্যুরে যেতেই পারেন বা পাঁচ তারা হ�োটেলের নিভৃত কক্ষে ক�োম্পানীর সেলস্‌প্রোম�োশনের দীর্ঘক্ষণ আল�োচনা করতেই পারেন । মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং (স্বামী স্ত্রীর মধ্যে)---প্লাস মাইনাসে কাটাকুটি ---সংগ্রামের কী দরকার ? কলকাতায় বা শহরতলীতে বৃক্ষর�োপণ উৎসব আষাঢ় শ্রাবণ মাসে মহাসমার�োহে পালিত হয় । এই বৃক্ষর�োপণ উৎসব বাঙালীর তের�ো পার্বণের জায়গায় বর্তমানে সাড়ে তের�ো পার্বণে পর্যবসিত হয়েছে । কারণ এতে রাজনৈতিক দলগুলির টিভি প্রচারের বাড়তি সু য�োগ পাওয়া যায় যেটা সু বিধামতন কাজে লাগান�ো হয় । দ্বিতীয় কারণ শান্তিনিকেতনের কায়দায় পাড়ায় পাড়ায় মহাসমার�োহে বৃক্ষর�োপণ উৎসব পালন করা যায় । এখানে সাধারণত পাড়ায় উঠতি কিশ�োরীরা খ�োঁপায় সাদা ফুলের মালা লাগিয়ে চারাগাছ র�োপণের প্রধান কুশীলব হয়, যাদের সু রেলা কন্ঠে থাকে রবীন্দ্রনাথের গান, “মরু বিজয়ের কেতন উড়াও উড়াও হে শূ ন্যে ধূ লিরে ধন্য কর”।

ক্ষু

দ্‌দা ও রমলা ব�ৌদি জাপানে অনেকবারই এসেছেন এবং প্রত্যেকবারই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে এবং অবাক হয়ে দেশে ফিরেছেন । সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র ‘হীরক রাজার দেশে’র একটা গানের কয়েকটা লাইন ব�োধহয় ক্ষু দ্‌দার জন্য প্রয�োজ্য --“আমি যেই দিকেতে চাই দেখে অবাক বনে যাই আমি অর্থ ক�োন খুঁজে নাহি পাইরে ও ভাই রে, ভাই রে”। ২০১৪ সালে ক্ষু দ্‌দা ও রমলা ব�ৌদি যখন জাপানে এসেছিলেন, তখন শীতের শেষ, জাপানে তখন সাকুরা ফুল ফ�োটার সময় । ২৭শে মার্চ ট�োকিওতে সাকুরা ফুল ফুটল�ো । অত্যন্ত সু ন্দর দেখতে এই ফুল জাপানে আনন্দ, শান্তি এবং র�োমান্সের যেন এক জীবন্ত সিম্বল । শুধু ফুল আর ফুল, গাছে ক�োনও পাতা নেই । সাকুরা ফুলের গাছের নিচে অনেকে পিক্‌নিক্‌করে । কিন্তু আমাদের শিউলি বা রাধাচূ ড়া গাছের নিচে কাউকে পিক্‌নিক্‌করতে দেখা গেছে কি ? আমাদের কৃ ষ্ণচূ ড়া ফুলের সঙ্গে সাকুরা ফুলের কিছু টা তুলনা করা যেতে পারে যদিও এই ফুলের রঙ লাল । যেন বলতে চাইছে, “ল�োকেদের সংগ্রাম চলছে, চলবে”। ভাল�ো স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করান�োর সংগ্রাম, পাড়ার র�োমিওদের নজর থেকে বাঁচিয়ে নিজের 28

আর এই অনু ষ্ঠানের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকে কলেজ পড়ুয়া রবীন্দ্রভক্ত স্থানীয় র�োমান্টিক কিশ�োরেরা । দাদা ব�ৌদিও কি এই রাস্তা দিয়ে যাননি ? নিশ্চয়ই গেছেন । জাপানেও ত�ো প্রচুর গাছ আছে । ব�ৌদির প্রশ্ন, এখানে তাহলে বৃক্ষর�োপণ উৎসব হয়না কেন ? এখানকার টীন এজাররা এই র�োমান্টিক অনু ষ্ঠান থেকে বঞ্চিত হ�োল কেন ? এই নিয়ে এরা বিপ্লব করেনা কেন ? গাছ ত�ো লাগান�ো হ�োল, কিন্তু সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শতকরা ষাট ভাগ চারা গাছের মৃ ত্যু হয় ঠিক উঠতি ছেলেমেয়েদের তাৎক্ষণিক ভাবাবেগপূ র্ণ ক্ষণস্থায়ী র�োমান্সের মত । কলকাতার ফুটপাথে বা খ�োলা মাঠে চারা গাছগুল�োর মৃ ত্যু হয় গরু ছাগলের উদরে যাওয়ার জন্য এবং জল সিঞ্চনের অভাবের জন্য । কিন্তু জাপানের রাস্তায় গরু ছাগল কেউ দেখেছে বলে শ�োনা যায়নি । এখানে কি তাহলে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর বলে কিছু নেই ? অবশ্য এখানে ছাগল থাকবেই বা কেন ? ভারতবর্ষে ছাগদু গ্ধ পানের প্রচলন গান্ধীর আমল থেকেই চলছে এবং মা কালীর সামনে পাঁঠা বলির রেওয়াজ আজও অব্যাহত । জাপানে ছাগল নিয়ে গান্ধীজী কখনও আসেননি এবং কালী মন্দির নেই বলে কচি নধর পাঁঠা ও তাদের পরিবারদেরও রাস্তায় রাস্তায় বিচরণ করতে দেখা যায়না । তবে ক্ষু দ্‌দা বা ব�ৌদি বর্তমানে ক�োনরকম দু ধ না খেলেও দাদার ধারণা ব�ৌদির মস্তিষ্কের সিংহভাগ অংশে গরুর ‘পটি’র অনধিকার প্রবেশ এবং তার উপস্থিতি পারিবারিক কলহের মূ ল সূ ত্রপাত, “মাথায় গ�োবরের সঙ্গে আরও কিছু থাকার কথা”।

Anjali

ক�োলকাতায় গাছেদের জীবন/মৃ ত্যুর দায়িত্ব ও স্থায়িত্ব নির্ভর www.batj.org


ক্ষুদ্‌দা দেখে অবাক হয়ে যান করে গরু, ছাগল এবং ভগবানের দয়ার ওপর । গাছেরা যদি ‘ফুল গ্রোওন ট্রি’ হয়ে উঠতে পারে, তাহলে প্রধানত তিনটি উপকার তারা করে ---স্থানীয় পরিবেশ শীতল করে, গাছের নিচে চায়ের দ�োকান বা শনি মন্দির বানাতে সাহায্য করে যেখানে জুয়ার ঠেক্‌গজাতে ও অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চেষ্টা করে, গাছের শাখা প্রশাখায় পাখিদের বাসস্থান বানান�োর ‘আইডিঅ্যাল্‌ অ্যাম্‌বিঅ্যানস্‌’ তৈরি করে । পাড়ার কাজের মাসীদের ঐকান্তিক প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হয়ে পবন দেবতা তাঁর বিশ্বস্ত লেফটেনান্ট কালবৈশাখীকে পাঠান পূ র্ণবয়স্ক বৃক্ষটিকে উৎপাটিত করার জন্য । ভূ লু ন্ঠিত বৃক্ষের ডালপালা নিয়ে কাজের মাসীদের কাড়াকাড়ি করার চির পরিচিত দৃশ্যের আবির্ভাব । কিন্তু বাস্তুচ্যুত পক্ষীকুলের দু র্দশার করুণ কাহিনী বর্ণিতও হয়না, জানাও যায়না । ন্যাশনাল জিওগ্রাফি বা অ্যানিম্‌ল্‌ প্ল্যানেটও সু ক�ৌশলে এড়িয়ে যায় । মানেকা গান্ধীর বিপ্লব ক�োথায় গেল ? জাপানে কিন্তু গাছগুল�োকে গ�োড়া থেকেই শক্ত খুঁটির সাহায্যে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় যাতে ক�োনরকম কালবৈশাখীতেও (জাপানে তাইফুন) গাছগুল�ো ‘আপরুটেড’ না হয় । ব�ৌদির প্রশ্ন, তাহলে জাপানের কাজের মাসীরা যারা রান্নার গ্যাস এখনও নেয়নি তাদের রান্না হয় কি করে ? এখানে পাখিদের বাস্তুহারা হওয়ার ক�োনও আশঙ্কাই নেই কারণ দেশটির শহরাঞ্চলে পাখি প্রায় নেই বললেই চলে এবং যারা আছে তারা কেউ গাছে থাকেনা । অতএব ক�োনও আন্দোলন বা শ�োকপ্রস্তাব গ্রহণ করার প্রশ্নই নেই ।

অর্থনীতি চাঙ্গা থাকবে ?

কলকাতায় পার্কে, ময়দানে বা বড় বড় বৃক্ষ দ্বারা সজ্জিত রাস্তা দিয়ে খুব ভ�োরবেলায় বা সন্ধ্যেবেলায় হাঁটলে পাখিদের মিলিত কন্ঠে কিচিরমিচির আওয়াজে কান ঝালাপালা হয়ে যায়, অন্য সময় কিন্তু হয়না । ব�ৌদি এর কারণ জিজ্ঞাসা করাতে ক্ষু দ্‌দা বললেন, “ত�োমার শৈশবে বা কৈশ�োরে ত�োমার বাবা ত�োমাকে অনেক টাস্ক দিয়ে এবং ত�োমার মাকে হ�োম গার্ড হয়ে ত�োমার দিকে নজর রাখার দায়িত্ব দিয়ে অফিসে যেতেন । তুমি পড়াশুন�ো না করে বিভিন্ন সিনেমা ম্যাগাজিনে নিমগ্ন থাকতে (তখনও টিভিতে বাংলা সিরিয়াল শুরু হয়নি) এবং ত�োমার মা ত�োমার দিকে নজর না দিয়ে পান জর্দার আমেজ সহয�োগে দিবানিদ্রার সু খ থেকে বঞ্চিত হতে নারাজ । সন্ধ্যায় ত�োমার বাবা বাড়ী ফিরে এসে কথা না শ�োনার জন্য অত্যন্ত ক্রুদ্ধ এবং রাগান্বিত হতেন । পাখিদের সংসারেও হয়ত�ো এই রকম হয় । এছাড়াও কালবৈশাখীর ঝড়ে গাছ উৎপাটিত হলে সন্ধ্যায় ফিরে এসে যখন পাখিরা দেখে তারা বাস্তুহারা হয়ে গেছে, তখন তারা প্রচণ্ড চ্যাঁচামেচি করে । করাই স্বাভাবিক । কিন্তু কিছু ক্ষণ পরে তাদের নতুন বাসস্থান হয়েও যায় । তার জন্য তাদের ক�োনরকম সংগ্রাম, আন্দোলন, পথ অবর�োধ, ট্রেন অবর�োধ করতে হয়না ।

ক্ষু দ্‌দা ভাবেন যদি পশ্চিম বাংলাকে ক�োনরকম ম্যাজিক দড়ি দিয়ে বাঁধা যেতে পারত�ো, তাহলে ক্ষু দ্‌দার স্লোগান এই রকম হ�োত --দড়ি ধরে মার�ো টান বাংলা হবে জাপান সমান বাঙালী জাপানীর ঐকতান ইহাই ম�োদের গীতবিতান ।।

কলকাতায় ক্ষু দ্‌দা রমলা ব�ৌদিকে ক�োনদিনও একা একা ট্যাক্সিতে যেতে দেননা, রাত্তিরে ত�ো নয়ই । জাপানে দাদা ব�ৌদি একদিন তাদের এক আত্মীয়র বাড়ীতে গিয়েছিলেন এবং রাত প্রায় আড়াইটে পর্যন্ত আড্ডা চলেছিল । রাত প�ৌনে তিনটের সময় দাদা ব�ৌদি একটা ট্যাক্সি করে বাড়ী ফিরলেন । এটাই জাপানের চলতি রীতি, অবাক হওয়ার কিছু নেই । কিন্তু বাড়ী ফিরে ক্ষিপ্ত ব�ৌদি গ�োমড়া মুখে সিদ্ধান্ত নিলেন যে আর কক্ষন�ো দাদাকে জাপানে রাত্রে একা ক�োথাও পাঠাবেন না, কারণ ট্যাক্সি ড্রাইভার ছিল একজন সু ন্দরী জাপানী মহিলা । ক্ষিপ্ত এবং শঙ্কিত ব�ৌদির জন্যে হয়ত�ো অতুলপ্রসাদ অভয়বাণী লিখে গেছেন, “ভুলি ভেদাভেদ জ্ঞান হও সবে আগুয়ান ---”। জাপানে সব কিছু দেখে ক্ষু দ্‌দা, ব�ৌদি অবাক হওয়ার পরেও আবার হীরক রাজার দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে । অবাক হওয়ার শেষ নাই, বৃথা চেষ্টা কর তাই ।

কিন্তু জাপানে এই ধরণের ক�োনও সমস্যাই নেই । শহরে পাখি কম ত�ো কি হয়েছে, পাখিদের কিচির মিচির আওয়াজ ক্যাসেটে ত�োলা আছে, স্টেশেনে গেলেই শ�োনা যায় । গাছ লাগাও কিন্তু ডাল ছেঁটে দাও যাতে পাখিরা বাসা বাঁধতে না পারে । বার্ড লাভাররা কিছু ভাবছেন কি ? কলকাতায় ট্যাক্সি সমস্যা সর্বজনবিদিত । ট্যাক্সি ডাকলে ট্যাক্সি ড্রাইভার প্রথমেই জানতে চাইবে ক�োথায় যেতে চান-অর্থাৎ ড্রাইভারের পছন্দসই জায়গা না হলে যাবেনা । কিন্তু ট্যাক্সি ড্রাইভার ক্ষু দ্‌দার গন্তব্যস্থল জানতে চাইলে দাদা বলেন, “না না, আমি ক�োথায় যাব সেটা বড় কথা নয়, আপনার গাড়ী ঠিক ক�োথায় ক�োথায় যেতে পারে যদি বলেন তাহলে আমি চট্‌করে ভেবে নেব সেদিকে আমার ক�োনও কাজ আছে কি না । ক্লান্ত ড্রাইভারের মুখে তাৎক্ষণিক হাসির ঝিলিক দেখা যায় । মিটারে সঠিক ভাড়া নেওয়ার পরিবর্তে বর্দ্ধিত ভাড়া নেওয়ার নতুন নতুন টেকন�োলজির উদ্ভাবন কলকাতা জাপানকেও হার মানিয়ে দেয় । এ ছাড়া সওয়ারীকে দু /পাঁচ টাকা ফেরৎ দেওয়ার ক�োনও রীতি নেই । এটা নাকি স্বাধীন দেশের ট্যাক্সি ড্রাইভারদের দীর্ঘ দিনের অর্জিত বৈপ্লবিক অধিকার । কিন্তু দিন কয়েক আগে জাপানে দাদার ছেলে তার বাড়ী থেকে ফ�োনে একটা ট্যাক্সি ডেকেছিল এবং এক হাজার তিনশ�ো ইয়েন দেওয়ার বদলে দশ হাজার তিনশ�ো ইয়েন দিয়েছিল । পরে ট্যাক্সি ক�োম্পানী ন’ হাজার ফেরৎ দিল যেটা দাদার কাছে একটা মেন্টাল শক্‌ ! এর পরেও কি জাপানের www.batj.org

Durga Puja 2014

29


সিনাই-এর সূ র্যোদয় ��������������������

ত সু ন্দর এত মন�োরম জায়গা আমি সত্যিই আর ক�োথাও দেখিনি। পাহাড় আর সমুদ্র পাশাপাশি। পাহাড়ের রং পাটকিলে, আর সমুদ্র অবশ্যই নীল। কিন্তু সূ র্যের আল�োয় সেই পাটকিলে আর নীল রঙের যে কত রকমফের আর বাহার হয়, তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। আর চারিদিকে শুধু বালি আর বালি। এত বালিও ছিল এ পৃ থিবীতে? তারই মাঝে এদিক-ওদিক কিছু ক্যাকটাস জাতীয় গুল্ম; গজিয়ে আছে খাপছাড়া ভাবে। এখানে ওদের উপস্থিতিটা কেমন যেন অযাতিত অতিথির মত�ো। এমন দৃ শ্য সচরাচর দেখা যায় না। দেখে মন ভরে গেল। কিন্তু এখানে আসার আগে এসবের কিছু ই আমার জানা ছিল না। যে জন্যে সিনাই-পেনিনসু লায় গেছিলাম, তা হ�োল একটা ‘অসাধারণ সূ র্যোদয়’ দেখা। আর তা দেখতে হলে সারা রাত trek করে উঠতে

হবে মাউন্ট সিনাই বা মাউন্ট ম�োসেস-এর ওপর, যার ক�োলে আছে পৃ থিবীর সবচেয়ে পুরন�ো চার্চ “সেন্ট ক্যাথরিন”। এই পাহাড়ের ওপরেই নাকি Moses স্বয়ং ভগবানের কাছ থেকে “10 commandments”-এর নির্দেশ পেয়েছিলেন, যা পরবর্তী কালে হয়ে ওঠে খ্রিস্ট ধর্মের অ-আ-ক-খ। এইসব জটিল information comprehend করার ক্ষমতা বা বুদ্ধিমত্তা, ক�োনটাই আমার নেই। যেটা ছিল, তা হ�োল ঐ ‘অসাধারণ সূ র্যোদয়’ দেখার অদম্য ইচ্ছা। ‘অসাধারণ’ এই কারণে যে সূ র্যটা নাকি পাহাড়ের তলা থেকে মাটি ফুঁড়ে ওঠে, পাহাড়ের ওপর দাঁড়ালে তখন মনে হয় বুঝি পায়ের তলা থেকে সূ র্যোদয় হচ্ছে । দার্জিলিঙের টাইগার হিল থেকে আলাস্কার মাউন্ট ম্যাকিনলে, কন্যাকুমারিকার ত্রি-সাগরের সঙ্গম থেকে সাউথ-আফ্রিকার Cape of Good Hope, আমার মিনেস�োটার বাড়ির কাছের গ্রেট-লেক সু পিরিওর থেকে বলিভিয়ায় পৃ থিবীর উচ্চতম-লেক টিটিকাকা, রাজস্থানের মরুভুমি থেকে আফ্রিকার সাহারা, অ্যারিজ�োনার গ্র্যান্ড-ক্যানিয়ন থেকে অস্ট্রেলিয়ার উলু রুরক, এমনকি পেরুর অ্যামাজন জঙ্গলের মাচুপিচু-তেও সূ র্যোদয় বা সূ র্যাস্ত দেখার স�ৌভাগ্য হয়েছে আমার; কিন্তু তাই বলে পায়ের তলা থেকে মাটি ফুঁড়ে? নাঃ, তেমনটা আগে কখন�ো শুনিনি। এইসব শুনে-টুনে দেখার ‘ইচ্ছা’টা মনে একেবারে জাঁকিয়ে বসল�ো, ল�োভ আর সামলাতে পারলাম না। আর যাই হ�োক, এটা দেখতে গেলে আমাকে ভগবান বা ধর্ম ব�োঝার মত�ো ক�োন�ো অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী হতে হবে না, যা কিনা আমার একেবারেই নেই! তাই ঠিক ক�োরে ফেললাম এটা না দেখে আমি মিশর-দেশ ছেড়ে নড়ছি না। কিন্তু আমি ঠিক করলেই বা কি? সেখানে যাব কি ক�োরে? রাস্তাঘাটই যে তেমন নেই; যা আছে তা অতি নগণ্য, আর তারও বেশীর ভাগই নাকি বন্ধ। কেননা কেউই যে সেদিকে যেতে চায় না। ওদিকে নাকি পদে পদে বিপদ, যু দ্ধ সংক্রান্ত। কারণ আশেপাশের সব দেশই নাকি claim করে যে সিনাই-পেনিনসু লা তাদের, আর তাই নিয়েই যত খেয়�োখেয়ি! অনেক কষ্টে একজনকে জ�োগাড় করা গেল�ো একটা private car-এ আমাকে নিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু মুশকিল হ�োল ভাষা সমস্যা; আমার কাছে আরবী যা, ওর কাছে ইংরিজিও ঠিক তাই, একেবারে যাকে বলে ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’! তাই হাত-পা নাড়ান�োই হয়ে দাঁড়াল�ো ব�োঝাবুঝির একমাত্র মাধ্যম। ঠিক আছে, তাইই সই। একদিন ভ�োরে বেরিয়ে পড়লাম। Plan-টা ছিল ম�োটামুটি এই যে কায়র�ো থেকে সু য়েজ হ�োয়ে, gulf of Suez বরাবর দক্ষিণে যাওয়া আর একই পথে ফেরত আসা। অন্য ক�োন�ো

দিকে যাওয়া চলবে না। কারণ মুশকিল হ�োল আমার অ্যামেরিকান পাসপ�োর্ট। ঐ জন্যই আমাকে ইসরায়েলের গুপ্তচর বলে ভেবে বসার 30

Anjali

www.batj.org


সিনাই-এর সূ র্যোদয় গেল। আচ্ছা, ওরা যদি ক�োন�োদিন আমাকে নিয়ে মারামারি শুরু ক�োরে দেয়, তাহলে আমি ক�োন দিকে যাব? বেচারি ভগবান, ওনার যে কি নিদারুণ অবস্থা! একজন আরব বেদু ইনকেও দেখলাম, উটের পিঠে চড়ে যাচ্ছে। র�োদে চটা, কালচে-তামাটে গায়ের রং, খুব র�োগা

সমূ হ সম্ভাবনা। কারণ অ্যামেরিকাই নাকি ইসরায়েলকে ইন্ধন য�োগায় । তার জ�োরেই ইসরায়েলের এত দাপট, আর সেই দাপটেই ওরা সিনাই-পেনিনসু লায় ‘বাবু’ হয়ে বসে ছিল বেশ কিছু দিন। তিন তিনবার যু দ্ধ ক�োরে তবেই সিনাই-পেনিনসূ লার বেশ খানিকটা ফেরত পেয়েছে মিশর। এইসব তথ্য কি আর আমার মাথায় ঢ�োকে? আমার শুধু ঐ একটাই সম্বল ---ঐ ‘ইচ্ছা’টা, ঐ ‘সূ র্যোদয়’ দেখার ‘ইচ্ছা’টা। দু পুর ১২-টা নাগাদ সেন্ট ক্যাথরিনে পৌঁছান�ো গেল। এই চার্চে নাকি আমার মত�ো অপবিত্র নাস্তিকের ঢ�োকা বারণ। কিন্তু আমি যে অপবিত্র তাই বা কে জানছে? ভাবলাম এত দূ র যখন এসেছি, ঢুকেই পড়ি না একবার, কি আর হবে । দেখি না গিয়ে, কি এমন জিনিস আছে এর ভেতরে, যা নিয়ে মুসলমান, খ্রিস্টান আর ইহুদীদের মধ্যে এত লাঠালাঠি, এত খিটকেল। কিন্তু ঐ যে বিবেক বলে কি যেন একটা আছে, তার শক্তির কাছে হেরে গেলাম । কেন জানি মনে হ�োল আমি এই গির্জায় ঢুকলে বাড়ি বয়ে এসে জ�োর ক�োরে কাউকে অসম্মান করা হবে। সেটা আমি পারব�ো না। তাই বাইরে থেকেই দেখলাম। বেশ দেখতে। অ্যামেরিকার মত�ো বড় আর নতুন বা ‘fast’ দেশে থাকলে যা হয়; ৫০০ মাইল ক�োন দূ রত্বই নয়, আর ৫০০ বছর অনেক দিন! তাই দু হাজার বছরের পুরন�ো কিছু দেখতে গিয়ে দারুণ র�োমাঞ্চ আর শিহরণ হ�োল। কিন্তু ব্যাস, ঐটুকুই। Spiritual কিছু ই feel করলাম না। মনে মনে একটু হাসলাম, ক�োন spirit থাকলে তবে না spiritual feel করা যায়, আমার যে এসবের ‘কিসু ই’ নেই! উল্টোদিকে ছ�োট�ো একটা টিলার ওপরে দেখলাম একদল খ্রিস্টান ল�োক ক�োন একটা ‘service’-এ ব্যস্ত । ওরা যে মন্ত্র আউরাচ্ছিল, তার মধ্যে কেমন যেন একটা শান্তির বার্তা ছিল। ঠিক যেমনটা মনে হয় যখন সংস্কৃ ত মন্ত্র বা স্তোত্র কেউ সু ন্দরভাবে পাঠ করেন । আমার ছ�োটবেলায় মহালয়া শুনে ঘুম থেকে ওঠার কথা মনে পড়ে গেল�ো, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের সে কি অসামান্য দক্ষতায় স্তোত্র পাঠ! ভেবেই গায়ে কাঁটা দিল�ো। ওদের

দু -এক জনের পরণে সাদা আলখাল্লার মত�ো কিছু একটা । হয়ত�ো ওরাই পুর�োহিত। ওদের সাথে গিয়ে আলাপ করতে ইচ্ছে করল�ো, তারপর ভাবলাম, না থাক, ওদের প্রার্থনা ভঙ্গ করব�ো না । এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ালাম বেশ খানিকক্ষন। ভাবছিলাম ভগবান বেচারিকে নিয়ে এত মারামারি কেন? নাকি মারামারিটা আসলে জমি দখলের। সিনাই-পেনিনসু লার দখল । আমার তিন মেয়ের কথা মনে পড়ে www.batj.org

আর রুক্ষ চেহারা । গায়ে শতছিন্ন জামাকাপড়। দেখে মনে হয় বছর কয়েক স্নান করেনি । এদিকে জলই বা পাবে ক�োথায়? উটের পিঠেও শতছিন্ন শতরঞ্চির মত�ো কিছু একটা, ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার জন্যই ব�োধহয়। দেখে মায়া হ�োল। আচ্ছা, ওর কি বউ আছে? ছেলে, মেয়ে? তারা কি খেতে পায়? সু খ যে নেই, তা ত�ো দেখাই যাচ্ছে, কিন্তু শান্তি? সেটা কি আমার থেকে ওরই বেশী? কিছু দূ রে ঘরের মত�ো কিছু একটা দেখা গেল�ো, কুঁড়েঘর আর তাঁবুর মাঝামাঝি কিছু একটা। ওরই হবে ব�োধহয়। এদিক-ওদিক, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আরও কিছু উট, গুল্ম চিবিয়ে জির�োচ্ছে। ওদের demeanor-এও কেমন যেন ‘শান্তি’। দেখে মনে হ�োল যে এই দু নিয়ায় কি ঘটছে, না ঘটছে, তাতে ওদের বয়েই গেল�ো। এই আপাত ‘অশান্ত’ সিনাই-পেনিনসু লায় শান্তি খুঁজে পেলাম এই আমি! প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। ঐ ‘শান্তি’ দিয়েই আমার lungs দু ট�োকে ভ�োরে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম । আবার কবে যে সু য�োগ হবে! কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। গাড়ির driver এসে তাগাদা লাগাল�ো, ব�োলল�ো যে এবার মাউন্ট সিনাই রওনা না হলেই নয়। নয়ত�ো ওখানে সময় মত�ো পৌঁছান�ো যাবে না, কারণ ওকে যে আবার এদিকেই ফেরত আসতে হবে রাত কাটাতে । আমি সারা রাত trek করব�ো; কারণ মনু ষ্য সভ্যতা নাকি এখানেই শেষ! আচ্ছা, শান্তি খুঁজে পাওয়াটা কি এতই দু স্কর? যদি বা এখানে একটু সু য�োগ হ�োল ! কি আর করা, বেরিয়ে পড়লাম। সন্ধ্যের আগেই পৌঁছে গেলাম মাউন্ট সিনাই। মনে মনে একটু ভয়ই পাচ্ছিলাম, পারব�ো ত�ো? Driver ত�ো আমায় পাহাড়ের ক�োলে ফেলে রেখে কেটে পড়বে। তারপর? কিন্তু ওখানে গিয়ে বেশ কিছু ইউর�োপিও বিদেশীদের দেখে ধড়ে যেন একটু প্রাণ এল�ো! তারা দেখলাম সব একেবারে বিলকুল ready, trekking-এর সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে। আর আমি? সাথে শুধু একটা জলের ব�োতল! ঐ যে বলে না বাঙ্গালীদের কিসসু হবে না! আমিই তার হাতে-গরম উদাহরণ। এখানে নাকি এখন সব জির�োচ্ছে, খানাপিনা আর বিদেশীদের যা হয়, চুমু-চামা। দেখলাম সবই চলছে বেশ ভাল�ো রকম। আমি কি করি, কি করি ভাবতে ভাবতেই বিরক্ত হয়ে গেলাম। কিন্তু একা একা যে এগিয়ে যাব, সে সাহসও নেই বুকে। এখানে এসেছি ত�ো একাই, কিন্তু তারপর থেকে এই একাকীত্বের ভয়টা কেমন যেন গ্রাস করতে শুরু করেছে আমায়। আর তার ওপর এই ইউর�োপিওদের দেখে আমার অবস্থা, যাকে বলে ‘ঘ�োড়া দেখে খ�োঁড়া’। কথাবার্তা বলে যা বুঝলাম তা হ�োল এরা রাত ১১-টা নাগাদ trekking শুরু করবে । ওপরে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত ৪-টে। তার বেশী দেরী করা যাবে না, কারণ আল�ো ফুটতে শুরু করে দেবে। এসবের কিছু ই আমার জানা ছিল না। শুধু জানতাম যে সকাল ৯-টার মধ্যেই আমাকে নেমে আসতে হবে, কারণ driver আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে। শুনে সকলে বলল�ো যে ওটা নাকি ক�োন�ো ব্যাপারই না, সূ র্যোদয় ৬-টার মধ্যেই শেষ, তারপর নামতে ঘণ্টা আড়াই তিনের বেশী লাগবে না। মনে মনে ঠিক ক�োরে নিলাম যে এদের সাথেই উঠব�ো। রাত ১১-টা নাগাদ ওপরে ওঠা শুরু হ�োল। খুব সু ন্দর চাঁদ উঠেছে, রূপসী-কিশ�োরী যেন। ওর রূপের ছটায় চারিদিক রুপ�োলী, চিক চিক ক�োরে চল্‌কে পড়ছে সেই রূপ। সেই উপচে পড়া রূপের

Durga Puja 2013

31


সিনাই-এর সূ র্যোদয় আল�োয় পথ দেখে, আর মনে মনে আমাদের সকলের প্রিয় ‘সলিলদা’র “আমরা সবাই মিলে সূ র্য দেখব�ো ব�োলে” গানটা গাইতে গাইতে যখন ওপরে গিয়ে পৌঁছালাম, ততক্ষণে চাঁদ পূ র্ণ য�ৌবনা, আর আমার অবস্থা কাহিল। ওপরে বেশ ঠাণ্ডা, কিন্তু ঐ ঠাণ্ডাটাকেই বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করল�ো, ঠিক তাই করলাম। চাঁদের আল�োটা উপভ�োগ করতে করতে রবীন চাটুয্যের সেই সু রটা মনে পড়ে গেল�ো, তালাত মাহমুদের গাওয়া “চাঁদের এত আল�ো”। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হ�োল, য�োগ্যতার নিরিখে জীবনে ত�ো কত কিছু ই বেশী পেয়ে গেলাম। ভারতে জন্মান�োর সূ ত্রে এই গানটা, আর অ্যামেরিকায় থাকার দ�ৌলতে মাউন্ট সিনাই! একেই বলে কপাল! অন্তত আমার দাদা আর ভাইটাকে সাথে রাখতে পারলে হয়ত�ো এতটা guilty feelings হ�োত না। কি আর করা যাবে, সেটাও আমার কপাল! ছ�োটবেলায় সহজপাঠে বা কিশলয়ে পড়েছিলাম “একা একা খেলা যায় না, ঐ বাড়ি থেকে কয়েকজন ছেলে এলে বেশ হয়”, আমার সেটাই মনে পড়ে গেল�ো। চাঁদের আল�োটা আস্তে আস্তে কমে যেতে লাগল�ো, আর আকাশ একটু একটু ক�োরে পরিস্কার হতে লাগল�ো। আকাশের রঙ বেগুনী থেকে গ�োলাপী, গ�োলাপী থেকে কমলা, কমলা থেকে লাল, আর তার সাথে সাথে আরও কতরকমের নাম-না-জানা রঙের পরিবর্তন হতে হতে হঠাৎ স�োনালী হয়ে গেল! তারই ফাঁকে এক মুহূর্তে পাহাড়ের তলা থেকে, আমার পায়ের তলা থেকে বেরল�ো একটা লাল টুকটুকে রক্তের গ�োলা, মুহূর্তেই যেটা আবার হয়ে গেল এক তাল স�োনার দলা। মনে হ�োল যেন হাতে একটা লম্বা বাঁশ থাকলেই ওটাকে একটু ছু ঁয়ে দেখা যেত; ওটা যেন কত কাছে, আবার কত দূ রেও! তার যে কি রূপ, তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব, কেউই পারবে বলে আমি মনে করি না, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও নন। সমবেত ল�োকজনদের মধ্যে একটা হুল্লোড় উঠল, তারপর সবাই চুপ। একটা নিস্তব্ধতা গ্রাস ক�োরে নিল�ো সকলকে। আমার নড়াচড়া করার ক্ষমতাটাই হারিয়ে গেল�ো বেশ কিছু ক্ষনের জন্য। তারই মধ্যে কিছু ছবি ত�োলা, আর দু -এক মিনিটের একটা video record করা। এরপর নামার পালা। নামতে গিয়ে কত কিছু ই মনে এল�ো, এই পৃ থিবীটা কত সু ন্দর, আমরা কেন যে এত ঝগড়া-মারামারি করি, এই সব। মাথায় একটা চিন্তা ছিলই, যদি গাড়িটা সময় মত�ো না আসে, কিম্বা একেবারেই না আসে? মিশরীয়দের সময় জ্ঞানের যা বলিহারি! সময়ের কথা জিজ্ঞেস করলেই বলে “ইনসা আল্লা”, অর্থাৎ ক�োন�ো ঘটনা সময় মত�ো ঘটবে কিনা, বা আদ�ৌ ঘটবে কিনা তার পুর�োটাই “আল্লা”র মর্জির ওপর নির্ভরশীল। ভারত থেকে সরাসরি এখানে এলে হয়ত�ো এতটা চ�োখে পড়ত�ো না, কারণ আমাদেরও ত�ো ঐ একই রকম সময়জ্ঞান, যদিও আমরা সচরাচর ভগবানকে এর মধ্যে জড়াই না। কিন্তু জীবনের বেশীরভাগটাই অ্যামেরিকায় থাকার পর খুবই চ�োখে পড়ে, বিরক্তি লাগে, আবার হাসিও পায়। চিন্তাটা নিচে নামার সময় তাই মাথায় বেশ ভাল�োরকমই ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু নিচে নেমে দেখি আমার গাড়ি উপস্থিত, তাতে ঢুকেই গা-টা এলিয়ে দিলাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তা জানি না, কতক্ষন যে ঐ ভাবে কেটেছে তাও জানি না। একটা হৈ-হল্লায় ঘুমটা ভেঙ্গে গেল�ো। দেখি আমার গাড়ি ঘিরে বেশ কিছু ল�োকজন। তাদের হাতে বন্দুক, মাথায় পাগড়ী, মুখের

বেশীরভাগটাই ঢাকা, পরনে মিশরীয় ‘গালেবেয়া’। ভয়ে রক্ত একেবারে হিম হয়ে গেল�ো। এরা কি একেবারে মেরেই ফেলবে নাকি? মেয়ে তিনটের মুখগুল�ো চ�োখের সামনে ভেসে উঠল�ো, তারপর সব কিছু ই কেমন যেন ঝাপসা। ঘুমের ঘ�োরে ক�োন�ো স্বপ্ন 32

দেখছি না ত�ো? দেখি ওরা আমার driver-টাকে গাড়ি থেকে টেনে নামাচ্ছে। তারপরই বন্দুকধারী একজন গাড়িতে উঠে এল�ো, আর তন্ন তন্ন ক�োরে গাড়ির ভেতরটার তল্লাসি নিল। তারপর আমাকেও নামতে বলল�ো। ভয়ে জড়সড় হয়ে, থর থর ক�োরে কাঁপতে কাঁপতে আমি নামলাম। আমার কাছে কিছু একটা চাইল। আমার driver আমাকে ব�োঝাল যে ওরা আমার ID চাইছে। আমার পাসপ�োর্টটা শরীরের একটা গ�োপন জায়গা থেকে বের ক�োরে ওদের দেখালাম। তখন ওরা আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃ ষ্টিতে তাকিয়ে থেকে, নিজেদের মধ্যে কি সব বলাবলি করতে করতে, পাশের একটা ছেঁড়াখ�োড়া তাঁবুতে ঢুকে গেল�ো। আমার পাসপ�োর্টটা নিয়েই। তার আগে আমাকে কি সব বলে শাসিয়ে গেল�ো, যার অর্থ একটাই হয় যে; আমি যদি এক পাও নড়ি, ত�ো আমার জান খতম। কিন্তু নড়ে যাবই বা ক�োথায়? পাসপ�োর্ট ছাড়া? বেশ কিছুক্ষণ পর ওরা ফিরে এল�ো, আমার পাসপ�োর্টটা হাতে নিয়ে। ধড়ে যেন প্রাণ ফিরে পেলাম। কিন্তু পাসপ�োর্টটা ফেরত দিল�ো না। উল্টে বলল�ো জামা-কাপড়-জুত�োম�োজা সব খ�োল�ো। খুললাম। জামা-প্যান্টের পকেটগুল�ো ভাল�ো ক�োরে search করল�ো, জুত�ো জ�োড়াও। তারপর বলল�ো যেটা বাকি আছে, সেটাও খুলতে হবে, অর্থাৎ আমার underwear! আমি ভাবলাম, কি বিপদ, এটা আবার কেন? ইতস্তত করতে লাগলাম। কিন্তু ওদের আরবী কথাবার্তা থেকে যা বুঝলাম তা হ�োল “অত সহজে চিঁড়ে ভিজবে না চাঁদু , তুমি ওখান থেকেই ত�োমার পাসপ�োর্টটা বার করেছ, সুতরাং ওখানে আরও কি কি লুকান�ো আছে তা আমরা দেখতে চাই”। আমার ড্রাইভারের দিকে আকুতি নিয়ে একবার তাকালাম, যে তুমি অন্তত এদের ভাষাটা জান�ো, কিছু একটা কর�ো। কিন্তু ওর চ�োখের ইশারায় যা বুঝলাম তা হ�োল, ওরা যা যা বলছে আমার তাই করাই শ্রেয়। নিজেকে ব�োঝান�োর চেষ্টা করলাম যে এ আর এমন কি? Gym-এ গিয়ে সাঁতার কাটার পর, খেলার পর এমন ত�ো প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ক�োরে থাকি; men’s locker room-এ সকলের সাথে উদ�োম হয়ে স্নান করি, দাঁড়ি কামাই। এমনটাই ত�ো ক�োরে আসছি অ্যামেরিকায় যাওয়া ইস্তক! ওখানে ত�ো এটাই রেওয়াজ । সুতরাং এতে আর ঘাবড়ান�োর কি আছে? বুঝতে পারলাম যে আমার এই অ্যামেরিকান পাসপ�োর্টটাই এই মুহূর্তে আমার যত বিপত্তির কারণ। তাই ওদের ব�োঝান�োর চেষ্টা করলাম যে আমি আদতে ভারতীয়। কায়র�ো, আর মিশরের অন্যান্য বেশ কিছু জায়গায় দিন কয়েক আগেই ঘ�োরার সুবাদে জানতাম যে এই মিশরীয়রা আমাদের Bollywood-এর ছবির খুব ভক্ত, TV-তে এখানে সারাদিনই হিন্দি ছবি দেখান�ো হয়; আরবী-subtitle সমেত। তাছাড়া পৃ থিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে আমার এই ধারণাই হয়েছে যে, ভারতীয়দের ওপর বিশেষ কার�ো তেমন ক�োন রাগ নেই; যদিও এখন�ো আমার পাকিস্থান ভ্রমণের স�ৌভাগ্য হয়নি। বরং, আমাদের সম্পর্কে অনেকেরই ‘শান্ত-শিষ্ট-ল্যাজ-বিশিষ্ট’ এই ধরনের একটা ধারণা আছে। তাই আমার ভারতীয়ত্ব ব�োঝাতে Bollywood-এর চিত্র তারকাদের নাম ক�োরে আব�োল-তাব�োল বকতে শুরু ক�োরলাম। হয় তাতেই কাজ হ�োল, নতু বা আমাকে ওদের এক বদ্ধ উন্মাদ ব�োলে মনে হ�োল; আমার ওপর ওদের সন্দেহটাই ব�োধহয় চলে গেল। আমার আর underwear খ�োলার দরকার হ�োল না! পাসপ�োর্টটা ফেরত দিয়ে পিঠে একটা চাপড় মেরে এক বন্দুকধারী বলল�ো জামা প্যান্ট পরে নিতে। চটপট তাই করলাম। তারপর ওরা আমার ড্রাইভারের সাথে কি যেন একটা মিটিং করল�ো, আমার সামনেই। ড্রাইভার গাড়িতে ঢুকে, সাথে যে map নিয়ে গেছিলাম, তার ওপর আঙুল দিয়ে দিয়ে আমাকে ব�োঝাল যে আমরা যে রাস্তা দিয়ে আগের দিন এসেছিলাম, তা বন্ধ হয়ে গেছে, অন্য ঘুর-পথে ফিরতে হবে। শুধু তাই নয়, আমরা যাতে ওদের সাথে ক�োন�োরকম ছলা-কলা ক�োরে অন্য ক�োন�ো রাস্তায় চলে না যাই, তার জন্য ওরা ওদের ল�োক পাঠাচ্ছে একটা জীপে । ওরা সামনে সামনে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে, আমরা শুধু সেই পথেই ওদের follow ক�োরে যেতে পারব�ো, নচেৎ নয়। আর বেশী ব্যাগ�োরবাই করলেই, ঢিসুম! সব কিছুতেই রাজি হলাম। কিন্তু তাতেও রক্ষা নেই। একজন এসে বলল�ো যে আমার camera-টা এখানে রেখে যেতে হবে। সে কি? তা কি ক�োরে সম্ভব? আমার যে মিশরের অনেক জায়গাই ঘ�োরা বাকি এখন�ো! ক্যামেরা ছাড়া চলবে কি ক�োরে? আমার এত�ো সাধের মাউন্ট সিনাইয়ের সূ র্যোদয়ের ছবিগুল�োও ত�ো এরই ভেতর! কাকুতি মিনতি করলাম। ক�োন�ো লাভ হ�োল না। ওদের কথা হ�োল যে ওরা চায় না যে আমি এখানকার রাস্তা-ঘাট, চেকপ�োস্ট, এসবের ছবি তুলি বা সেইসব ছবি এখানকার বাইরে যাক। আমি বললাম ঠিক আছে, তাই সই। কথা দিলাম যে আমি এই তল্লাটের আর ক�োন�ো

Anjali

www.batj.org


সিনাই-এর সূ র্যোদয় ছবি তুলব না, আর already ত�োলা ছবিগুল�োর মধ্যে ওদের যেগুল�ো পছন্দ নয়, সেগুল�ো delete ক�োরে দিচ্ছি। ওরা বলল�ো ঐ যে সামনে জীপে আমাদের ল�োক ত�োমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবার জন্য অপেক্ষা করছে, ওরা কি ত�োমার মামা যে ত�োমায় ছবি delete করতে সময় দেবে? আমার দেওয়া কথার ভিত্তিতে যদিও বা camera-টাতে ছাড় দেওয়া যায়, ওর ভেতরের ছবি সমেত cardটাকে কিছু তেই ওরা এখান থেকে বেরতে দেবে না। কি করব�ো? ঐ card-টাতেই রফা করলাম, SD memory card-টা বার ক�োরে ওদের দিয়ে দিলাম। যে সূ র্যোদয়ের বর্ণনা দেওয়া কারও পক্ষে সম্ভব নয়; সেই সূ র্যোদয়ের ছবিগুল�ো সমেত, সেই সূ র্যোদয়ের একটা video সমেত! বুকটা ফেটে গেল�ো। তারপরও রেহাই নেই। ওরা জিজ্ঞেস করল�ো যে সাথে আর কটা card আছে? সেখানে এখানকার রাস্তাঘাট বা চেকপ�োস্টের ছবি ত�োলা আছে কিনা, ইত্যাদি। ম�োদ্দা কথা যা বুঝলাম তা হ�োল এই যে, ভাল�োয় ভাল�োয় ওরা শুধু আমার প্রাণটা নিয়েই এখান থেকে আমায় ফেরত যেতে দেবে, অন্য কিছু নিয়ে নয়। বাকি card-গুল�োও দেখালাম, ওরা বুঝল যে ওগুল�ো empty. তারপর শুরু হ�োল সামনের ঐ জীপটাকে follow করা। প্রাণে ভয়, কিন্তু চারিপাশের দৃ শ্য দেখে একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সিনাই-পেনিনসু লার সে কি অপূ র্ব রূপ, যা দেখে কিনা একটা প্রাণভয়ে ভীত মানু ষও মুগ্ধ হয়ে যেতে পারে। অবাক চ�োখে চারিদিক দেখছিলাম। বিভিন্ন চেকপ�োস্টের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছিল। মাঝে একবার মনে হল�ো যে আদ�ৌ ঠিকঠাক যাচ্ছি ত�ো? নাকি এই সবই আমাকে ভাঙ্গিয়ে কিছু ডলার কামাবার ষড়যন্ত্র? কে জানে, আমাকে হয়ত�ো এরা ক�োন�ো মালদার পার্টি ঠাওরেছে ! আর আমি মালদার না হলেই বা কি? অ্যামেরিকাত�ো বটে! একটা দম বন্ধ করা ভয় চেপে বসতে শুরু করল�ো বুকে। একটা মতলব এল�ো মাথায়। আমার যদি কিছু একটা হয়ে যায়, তাহলে একটা কিছু অন্তত রেখে যাই আমার মেয়েগুল�োর জন্য, যাতে ওদের জানার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকে যে ওদের বাবা ক�োথায় বেঘ�োরে প্রাণটা দিয়েছে। যেই ভাবা, অমনি কাজ। Camera-য় একটা card ভরে তাতে

আমার একটা ছবি তুললাম, একটা ম�োক্ষম selfie! সাথে আমার ড্রাইভারেরও একটা ছবি। একটা ভিডিও রেকর্ড করলাম, কি অবস্থার মধ্যে পড়েছি তার একটা ছ�োট বর্ণনা দিয়ে। তারপর সেই card-টা camera থেকে বার ক�োরে পাক মেরে ছু ঁড়ে ফেলে দিলাম গাড়ির বাইরে। ভাল�ো কেউ যদি এটা কুড়িয়ে পায়, এই আশায়! হঠাৎ সামনের জীপটা দাঁড়িয়ে পড়ল�ো, সেই অনু যায়ী আমরাও। আর ঠিক তখনই আমার খেয়াল হ�োল যে আমি এই মাত্র ওদেরকে দেওয়া কথার খেলাপ করেছি । এই তল্লাটে আর ক�োন�ো ছবি তুলব�ো না বলার পরও আবার ছবি তুলেছি। আমার আত্মারাম খাঁচাছাড়া। ভাবলাম এই রে, ওরা নিশ্চয়ই দূ রবীণ দিয়ে আমার ছবি ত�োলা বা কিছু একটা ছু ঁড়ে ফেলার কীর্তি-কলাপ দেখেছে; এবার তার জবাব চাইবে। আমি কি জবাবদিহি করব�ো? এখন কি করি? জীপ থেকে দু জন বন্দুকধারী নেমে পেছনে আমাদের গাড়িটার দিকে আসতে লাগল�ো। আমি শুধু আমার heart beat টাই শুনতে পারছিলাম। ওরা এসে বলল�ো যে আমরা একটা junction-এ এসে পড়েছি। ওরা আর আমাদের পথ দেখাবে না। আমরা ডান দিকের রাস্তা ধরলে ঘুরপথে সু য়েজ হয়ে কায়র�ো পৌঁছে যাব। আর ক�োনরকম বেয়াদবি ক�োরে বাঁ দিকে যাবার পাঁয়তারা কসলেই, ঢিসু ম! ওরা ওদের জীপে ফেরত গেল�ো, কিন্তু ঠায় বসে থাকল�ো আমরা ক�োন্‌ রাস্তা ধরি, তা দেখার জন্য। আমরা ডান দিকের রাস্তা ধরে মানে মানে কেটে পড়লাম। আমার হৃৎপিণ্ডের ধু কপুকানিটা আমাদের গাড়ির ইঞ্জিনের থেকেও বেশী জ�োরে ছু টছিল, আরও বেশী জ�োরে শব্দ ক�োরে যেন। বেশ কিছু ক্ষণ ঐ ভাবে যাবার পর, কায়র�োর দিকে যাবার একটা road-sign চ�োখে পড়ল�ো। ধড়ে প্রাণ ফিরে পেলাম আবার। তারপরই পুর�োপুরি বিশ্বাস করতে শুরু করতে পারলাম যে এ যাত্রায় ব�োধহয় আর প্রাণের ভয় নেই! খানিকক্ষণ পরে খেয়াল হ�োল যে আমার গায়ের জামাটা ভিজে একশা, সপ্ সপ্ করছে ঘামে! তারই সাথে একটা অনু ভূতি হ�োল; ঐ ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার পর যেমন হয়, অনেকটা সেইরকম।

(এই প্রতিবেদনের বর্ণিত ঘটনা ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের)

www.batj.org

Durga Puja 2013

33


তবু নিশ্চুপ   - সু মন কুমার সা জানালাটা খ�োলাই ছিল খেয়াল করিনি আগে ! এক হাল্কা মিষ্টি হাওয়ায় চ�োখ গেল জানালার দিকে । জ্যোৎস্না রাত্রি ঢাকে মেঘের আড়াল নিয়ে --আল�ো আঁধারির বেশে নিজেই আছি দাঁড়িয়ে । চমকে উঠি আমি ! খানিক সামলে জিজ্ঞেস করি; ওখানে কি করছ�ো ? “তুমি”, না মানে “আমি”! স্থির নিশ্চল দাঁড়িয়ে দেখছে আমায় ভ্রুক্ষেপ নেই আমার ক�োনও কথায় ।

অন্তরাল   - দুহিতা সেনগুপ্ত

আমি চিৎকার করে চেঁচিয়ে বলি, ওখানে দাঁড়িয়ে কেন ? শুনতে কি পাচ্ছনা --আরে ওখানে দাঁড়িয়ে কেন !

আড়াল চাই, নেশার আড়াল যে আড়ালের অন্ধকারে আমিতে নেই আমি পথ হারালে যে পথ আসে শুধু সেই পথগামী ।। কান্না চাই, গাল ভেজান�ো Lacrimal—এর নয় মেনে নেওয়া সু খ, মনে নেওয়া নয়, তা - দিয়েই সঞ্চয় ।। শান্তি চাই, অনভ্যাসের ঘড়ির প্রবেশ মানা বিস্ময় চাই, অনাহুতের অকারণের হানা ।। গভীরতা চাই, ডুব দিয়ে নয় জল থেকে মুখ তুলে ভুলতে চাওয়া না- ভ�োলাদের আবার করে ভুলে, উচ্চতা চাই, নাগাল পাওয়ার মুখ�োশ মাথা যত নিজের সমান হওয়ার তাগিদ তাতেই অব্যাহত ।।

নিস্তব্ধ রাতের অন্ধকারে আমার উদ্ভাসিত মুখ; গভীর ভাবে দেখছে আমায়, তবু নিশ্চু প !

34

Anjali

www.batj.org


নিশীথে স্বপ   - তুষার কান্তি সেন আজি এ নিশীথে মশার দল কেমনে পশিল মশারীতল না জানি কেমনে বিষম কামড়ে করিয়া তুলেছে লাল ওরে ফুলিয়া উঠেছে গাল ওরে চুলকাইতেছে ভারী চিৎকারিয়া কহি আমি সবে তাড়া এদের তাড়াতাড়ি । প্রাণের সু খেতে কামড় কাটি গায়ের উপর যাচ্ছে বসে থামিয়া থামিয়া দু হাতের চাঁটি ধ্বনিয়া উঠিছে দারুণ র�োষে কামড়ের চ�োটে পাগলের প্রায় চাঁটি মারি শেষে এর ওর গায় মধ্যরাত্রে ছাদেতে দাঁড়াই খুলিয়া ছাদের দ্বার । কেন রে বিধাতা পাষাণ হেন ছাদেতে কামড় আরও বেশী যেন । সব শেষে আমি মনস্থির করে স্প্রে করি সারা ছাতে আমি ঘ�োষণা করিব পুরস্কার দিব মশা যারা মারবে হাতেনাতে আমি জ্বলনে পাগলপারা আমি পণ করি রাত সারা আমি জগৎ জুড়িয়া বেড়াব গাহিয়া তাড়া মশাদের তাড়া । (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ অবলম্বনে)

দেশের নেতা   - নমিতা চন্দ ভ�োট দিন, ভ�োট দিন, ভ�োট দিন দাদা এবার ভ�োটে জিতলে রাস্তায় হবেনা কাদা । গ্রামেগঞ্জে জ্বলবে আল�ো, দেব জলের কল বেকারদের চাকরি দেব, এই আমার পণ । কলকারখানা খুলবে আবার সবাই কাজ পাবে যেখানে চলেনা মানু ষ সেখানে রাস্তা হবে । আয় রে তপন, আয় রে স্বপন, আয় রে ভাই কালু কের�োসিনের দাম কমাব�ো, কমবে পটল আলু । রেলের ভাড়া বাড়বেনা আর , থাকবেন সবাই সু খে চুরি করলে মারবেনা কেউ, থাকতে হবেনা জেলে । আপনারা সবাই শুনে রাখুন, শুনু ন আমার কথা আর ক�োনও চিন্তা নেই, আমিই হব দেশের নেতা ।। www.batj.org

Durga Puja 2014

35


আমার ছেলেবেলার পূ জা   - পূ র্ণিমা ঘোষ আমার গাঁয়েই শুরু আমার প্রথম দু র্গাপূ জা ঢাকের বাদ্যি কাঁসর ঘন্টা, ছিল কত মজা । মজার কথা বলতে গেলে হবে নাক�ো শেষ মনের পাতায় ভরে আছে সু খস্মৃতির রেশ । শরৎ এলেই হ’ত শুরু ম�োদের প্রতিমা গড়া; এক প্রস্ত, দু প্রস্ত শেষে মাটির কাজ সারা । পূ জা এলেই পাড়ার সবাই, মাত্‌ত�ো সাফাই কাজে দু র্গা দালান, ঘরবাড়ি সব সাজাত�ো নব সাজে । বের হ’ত সব বাসনপত্র, ছ�োট বড় তাড়ু শুরু হ’ত মিষ্টি গড়া রকমারি নাড়ু । ম�োদের ক�োনও ছিলনা কাজ, শুধু ই হুড়�োহুড়ি; বড় পরিবার, ম�োরা ত�ো নই শুধু ই জনা কুড়ি । কত দাদু , কত ঠাকুরমা, কাকা জ্যাঠার দল মিলত�ো যখন জমত�ো মজা হ’ত ক�োলাহল । আসত�ো নতুন জামা কাপড়, আসত�ো সবার জন্যে নতুন সাজে, নতুন বেশে ভাসত�ো সবে আনন্দে । ক�োন্‌জামাটা পরব�ো কবে, কবে ক�োন্‌দিনে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী না দশমীর দিনে ? ঘুম হ’ত না ভাল ক’রে মহালয়ার রাতে এই বুঝি হয় ভ�োর, থাকতাম সেই অপেক্ষাতে । বীরেন্দ্রকৃষ্ণের চণ্ডীপাঠ, আগমনীর গান, রেডিওতে বাজত�ো যখন, জেগে উঠত�ো প্রাণ । শুরু হ’ত দিন গ�োনা, কখন শুরু ব�োধন ? পূ জার ব্যস্ততায় কাটত�ো সময় মন্ডপে সারাক্ষণ । দেখেছি মায়ের চক্ষুদান, পরতে ডাকের সাজ লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্ত্তিকের বেশবাস । মার অঙ্গে অলংকার, পরণে লাল শাড়ী মার দশ হাতে দশ অস্ত্র, অস্ত্র রকমারি । সিংহবাহিনীর পায়ের নিচে অসু রের অবস্থান ছ�োট্ট মনে দাগ কেটেছে, তাও ছু ঁয়েছে প্রাণ । বৈদিক মন্ত্রে, হ�োম যজ্ঞে, জাগত�ো ভক্তিভাব ধূ পের গন্ধ, শঙ্খধ্বনি, ছিলনা কিছু রই অভাব । মায়ের মুখে চেয়ে চেয়ে দেখতাম সন্ধ্যারতি মনে হ’ত চেয়ে আছেন মা বুঝি ম�োর প্রতি । মৃন্ময়ী মা চিন্ময়ী হতেন সেই শুভক্ষণে; তাই ত�ো স্মরি মাকে আমি সদাই মনে প্রাণে ।।

36

Anjali

www.batj.org


লেডি লিবার্টি   - ডঃ হেমন্ত কুমার সর আমি আল�োকবর্তিকা তুলে ধরলাম সেই স�োনালী দরজার সামনে, আশা ও স্বপ্নে ঢাকা সেই স�োনালি দরজার সামনে --আর বললাম, “স্বাধীনতা, স্বাধীনতা! তুমি এখনও আমার সঙ্গে আছ�ো ত�ো”? হাওয়ায় এক ঝলক ঢেউ তুলে লেডি লিবার্টি হেসে উঠলেন । তাঁর ডান হাতে মশালটা উঁচুতে ওঠান�ো র�ৌদ্র, ঝড়, বৃ ষ্টিকে উপেক্ষা করে বছরের পর বছর একই ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি --স্বাধীনতা, আশা, মুক্তি ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক হয়ে ।

ত্রিপ�োলিতে দ�োসরা জু ন

হাওয়ায় এক ঝলক ঢেউ তুলে লেডি লিবার্টি আবার হেসে উঠলেন--“স্বাধীনতা ! সে ত�ো আমার সর্বাঙ্গে জড়িয়ে”।

- জ্যোতির্ময় রায়

ল�োহার কাঠাম�োতে ক�োথাও জঙ্গ পড়েছে, ব্রঞ্জের ত্বকে ফাটল ধরেছে, তবু ওই স্বাধীনতার মশাল আজও আছে আকাশকে ছু ঁয়ে । হাওয়ায় ঝিরঝির হাসির শব্দ তুলে লেডি লিবার্টি বললেন, “স্বাগতম বন্ধু”!

আকাশ পরিক্রমা শেষ হয়ে গেলে আর একবার ভূ মধ্য সাগরের জলে নীল রং মেখে উড়ে এল�ো অনেক দূ রের সব দিনগুল�ো উত্তাপ নিয়ে, বার বার ঢেউ তুলে ।

আমার হাতের আল�োকবর্তিকা তুলে ধরলাম আবার সেই স�োনালী দরজার সামনে --এ আল�ো নিভবে না কখনও ।।

বালু চর জাহাজের মাস্তুলের গায়, নরম র�োদের দিন সব অন্ধকার হয়ে গলে পড়ে । সৈকতের কলরব শেষ হয়ে যায় । শিরীষের শীর্ণ ডাল হৃদয় আমার কেন যে আবার ফেরারী দিনের সাথে ভিড় করে আসে ? হলু দ পাতার ঝাঁক অবিশ্রাম ঝড়ে । আর মনে পড়ে অজস্র সারসের ডাক। এই সব সাগরের পাখিদের গান শুনে সাজান�ো ছায়ার মতন জাল বুনে অশান্ত সময় ভাসে । তারপর রাত হলে মনে হয় আমিও ত�োমার পাশে শীত�োষ্ণ হাওয়ার সাথে আরামের চাদর বিছিয়ে শুয়ে থাকি ঘাসে ।।

www.batj.org

Durga Puja 2013 2014

37


অর্থ-নীত   - বিশ্বনাথ প অর্থনীতির অর্থটা ম�োরা রাখি নীতিটা বরং ত�োমার জন্য থাক ম�োদের বাজারে অর্থই মাপকাঠি নীতির কথা যায় চুল�োয় যাক । তৃতীয় বিশ্ব-আরব দুনিয়া বস�ো দেখি পাশাপাশি দেখাব�ো আমরা ইন্দ্রজালের খেল, কাজ কি ত�োমার টাকা নিয়ে রাশি রাশি মিথ্যে ত�োমার ভাঁড়ার ভর্তি তেল, তার চেয়ে বরং তেল ম�োদের দিয়ে, নাও না নেবে কত চাই গুলি গ�োলা, ত�োমরা সবাই দেশে দেশে, ভায়ে ভায়ে, করবে কেবল যু দ্ধ যু দ্ধ খেলা । রসদ যা লাগে আমরা যু গিয়ে যাব�োম�োদের ভাঁড়ারে অস্ত্র আছে মেলা, মিসাইল রকেট আর কি কি নেবে ভাব�োত�োমার আকাশে দেখবে আল�োর খেলা । ভাবছ�ো দেশটা উঠবে ব�োধহয় লাটে, মরবে মানু ষ গুঁড়�োবে যে ঘরবাড়ি, আহা ! তা নিয়ে চিন্তা ক�োর�োনা ম�োটে, রিফিউজি ক্যাম্প গড়ে দেব�ো সারি সারি । এই দেখ�ো, আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে বলছি বেশি ক�োর�ো না ত�ো বাড়াবাড়ি ইউ এন থেকে স্যাংশন দেব�ো সেঁটে, চাইলে আবার অ্যাটাক করতে পারি জান ত�ো ম�োদের উন্নত কারিগরী । ভাঙতে চুরতে জুড়ি মেলা তাই ভার ডেমক্রাসীর নিয়েছি যে ঠিকাদারি ভাঙাটা ম�োদের প্রাথমিক অধিকার । আমার দেশের এত সব কারখানা নিত্য নতুন গড়ছে মিসাইল রকেট আজ যদি তাতে ত�োমরা করবে মানা কেমন করে ভরবে ম�োদের পকেট । তাই বলি দেখ�ো যু দ্ধটা থাকা চাই নইলে ম�োদের চড়বে না ঘরে হাঁড়ি, ত�োমার দেশটা উজাড় হলে ভাই আমরা একটু টু-পাইস কামাতে পারি । ম�োদ্দা কথাটা চুপিচুপি বলি কানে কথাটা সহজ তবে কাজ নেই বুঝে মানে আমার দেশের অর্থনীতি বড়ই ঠাণ্ডা তাই ত�োমাদের দেশে আগুন জ্বালিয়ে একটু হাত প�োহাই ।।

38

Anjali

www.batj.org


25 Years of Durga Puja in Tokyo - Rita Kar

W

hen the editors of Anjali asked me to write about our 25 years of celebrating Durga Puja in Tokyo I was not sure if I could conjure up my memory and chronicle the details of our 25 years of celebration here. I found it hard to recount it all as I feel overwhelmed by a rush of memories and associations. It will indeed be a very difficult to catch up on all, so I decided to hit the highlights. Durga Puja in Japan was a time only for nostalgia and gettogethers. In 1989 Durga Puja was over a long weekend and the very few families living in Tokyo and Yokohama tried to make the best of it by meeting at each other’s homes over lunch and dinner and live the spirit of the Puja season. Saraswati Puja was already being held in Tokyo and the idea of having a Durga Puja in Tokyo was floated. The yearning was there but the practicalities were still being doubted. In Japan we have never had a steady group of families who could organize Durga Puja every year. Throughout the year the few families toyed on the idea and the decision was made – Durga Puja will be celebrated in Tokyo.

1990: The first Durga Puja in Tokyo was held for one and half days. There were no images but a picture of Durga and

plenty of excitement. The cultural program was performances by the children within the community and the lunch and dinners prepared by the ladies. On a very personal note, Ruma and myself were in-charge of cooking the lunch on Puja day.

1991: After a very successful completion of the first Durga Puja we were now more enthusiastic to carry on the next year. One of our community members brought an image of Durga made out a paper and created by a young girl in Kolkata.

1993: Definitely things were looking more positive now. Our first formal Puja meeting was held and the unanimous decision was we should get a idol from India. One of the members took the responsibility of contacting his family back in India, who agreed to oversee the whole process and our first Durga image from Kumartooli was here. The white Shola image was indeed what we wanted in Tokyo. All this time community was growing - enthusiastic members were becoming more involved with new ideas about the decoration and of course the cultural program was becoming a focal point of the Durga Puja. Rehearsals were becoming a big attraction when we could all meet for weeks leading up to the final day - an excuse for “adda” and food. Cooking Khichuri, the curry and even making the mistis were prepared with no complaints at all. Families who were deeply involved in initializing Durga Puja in Tokyo and then, those who helped to keep the Puja going on, had left and new members came in and filled the void. In the true Bengali spirit, over the last 25 years we have celebrated Durga Puja with its religious solemnity, weaving into it our cultural and community driven spirit – one time of the year when all the families get together to celebrate Durga Puja far away from home and to be a part of it.

Whenever we meet friends who have left Japan after a few years or even after a year always talk about Puja in Tokyo and how it always felt like it was a family affair. Just to wrap up I would like to narrate a conversation we had with some families who were here in the very first years of Durga Puja in Tokyo. One said “when I read in Anjali now as someone mentioning “Our Pujo” I get very upset. How can it be your Pujo - it is our Pujo” And that is how we all feel about Durga Pujo in Tokyo. 25 Years of Durga Puja in Tokyo has not merely been a religious occasion it has been the bonding of a community, a cultural celebration where numerous families have come together and made this Durga Pujo their own.

On this occasion I fondly remember them all – the laughter and joy we shared, that makes our Tokyo Durga Pujo so special – and we have kept the spirit going with our present members too.  www.batj.org

Durga Puja 2014

39


Healthy Relationships:

Their challenges and solutions - Swami Medhasananda There is an oft-quoted title of a poem by John Donne called, ‘No Man is an Island’. Since we live in a society our life is not possible without constant, mutual giving and taking. Thus, relationships are connected with life and this is the starting point of making relationships with others. This constant, mutual giving and taking is not optional or voluntary, it is a necessity. Life is crippled without it.

What is an ideal, healthy human relationship? A relationship which is happy, sustained, creative and elevated is an ideal relationship. There is one Japanese publication ‘Naikan’ (Introspection) wherein the author, Norimasa Nishida, says that in all important relationships three questions must be asked and deeply reflected upon. These are: What did that person do for you? What did you do in return?

How much trouble did you cause that person?

This book is about applying these questions to every relationship. It states that if you ask yourself these questions and deeply reflect the answers, all relationships will be good. In Hindu scripture and tradition there are lots of discussions and anecdotes on relationships. The Ramayana, the great Indian epic, alone is full of stories on ideal relationships. There is the story of an ideal son, an ideal husband, ideal wife, ideal friend, ideal brother, ideal master, ideal servant and ideal king. In the Mahabharata as well, there are important discussions on relationships. Sri Krishna’s wife Rukmini goes to Draupadi, wife to all five Pandava brothers, and asks how it is she maintains happy relations with her five husbands and keeps them in good humor, while she found it difficult to do so with but one husband. One piece of advice Draupadi gives is to not dote too much on adolescent sons or husbands may become jealous, or simply feel left out, which is very true. Words of such practical wisdom in such ancient scripture is amazing. In Hindu scripture it is also noted that it is one’s duty to please the gods, the sages, one’s ancestors, all fellow human beings and animal beings. This is called the Panch-mahayajna or five great sacrifices. We receive as humans much from them, so we must do something in return to please them. So remember that this idea is not limited only to human relationships, but extends to other beings as well.

Present discussion is mostly concerned with human relationships because there are so many aspects and dimensions to these. There are relationships with immediate family, relatives, friends, neighbors, members of a group or community, colleagues or bosses at work, teachers and students, students and students, etc. Then in the immediate family itself there are many relationships; husband and wife, parents and children, brothers and sisters and in-laws. Within each of these there are common stages that one passes through as well, from troubles related to childhood, one’s teen years, pre- and post- marriage. Let us highlight a point by point examination of healthy relationships in general and give a more thorough look on some of these:

wife. So if giving birth and raising children and maintaining happy, sustained relationships is the goal of married life, each spouse must accept the challenge of achieving this goal. If there is no such awareness and no such motivation, the relationship will become vulnerable.

2. Then we need to ‘think twice’ before establishing a long-term, close relationship. The Panchatantra, is another ancient, Indian collection of moral tales and stories, full of practical teaching on relationships comparable to Esop’s Fables. It advises us to give establishing such relationship deep consideration. Love at first sight and instant marriage is fine to read about in stories, but in actual life this not a safe practice. Impulsive decisions can result in life-long regrets. I remember once a fellow train passenger was telling me about his very young daughter’s impulsive marriage and subsequent divorce with a child. She and the baby were now living with him. He was so sad about what she had done to her life.

Hence, we need to maintain a space between ‘liking’ and ‘loving’ because one is not the same as the other. Be very careful about love and reposing deep trust in others, because there are some serious challenges to the successful accomplishment of such a relationship. In fact, we should not be impulsive in any such relationships of deep mutual trust. Observe the nature of the person under consideration, whether it is a marriage or even business. Observe how he or she behaves with you and others. This is important because if someone is interested in you he may be nice to you, while disrespectful or worse, utterly selfish, in his behavior to others. So maintain a space between liking and loving.

3. Mutual love and respect and faithfulness. This should be practiced especially between husband and wife, teacher and student and friend and friend. There are two kinds of marriage, one being the arranged or negotiated marriage, and love marriages, which are becoming more and more common in many countries. There are many arguments in favor of and against each. Romance in an arranged marriage, usually starts after marriage, while in a love marriage, romance precedes marriage and that fades after it. The point is that romance fades sooner or later in either case, and it is then that the challenge of a sustained relationship between the spouses becomes evident. This challenge should be faced by the couple with mutual understanding, love, respect, and faithfulness. Even in Hindu scripture we see so much emphasis on the idea of the wife looking upon the husband as God, but not so much the idea of the husband looking upon the wife as Goddess. If only the wife is required to observe the idea, there is every possibility that it may make the husband egoistic. That is why it must be mutual. If the husband also regards his wife in this way, and attitude of humility is created in the husband, rather than egotism. Faithfulness cannot be expected from the wife only, but from the husband as well. Thus, the relationship between them will be balanced.

1. In order to maintain healthy relationships we must first have an awareness and understanding of the goal of a relationship. Without such awareness and understanding there can be no motivation to accept the challenge to make the goal of relationships reachable. The goal of marriage is a happy life with mutual support and help of both the husband and the 40 Anjali

www.batj.org


Mutual love and respect is important in the relationship between parents and their children. Not only should the children love and respect their parents, but the parents must love and respect the children as well, though the expression of such love and respect obviously differs. Parents should consider that it is God who has come in the form of children to receive their service. This helps increase the self-esteem of the children. Mutual love and respect is also important in teacher and student and guru and disciple relationships. A true Guru is always aware of the presence of Brahman in his disciples. Obviously the expression of mutual love and respect between a husband and wife differs from that between a teacher and student, and what I mean to say here in the case of teacher and student relationship is that both should maintain an attitude of loving respectfulness for each other.

4. The bringing up of children is another dimension of the family relationship. By trying to be too nice, by pampering our children, we sometimes ruin them. Today we have a nuclear family. In days past of an extended family, grandparents were there to teach and help in bringing up children. These days there is less such guidance from elders and I’m not sure whether young mothers educate themselves regarding child rearing. Relying on one’s own common-sense is not enough in such an important matter, with so many things to take care of. These days a one-child family is common and whatever the child wants is purchased or accommodated since parents want to please the child.

Thus, the child develops an attitude of being appeased: ‘Whatever I want, my parents will provide for me, and whatever I do, my parents will accept.’ More than mere manner training, if parents don’t teach values and the difference between good and bad, many problems will occur with such an untrained child. It is too late to discipline a teenaged child and correct unacceptable behaviors, such as late nights with friends and delinquent school assignments.

In Sanskrit there is the saying, ‘Bring-up a child by indulging him for the first 5 years; then discipline him for the next 10’ Meaning, that while of course we always love the child, these should not be much pampering or displays of love after 5 years of age. More than simple table-manners and appropriate greetings, a mother needs to impress upon her child that hard work is necessary for success, she also needs to teach that there will be failures as well, and that this is to be expected and faced. Children also need to be taught that we need to think of others; to consider their situation; and whenever possible to help others. I still remember as children while traveling with my father, we would occasionally come across a beggar. My father would give us coins to take to such people to teach us the attitude of helping others. This attitude grew in us. In this way my father taught us that we must not be selfish, but do something for society. So these are not only spoken words, but actions. We also had many mango trees in our garden. Our parents would also give us loads of ripe mangoes to distribute around the neighborhood. Later, when I came to school at the Ramakrishna Mission, I found this tradition of help and sharing was one of its main mottos. As this Mission is focused on serving others, that become one my purposes in joining the Order.

Healthy Relationships: Their challenges and solutions

daughter is a daughter till she dies.’ The long-held tradition of the eldest son taking care of the parents is all but lost, and it is daughters who now do so.

Centripetal and centrifugal forces apply here. Wikipedia says in essence, ‘… centripetal force is that by which bodies are drawn or impelled to a center, while centrifugal is an outward force away from a center.’ I would like to believe that nature, at God’s bidding, is operating centripetal force in relationships through women. The women’s liberation movement may diminish or demean this role, but women play a great role in society by creating good citizens. If you study the lives of all the world’s great men, many of them were greatly influenced by their mothers. This includes Swami Vivekananda.

By serving in the roles of mother, wife, and daughter devotedly and wisely, there is a definite benefit to the woman. This service makes her mind pure; makes her mind broad; makes her perfect. In the Mahabharata, and in Swami Vivekananda’s Karma Yoga we find references to wives doing their duty perfectly and becoming perfect souls. Their perfection is not attained by intense meditation or spiritual practice, but by being perfect wives, mothers and daughters. These are not useless duties. In performing all these duties, can there be no space for herself? Yes. By doing one’s duty to the family as much as possible, one can definitely do something for her own development. There are examples of housewives fulfilling their roles and doing something remarkable in a career also. One such example is our devotee, Ms. Rie Ueno, who, after playing her role as wife and mother and now runs a successful business, gave an inspiring speech on ‘Positive Living’ at our Vivekananda Celebration at the Indian Embassy in 2011.

6. Give more, take less. Practice unselfishness and give in the spirit of service. Swami Vivekananda said, ‘Unselfishness is more paying, only people have not the patience to practice it.’ The common idea is that we must be selfish to live well, but Swamiji says, ‘No!’ This was also advice from Holy Mother to a young girl, ‘If you want to love everyone equally, don’t want anything from anyone.’ Practice contentment. ‘Let me be happy with what I have.’ One of the causes of bad relationships at home is when one or both in the couple are very demanding. The wife makes demands on the husband. The wife makes demands on the husband. The husband complains he works so hard and demands to know what the wife does for him. If both are demanding, one can just imagine how such relationship fares.

7. Find the balance between giving freedom and exerting control. This must be thoughtfully practiced. If we give too much freedom the relationship is not serious. Too much control is more like a slave and master relationship. There can be no double standard either. If the husband wants to exercise strict control over the wife, yet he wants complete freedom for himself, this will create disharmony. Finding and exercising balance is important in all our relationships at home and at work.

8. Give more time and feel more concern for family members. In family relationships, giving time to family members is important. ‘I have no time!’ is a band and untenable excuse.

5. Women play the key role in the family. I am sure that most of the credit for a happy and successful family goes to the woman. Here the same woman is playing the soles of mother, wife and in extended households, daughter, too. There is a saying in English, ‘The son is son until he marries, and the Husbands, especially, should not feel their contribution www.batj.org 41 Durga Puja 2014


Healthy Relationships: Their challenges and solutions

or duty to the family relationship is only earning money. This is really harmful to family relations, as it puts distance between the husband and his wife and children. The son should be given the feeling that not only his mother, but his father too, is concerned for him. In my case, my father was a doctor who worked hard from early morning to late at night and I went to a residential college of the Mission about 50km away in Kolkata. My father would make it a point to regularly come to the college and meet with me and ask the resident monks of my behavior and progress in studies. At times I would protest, ‘Why do you need to come? It is so far and not an easy journey. You are so busy and tired.’ But he never relented.

So if it is possible to give one’s time in such a case, why not in a household where the family lives under one roof? There are weekends and holidays. Surely it is possible to give some time to the family. Whatever time you have, show concern for your children, show interest in what they do; their studies. This is not the exclusive responsibility of one’s wife, but also that of the husband.

9. Love expressed in words alone makes it shallow, but love expressed in service makes it deeper. In all our storybooks and films what happens? After but a few meetings the hero declares to the heroine, ‘I love you, I love you.’ Of course you know what fate lies in store for such examples of surface love. Does the mother, the embodiment of love for a child, continually say ‘I love you, my son’, or does she express her love for him through her whole being. The child, realizing the mother’s love in his heart, reciprocates and, thus, love is sustained. 10. In any relationship, if something improper was done to you or by you, apologize, forgive and forget as soon as possible. By seeking to apologize we do not lower ourselves, but raise ourselves. Once Swami Brahmanandaji (‘spiritual son’ of Sri Ramakrishna and first president of the Math and Mission) became angry with a disciple’s misdeed and slapped him. Later he apologized, saying what he did was not good and to please forgive him, even though it is the privilege of the Guru to discipline his disciple, which can be painfully harsh at time. The sattvic anger of a sage is soon gone like a child’s, but rajasic and tamasic anger can drag on and on. Don’t drag it on. Discuss and settle the matter, don’t give up and break the relationship.

It is easy to turn ones back, to walk away, quit. This is going to be harmful in the long-run because there will always be a canker in your heart. The person we hate may not be affected at all, but we will suffer. If there is hatred and long-term anger in our hearts, we cannot develop spiritually, nor can we get peace. This is why Jesus says in Mathew, “Therefore, if you are offering your gift at the altar and there remember that your brother or sister has something against you, leave your gift there in front of the altar. First go and be reconciled to them; then come and offer your gift.’ Discuss and settle accounts with wife, children, and colleagues. Who will go first? Let me go first. There is no problem that cannot be settled with discussion. Of all the negative emotion we possess, it is anger which has the most disastrous effect on our relationships and is one of the chief sources of peace-lessness. Hence, for most of us, our main concern is how to control anger. One of the best tips on controlling anger, and one which I, myself, try to practice, is to not express my anger immediately when angered. So try to allow some time to pass before expressing your anger. If we can do this, half, if not two thirds, of the battle against anger is won. The rest becomes easier, as with the passage of time we calm down and can tackle the task more effectively. 42

11. ‘Hiss but don’t bite.’ When encountering an evil person try to avoid him. When avoidance is impossible, hiss as advised in the story of the brahmachari and the snake found in the Gospel of Sri Ramakrishna. Hiss to protect yourself, but don’t bite, cause no harm to him. 12. Change yourself before changing others. Everyone thinks about changes they’d like to see in their spouse, or their children, co-workers, etc., but we never consider changes others may rightfully like to see in us. Everyone thinks everyone else needs improvement. No, if you really want to change others, first change yourself. When we try to change ourselves, we come to realize how difficult it is to change, and with this realization will come more patience and understanding. Moreover, if we can change ourselves, it inspires others to change themselves. This is a natural law.

13. Put others first. In the book, The Seven Habits of Highly Effective People, the author notes these people first seek to understand others, then seek to be understood. In another book author, Eknath Easwaren, an Indian Professor of English and, later, spiritual teacher working in the USA, writes in ‘Take Your Time’ of a young man who tells of his tension in his relationship with his girlfriend and asks for advice. Easwaran’s advice is, ‘Put your girlfriend first!’ After two or three days young man returns all smiles. The professor asks why he looks so joyful. The young man replies that the couple went to a restaurant and that he was always in the habit of what he liked first. Thinking of the professor’s advice, the man insisted that his girlfriend order first. This pleased the girl immensely and they had an enjoyable dinner. This is but a small example. Put others first. Seek to understand, rather than insisting on being understood.

A big problem in many relationships is the continuous grumbling of one to the other, ‘You don’t understand me”. This attitude needs to be reversed. There has to be a genuine attempt to understand each other’s situation, because mutual complaining alone does not work. For example, after retirement, the husband may spend a lot of time at home. The wife doesn’t like this, because for years she had freedom of the household. While the wife should accept and adjust to their new situation, the husband, too, should respect his wife’s sentiments and together come to an accord.

14. Don’t brag about your achievements around others as it creates distance and irritation in others. I haven’t seen much of this in Japan. In fact, I really appreciate this quality in Japan that one rarely talks about one’s achievements. 15. Speak less, listen more. There is a tendency in many of us to do most of the talking when we meet people without considering that others may have something to say and contribute.

In 1937 when Swami Siddheswarananda ji of the Ramakrishna Order was asked by its headquarters to move to France and take up preaching Vedanta there, Miss Josephine Macleod, one of Swami Vivekananda’s closest American friends and devotees, gave the swami the following piece of valuable advice which Siddheswaranandaji always remembered, ‘Gopal (the swami’s pre-monastic name) look!’ she said. ‘I have noticed that when you meet some people. You talk and talk without letting others speak. This is considered bad manners in the West. So when you meet guests, restrain yourself and allow them to speak.’ Then Mrs. Macleod added, ‘you all know that Swamiji

Anjali

www.batj.org


(Vivekananda) would talk and others would listen intently. But what you don’t know is that he was a patient listener too, which made his devotees feel so comfortable with him!’

In fact if we take the lion’s share of time in a conversation not intended to be a discourse, we may appear to be too assertive or to be advertising ourselves to guess, which is not conductive to establishing sustained relationships.

16. Find the good qualities in others. Appreciate their

good qualities and ignore their shortcomings. If not, faultfinding becomes a disease and destroys any relationship. Become like honeybee, and not the common fly. When we see fault and defects in others we are like a fly. When we only see the fine qualities in another, we are like honeybees sipping only nectar. This is important in our personal lives, because we degrade and pollute ourselves in faultfinding. If someone is constantly pointing out my failing, naturally I am not very comfortable around such a person. Holy Mother is oft-quoted as saying on her last day, ‘If you want peace of mind then give up faultfinding. If you find fault and all, find your own faults and shortcomings. Learn to treat everyone as your own. No one is alien to you, the whole world is yours.’ Sri Ramakrishna could see into a person’s heart like seeing into a glass wardrobe. He could immediately recognize another’s negative side or shortcomings, but His technique of teaching was in appreciating and encouraging whatever good qualities a person had. This was also practiced by Holy Mother and Swami Vivekananda. The teacher’s duty is to make better persons, and this needs to be done with a loving heart.

17. Build-up creative relationships. It is possible and to some extent desirable when family members, relatives or friends are engaged, for example, in some sort of cultural activity intellectual pursuits, undertaking some voluntary service or even pursuing some business undertaking together. In fact, examples of such relationships are not wanting, which should be emulated.

18. We should also transcend relationships from the lower to the higher, from surface to deeper, from physical to mental and spiritual. How do we transcend relationships? If love is only concerned with the body, then it is only animal love. If the love encompasses both the body and mind, then this love becomes somewhat deeper. And even if the physical side of love fades, love may continue. But love will be sustained, pure and blissful, when love encompasses the spirit inside our beloved. This is what is called ‘spiritualizing the relationship.’ This relationship will not only elevate the one you love, but will elevate you as well. It may start with loving the body and mind, but finally, it must transcend and mature into a spiritual relationship.

www.batj.org

Healthy Relationships: Their challenges and solutions

19. By broadening the boundaries of relationships, we can broaden our heart and get greater joy. We need not just limit love to our family, to our friend or to our neighbors. It is possible to cultivate of love anytime and anywhere in anything. In my own way, I want to be a friend in our locality; with children by giving candy; by talking with local people who are out for morning walks; being friendly with their dogs; friendly with the postman, deliveryman, cab drivers and shopkeepers. What is the way? Giving smiles, sincere greetings and candy Prasad, Everyday greeting with feeling and a little smile go a long way in fostering relationships with others, as such gestures of goodwill count much in many ways.

20. Our eternal relationship is with God. We should always be aware of this relationship and cultivate it accordingly. Focusing on this relationship with God and adjusting our other relationships accordingly helps in all our relationships. Conclusion:

At the end of this lengthy discussion on healthy relationships, if it is asked what the prerequisites of such relationships are, the answer is that primarily three things are essential. The first thing is reducing the level of the ego and the second is enhancing the level of patience and the third is to see your ‘self’ in others and other’s self in you. If we remember and practice these three rightly and earnestly, the practice of the other techniques of healthy relationships will become easier.

The bottom line is how to practice these three basic things; reducing ego and enhancing patience and seeing the ‘self’. The best way to curb our ego is to substitute our ‘I-ness and myness’ with ‘thou-ness and thy-ness’. This has two aspects. One is putting others first, whenever, wherever and to whatever extent possible, which we already noted. The second aspect is to try to get connected with God and then to connect to others through God. Meditation and prayer helps a lot to inculcate this attitude in us.

Enhancing our level of patience becomes easier if we can practice this curbing of our ego with some success. In addition, we will grow the power of understanding others and have better control of mind through self-analysis, meditation and prayer. Meditation on our real nature also helps us to see our self in others and others self in us. Thus the practice of meditation, prayer, self-analysis, and some basic disciplines are not only vital for our spiritual life, but also vital in establishing an enjoyable, sustainable, creative, and elevated relationships with others, which every one of us craves for. 

Durga Puja 2014

43


India, as a part of me - Koji Sato

I

was a college student when I first visited India in 1993. With the travel guide “Chikyu-no-arukikata” at hand, I made a backpacking tour of North India, from Delhi to Calcutta. As many backpackers did in Calcutta, I stayed at a cheap hotel along Sadar Street and volunteered assisting Leprosy patients at Mother Teresa’s facility for a week. I still recall the first encounter with an Indian film at the cinema hall near the hotel that mesmerized me totally. After coming back to Japan, I sought out a job that might lead me to India once more, and joined the Japan Foundation in 1995, the cultural wing of Ministry of Foreign Affairs. There I got a chance to work with the Indian Embassy for the Indian film festival in 1998, where we introduced some of Raj Kapur’s works and several Bollywood masterpieces including ‘Mr India,’ directed by Shekar Kapur. The summer of 1998 was the first wave of Indian movie boom, when commercially distributed ‘Muthu’ and ‘Bombay’ and our festival made good influence on each other to popularize Indian movies. I still remember well the excitement I was feeling to be a part of the forefront of India-Japan exchange.

In early 1999, I got the order from the Foundation to work at its office in New Delhi. It was spring in Tokyo, but when I reached there, the LOO was welcoming me. Yes, it was the hottest season of the year in Delhi. At that time I did not know any Indian language, but soon after arrival, I met with an Indian gentleman I owe a lot for making what I am now-‘juta hai Japani, fir bhi dil hai Hindustani.’ He was Dr. Bharat Singh, a professor at Central Hindi Institute (currently the principal of the Delhi school). He is I am sure one of the best Hindi teacher in the world and not only succeeded in making me fluent in the language in just the first 6 months’ teaching, but internalizing Indian culture into my body and soul. “Treat guest as a member of the family” was the core value of his teachings, and he taught it to me by his regular daily action. His family welcomed me every time I visited them, even when I didn’t give them previous notice. On holidays, they often took me to their village homes where I could learn the simple and beautiful life and culture through communication with the local people. I believe that the culture of forwarding hookah to each other sitting on charpai is one of the best moments you can experience only in India and I regret still now that I did not bring back to Japan the charpai that guru-ji gave me as a gift to keep it at my residence. Among the arts and culture that I love, music is what I cherish best by practicing personally. Another guru of mine was Mr. Sandeep Shrivastava, who taught vocal music at the Gandarva School of music at that time. Although I could touch upon only the threshold of Indian classical music by learning several ragas from him, the ragas and songs that I memorize such as Bhopali and Bhimpalasi are my precious treasures. It is really wonderful that you can share the mystical sentiment whenever by chanting the lyrics of bhakti such as ‘Sakhi madhur madhur murali bajaye’ or ‘Biraj main dhoom machayo shyam.’ Talking of music, I am a big fan of rock n roll and one of the first things that I did at the initial stage of my living in India was to search for good Indian rock music. The CDs that the owner of a shop at the Khan market recommended to me were titled ‘Desert Rain’ and ‘Kandisa,’ played by a band named Indian Ocean. I was knocked-out by the originality of their sound that rocks and at the same time has its base on their roots folkloric 44

music. It was not long before I got a chance to go to their concert and made friends with the members of the band. By

the time I learned Hindi and Indian culture more, I also got to be attracted by the lyrics of the songs that the members found the seed ideas from Hindu mythology and poems by Kabir or contemporary revolutionary, Gorakh Pandey. I was especially moved by the story behind the song called ‘Kandisa,’ that is one of the most popular and most beautiful songs of the band. It is the Christian chanting that travelled from ancient Syria and kept being sung to the present at local churches in some parts of Kerala in Aramaic, the language said to have been spoken by Jesus Christ. I love the band not only for their music but for their personalities, wit, intelligence, and friendship. Aside from the concert, it was always fun to visit their rehearsal at Karol Bagh or home parties. Other than the influence of two guru-jis, what the band members contributed to make me Indianized was huge! And I must tell you, the reader of ‘Anjali’ that out of the four original members of the band, three are Bengalis. Because of the fact, I tend to trust what the Bengalis talk about even at the first meeting. Our friendship had developed into the next stage after I took leave from the office to join the band on their participation in the performing arts festival at Edinburgh. Through the process of struggling together on the streets in UK in order to promote the band’s concerts, lodging together at the same rented house, I got to feel myself to be a part of the band. From the time on, I started to talk about the band as ‘We’ and the passion to introduce the music to people in Japan was growing bigger day by day. I wrote about the band and sent it to the Headquarters and our music events collaborators. It was not an easy task, but finally my passion bore fruit in the project to present the music of India, Bangladesh and Afghanistan at one time in Japan. It was August, 2002. Because it was my ‘dream project,’ I took days off from the office once again and flew to Tokyo several days after Indian Ocean left for Japan. When I checked in at the hotel in Tokyo and joined the band, they started talking nice things about a Japanese lady who was assisting their tour. As I have written, I tend to trust whatever the Bengalis talk about. The lady is with me now as my wife and we named our two daughters Sara and Maya, both after Indian goddesses (Sara is from Sarasvati, Maya is, of course, the mother of Buddha). Indian Ocean, as you may know, has become very popular now, writing soundtrack for several films such as Aamir Khan’s ‘Peepli Live,’ and just released their new album ‘Tandanu,’ in collaboration with such super musicians as Shubha Mudgal, Karsh Kale, and Shankar Mahadevan. I am

Anjali

www.batj.org


very pleased to see the development of the band’s music, and wish to see them again soon.

Another Bengali who gave me strong impressions was a writer, Ms. Mahashweta Devi. Some of her works have been translated in Japanese, including “Death of Jagmohan,” and it was a great honor to have a chance to meet her. I met her at her residence with some Japanese writers who visited India for writers’ exchange program. Her message to us that lives strongly in my mind is; “Do what you want to do, live as you wish. Life is very short.” After my tenure in Delhi was over, my duty at the Japan Foundation shifted more west to the Middle East, and my second overseas mission was Cairo, Egypt from 2007 to 2011. It is frustrating that I do not have enough chances to visit India,

India, as a part of me

but I keep trying my best not to lose touch with my good old friends there. The last time I visited there was the summer of 2009, when I was surprised to see the city development, especially the airport and underground! It was a little pity to have fewer chances to see cows on the street, but I was quickly relieved to find the same ‘Aapka ghar jese sochyega’ kind of great hospitality of the people there. According to jyotish, Indian astrology, in previous life I was an Englishman who lived in India for long to seek for nirvana. In this current life, I was born as Japanese and again, called by India’s strong gravity. It is a great honor to be welcome by the Bengali association in Tokyo, and all our families look forward to see you all at this year’s Durga puja and many other happy occasions. 

IT is the mercy of my true Guru that has made me to know the unknown ; I have learned from Him how to walk without feet, to see without eyes, to hear without ears, to drink without mouth, to fly without wings ; I have brought my love and my meditation into the land where there is no sun and moon, nor day and night. Without eating, I have tasted of the sweetness of nectar ; and without water, I have quenched my thirst. Where there is the response of delight, there is the fullness of joy. Before whom can that joy be uttered ? Kabir says : “ The Guru is great beyond words, and great is the good fortune of the disciple.” KABIR’s POEM TRANSLATED BY RABINDRANATH TAGORE ASSISTED BY EVELYN UNDERBILL

www.batj.org

Durga Puja 2014

45


Matrimony Bengal - Sougata Mallik

I

ts summer, and a few wedding invitations have been received already. Always nice to dress well, enjoy the fine cuisine, chitchat or gossip with folks and recline in the happiness of the newly wed youngsters. As much as I enjoy being part of these, I also keep wondering to myself – how hard is it to arrange a wedding, does the inadequacy in a character reveal itself in these alliances, can you judge the impending happiness or success of such treaties? I am speaking of the recent weddings that I happened to attend. Rewinding back a few months or years, I find a current trend in North America of Bengali parents seeking Bengali alliances for their sons and daughters. That should not be difficult considering the numerous population of Bengalbred professionals settled or living here. As we live, breed and flourish – the extended families grow and every corner of this foreign soil holds its head high with existence of engineers, doctors, IT professionals, entrepreneurs etc. When the family is young, we will find parents touring, enjoying with kids. When these kids grow up to be teenagers, parents are overly conscious of their academic achievements and trying to settle them in their respective fields. The heritage with which their parents inherited the distant land has to be maintained. And – in time when these children grow up into their adulthood, the parents become overwhelmed with prospective marriage plans for their offspring. When we colonize overseas, we bring with us a heavy baggage of values and traditions. That ambience becomes our signature, and we carry it on our shoulders with might and pride.

So it was…..One fine day I get call from a lady whom I have met few times. After courteous exchange of greetings, she requests me to alliance between her daughter and the son of my friend. She gave a vivid description of how good her daughter is, how accomplished the girl has been, how well she is doing at work, how attractive she looks, how Bengali alliances can be reliable, and on it went. The mother has been trying for last 4 years to find a suitable alliance for her daughter and is hoping my association may help her succeed in this endeavor. Honoured I was that I have been remembered in such need, but also bewildered and confused. An accomplished, successful girl as her mother describes, is unable to necessitate a suitable match! A complete stranger like me who is forced to believe in whatever the mother says is entrusted with the heavy responsibility of chartering a future life. But my joy and self-esteem were in leaps. How important I have become now!! I readily jumped into action. Called my friend (mother of prospective groom) and narrated the innumerable qualities of this unfamiliar girl and how the two unknown characters can be a perfect match. The excitement I experienced was vast. I was being embedded in joint alliance of a future that I can claim to be a part of. Someday when they recall their lives, I may be remembered fondly. In this little cartography of life I am holding the pen. What plentiful achievement I am realizing 46

here! Time will tell how much or how little I have triumphed in my professional and personal life; but at this moment I am quickly graduating to ‘Ghotki’ (certified marriage-maker in Bengal). And – it didn’t go unnoticed. My husband and daughter, drop-jawed were gazing at me in incomprehension. Their eyes stared in perplexity, as if they had never seen me before. Both spurted out, “What are you doing?” I beamed radiantly and replied, “I am fixing a match…….”

It didn’t end there. A middle aged Bengali lady, a professor in local college whom we all know as single, diligent career woman unexpectedly declares that she is looking for a life partner and would like to be associated with my family members. The news was appreciated but was also a bolt as far as I was concerned. She intends to settle down – that’s good. But opting for Bengali alliance again? She had two Bengali husbands with divorces. Similarity of language, food, culture could not reign over incompatibility of temperament and personality. Wouldn’t that be a lesson learnt to exercise flexibility? Is it worthwhile to seek Bengali alliance again?

As I am writing this article, I have open next to me a thank-you note for presents and attendance from a newlywed couple who tied their knot recently. I was happy and impressed at the courtesy of these youths. Engrossed as they are in their new status and honeymoon voyage, they have made sure to remember gentility and refinement. They are fine young man and woman with an interesting marriage arrangement. The groom was raised in Africa and the bride in Middle East, but both are residing in North America now. While education and job took them around different parts of the world, none of them got the time to settle down yet. Hence, the mothers take it as their responsibility to bug them to get married, get involved in the choices they are making or might be making, and when time comes try best to make the perfect celebration and festivity. I am a mother too – I can understand their feelings. The groom’s mother being a professional literate took to online system, rather than call friends or relatives. Of course the filtering came down to ‘Bengali girl settled in North America’. After a serious hunt for about a year and $300 annual subscription to the online organization, she was starting to lose patience. On one such despondent moment she showed the site to her son and told him about her relentless efforts. He eased it for her by choosing one such match and their relationship blossomed on the computer – Email, Messenger, Skype. Within a short time the girl succeeded to get her posting in a location closer to his. Their bond matured and the happiness on wedding day proved they complemented each other well. No matter what - we have to trust our children. Kids these days are far more enterprising, practical and adventurous than what we are as parents, or what we were at their age.

Anjali

The best surprise and amazement in Bengali matrimony www.batj.org


trend came from this incident. Two families who lived in the same city for many years were somehow not on cordial relation with each other. In natural course the members of these two families were not well acquainted. As fate would determine, the son of one of them and the daughter of the other happened to work in the same vicinity. Unaware they met, courted and found out that they belong to the families who are unwarm of each other. Their parents were happy when they initially learnt that the prospective other half is Bengali. Not soon after did they realize the actuality of strangeness. Needless to say, a wedding was arranged, all were invited and the celebration was festive. Once again it ascertained that youngsters these days are courageous, ingenious and can take bold steps above the ordinary. They submitted to Bengali alliance, but also succeeded in bridging a gap with harmony and friendship. Both families were made to forget petty differences of many years and revel in happy spirit of the occasion. From childhood we had heard of the saying ‘Man proposes but God disposes’. In the last two incidents I mentioned, all I can say is ‘parent proposes and child disposes’!

Matrimony Bengal

Bengali weddings are fun, elaborate and time-taking. There is no harm in opting for Bengali alliances. It gives one the chance of indulgence, exercising acquaintance and expertise. Very little is foreign in such alliances. So the ease of preparation, the joy of organizing is always there. But when it comes down to the recent trend of choosing Bengali bride and groom, it makes me wonder is it worth the cliché? Marriages are meant to be a union. When the mind and soul merges, it is enough to transcend geographical and cultural barriers. When I witness the smiling faces and sparkling disposition of youngsters in matrimony, I marvel at their accomplishment, dexterity, agility. As I indulge in the glee and fun of these wedding parties I forget who they are, which state they come from, what language they speak. I see the bright light of happiness and find solace in thinking that this ray of bliss will contribute to peace in its own little way. Their happy life will breed happy posterity. The contentment will spread from one to the other, from one generation to the next. If all happens in this way, maybe we can look forward to a sphere of harmony and content that is devoid of unrest, quarrel, instability. 

Meeta Chanda

www.batj.org

Durga Puja 2014

47


Homeopathy - Dr. P.S Krishnamurthy Transcript of a discourse at Nippon Vedanta Kyoukai, transcribed by Nishant Chanda I am very happy to address you all about Homeopathy. Dr. Hahnemann, the founder of Homeopathy, was living in Germany. He was treating in Allopathy so many diseases, both acute and chronic with no results, except a small variation of pain. Actually, Hippocrates, the ‘father of medicine’, he mentioned there are two types of theoretical approaches to treat diseases in people. First he said Allopathic medicines, which works on law of opposites. For Dr. Hahnemann example, there is a Diarrhea, the Allopathic doctor gives him medicine to make him constipated. This is called to ‘treat on opposites’. This is called in Latin, Contraria Contrariis. So Hahnemann, was not satisfied. But Hippocrates had mentioned another law that was, to treat the patient’s disease on the symptoms of similar. That is called in Latin: Similia Similibus Curentaur.

There is another important point, Hahnemann has introduced himself, which was: only one medicine to use at a time, and secondly to give it at a minimum dose. These two were his contributions. And most importantly, he mentioned, the materialistic medicine with matter is one aspect which brings lot of side-effects. Even now, if we take painkiller Anacin, it produces a side-effect. Such side-effects are not there in Homeopathy. My own brother, disciple of one of the presidents of Ramakrishna Order, he was taking every time Anacin for small pains here and there. So in Chennai Madras, he had a heavy bleeding, from mouth, nose, and anus. Usually in such bleedings, we transfuse blood. But any amounts of transfusions of healthy normal blood did not help, he passed away. So such side-effects, what we call in medicine; drug induced effects. That is common with any medicine like Allopathy etc. That is absolutely unavoidable. So, now coming to the point of, what is the greatness of Homeopathy: it is matter less. Homeopathy does not use matter. He introduced Dynamization, which is, a small particle of matter, is put into sugar of milk, and is pulverized hundred times. Another point Hahnemann introduced is, Potency, which means nine parts of sugar milk to one part of 1X medicine. So how this medicine is acting without matter? That is an interesting question to ask oneself. So in the process of dynamization, its not dilusionized, it is dynamized many times. So, that becomes energetic. Matter and energy, their related physics are sides and the reverse of the same coin. So, that is the beauty of Homeopathy. Another point is, how many diseases can it treat? Usually, when a patient is suffering from a disease or illness, we will put a number of grades (1st grade, 2nd grade, 3rd grade, and 4th grade). Suppose diabetes, which has four stages. The first two three grades it can definitely be eradicated easily. It need not be completely cured. That is very important. You take for instance, blood pressure. The normal blood pressure is 120/80 for all age groups. So, as blood pressure increases, one has to take an allopathic medicine to reduce it reduce it, and lifelong to use it. But that does not mean it is cured, it is controlled. What is controlled is the level of blood pressure; the disease 48

is not cured. That is when homeopathy comes in. Homeopathy cures, and medicine is not required lifelong. There is a wrong notion in the public about homeopathy: the small tiny pill can it cure such a big disease? It cannot cure, we are taking so many tablets, vitamins, etc,15~20 types of medicines, in a day. When that is not able to cure, then how can this small pill cure the disease? It is a strange condition wrong notion in the public. So we have conducted, 100s of experiments, BP, diabetis, and other incurable conditions. To cure an acute and chronic disease is normal but, Homeopathy has a specialty and what is that specialty? Not only to cure acute and chronic diseases, but also narrow down incurability in the patient if it is in the early stages, the first two or three stages. Suppose it is in the terminal stage, the last stage, it can be cured still. That is the definition of cure Hahnemann had put forward. You see, very small tiny pills. Just like a mosquito’s egg. You see this liquid, just one drop, or even half a drop, that’s enough. So people believe this is a small- no no no no. We want so much. For BP, for headache, for migraine, for constipation, for my pain in the liver, for my heart attack, like that …. They are right, so the doctor who treats the patient should have enormous love. What is that Enormous Love? As if he is my own, I am him, I am he. So how affectionately you will treat such people? You put your feet, in the shoes of this patient. How many doctors are treating the patients with such an ideal treatment? There is a booklet, Love Medicine The medicine is to love, love means not at the physical level, but at the spiritual level. I’ll give you a small example, what the definition of love is, Jesus Christ being crucified, yes, crucified. And then, they wanted to punish the people who were crucifying. Do you know what Jesus said? Please, don’t punish them, they do not know what they are doing. That is the law of love. How many doctors are doing that? Mahendralal Sarkar, who is a doctor, of course Maharaj has mentioned. He was a very famous Allopathic physician. That he was treating Sri Ramakrishna or any other patient, with that ideal of love. Actually, Bhagavan Sri Ramakrishna, if he asks Mother Kali, does she not be able to cure cancer? He did not ask. He knows it, but he didn’t do that. Why? Because he is an incarnation of her. He has come and taken human birth, so he has got to fulfill his duty, in the world. And then, there is, wonderful another beautiful saying in Islam. This morning, Maharaj was talking about renunciation. Renunciation, forget everything, leave everything. You know the Quran says? Of course it is in Urdu, I slowly tell it. (Marjao, marne ka pahele) You die before you are dead. The spirit of Bhagavan Sri Ramakrishna was this one which Maharaj was carefully mentioning this morning. You can say that, “this is not homeopathy, what is it you are telling all about it”. I am telling the question of love. How many doctors, are treating their patients, with the same love. He’s myself, I am himself. Do I neglect myself? No. So for this type of love to express, I transgressed a little, into the small small things, excuse me for it, but suppose, coming to the point of obesity, you know what is obesity? Oh, Boy. I was myself weighing 110kg. 2.2 pounds is one kilogram. You can imagine how huge I was, my wife will tell. Of course I have taken medicine, and then, I observed the diet. Food intake I observed it. There are some people, who live to eat. But there are some

Anjali

www.batj.org


people, who eat to live. Maharaj is like that. Of course I am telling many people are there, I am not denying that. But I’m telling that, eat a little, that’s a discipline, greatest discipline in the world. Don’t live to eat. So coming to the point of, Homeopathy, I am now, devoted, and dedicated, to treat any number of patients. I don’t wish that you should be sick, but if you have any health problems, please pass it on to my ID, through Swamiji, or his assistants, not only now, but during my whole life time. I will be too happy, to treat you, with that love of affection. Yes, I’ve treated about twelve Japanese, 20 years ago, they visited me, unfortunately I did not have their addresses. It’s a mistake... So when I was coming here, I searched here and there, and couldn’t find it. Believe it or not, one person was having severe migraine. You know what is migraine? Severe headache... So severe, he wanted to break his head against the wall. Unbearable pain ! And two of my patients, they drowned in the well, because of pains and sufferings. So that lady was very happy, she had no pain. So I was citing this he gets headache on every alternate day. I gave him only one, single dose, but he may not believe it, so I gave him some placibo. What is placibo is some sugar of milk for about three months. And he went away, and he said, I have no headache. This is the type of love, I exhibited. And another lady came, suffering from cancerous pains. You know cancer? Bhagavan Sri Ramakrishna, was treating through me. I’m not treating.

Where am I? Because Maharaj was tellling this morning, ego… ego, it doesn’t go.Nno no no, Even the lord Sankaracharya, he kept for himself, a small element of ego, to teach in the 34 years of life. He kept a small ego, to educate, to give out, and Bhagavan Sri Ramakrishna had such a small ego. Yes, but he said all the things. You open the Gospel of Sri Ramakrishna you find all Vedas. There are four Vedas you know? You find the substance of Vedas. They are given by God.

See one of the important researches I have done is, on fat people. I gave few medicines, because, one medicine cannot cure all fat people, no. Each individual is different. But in Allopathy, they give the same medicine, killing their appetite, so if there is no appetite, they may reduce. So half-salad take four five drugs from Homeopathy, here the selection is very difficult. You may have something, and the same obese man may have something else, and I may have something else. All the three people require three different medicines. So therefore, they were alright, they became normal, not reducing the diet… no, but not eating to live…no. Limited food, sumptuous food, all food, good food. They are all right. And then, in diabetes, the sugar level will be really high, there however we treat in other systems of medicines, they do not come under control. There is one medicine in Homeopathy that was actually Allopathic medicine. 3/4ths of Homeopathic medicines are Allopathic. We brought them and prepared them into our laws, it is called fluorigine. It was published in the medicine magazines. You believe it or not, the sugar-levels, absolutely came down to normal. This is a very good experiment, one important factor I wish to tell you. You see in homeopathy, there is a type of individualization. That means, hundred questions, what is this man, does he feel happy, if he has got pain here, if you press it, does it get well, or it gets worse, the head ache gets worse by pressing, eliminated or aggravated. Suppose you know I told you about migraine. What was he doing, he was pressing his head against the wall.

Maharaj: So different types of same patients, what are the circumstances. Then symptoms also, different. Homeopathy ask many questions about that. That means, for example, cold, you see cold because of fatigue, then because of change in weather, or sudden exposure to heat, or change of season, or because of constipation, so many reasons are there. So homeopathy is asking, what are the details, how you had the disease. Dr. Krishnamurthi: That is the law of homeopathy.

www.batj.org

Homeopathy

Similar treats similars. What are the symptoms of this patients, you collect them, and what are the symptoms of the drug you are giving, and match them, if they are similar, then it choose.

Maharaj: First, very important, you have to match two things. First of all, the symptoms you have. Then, if you take this medicine, what are the symptoms. You see, when you take the medicine, what are the symptoms you have. Then you match. Then that is the treatment.

Dr. Krishnamurthi: I’ll give you a small example. You know Bheema, brother of Pandavas, and there is one kheechida, the demon, Duryodhan’s brother. So this Bheema beat the Kheechida, black and blue, so much he beat, then, the Kheechida went to homeopathic doctor. This homeopathic doctor, asked Kheechida, were you beaten by his right hand or left hand. That is homeopathy.

I’ll give one example and close it. A big contribution by Hahnemann. He said, whatever medicine you give, you have to know what it does. Suppose you are giving some medicine, before giving the medicine, you should first of all prove yourself, what symptoms it produces, what diseases it cures. This is not there in other systems. This is the contribution of homeopathy and Hahnemann. And not taken a surgical diseases, no. Surgery is common to everybody. That’s it. And some people do, animal experimentation. Researches, in Allopathy. They don’t perform on humans. But Hahnemann did on himself, his wife, his children, and his friends, and disciples, and found out what are all the symptoms of the drugs. And prepared a materia medica. Different medicines. That is homeopathic medica. So question and answer now? Ask any question. Maharaj should translate it. Q. Is there any treatment for skin allergy?

A. The doctor who treats allergies, is called an Allergiologist, he is specialist. So what he said, allergy cannot be completely cured. No. We can give medicine to stop itching, a little. But then again, he goes on scratching. ...Maharaj, he wanted me to go somewhere to treat a lady, who has an allergy for small food, rice. So we both went there, I forgot the name of the country. Singapore. You believe it or not. We give one medicine, and only placebo, placebo. For about six months, and she is eating lot of rice and no allergy. Similarly, the latest dermatology, skin disease eczema, there is a weeping eczema, ring worm, like that. Dermatology first of all, we should know, what type of disease of this skin, the patient is suffering from. So that symptoms we collect. Then we will find out, from the Homeopathic drug, those symptoms which have produced the skin symptoms in that patient; eczema or whatever it is. So, she got well.

I will tell you, you know white patches? Vitiligo, you know what is vitiligo? Depigmentation…In the research we have done, we have documented, I will show you before treatment and after treatment. This is science and art. He said, science without cause and science without reason is no science. Maharaj mentioned this morning. Maharaj: I said, science without religion has no root. Dr. Krishnamurthi: Wonderful

Maharaj: And religion without science has no fruit. Dr. Krishnamurthi: Good. He was telling. Truth.

Maharaj: Dr. Krishnamurthi, now my question is, for example Allopathic medicine ingredients you see, some sort of, different types of, some time vegetable, sometime copper, or iron, many types of things. Then sometimes snake’s poison, so from many things they, prepare the ingredients. Q. What are the ingredients of homeopathic medicine?

Dr. Krishnamurthi: There are three types of homeopathic drugs. From vegetable kingdom, that is any type of plant medicine, is Vegetable kingdom. And mineral kingdom, what is mineral kingdom? Gold, silver, yeah mineral kingdom.

Durga Puja 2014

49


Homeopathy

And also, animal kingdom. Yeah. Animal kingdom. We have a medicine. You know what is scorpion? We prepare, medicine out of it. Yes, for those people, who are bitten by it, you know? It bites… doesn’t bite, but you know it stings? It stings like that and unbearable pain. So we have three varieties of medicines: vegetable, mineral, and poisonous. You know cobra? And you know Hahnemann’s disciple Herring? Herring is Hahnemann’s disciple. So when he was preparing the venom of the cobra. Venom, into homeopathic medicine he had lots of side-effects on his whole skin and it became black, yeah…Cobra. If you ask me, I will give you only one medicine, you take it and treat means that medicine is called Lachesis is the venom of the cobra. It is useful, in majority of the women’s disease. Menopause, so many things. And madness, you know what is madness? Became mad, you know? It is a beautiful medicine.

Similarly, along with three varieties, there is another fourth variety, that is energy. You know magnet? What is there in the magnet? Magnetic Energy. South Pole and North Pole. Electricity, is an energy. So we expose delusions, empty delusions to the light. Where do we get the biggest light? Near the sun rays, yes, and then prepare it. You know big industries has lots of noise? So we put, where there is noise, a small, delusion, kept it there for three days, that medicine is treating deafness. Yeah. I’m not joking! You give me some half dozen deaf people, I’ll give some medicines and go away, and inform Maharaj, how far their hearing is cured. There is a metri… you know audiometer? The ENT surgeon uses it how much deafness has gone, 20 degrees, 40 degrees, how much, how much in left ear, how much in right ear. So that will keep it, and after the medication, we’ll get it again and scan it, by ENT, it’s a normal. That’s it. Recently, I prepared another medicine. That is proton, and neutron. Atomic energy, you know? You have atomic energy also, proton, and electron, these are the two powers of energy. Proton and neutron. This placebo liquid, near that proton generating this thing. And, we prepare two medicines, you believe it or not, they are doing excellent work. For majority of 80% of chronic disease. And where the sun heat is there you know? The sun heat, where summer is more. I don’t know about your weather problems here summer is very high you know? Very high. Maximum. Tropical countries, means very strong heat. And they have lots of problems. Weather illness, suppose you go out in the rain, you get shyness, or headache, or fever. No I’m just telling, called weather vagaries. So for that, those

two medicines, are working very well, I have offered them to the government of India, to prepare more medicines. And also, I suggested to our Prime Minister, sent an email. Dear Sir, please see these medicines are useful for the villagers, poor children. There, who will treat them? They have their dispensaries. Q: What is the mechanism of treating Arterial Sclerosis in Homeopathy?

A: Arterial Sclerosis in other words is called the ageing of tissues, bone, skin and muscle tissues ageing process. That does not mean an 80 year old or 90 year old person will have Arterial Sclerosis. The people who does not have, as defined before by me, who eat to live, observe strict discipline in life, regulated life, mentally no depression, and love for everybody, in this condition of life there is no Arterial Sclerosis. Some people are aging gracefully, who doesn’t have this disease. Some people who are ageing prematurely, such people can be treated as they come in early age group like in their 20’s or 30’s. Like they have grey hair, wrinkled skin, without any energy, they can be treated definitely. Maharaj: Every system has their special effects on some diseases. In that way no system is perfect. On other hand can cure many diseases. The problem is when the doctors claim, like an Allopathic doctor claims that our system is the most scientific and all other systems are unscientific, we can cure all diseases. Homeopathy also says Allopathy is full of reactions so come to us. Ayurveda is telling we are treating with all natural materials so come to us. Then Yoga people will say don’t have any medicine, do some Pranayams, Yogic postures will cure you. Spiritualist will say nothing necessary realize your own nature. Your ‘Atman’ is a source of unlimited energy. But my conclusion is, at certain point for some diseases, it’s better to consult an Allopathy, in case of surgery. If bone broken you have togo to a surgeon, there Homeopathy could not help. In some children diseases and some chronic disease, Allopathy only suppress that but can’t control. There Homeopathy does excellent job there! Then Ayurveda is excellent in diet, controlling the diet. Also has some medicine and massage. So all the systems are helpful in treatment from case by case. So can’t say any system and Doctor is good or bad. It varies from case by case. So don’t be dogmatic. I’m trying to bring the balance.

Dr. Krishnamurthy: Very nice words from Holy Mother “Don’t find fault in others, find your own faults!”

(Dr. P.S Krishnamurthy is the winner of Dhanvantari award in 2008. Dhanvantari Award is considered as the supreme emblem of the recognition for a medical man in the country which is awarded annually since 1973 for the outstanding contribution to medical science. This is the only award in the country which is presented to practitioners of alternate medicine apart from allopathic practitioners and has helped in encouraging holistic approach.)

50

Anjali

www.batj.org


The Fund Manager Dada - Tapan Das

N

omoshkar, I am Robinsen Bonar. I’m a ‘pret-manob.’ No, I am nothing like those Hollywood-designed ghastly looking Halloween weirdoes called zombies. Neither do I eat brains. I look like an average, non-descript potbellied Bangali with oil-sleeked side-parted hair, powdered back-ofneck, with an all-purpose rumal in my pocket. I just happen to hold dual citizenship: of human world and of spirit world.

Yes, I know what’s on your mind. I am lucky. I am one of the chosen few. But to be honest, I have visited the spirit world only twice before: mainly because the immigration officers at the entry ports are a pain in the neck. “Why are you visiting? “Whom will you visit?” “What have you brought with you?” “We will have to check all your recent updates on social networking sites first”: they take the pleasure away from trips. But I do visit them virtually on our networking sites: ‘chayakhata’ and ‘spiritweet.’ Such fun that is. I get to follow all the stars and divas of my dream: Uttam, Suchitra, Manna, Rituporno…my friend list glows with glamour! Just a few months ago, Uttam da posted on ‘chayakhaata’ that thank goodness that Suchitra and he had already exited the human world, or they too would have been sent for election campaigns to Birbhum Bankura and what not, in the blistering summer heat. I quite like following their updates on social networking sites. I even got a ticket to a Manna Dey-Jagjit Singh concert recently. This is something that I indeed enjoy of my dual citizenship. I have always looked forward to a post-retirement permanent residence in the spirit world. But right now, I am in a terrible mess.

I was tugging at a piece of lamb meat at lunch this afternoon, trying to ease the meat off the bone when suddenly the marrow from the bone shot up my windpipe in rocket speed. I choked. Before Reema, my wife, could come and do something to revive me, I had stopped breathing. Now this was a very different feeling. I felt light as air, floating around like a formless, transparent scarf. I understood that my body was completely separated and I was now only a soul. I felt myself sitting on the fan blades (my goodness! Who knew the blades had gotten so dirty and grimy even after the massive cleaning done a month ago!) looking down at my open-mouthed body, still grabbing the culprit bone in gravy-sodden fingers. Reema ran out to find help and in the meanwhile, I just thought I’ll make a quick visit to the other world and then when Reema gets back with the doctor, I will slip quietly back in within my earthy form. But now I am in trouble. Reema got back, along with a doctor and some neighbours. Soon Jimmy, our son, joined the howling, head-banging crowd of mourners too. I hurriedly tried to get back into my body, but I failed. Now I panicked. This has never happened before! I had always been able to leave the body for a while and visit the other world, but could always get back in.

Much that I enjoyed being ‘dual-spirited,’ I wasn’t yet ready for a final exit from the human world. And now of all days! It’s pujo in a month and I am the convener of the purchase committee of our Club pujo. These boys will all be lost without me, their favourite ’Angrez da’, as I am called by them at times! Not to say anything of missing the nabami feast and the postdashami bijoya feasts that are supposed to keep me occupied for a month. And then there is Reema – I can’t possibly leave her all by herself yet. We are a team, a rocking one. Our partnership has been stuff of movie plots: conservative Brahmin girl marrying an ‘Anglo’ against the wishes of the Chabi Biswas-type patriarch in the family made quite a sensation those days. Even before the dust on such a marriage had settled down, we kept popping www.batj.org

up in conversations in the hood: for our polar difference in temperament, yet the fevicol-bond we shared. I am outgoing and thrive on social interactions and participation. She gets tired of too many people around her. So each time that I have stood in the elections in the past thirty years, Reema campaigned against me and requested people to not elect me, so she could ensure that I spent more time with her and Jimmy. Without fail, every evening I would bring home something special for her and she would cook something finger licking good for me, to go with hot chapattis. A few pegs of ‘Old Monk’ have always done the trick for me. Rafi, Manna Dey, Shakti Chakraborty, and Ezekiel would all come flooding my sensibilities. Countless evenings I uttered my favourite lines pointing to my wife and son: ‘I am standing for peace and non violence Why world is fighting,

Why all people of World

Are not following Mahatma Gandhi, I am simply not understanding.

Ancient Indian Wisdom is 100% correct. I should say even 200% correct.

But modern generation is neglecting-

Too much going for fashion and foreign thing.’

I can’t deprive her of my company so early, so much without preparation.

I was feeling very dejected that I would not be able to be a part of the grand Puja celebrations, I was supposed to take up the role of ‘Heramba babu’ in our club drama, ‘Lord Cornwallis’er Chata’. I had planned to enjoy the Bombay night with my friends sitting in the first row with the VIPs and even have Shankar Panda’s ‘LuchiMangsho’ at his stall. Alas! What can I do now?

I thought fondly of my tentultala addas. As coffee House was to Moidul and D’souza, Tentultala is to me. From selfcomposed sher o shayaris to lines from The Beatles, from trifola street lamps in Kolkata to the Telengana issue, Intensive survey, Indranil’s mind boggling souvenir and memorabilia collection ,or our Choto Shakeel’s sher o shayeri, our adda has always been my lifeblood. The past few days we had been so incensed with the ebola virus that it formed most of our two/three hour adda sessions. Besides, my tentualtala buddies have been my support system always. From kids’ career and admissions and jobs to each other’s health and hobbies, from puja planning to winter picnics, planning newer ways of membership induction drive, Football, Cricket, we tentultala buddies are always living

Durga Puja 2014

51


The Fund Manager Dada

the shared experience of life where age is considered just a number. The spirit world can never provide me with such fulfilling tentultala experience, I’m sure!

Most of all, I had a score to settle with Haripal Bhatta of our pujo committee. He has always been mad at me for not letting him pocket extras from the pujo fund. His disappointed comments were peppered with ‘Oh shit’ without the ‘h’. ‘s[h] it Robin babu, you are just always messing up my plans. Oh S[h]it! You are such a bummer!’ But I have always managed to keep him checked. This time, I suspect he is up to some big trick, just to get at me. How can I go away and let him win? Maa, oshoter joy hotedionaamaa, Bhattaashurke aamaay thanda korar chance daao, maa, I implored in despair as I looked at my shroud covered body and the queue of mourners coming in to drown me in more and more flowers and garlands. I just had to sort this mess out. I just have to get back in my human body.

I reached the citizenship office of the spirit world and demanded explanation, but the bored-looking pret-clerk, who kept playing solitaire on the computer even as I spoke, eyed me suspiciously for arriving from earth, tested me for ebola, and just asked me to ‘file a complaint.’ Indignant, I vented it all out on chayakhaata and spiritweet. In a minute, my post had 90 ‘likes’ and several consolatory messages. But nothing to resolve my issue! Dejected, I hit the bar. At least here ‘Babaji marka amrit,’ a version of somras, was free and of unlimited supply – this cheered me up a little. Floating by, I came across several spirit rehabilitation centres. In an open window I spotted our unique moustache man Virappan dada, doing mandatory community service as part of the criminal correction and rehabilitation plan: burning chunks of sandal wood to circulate sandalwood smoke through the spirit world. Hmmm, not bad, I thought. I also saw several young lads, may be in their early twenties, looking after infants and toddlers. I spent some time watching them, curious about the type of correctional therapy they were undergoing. Finally it dawned on me: on earth, they had been hanged for being guilty of rape. Here in this spirit world correctional facility, they are being made to ‘mother’ a child: they were being made to do all that a mother has to do to take care of a child. This way, by doing selfless acts of care and service as mothers do, they are learning empathy, learning to respect others and themselves. I wandered along, still feeling restless. I peeped back at the human world and saw that the fight over my body was still on. I tried shoving all horidaspaals out and tried whispering in Reema’s ears but could do neither. I felt helpless. Floating by in the spirit world, looking for a solution or at least an explanation, I bumped in to a small group of people gathered under a tree. Had to be a Bong gang, I thought to myself! Look at those steaming cups of cha and cigarettes between fingers and the rising voices on didi’s politics and future of Congress, this club, that club,Brazil, Germany and Bharat Ratna. I could even hear a passionate rendition of ‘Abanibariaacho?’ It reminded me so much of tentultala and our gang. As I went closer, I suddenly felt a sharp jolt of pleasure! So many long-gone known faces! Ramu da, Jeevan da, Sengupta da, Sreegupta da, Chatterjee da, Bose da, Maity da, Dutta da, Sen da, Das da, Lahiri da, Ghosh da ,Chanda da ,Mukherjee, Mondol Saheb, Ahmed miyan! They waved at me as soon as I approached. “Arrey Robin! You here too, finally?”

52

“Bonar babu! What a pleasure!”

“Tumi kobe ele Robin bhaya? Just the other day I saw you campaigning for elections. Did you win?”

I was pumped by these hearty comments of welcome and recognition. I told them my story. Suddenly, they were all rather quiet, eyeing each other knowingly. I sniffed a rat. But they didn’t say anything on this anymore. Mukherjee and Bose da took me to a meeting that evening, which turned out to be a spirit world pujo committee meeting. I wasn’t surprised, because it was festive season, and I knew the spirit world celebrated all festivals: from Navroze to Durga puja to lantern festivals. This was truly one world. I had learnt so much about world festivals from pictures and updates in Chayakhata. But this time, I was not quite in the mood. So I floated around half-heartedly, sad about the festivities I was missing on earth. And now it is too late, I realised. Too late to go back. My body was already being cremated. I read some of the messages people had posted on my Facebook page. The messages suddenly flared me up again. This is after all a technical fault on the part of the spirit co-ordinators! I wasn’t supposed to be permanently up here as yet. I was to be given a day’s notice at least, as per the rule book pret-manobs. I felt angry but it was frustrating because I had no body now. So I couldn’t ball up my fist, couldn’t kick, couldn’t push or scratch or pinch or punch.

Just then, Bose da whispered in my ears: “Don’t be upset about being brought without notice. We always wanted you up here on a permanent basis to manage our festival committee funds, you know. In the recent years funds have been really mismanaged. I read on Spiritweet how skilled you are at fund management and we know how you have been keeping that man ‘Haripal Bhatta’ at bay in human world all these years. So who better than you? So we asked spirit hackers to program your dual spirit account in such a way that as soon as you make a visit here, your return function will be locked, so you can stay here forever. And we will hold an election here and I can assure you that I have hold on a large voter bank. You WILL win the post of fund manager, I can tell you.” “Elections here too?!Really?”

“Yes absolutely. It has to be a democratic choice after all. You don’t expect our community to just place someone in authority without popular approval, do you? Haha. Then you don’t know us yet.” “No, I agree, elections are the way to go. But…”

“Don’t worry Robin, we’ll compensate you well for this forced employment.” Bose da winked. “free 24/7 virtual access to life on earth.”

Well, real managers don’t crib. They negotiate to get the maximum. And that’s what I did. “I need a bonus, Bose da. My wife’s dual spirit status is to be unlocked so she can come visit me anytime she wants.” “Done, Robin. You indeed are a fevicol-couple.”

Well, readers, I can’t complain much now, can I? Wife, tentualtala, pujo committee – all there. Win-win situation.

As I clapped my hands in joy, with a jolt, my eyes opened. A dream after all! But wouldn’t it have been nice if we could commute between the two worlds?

Anjali

(Strictly Fiction)

www.batj.org


So far, so close……No matter what… - Ahnick Bhunia Sometime during mid of 2009

From past few weeks Aashu was just following her on Orkut, Yes! You read it right, Orkut, the pre-Facebook era, but could not send a connection request. And she might be following him as well. Found her location as Hyderabad, and Aashu had been staying in Mumbai since mid 2007. There was long gap between them, it was a time gap, was a gap of friendship, may be due to anger, misconception and many untold things.

But luckily there was a common friend of them during school days that helped to get connected over Orkut and passed on their phone numbers. Both sides were hesitating to call each other even though they had each other’s number. They could have sent a message, but they couldn’t.

It was peak of recession and Aashu didn’t have much work in office. That’s why he started gym for first time ever in his life and shed down 3-4 kilos in first two weeks and brought down it to a double-digit number in terms of kilos. Most of the time he used to stay with his parents in Mumbai and sometime alone. He started daydreaming of lean physique all the day. He is getting used to few words like repetitions, sets, cardio, training, protein, carbs, and fat etcetera. It was a relaxed and stable life for him. But there was a much better reason to be happy and gay because he could trace her, yes finally! But there was no profile photo except one yellow rose on her profile. But Aashu had put a photo with his big chubby face with a voluptuous tummy. But the situation in Hyderabad was little different. Whole world when struggling with recession, then especially Indian software market could not escape from that. She was worried thinking that she would be the possible victim. There were rumors like her employer might stop their India operation. She was going through lot of depression as she was away from her home, and unfortunately such situations arose during her initial stage of career. The only brighter side was that she could get Aashu’s phone number. Actually she was following him since long back when she did not have any social networking account. She had all information about Aashu, like his college, location and all. But never tried to contact him. 28th of May 2009 was a bright warm colorful day for both of them. Aashu was just back from office and was normal chatting with his mother and getting ready for gym. And since morning after so many plans, determined to give her a call. It was 7`o clock in the evening, Aashu was just about to leave for the gym, and the phone rang! SHREYA! Oh gosh, he was not prepared to say “hello”. But Aashu got enough courage to receive the call and started the conversation with hell lot of stammering. Late 1998 to 2007

Shreya and Aashu, both are from Durgapur, an industrial city of West Bengal. First time they met during privet classes, those were so called tuition batches of 9th standard. But after that they came to know that their preschool and primary school were same and realized that they must have met before, but could not recognize. Shreya belongs to the group of top-notch students, with higher grades and goals, a good girl to every teacher. www.batj.org

Aashu was a kind of struggling in studies, immature, with many complaints from teachers, never ever could put down any dictation perfectly. Eventually he had to borrow others note books to take a copy after every lecture. But none was too kind to lend him, his or her copy every day except Shreya. So with much confidence he used to take her copies after every tuition batches. And every time he used to forget to return her copy back, so finally Shreya started making another copy of her notes for herself first, then she used to pass her copy to Aashu. Slowly and steadily we became good friends, just a good friend to each other. As the years passed, their friendship got mature. They had got almost all common tutors, and it was like meeting twice or thrice a day while hopping among the classes. There were innumerable memories, fights, incidents, and accidents. Once Aashu said to Shreya “I will slap you.” in front of everyone in Physics batch. And Aashu will never forget the consequence. It was nothing less than getting physically slapped back on him. Then Secondary school over, and as usual Shreya could able to fulfill everyone’s expectations. Anyhow Aashu could also able to secure as decent grade too. Now they got in the same school for higher secondary but different sessions, that is morning for her and afternoon for me. They became frequent visitor to each other’s house to exchange study materials. But be assured that there was nothing but pure friendship between them. But that lasted for very short time. There was a boy. Good looking, smart and kind of famous in school with a gang of followers came between them. Even though there was no emotional or serious relation between Shreya and Aashu but don’t know why the boy and those followers were not taking that positively. Aashu was simple boy, as always, he never understood that something was going wrong around them. He was threatened several times not to roam with Shreya, and not to talk to her, or not be in same privet classes. But he did not take all those seriously.

Aashu was completely unaware that the boy was in contact with Shreya. They started spreading rumors and some crap against Aashu to Shreya, and possibly Shreya believed those partially. During late 2002 they lost frequent meet ups as Shreya got busy with her studies, and Aashu was also struggling to make his parents happy with percentage. Aashu could not realize that Shreya was avoiding him. Because there was nothing serious between us, so Aashu also took it lightly. But still the ragging was going on in school and classes. That boy used to make fun of Aashu in front of everyone. But Aashu never reacted. But the worst day came shortly after. Unfortunately something wrong happened, and once Aashu could complete all harder problems from Physics book, just in a day and he submitted the assignment. And Shreya borrowed that copy from Aashu, may be for first time. As a result the very next day, after biology tuition, a gang of boys caught Aashu. It was late evening of cold winter. They started hitting without allowing him to utter a single word. Then Aashu realized that the boys were nothing but his friends from his school. Punches and kicks; and literally blood was coming out of his nose and lips. And Aashu had been instructed not to meet or talk to Shreya further. Aashu nodded his head and left the place.

As a consequence, Aashu was so horrified that he could not disclose this to his parents or teachers, and not even Shreya. He felt like crying, was morally so down, confidence was at level zero. Exams, Engineering, JEE, Medical, etcetera were knocking

Durga Puja 2014

53


So far, so close……No matter what……

on the door. And the day came and Aashu broke down in front of Shreya, and left just saying sorry. And that was the last time they saw each other.

Aashu got busy with his studies and exams. School over, exams over, results are out. As promised, Aashu could secure merely seventy five percent. Also took admission in Engineering. Those days Aashu was not at all bothered about Shreya or that boy, except anger within him. Aashu had no news or information about Shreya. On the other hand Shreya got much higher marks that was eighty three percent and secure better rank in engineering. So she entered in a government engineering college in computer science department.

Both of them moved to hostel away from Durgapur, started a new phase of life, which was certainly one of the important and memorable phases, which brings the confidence, personality and most important true friends in their life. In four years of college life, they hardly remembered each other. The only thing that used to hurt Aashu all the time thinking Shreya might have misunderstood him. He should have told her everything. But it was too late. And Aashu believed that he’d remain under guise. Shreya was also unaware about the fact, the only grief with her was how being a friend Aashu could do this to her. College was over by 2007 and struggle of life begun. It was to secure a job, to earn money and to do whatever wants to do with that money. Aashu moved to Mumbai, and by mid of 2007 he started working in an engineering firm. Shreya also moved to Hyderabad and started working with an IT company. It was another phase of life for both of them, life of freedom. Back in Mid of 2009

28th May 2009 was the day when they spoke for first time since those long seven years. Yes they never ever encountered each other in last seven years. Nothing even over e-mails or messages as well. Aashu said sorry again, and he could do that, but this time he could explain the proper reason why he escaped seven years back. There were so many things, so many words, so many incidents, and stories lying in those past seven years. They started talking with much dignified voice and maturity. But it was not usual between them. May be all these years brought this change. Aashu explained the incident of getting beaten up by that group and all threats and of course his immaturity. The conversation lasted for over an hour that day. They might have found it very difficult to put down the phone and say bye. What next? Everything was clear between them. There wasn’t any problem between them anymore. But they wanted to explore more and more about each other. But how? Who will call first?

They waited for few days. They couldn’t find any reason to call. Meanwhile Aashu is alone in Mumbai those days as his parents were on visit to native place. Everyday he felt like calling her, but could not as he was worried of thinking she might take it in a wrong way.

But he took the risk and called her up, and found it very easy to talk and more casual this time. It went for more than two hours, that also in their second phone call. Again after a day they spoke. There were lots of topic, past and present, incidents of college, office, crushes and many more. Not on a regular basis but they started chatting over phone quite frequently. Meanwhile Aashu skipped a couple of days to call her. There was no reason to call. But Shreya already started missing those calls. She gave a call this time. In those two days she waited for Aashu’s call sitting alone on the stairs of her apartment building. She admitted that she expected the calls. It was really unexpected for Aashu. 54

So in this way, very similar to any teenage relation, long phone calls started, for hours, everyday, turned to three to four times a day. Still Aashu was unaware about how she looks after seven years. Only he could remember the school era and got the blurry image of her geeky face with boys’ cut hair. But they didn’t think they were in love. They believed that they chat because they were friends. And due to heavy phone calls Aashu used to reach his monthly bill credit limit within a week or two. So after few months, Aashu realized that it was time to choose some economy plan for his phone, and in India a few service providers are popular among love birds for free calls and economy packages. Aashu changed his number. But what was the reason he could explain to others! Very simple and effective, lost his SIM card, yes only SIM card, not the device. Thank god!

But Shreya was not well. The turmoil in her office took her sleep and appetite away. She planned for further studies and returned home. Shreya took admission for Masters and started lectureship in a college. Aashu was always standing beside her in every bad phase during these months. Even Shreya kept him awake whole night till morning, but over phone. After all those months now the time was to meet face to face. So Aashu planned to visit Durgapur, for first time after he moved to Mumbai, during Durgapuja in October 2009. They planned to meet in a coffee shop and it was a shock for Aashu. He never could imagine Shreya like that. How could she be Shreya! Was it real! So skinny, brownish skin, dark circles! Aashu could not greet her after this shock. And so the coffee tasted bitter too. Might be that was their first date. After that day they met again on Asthami evening and it was an entirely different experience for both of them. They roamed around and hopped few pujapandals. Together they met few old school buddies. And that was very surprising as well as shocking for them. Shreya and Aashu again together! How! But this time none could dare to ask anything. That was a wonderful evening for them. They will remember each and every moment of that evening forever. Holidays were over. Aashu had to return to Mumbai and resume office. They could meet only for two days in all those days. Both were back to their normal life and the best part of each and everyday was their hours long phone calls. Finally the day came. Aashu broke his emotion.

It was 16th November 2009, after they ended their phone, Aashu could not hold back the emotion and sent a text to her. It was written just an “I Love You”. But soon after Aashu realized that this could be the end of their friendship, which might not be fixed again. He was not prepared to face the consequences. He kept his mobile switched off for the night. Aashu was really worried. On the other hand Shreya was confused. She thought it was merely a joke, like Aashu used to say frequently “Let’s get married.” She tried his number that night several times, but could not reach him. She was worried too. Next morning Aashu found twenty-one messages of missed call alert and a single text message from Shreya “Was that a forwarded SMS?” As expected Aashu got a call in the morning and this time Aashu could not escape. Shreya: Hello, Aashu Aashu: Hello

Shreya: What have you sent me last night? Aashu: The truth

Shreya: What is truth? Aashu: The fact

Shreya: What is fact? Don’t play with words. What do you mean by that? I cannot concentrate on my studies and nothing is clear to me. What`s wrong with you?

Aashu: I cannot take all this like that, I liked you and now I am in love with you.

Anjali

Shreya: You are immature and kiddish.

www.batj.org


Aashu: Whatever. But I told you the fact. Now it is up to you. I am not forcing you or not asking you about anything. This is what I feel about you. That does not mean that you also feel the same.

Shreya: But suddenly what happened to you? Everything was well and good, then why are you trying to bring all these?

Aashu: Sorry, I am in office; I don’t have time to discuss all these with you now. Shreya: But Aashu listen, you cannot escape like that. Explain to me.

Aashu: There is nothing to explain. If you don’t want to understand then none can make you understand. And if you don’t believe the same what I have sent you, then better I will stay away from you, an I’ll refrain myself from calling you. So Bye!

Aashu just tried to get over her by voice, he didn’t give a single chance to her to speak. Aashu didn’t even call her that day. Shreya tried again and again to call him, but he avoided. Aashu was not happy, neither was Shreya. Next evening at last he received the call, and Shreya started crying. But Aashu was so rude, he didn’t even listen to her, after a minute or two he said bye and cut the call. To take some break, he went to the bowling club that evening. Physically he was present in the club but mentally he was completely lost. And so he got a minor injury in finger while bowling and left the club in anger. When he reached home, he found the keys were not with him.

Now nothing can be worse than that. He realized he forgot his keys inside the room and the door was auto-locked from inside. It was late, around 11 o’clock and hard to find a keymaker. He searched a lot, he found one key-maker shop near his apartment but the shop was closed. But the phone number was visible in dark. Finally he managed to call him and managed to bring him, got the duplicate keys. Aashu realized without Shreya everything will go off track. He called her that night. He broke down. And Shreya said “Yes, I love you and I’ll marry you.” suddenly. Of course there was a win for Aashu but “I’ll marry you” started resonance over Aashu’s eardrums. Aashu was not prepared to hear that or not enough matured to understand. He became silent for a while but he never reacted over that. After that he started avoiding those words, and continued with normal friendly conversation. He was worried about commitment. They would have to keep long distance relationship. Shreya was ready but Aashu was reluctant although he proposed. Aashu never expressed himself, or his worries to Shreya. Aashu’s family knew that they speak over phone frequently, but as friends. Shreya’s family was completely unaware about the fact. Most of the time Shreya used to keep herself busy in studies and assignments, placement preparations. Aashu used to be busy with office, gym and gymmates. So completely different lifestyle which results frequent fights. And they were not able to meet frequently also due to distance. But Aashu said to her once, “We’ll be there on time, no matter what. No matter what happens, we’ll still be friends”. Aashu believed what he said and he did not want to lose her again. In terms of patience Shreya was a clear winner. But both of them had the similar contribution to keep relationship safe in spite of long distance. Both of them waited for next Durgapuja when they would meet again. Meanwhile Aashu disclosed everything to his parents, they reacted very calmly and accepted, there was no major issue. Year 2010 and so on…..

So far, so close……No matter what……

and without consent of parents went to Kolkata and roamed around. Aashu introduced her to his parents, although since childhood Aashu’s mother had seen her many times. Eating out and movies, hanging around, intimacy, first kiss - all a different and new experience for them. But none has the hold over time, so the vacation ended so quickly, they were back to their normal lives.

But this year was a year of new happenings. Shreya secured a job in a software firm. So now everyone is relieved and happy. But still her parents were unaware about the relationship. Shreya moved to Kolkata after her masters and started her job. This was a relaxed phase of their lives. But also they hardly could meet, phone was the only medium. Because there was no reason for Shreya to visit Mumbai or Aashu Kolkata as Aashu’s parents used to stay with him in Mumbai. The only reason was again and again puja. Aashu used to take long holidays during puja. But year 2011 was special. Because this time it was in Kolkata. There was one more reason to make it special. From his office, Aashu’s trip to Germany was scheduled just after the vacation. So both were very happy. Aashu booked a guest house for three weeks stay, very near to Shreya’s apartment in Salt Lake area in Kolkata. They will never forget those days. Aashu was not aware about any places in Kolkata.

There are few special moment they will cherish throughout their life. Shreya’s waving hands from outside of airport arrival, while Aashu’s standing in prepaid taxi queue. ‘Masala-coke’ from the mocktail shop near Salt Lake Bigbazar. Presence of Shreya used to add extra spice in masala-coke as always. They were the daily customers of Broadway for movies; they believed that they generated maximum revenue of Broadway during those days. Revisited ‘Mainland China’ to ‘fuchka’ and ‘chur-mur’, ‘Bhojohori manna’ to roadside ‘ruti-tadka’. ‘Dokkhineshwar’ to ‘Aquatica’. No luxury can compare the bus journey between Kolkata and Durgapur. Roaming around together in a cycle rickshaw was always thrilling for them. And nothing could be much exciting as pandal hopping in Durgasthami evening in home town. Meeting with old school buddies and showing up their relationship, truly an awesome feeling. The best of their relationship was that Aashu never tried to hide about their relationship from other, he always gives proper recognition to Shreya, and he was ready to give the relationship a name. So he never hesitated to introduce Shreya as his girlfriend, sometime even fiancée to others. Each and every girl on this earth expects a proper name from every relationship. Shreya first time ever spoke to her parents about their relationship and she also kind of demanded them that she will marry that boy. Her parents were not hesitant about her wish even though they don’t belong to the same caste. Once Aashu fell ill and was hospitalized for a couple of weeks, that time Shreya paid him a visit to Mumbai. And that was her first time in Mumbai at Aashu’s place. Shreya stayed in his house for a week with Aashu’s family. Relation between the families was getting better and better. Few days later Aashu moved to Dubai and take up a new job there. And the long distance relationship was getting longer. But he didn’t like the place and within a year came back and moved to Japan. Now middle East to Far East. This is rarest of rare case when you hate someone, at least you don’t like someone, and never contacted for more than seven long years, suddenly patched up, off course by god’s grace, and going to marry that someone, going to make that someone to your own. It was not so easy to keep such long distance relationship for years. Commitment, compromise, confidence and trust are the four pillars of their relationship even though they could meet only once a year, still they do the same. They met again during their wedding. Yes, finally they got married early 2014 but still they are keeping long distance relationship. Hope in future they will stay together forever. 

So one year passed so quickly and Aashu came again to Durgapur during Puja ’10. The feeling was awesome for both of them. Both were shy and behaved like strangers to each other. They used to meet almost every day during this time www.batj.org Durga Puja 2014

55


Kaleidoscope: New York and Los Angeles - Shoubhik Pal

I

am one of those extremely privileged people to have lived in two cities perceived to be high in the league of best cities in the world for a concerted period of time. New York and Los Angeles are names in the bucket list of many people when asked where they would like to visit once in their lives. While they are both in the same country, it wouldn’t be erroneous to state that these two cities are as different as chalk and cheese. It would explain why they are both on the furthest sides of the East Coast and West Coast, respectively. These are complete opposites not just in terms of structure but also in terms of people.

In the earlier paragraph, I mentioned the word ‘serene’. That is a word you absolutely cannot associate with New York. Everyone in the city seems to be in a hurry. You can see people frantically taking takeout from Starbucks early in the morning for their caffeine fix and run off in a feverish pace to their place of work. The city is in a state of perpetual traffic, with cars blaring their horns almost in the same frequency as you would in India. In Los Angeles, you would have to call a service to get a taxi. Here, if you stand in the side of the road, a vacant cab comes swirling past you slowly asking for confirmation every minute or so. This rush gives New York a feel different from most cities. There is no wonder this city is called ‘The City that Never Sleeps’. It wouldn’t be wrong to say that New York is the city for Type A people, individuals who are engrossed in their work and very focused about their careers.

This is in complete opposites to the people of Los Angeles. Everyone is very relaxed about life, a facet that has a lot to do with the fact that the city is the home of Hollywood, the biggest movie society in the world. The entire state is also known for its start of the hippie movement, which you can see in abundance once you get to places like Venice Beach and Malibu. Like New York is the place for Type A people, it wouldn’t be wrong to say that Los Angeles and all the prominent towns near it attract more Type B people. One of the most vivid experiences of my life was when I saw New York for the first time. My cousin lives in New Jersey and we had taken the train to come and spend a day at the ‘Big Apple’. We raced through the modest and quiet sceneries of New Jersey before a structural marvel was in front of us. The second I stepped on the escalator that took me up to downtown Manhattan from Penn Station, I reassured myself that I had never seen a city more stunning. There were skyscrapers galore, all concentrated as if someone had taken the city and compressed it together. Real estate prices are supposed to be some of the most exorbitant in the world in New York. It isn’t surprising considering there isn’t a yard of idle space in this city.

This was in stark contrast to the first time I saw Los Angeles, a city very close to the undergraduate college I attend. I remember being in the window seat of my flight, watching Los Angeles unfold around me. It was a much bigger city than New York, humongous in its span. It also seemed much less to marvel about, except for the famed Financial District of the city and of course the indomitable Hollywood sign. However, what made it picturesque was that the entire city faced the beautiful Pacific Ocean.

That isn’t to say that there is no moment of respite in New York City. The wealthy suburbs called the Hamptons are a great place to recharge your batteries and get a dip in the water. A great thing about New York City is also the fact that there are many prominent cities near it should you get tired of the hassle of this wonderful city. Cities like Philadelphia, Boston, Baltimore and Washington DC are very close by and could be reached by driving less than half a day.

One factor that New York has over Los Angeles is its level of diversity. Along with the various Middle Eastern food carts that pepper the streets of the city, it also boasts of multiple locations based on culture. There is Little Italy, Chinatown, Little India, Little Havana, even a Little Bulgaria. This gives New York a lot of varied food options, and it wouldn’t be wrong to state that this East Coast hub has better prospects of eating than Los Angeles. Overall, I am very honoured to have been near both cities for a concerted period of time. Both these cities have their own feel and vibe, which adds to their standing of being two of the best places to visit in the world. 

What you have to consider about Los Angeles is that it provides you a package which is ‘So-Cal’ or Southern California. Beautiful beach towns like San Diego and Santa Barbara are around two hours away from the city. One of the freeways to reach California’s other hub, San Francisco, is one of the most picturesque routes in the world. There are beautiful locations to camp and spend some quality serene time with family. California is one of the more prominent states in America and for good reason. Its natural beauty is unparalleled and that gives a certain sense of calm about the place. This translates to its people as well.

56

Anjali

www.batj.org


SMILE - Jayeeta Sen As I walk down the lane of lifeWith the spectral light leading my way, With utmost plead-I pray to god--“Please give me one more day!” One more day to feel the heat— One more day to smile the smiles, One more day to shed the tears— One more day to run million miles!

The million miles that I have passed from the day I had opened my eyes I have seen light beyond the dark nights I have made my smile dominate my cries! I have unmasked the masked— I have masked the unmasked! I have said a simple ‘yes’ to the questions life had asked. I have talked the talks— I have cheered the cheers I have stood up against my darkest fears!

“Then why one day more?” god asks me— “When you have fought through—till the end!” I say, with my choking voice— “Something’s there I need to mend!”

As the dimensions change—from three to two, As I walk down my last mile, I want to end the book of my life.. with peace, courage, and a brave smile.

www.batj.org

A brave smile from the people I love --to make me smile till my last breath --so that I can close my eyes with happiness, when I welcome death. Durga Puja 2014

57


The Nature of Happiness - Udita Ghosh I have a big heart, with resilient walls For all the grief that is mine. But happiness I can’t hold in inside— For the gratification of one, all alone - No, Joy - is a frothy, bubbly drink That flows, grows and spills; It’s a pressure building up Ready to burst out of me. Hold my hand when I weep, But Friend, if you truly are Help me release all this joy Out into our world, Show me how it soars, How to dance in its downpour Be happy with me And double it with your presence— Time to spread the joy of the new, That is realized by few, To the many who cling on to the old, And thrive in its protective fold, Let it all bubble up and out, That optimism shall all over sprout. And, take with me, if you can A bite of this joy, my friend.”

They Play the Trick - Dipankar Dasgupta I loose myself in that beautiful aura Intoxicated by its power, I keep walking The unfolding secrets deepen the mystery No sound, as the eyes do all the talking The tricks they play as they draw me near Pulling the heart strings from down deep They wander about like a gleeful child Am I dreaming or awake in my sleep

Imagination captivated in many a way Charming me with its enchanted gaze Senses are enthralled in its beauty & depth The mind drowning in a kaleidoscope of daze Time and space slowly halting to freeze Holding on in a desperate attempt to beguile It slowly move away like a changing scenery Leaving me a mirage and an attempt in futile 58

Anjali

www.batj.org


Destiny - Soumitra Talukder

When passions of life gets ignited to the lure of its necessity,

Pursue your goal midst the glowing inferno of your wishes, Pick all your breath in a spurt of your profound energy!

Let the calmness of the depth of ocean redeem your faith of eternity, For the deserts of hardship will test your ultimate deed of entity. Stand apart in the rubble of fallen spirits of destitute and envy! Take your courage to a fury for the slay of your enemy,

For devil will not show you any mercy or feel of pity! Scoop your maid of her feet, for the spirit of love knows no boundary, Worry not whether you win or lose the hearts swollen in insolent pride,

The path of yours will stand apart for a few to emulate in respect, Let the body bleed for the free of shackles of ignorance and greed!

Stand upright in the glory of purity; let you be tested in path of your deed Luck or no luck, life will not offer you times of immorality,

Live once for the life’s sake; create your path of your

own destiny!

www.batj.org

Durga Puja 2014

59


ドゥルガ・プジャ 25年目… - チャットパダイ 啓子 ドゥルガ・プジャはベンガル地方の最大の収穫祭・秋祭りです。この祭りは、ドゥル ガ女神の魔神との闘いとそのほか2つの叙事詩にもちなんでおり、インドの人々の観点 からすると根本には善と悪との闘いの結果、善が圧倒的勝利を占めるというヒンドゥー の理念を表すこと、そしてドゥルガ女神は、神々の母であると信仰され、皆の元へ降り てきて天に戻るまでを祝うこと、それと秋は収穫の時期であり、豊作を喜び祝い、来年 のことをお願いする大事な祭りです。女神の夫はシヴァ神であり、ショロッショティとロッ キーは娘たち、象の顔のガネーシャとカルティクは息子たちです。 などなど詳細は皆様のほうがよくお分かりかと思います。 1990年9月28日、インド人、日本人、いろい ろな人たちからシウリボーディと慕われ、今はア メリカへ行ってしまわれた、シウリ・ダスグプタさ んの提案により、嶺町ホールで1回目のドゥル ガ・プジャが催されました。 夫は、プジャの儀式を祭ることができ、それ までも毎年2月頃に催しているショロッショティ・ プジャの祭事を進める僧侶をしていました。そ のためドゥルガ・プジャの祭事も引き受けること となり、儀式の詳細をお義母様が書いてください ました。お義父様からの許しを得てから、プジャまでの日々、緊張し、集中し、間違い を起こさぬようにと細心の注意、心配りをしていた夫。ドゥルガ女神に対する知識もなく 信仰心の薄い私は“そんなに大変なことなの?”と他人事として彼を見ていました。

初め、小規模な知り合い同士の内輪の会で始まりました。みなさんのお顔やお名前がわかりました。プジャの儀式やそのあとの催 し物の間、ゆったりと時が過ぎていたように思います。写真をと思い、探してみました。25年分の写真を全部は載せることはできませ んが、初めてのドゥルガ・プジャ当日の写真から1999年ごろのものを少しのせます。

懐かしいこと。 今は、当時よりかなり大きな会となり、いろいろな方々がおいでくださいます。 私は1989年11月に小さな命を授かり、25年目となるドゥルガ・プジャは、今年25歳となる息子の 成長と重なりあっています。 うちのむすこ…ちっちゃい。アルバムを眺めていると、ちょろちょろ息子の面倒を見て、いっしょ に遊んでいた子供達のことが思い浮かんできます。25年間、少しずつ人々が入れ替わり、子供た ちも成長し旅立っていきました。インドの歌やダンス、楽器演奏、朗読や劇など、皆でいろいろ披 露していました。お姉さんお兄さんたちが演じることで小さい子たちも大きくなると自然にいろいろ 60

Anjali

www.batj.org


ドゥルガ・プジャ 25年目… なことを皆の前で披露していきます。身体の中に溶け込んでいるインドの文化、流れているリ ズムの素晴らしいこと。日本では戦後の教育改革で、日本古来の文化、音楽をほとんど締め 出してきました。最近いろいろ日本文 化を大事にと回帰しているようです が…。子供達、その家族、ボランティ アの方々との交流はとても楽しい思 い出となっています。一年に一度のこ とですが、出会った方々からいろい ろと教えをうけ、いろいろな考え方、 人生があると教えられました。子供た ちの演目のほかに、日本在住のイン ドの方や日本人のプロの方たちに加 え、インドから来日されたプロのグル ープの演目も加わり、狭い舞台で申し訳ないのですが、小ささを感じさせないほどの迫力で 皆さん演じてくださっていましたが、ここ何年かさすがに狭さを感じるようになっていました。 昨年のドゥルガ・プジャ は幸いにも今までで一番 大きな会場、大きな舞台 で催されました。 ネットアドレスBATJを 検索してみてください。 アクセスしていただけれ ば、2003年ごろからの活 動を見ていただけると思い ます。 今年、夫は喪に服しているため、僧侶として儀式を行えません。 神への信仰…。夫には、生まれたときから、意識することなく、空気のように、彼の中に神が存在しています。タゴールの詩が、血 のように身体に流れているがごとく…。信仰と神話、長い歴史に培われている深い思い、文化。秩序、規律を重んじますが、型には まることなく、なにごともうけいれていく…ある意味何でもあり。彼は私に信仰を強いることなく、互いの意思を尊重してくれました。 人々も会の在り方も、これからも、変わっていくことでしょう。 日本在住のインド・ベンガル地方の方々も、だんだん減っており、準備から片付けまでのボランティアの年齢も上がり、不備な点も 多々あること存じますが、インド的なおおらかな、何事も受け入れる心で、これからもお付き合いくださいませ。皆様のご協力に感謝 いたします。 

www.batj.org

Durga Puja 2014

61


Durga Puja 25周年を祝して - 神戸朋子 在日ベンガル協会主催のDurga puja が、25周年を迎えられたことに、心より敬意を表します。 この催しが、印日文化交流に、多大な貢献をされていることを確信している。 現代世界は、民族・宗教・思想・文化などの相違から、内戦が絶えることなく続いている。さらに権力闘争と商業的貪欲が蔓延り、 物質的な豊かさを求めて、精神的な側面は等閑にされている。そのため人間の憎悪や欲望が、内乱や環境破壊をもたらし、貴い人 命が失われ続けている。 この世界の流れを変えられるのは、古代インドの思想であり、「永遠なるもの」を希求し、精神に重きを置くインドの文化と宗教だと 思われるからである。 今や日本は、精神的な支柱と方向性見失い、「永遠なるもの」という概念をも失って、漂流しているが、インドには、それが知性、精 神の根底に脈々と流れていることを感じさせられる。精神性・霊性・神を信ずるインドの文化に触れることによって、日本人は啓発さ れ、舵を取ることができるだろう。 インドの宗教や哲学、そしてラーマクリシュナ、ヴィヴぇカーなんだ、ガンジー、タゴール.....と偉大な預言者の思想に触れるこ とで、新たな局面が開かれることだろう。 悠久の精神文化を持ったインドに、今や学ぶときであると思う。 世界中に 高らかに 歓びの歌が 鳴り響いている 何時 その歌は麗しい調べで 心の中に 奏でられるのだろう 風 水 空 光 何時 皆を 私は褒め称えるのだろう それらは 心の庭に集い 多彩な装いで飾るだろう 両の眼を 見開いて 何時 生命は歓びに充たされ、 道を辿り行く時 皆を 喜ばせながら行くのだろう あなたが在す(います) ということが 何時 人生の中で明らかになるのだろうー。 あなたの御名が自ら 何時あらゆる業に鳴り響くのだろう

このタゴールの詩のように、この世界に満ちている歓喜の歌が、「永遠なるもの」から賜っているものであることに目醒めたら、地球 破壊も尊い生命も失われることはないであろう。 このように精神文明への覚醒を促しているインドの文化と宗教は、今や全世界に述べ伝えられるべきメッセージを秘めていると思 う。 感謝をこめて 完

62

Anjali

www.batj.org


ニランジャナスクールの子供たち - 三橋裕子 仕事が休みの日に、いつもなら見ることのない時間帯のテレ ビ番組を見ていました。

償で提供している教育機関なので、スクールバスを購入する 費用がありません。

『教育が未来を切り拓く』をテーマに、インドのビハール州ブッ ダガヤの映像が流れて、家事の手をとめて、画面に目がくぎ付 けになりました。

番組ではスクールバス購入への寄付の呼びかけもありました。

3年前にマハラジと協会の皆様と訪れた場所です。 路上には観光客目当てに物を乞う子供たちの姿がありまし た。 番組ではスジャータ村に建てられた学校のことを取り上げて おり、ビハール州周辺の17の村々から貧しい家庭の子供たちが 徒歩で、中には裸足で通学する子もいました。 往復3時間かけて歩いてくる小さな子もいました。 ほとんどの子が制服を着用しており、インドでは制服で通学 するのが当たり前であって、子供たちが誇りを持って通学できる ようにとの思いから、制服を無償で貸し出しをしていると伝えて いました。「教育は人間性を高めてくれて、幸せをもたらしてくれ る」と理事長のパタック氏が話されていました。 もともとビハール州はインドでも貧しいほうの州であると紹介さ れていて、学校と教師の数が足りておらず、たくさんの子供たち が学校に通えない状況で、そのなかでも特にこの地域の農村地 帯では、半数以上の子供が学校に通えないという現実を伝えて いました。 ニランジャナスクールは幼稚園児から中学生までの9年間の 教育を無償で提供しており、生活が苦しい地域でありながら、生 徒は年々増えているそうです。 授業の前には全校生徒が外に集まり、皆で世界中の人たち の平和と幸せを祈ります。その後7:30から授業が始まり、1日7 時限、1コマ40分授業で授業の間に休憩はなく、教室には明か りもありません。 園児のクラスでは英語と掛け算の算数をならっていました。 子供たちの目がキラキラ輝いていて、どの子も勉強が楽しい、 学校が大好きと言っていました。 ニランジャナスクールを立ち上げたシッダルタ・クマル氏は、こ のスジャータ村で生まれ、家庭が貧しくて学校に通えず、幼いこ ろは街で児童労働をしてきたそうです。学ぶことで子供たちの可 能性は広がります。「私は教育を子供に与えたい、そして彼らが 成長して、次の世代にいろいろなことを教えてほしい…」貧困か ら抜け出すには教育が必要不可欠だと17年前に故郷に学校を 設立されました。 シッダルタ・クマル氏は現在 大阪でインドレストラン『Shama』 を経営されています。 店の片隅には、学校への「募金箱」が置かれています。 ニランジャナスクールがある周辺の気候は、夏の気温が50度 以上という過酷な猛暑になることもあり、通学中に熱中症で倒れ る子供が続出していました。ただでさえ栄養失調の子供たちが 多いので、授業中に貧血で倒れてしまう子供もいるとのこと。 雨季には豪雨により場所によっては通学路が河のようになっ てしまいます。 傘もなく、子供たちにとっては通学がより厳しくなります。 バスがあれば、まだ入学していない遠方の子供たちも通学で きるようになります。 通学時にさまざまな問題を抱える子供たちが安全に通う ためには、学校専用のスクールバスが必要ですが、ニランジ ャナスクールは経済的困難な子供たちが勉強できるよう、無

www.batj.org

日本は義務教育なので、当たり前のように学校に通えます。 インドでは、たとえ学校に入学できたとしても卒業まで通える 子供ばかりではないと伝えていました。 雨季になれば道がなくなり通えない子がいて、そのため授業 についていけなかったり、家庭の事情で家事をしなくてはいけな い、子供が仕事をしないと生活がなりたたなくなるなど、インドと 日本では子供たちの置かれた環境が違います。 日本の義務教育で守られた私たちには、想像が出来ないよう な現実でした。 その中で印象深かったのが、子供たちの笑顔と集中力でし た。 勉強して、お医者さんになりたい 学校の先生になりたい 大学に進学したい エンジニアになって家族をささえたい インタビューに答えてくれたアビシュ君は、家では自分一人の ために電気は使えないので、暗くなる前に毎日2~3時間勉強 すると言っていました。 では日本の同じ年頃の子供たちはどうか?というと、いろんな 子供がいて一概に語っては失礼だと思いますが、多くの一般的 な子供は学ぶことへの意欲はうすく、人間関係の問題が濃くて ストレス過多です。友だちからの『いじめ』があったり、『引きこも り』であったり、携帯電話依存など様々です。 最近では日本でも異常気象のような猛暑や豪雨、竜巻の発 生、雪国では豪雪などありますが、義務教育なので学校に何日 も通えないということはありません。 私は子供やご高齢の方と接する仕事をしています。 育児をしてきたなかで、自分が子供だった時と今とを比べる と、物の消費がまず違います。 日本の子供たちは欲しいものがあれば、買ってくれる親や祖 父母の存在があり、店やコンビニなど子供が買いに行ける場所 が身近にあります。不景気とはいっても、多くの日本の子供は『 みんながもっている』物、たとえばゲームや携帯電話を持つこと は可能だし、洋服も流行があり、まだ着られる服を処分します。 物をなくしても探すことをせずに新しく買い換えたりします。大切 に使うことは希薄になり、消費することが普通になっているように も思えます。日本ではどの子も教育が受けられるのが当たり前 になりすぎていて、テレビで見たインドの子供たちのようなキラ キラした目を持つ子は、私の周りでは、あまりみかけなくなりまし た。 ハイレベルな授業を無償で受けることができ、学校運営や施 設の維持はすべて寄付金で賄うということ。 誰かのために自分にできることは何か、日本ではあまり見られ ない、素敵な行為だと思いました。今年の五月にスクールバス 購入費用の目標100万円は達成されたそうですが、ひとりでも 多くの子供たちを乗せることができるよう、より大きなバスを購入 するために支援の継続をお願いしていました。 寄付金という形で、私たち日本人もささやかながら参加するこ とができます。 当たり前の日常に感謝するとともに、子供たちの素敵な笑顔と 純粋さが心に残りました。 

Durga Puja 2014

63


タンプーラとともに・・・ - 奥田由香

By the late Mr.Sherap Gyaltsen

『ドゥルガ・プジャ』25周年おめでとうございます。編集部の方々始め皆さまに心よりお慶び申し上げます。記念す べき今号に投稿する機会をいただき感謝いたします。 時の感覚というのは不思議なものですね。たとえば25年という歳月を振り返る時、人の心には、いったい何が浮かん でくるのでしょう。刻む一拍一拍は測れるものなのでしょうか、遥かなる時空をフリーハンドで描いた稜線の上に、手を 伸ばせば届きそうで届かない自分がいる。記憶の網目からこぼれ落ちていったたくさんの欠片たちは、何処か遠く流れて 行ってしまったのでしょうか、ほんの一瞬煌めいた光の粒のささやかな集まりの影で、きっとこの自分にいのちを与え続 けている、そんな風に思うのかもしれません。 私はそもそも、タゴールの歌を原語のベンガル語で歌いその心に触れたいという一点から歩き出し、シャンティニケ タンを目指しました。見えない何か大きな力によって多くの師と友に引き寄せられて参りました。歌にタゴールがこめた 思い、祈りを手繰り寄せ、胸の奥深くしずませて、静かに刻を待つ―心の糸に染料を含ませてゆくように。そこに私の真 色がなければ歌ではないと、師の声は時に遥かなる光であり、また時に留まることを許さぬ風となって心を揺らすので す。そしてその音の探求に、忍耐と誠実さでもって私を伴奏(走)する一台の楽器―タンプーラの存在は切り離せませ ん。 タンプーラという弦楽器は、ただひたすらに音程を司るという役目を担うために生まれ、シタールやサロード、エス ラージといった他の弦楽器の様にメロディーを奏でる自由はありません。けれど、その自由はタンプーラの忠実な働きな しにはあり得ないという、なんとひた向きなことでしょう。たった四弦のその響きで宇宙を編む。その音は、お香の揺ら ぎのように空気に溶けいり、地上の祈りを天へと運ぶかのよう。それ故に、タンプーラの弦をしっかりと調律することが 如何に大切なことか、折に触れタゴールは人生になぞらえて諭すのです。つまり、人は誰しも人生を奏でる音楽家なのだ とすると、心と宇宙を結ぶ一音を発する、永遠の瞬間を求めてゆかなければならない、ということでしょう。 インド音楽では、基本7音階の音と音の間に、更に繊細な音階(スルティ)を捉え、オクターブを22音階とします。 其々の音には哲学的な意味があり、その微妙な音に専心し耳を研ぎ澄ますために感性の習練が必要であることから、音楽 は修行のひとつと考えられているのです。 夕闇に灯された一本の蝋燭を前に、ひとつの音を求める―それは遠い稜線上の記憶として留まることなく、一音一生 という私の中の閃光となり、タンプーラの音に響き続けているのです。この世界を、もっともっと耳を済ませ見るよう に、もっともっと目を凝らし聴くようにと。そして、心の弦を張り、尽きることのないオンジョリを捧げるようにと。

64

Anjali

www.batj.org


タンプーラとともに・・・

জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ

~ジョゴテ・アノンド・ジョッゲ~

R.Tagore この世の 喜びの祭典へ招かれましたこと 人として 生を授かり 有難き喜び しみじみと この目は 形づくられた世界をなぞり この耳は 深い音色に溶けてゆきました この祭典で 笛を吹くようにと、あなたは 望み 命の喜び 悲しみを 歌に編んできました 「時」が 私にささやくのです 世に集い あなたに まみえる時を知るようにと 私の願いは ただひとつ この喜びの音を あなたに 届けること 訳:奥田由香

By Ms. Moe Okuda

www.batj.org

Durga Puja 2014

65


アルナーチャラへの旅~ シュリー・ラマナ・マハルシの生誕祭へ - 新田ゆう子 「インドは広い」、ということが今更ながらのようにわかったの は、この「アンジャリ」の編集 をしているミータさんと話をしてい て、彼女が聖者シュリー・ラマナ・マハルシのことや、そのアシュ ラムがあるティルヴァンナーマライや聖山アルナーチャラを知ら なかったからです。ベンガル州の人たちはシュリー・ラーマクリシ ュナを知らない人はいないように、タミールナドゥ州に行くとラマ ナ・マハルシを知らない人はいません。しかし、ラマナ・マハル シは弟子を持たず、アシュラムを組織化することがなかったため に、「シュリー・ラマナ・アシュラム」は南インドのティルヴァンナー マライにしかなく、知らないインド人がいてもおかしくないのでし ょう。そこで、シュリー・ラマナ・マハルシの聖地を旅した時のこと を書くことにしました。 旅は2012年の年末、あと10日もすると大晦日~新年という 時期でした。12月29日は ラマナ・マハルシの生誕祭にあたり、 アシュラムで祝賀会が行われるため、それに参加することが ツ アーの最大目的でした。添乗員さんを含む参加者は12名ほど で、半数ほどの方たちはラマナ・マハルシを信奉し、何度もアシ ュラムに行ったことがあり、残りの人々はアシュラムまたはインド へ行くことが初めてです。成田空港を出発したのは正午過ぎで したが、南インドに行くのはなかなか長い航路で大変なことでし た。20代の時に、1ヵ月ほどもかけて汽車で行ったチェンナイ( 当 時はマドラスと言った)へ、今回は飛行機だから簡単だろうと 思っていました。しかし、スリランカのコンボ空港に乗り換えのた めに到着したのが深夜12時頃です。それから1~2時間待ち、 飛行機を乗り換え、チャンナイ市内のホテルに着いたのは朝4 時過ぎ。 少し休んでから、チェンナイ市内観光は全くでせず、夕方発 の国内線でマドゥライへ向かいまし た。チェンナイ空港に向かう 途中のレストランで食べたマサラ・ドーサはそれまで見たこともな い 大きなもので、とても美味しいものでした。時間がないため、 添乗員さんが頼んで全員が強制的にマサラ・ドーサを食べまし たが、誰も意義を唱えず夢中で食べました。 マドゥライには、魚の目を持つ女神(魚は眠る時も目を閉じな い)ミナークシを祀ってある、南 インドでは一番大きく有名な寺 院があります。ここマドゥライも20代の時に訪れましたが、そのミ ナークシ寺院に巡礼に来る人のための宿泊所があるくらいの静 かな町で、懐かしさに胸をときめかしていたのに、空港からホテ ルへ向かう車の中でその思いは見事に打ち砕かれました。すご い 数の車と建物、そして人!! のんびり歩くことなど出来ない ほどの賑わいに、インドの繁栄と時間の経過を、ヒシと感じたの でした。 一泊して翌日は、マドゥライ市内のホテルからミニバス(ツアー ですから)で、ラマナ・マハル シの生家があるティル・チュリへ、 数時間かけて行きました。段々と田園風景になっていき、ラマ ナ・マハルシの生まれた家の近くにバスは停車。歩くとすぐに生 家なのですが、以前来たことがあ る何人かの人がその変わり果 てた様に驚き、やや怒ったのです。なぜなら生家は取り壊され、 記念 館のようにきれいに建替えられていたからです。「ラマナ・ マハルシの伝記」という本の中に、生 家の写真があり、それを見 てきた私もびっくりしました。平屋の小さな木造家屋は、2階建て のカ ラフルに塗られた小さなビルのようになっています。中のホ ールにはラマナ・マハルシや両親の大 きな写真が飾られてい ます。その隣の小さな部屋の祭壇に一人ずつお参りして、ここ を管理してい るプリーストから聖灰をいただきました。祭壇のラ マナの写真の微笑みを見て、きらびやかな建物 に違和感を覚 えていた気持ちは静まっていきました。その後、2階の部屋で休 み、ホテルで用意し て貰ったお弁当を食べました。

ミナークシ寺院を見学に出掛けました。マハルシの叔父さんの 家は、「ラマナ・マンディラム」と言い、私たちツアー参加者にとっ てはとても重要な場所なのです。 決して大きくはないこの普通 の家で、ラマナ・マハルシ(ベンカタラーマンという名前でした) は 高校生の時に突然サマーディを体験します。父の死のため に一家は離散し、叔父の家に預けられて学校生活を送ってい た普通の少年だったマハルシは、高校生のある日、2階の小さ な部屋で急に仮 死状態を体験します。しかし、誰も助けを呼ん だりはせず、その体験を観察し始めることによって、『自分の存 在は体ではなく意識であること、肉体は死によって滅びても存 在はなくならない』ということを悟ります。 その部屋に立って、ラマナ・マンディラムの管理をするひとか ら説明を聞くと、マハルシは確か に死んではいない、という感じ がしました。実は、この部屋で自分も横たわってみたかったので すが、ツアーの全員が立つともう空間がないほどの小さな部屋 なので、諦めざるを得ませんでした。 一方、隣の部屋は誰もが 自由に瞑想をすることが出来、沢山の人が座っていました。勿 論、私たちも…。しかし、蚊の多さには閉口しました。すぐに集 中が出来なくなります。「蚊ぐらいなんです か…」と、瞑想につ いて語る、「ラマナ・マハルシとの対話」のラマナの言葉を帰国 後に読んで、苦笑しました。マンディラムをあとにする時、入り口 にいつもマハルシが座ってミナークシ寺院を眺めていたという逸 話を思い出し、何を考えていたのかしら? と後ろ髪を引かれる 思いでした。 外はもう暗く、それからミナークシ寺院の見学をし てホテルへ帰りました。 翌日はいよいよ、ラマナ・アシュラムへ向うための一日バスツ アーです。午後3時頃、アラヤニ ナルール寺院に着きました。こ こは、アルナーチャラに向かうためマハルシが叔父の家を出奔 し、最初に辿り着いたティルコイルールにある寺院で、物理的で はない光(ジョーティ)を見た場所です。また、日本にラマナ・マ ハルシを紹介した柳田侃氏が再興させたことで有名でもありま す。お参りをした後に、プラサードをいただき一休みしました。ラ マナ・アシュラムの近くに住む日本人女性Aさんも合流して、私 たち一行を歓迎してくれました。 そこからは2時間ほどで、ラマナ・アシュラムでした。柳田侃氏 の残された『初めてアルナーチ ャラを見た時のことは、誰もが忘 れることはないだろう』という言葉があるのですが、まさにその 通 りでした。バスが市街地域に入ると、遠くに異形のシルエットが 浮かびあがっていました。もう夕暮れで、聖なる山は薄暗くなっ た空に貼り付いているように、私には見えました。それが、シヴァ 神のハートだとラマナが言った、アルナーチャラ! 目はその山 に釘付けになり、どんな感嘆詞 も出てきませんでした。唯、『こ の世には、ひれ伏すしかない、その前では沈黙するしかない、 存在がある』と知ったのです。 生誕祭を控え、アシュラムの中にあるゲストハウスは満員で、 私どものツアーは二組に分かれ、 近くのゲストハウスに泊まりま した。どちらも普通の住宅で、ゲストハウスとして使用していて、 ラマナ・アシュラムから歩いて5分くらいの所にあります。 到着から一夜明けて、朝食の後、皆でアルナーチャラに登り ました。それほど高い山ではなく、 すぐ頂上まで行くことが出来 ます。ここには、ラマナ・マハルシが修行をしていた、ヴィルーバ ー クシャ・ケーブとスカンダ・アシュラムの二つの洞窟がありま す。その中で、皆で瞑想をしました。 音がないような、静かな気 持ちになる場所で、どの位時間が経ったのかもわからなくなりま した。 山頂からは、午後参拝することになる、アルナーチャレー シュワラ寺院を眺めることが出来ます。

ホテルに戻って夕方からは、ミナークシ寺院のすぐ近くにある しかし、こんな聖なる山なのに、追はぎが出るというのです。 ラマナ・マハルシが一時暮らしていたラマナの叔父さんの家と、 66 www.batj.org Anjali


アルナーチャラへの旅~ 女性だけで登ってはダメ、男性も 一人で登ってはダメ、と添乗 員さんから注意を受けました。添乗員さんも熱烈なラマナの信 奉者で、ご自身が提示した集合時刻に、瞑想に没頭するあま り、自分一人だけ遅れてきたほどです。 午後は、アルナーチャ レーシュワラ寺院にオートリキシャで参拝に行きました。この寺 院は、マハルシが叔父の家を出奔し、アルナーチャラ駅に到着 してすぐに向かった場所です。世俗的な持ち物と衣類を捨て、 半年近くサマーディに没頭した寺院です。インド各地から巡礼 にやって来た人々 で溢れかえる中、ゆっくり立ち止まることは許 されず、院内を順路に沿って歩き参拝しました。巡礼の一団は 皆同じ色のサリーや衣服を着ているので、すぐにわかりました。 巡礼団は私たちを見ると、嬉しそうに笑います。あちらから見る と、私たちも巡礼団に見えたのかもしれません。 ティルヴァンナーマライに着いて三日目は満月で、夜になると 「ギリプラ・ダクシナ」という歩 行瞑想行を行いました。満月でな くとも、在住の方は度々される修行です。満月に加えマハルシ の 生誕祭を控えて、街やアシュラムに人が増えていたため、私 たち一行は21時出発予定を変更し、 明けて深夜2時にラマナ・ アシュラムの正門の前を出発しました。歩く道は舗装されていて 「ギリ プラ・ロード」と言い、アルナーチャラの周囲13キロメートル を右廻りに一周歩くのです。裸足 が良いと聞いていたので、時 々裸足になりました。しかし、普段靴に保護されている足裏は、 舗装 道路でもしばらく歩くと痛くなります。それから、南インドは 女神信仰が強く、このギリプラ・ダ クシナの時は、自分の右側は 女神さまが歩くために開けておくようにと、添乗員さんの作って くれた旅のパンフレットに書かれていました。道端には所々、茶 店やマントラのCDを売る店が出店し ていて、歩き始めて2時間 ほどして飲んだチャイがとても美味しかったのは言うまでもありま せ ん。この行は、本当はマウナ(沈黙)で行うのですが、主にラ マナの信奉者たちとは言うものの団 体旅行ですから、喋りなが ら歩いてしまいました。一人で歩いたら大変な行だろうと思いま した。 出発して3時間余の5時40分、誰も脱落せずにラマナ・ア シュラムの正門前に帰着。全員で記念 写真を撮りました。皆、 素敵な笑顔です。前日にアルナーチャラから下山する時、すべ って挫いた 足が全く痛くならなかったのが、不思議でした。 この後、ゲストハウスに帰って休みましたが、元気な方はアル ナーチャラに登りました。まだ休 憩をとっていた私は、ゲストハウ スを訪ねてらしたティルヴァンナーマライ在住の日本女性Aさん と話をする機会を得ました。既に肉体への執着を放棄されてい るとしか思えない話と、別れ際に「またいらしてね」と手を握って 下さった笑顔を、今も忘れることが出来ません。山へ行った人た ちが帰ってくると、一緒にお土産を買いに行き、それから南イン ド名物のミルクコーヒーを飲みに喫茶店へ入りました。小さなス テンレスのコップ2つを両手に持ち、高く持った一方のカップか

www.batj.org

ら、低い位置に持ったもう一つのカップへコーヒーを移していく その技は素晴らしく、その撹拌具合で美味しくなるようです。南 でしか見られない光景。そして夜、ラマナの生誕祭前夜祭がオ ーディトリアムで行われ、インドでも有名なコーラスグループがラ マナを祝福する歌を沢山披露しました。日本ではこういった催し は考えられないことで す。悟りを開いた聖者の生誕祭を祝うた めに大々的な催しをするとしても、もっと内輪なものでは ないで しょうか。また、アシュラムの大ホールに置かれているラマナ・マ ハルシの像は故インディ ラ・ガンジー首相が寄贈したものです。 この下にはマハルシの遺体が安置されていますが、マハル シ がインドでいかにポピュラーな存在だったかがわかります。 いよいよ午後にはティルヴァンナーマライを発つという旅程の 最終日は、ラマナ・マハルシの生 誕祭(ジャヤンティ)なのです が、このような慌ただしいスケジュールになったのは、参加した 人の大半が主婦で、大晦日までには自宅に帰りたいためです。 朝4時には、全員が正装してゲストハウスを出発し、アシュラ ムへ。女性は正装用のサリーかパ ンジャビドレス、男性も白いド ーティ姿です。しかし、アシュラムは既にどこも、人、人、人…。 そして、この日まで連日快晴だったのに、アシュラムの門をくぐる と、起きた時は曇天だった空からいきなり滝のような雨が降って きたのです!! 12月に南インドで雨が降ることはまずあり得な いことなのに…。わたしには、ラマナ・マハルシが臨在を知らせ てくれたように思えました。 「偉大な聖者の生誕祭には、他の聖者が姿を変えてお祝い に来る」と、ツアーの中の女性が話すのを聞き、なんとも言えな い気持ちになって、いつの間にか涙が出てきたと思うと、子供の ように泣きじゃくってしまいました。 生誕祭の儀式は大ホールで行われましたが、満員で中には 入れず、柵の外から見ました。長い時間をかけたプージャで、 大きな花輪で飾られたマハルシの像は美しいものでした。でも、 ラマナが 生きている間に始まった生誕祭を、ラマナ自身は喜ば なかったそうです。 『少なくとも誕生日には、自分がこの生と死の輪廻の世界(サ ンサーラ)に現れたことを嘆き悲しむべきである』~これは「ラマ ナ・マハルシの伝記」の中にある、ラマナの言葉です。 私たち一行がバスに乗ってラマナ・アシュラムの前を発つ頃 には、不思議なことに前日のよう に空は快晴になっていました。 バスは動き出し、明るい日の中に見る異形のしかし美しい姿、ア ルナーチャラ!! と別れを惜しんでいたのに、いつの間にかわ たしの目は眠さのために閉じ、再び 開いた時には、その姿はも うどこにも見えなくなっていました。 ~了~

Durga Puja 2014

67


世界遺産 アジャンタ、エローラ - 羽成千亜希 2013年末、3度目のインドへ行きました。ムンバイ~ロナウラ~アウランガーバード。 11日間。ヨーガ、世界遺産と満喫しました。 有名な世界遺産、アジャンタ、エローラ。いつか行ってみたいと、思っていた場所だったので、 とても楽しみでした。 その前に、ロナウラに滞在し、車でも移動。目の前に広がるデカン高原。 昔、地図で「デカン高原」という文字をみていた場所を今、自分は通っている。テーブルマウンテンと、ガイドの解説を聞きました。 まさに台形の山々は、広大に続いているようで、険しくなく、平坦な山の景色が続く。日本ではみられないと思い、ずっとぼんやり車 窓より眺めていました。険しさはなく、広大な広がりを感じ、国土の広いインドだからこそ感じ られる、奥行きや広がりは、日本人には珍しい景色でし ょう。

エローラ石窟群 古代インドに栄えた3大宗教が、巨大岩盤に綿々とほ り出された石窟寺院。一つの岩から掘り出された彫像物 としては、世界最大の寺院堂塔600年代~1000年代 にかけてそれぞれ100年以上にも及ぶ長い歳月を費や して造られた。石窟群は、34窟。仏教、ヒンドゥー教、ジ ャイ ナ教の石窟寺院がある。(インクレディブル・インディ ア/インド政府観光局 より抜粋) 各宗教の特色で、全く違うタイプの石窟。仏教は、静 かな空間であり、ヒンドゥー教はとてもエネルギーのある 彫刻物の数々で、ジャイナ教はとてもシンプルで 控えめな印象でした。 この3つの宗教の特色を 視覚的に見て、感じられるのは、非常に面白か ったです。 それぞれの特長から感じるヴァイブレ ーションは、まったく違うものでした。

人間の手によって造られたもの。彫刻、建築、どれも見事で、その時代の信 仰心の強さも感じずにはいられませんでした。とくにヒンドゥー教のカイラーサ神 々の殿堂は、緻密な彫刻ですばらしかったです。こういった歴史あるものから感 じることは、言葉を越えた印象でした。当時、この石窟群の中で、修行や寝泊ま りをしていた僧侶がいたわけで、その当時の場所を今も見て、辿ることができる のは大変貴重な機会でした。

68

Anjali

www.batj.org


世界遺産 アジャンタ、エローラ

アジャンタ石窟群 時代はエローラよりさかのぼり、紀元前200~紀元前650年頃と言われている。 古代イン ド第一級の仏教遺産。ワーグラー川に沿って岸を馬蹄形に取り囲む断崖の切り立った岩壁 に石窟が掘られている。1819年、虎刈りをしていたイギリス騎兵隊の若い士官に偶然発見さ れ、千年あまりの眠りから醒めて再び見事な姿を現しました。未完成群を含めて29群。規模、 美術的価値高く、特に壁画は現存する古代インド絵画の最高傑作と言われている。 (インクレディブル・インディア/インド政府観 光局 より抜粋) アジャンタは、エローラよりさらに規模が広く、 山肌を削り、崖に掘っていったことが、その場か らありありとわかりました。エローラは、前から。ア ジャンタは上から掘っていったという説明に気の 遠くなる思いがしましたが、本当に人間の力って すごい!と改めて思いました。私たち、日本人に は、仏教のほうがなじみありしっくりくるところがあ ります。でも歴史の中での仏教の発展の形の違 いを見る事ができました。

初期仏教では簡素で、より厳格な教義に従い、仏陀自身の像や絵画は制作される事がなかったそうで、仏足石、法輪などによっ て象徴されているようだ。 大乗仏教期は、美しい壁画や幾何学、花模様の天井や仏陀誕生にまつわる絵も描かれている。 (ロンリープラネットより抜粋)

仏陀ではない像(ストゥーパ)を拝む、仏陀を拝む。その違いが石窟群により、明らか に違った。そして、1番見たかったのは、仏陀の涅槃像。(reclining Buddha) 横になっ てらっしゃる姿に感動~。大きかったです。

年末で大変こんでいましたが、天気もよく充実した観光でした。これらの宗教背景をもう少し学んでみられたら、もっと面白かっただ ろうにと思いましたが、ヨーガを通して、ヒンドゥー教、仏教はつながりが深く、これからもっと学び続けていきたいです。

インドの歴史にふれることは、人間の歴史に触れることでもあるので、こういった貴重なものは、今後も大切に引き継がれ、残ってい ってほしいと思います。 人間は、体、心、環境、文化、歴史も一体となって形成されていると考えられるので、 物質だけでない、感覚や、心に響くものをみ て、触れて、感じて、研ぎすましてゆきたいです。

そして、毎回インドの地に降り立つと感じることは、広大であたたかであるこ とを、土地、人から感じます。その空気を吸うと元気が出ます。次に行きたいの は・・・。 

www.batj.org

Durga Puja 2014

69


東京、ムンバイ、バンクーバー - 辻 しのぶ デスクの電話が鳴ったのは、夜7時半を過ぎた頃だった。表示された発信番号をちらりと確認してから、電話を取る。 「Can I speak to Yuki-san ? 」 「Yes, Speaking.」 とっさに答えながら、発信番号は国内なのになぜ英語かと戸惑っていると、電話の向こうのテンションが上がった。 「Oh, Yuki-san. I’m Anup !」 システム関連のサポート業務を委託している会社が、インドのムンバイにある。アヌープは、遥か遠くから私の業務サポートをしてく れる現地のスタッフだ。しかし、たしか昨年末に他の会社の担当になったはず。 「今、東京だよ。驚いた? これからご飯でも食べません か?」 アヌープは、にこにこしながら待ち合わせ場所に現れた。 今度の担当も日本企業、しかも住宅も用意してもらえたか ら、今は東京で仕事をしているのだとアヌープは言った。ここ は浜松町のインド料理店。アヌープの行きつけらしい。 「東京は、どう?」お勧めのバターチキンカレーを食べなが ら、私は質問を投げかける。 「街が清潔だね。それにインド料理店もたくさんある」 「街には牛がいないけど」 私の言葉に、アヌープは声を出して笑った。 アヌープがまだムンバイにいた頃、すでに帰宅した彼を捕ま えようと携帯に電話をしたことがある。 「大丈夫、すぐオフィスに戻るから」と叫ぶアヌープの声の向こうで、激しい車のクラクションの合間にのんきな牛の鳴き声が混じっ て聞こえ、驚いたことを思い出した。 と、アヌープの携帯がけたたましく鳴った。画面を確認し「カナダからだ」と言うとこちらにウィンクをして、私にはわからない言葉で 話し始めた。 「来月に彼女が東京に遊びに来るんだ」 アヌープのガールフレンドはバンクーバーで働いているのだと、以前業務の合間にチャットで教えてくれたことがある。 「そう。東京のどこに連れて行ってあげるの?」 「東京タワー」間髪をいれずにアヌープが答える。ムンバイにない、メトロに乗って東京タワーを見に行くん だ。 そう話すアヌープの後ろにライトアップされた東京タワーがちらり、と見えた。 「ねえ、写真撮ってあげる」携帯のカメラを向けると、アヌープがポーズを取る。肩の上にタワーが乗るよう に、シャッターを押した。あとで、メールで送ってあげよう。もしかしたらこの写真を、遠くにいる彼女に送っ たりするのだろうか。 アヌープの彼女が東京を気にいってくれるといいなと思いながら、私はナンを口に放り込んだ。 

70

Anjali

www.batj.org


不思議な油、ギーって何? - 小沢泰久 バターは皆さんご存知ですね。ではギーは知っていますか?インド関係の皆さんならだれでも知っているでしょうが、純粋な日本 人は知らないのです。日本ではスーパーマーケットに行ってもギーは今のところ販売されていません。 バターは乳脂肪、乳蛋白、乳糖と水分からできていますが、このバターを加熱して溶解しますと、乳蛋白、糖分が固まり浮上した り沈下したりします。水分を完全に蒸発させ、固化した部分を取り除きますと、ギーの出来上がりです。99%以上の乳脂肪です。つま り、ギーとは純粋な乳脂肪なのです。 ミルクから遠心分離法などの機械的な製法で乳脂肪を分離し、純粋な乳脂肪を作り出すことも可能です。現在このような製法で 大量にバターオイル(純粋な乳脂肪)が作られ日本に輸入されています。このバターオイルに脱脂粉乳水分などを添加するとバター のような製品が出来上がるのですが、こんな製法の商品もバターとして販売されているそうです。 このギーはとても便利な油です。バターは要冷蔵で賞味期限が数ヶ月と短めですが、ギーは変質しにくい油で冷蔵しなくてもか なり長期間保存できます。一般的な食用油として、野菜炒めや鍋料理にギーを使うと美味しくなると評判です。 インドの伝承医学のアーユルヴェーダではホットミルクにギーをティースプーン一杯入れてお休み前に飲みますと、朝のお通じ が楽になるとか、ギーをまぶたに塗ってお休みになると目の疲労回復に良い、虫刺され後などにギーを塗ると楽になるとか、いろい ろな使い方が推奨されています。アーユルヴェーダを取り入れているクリニックが日本にも増えてきましたが、目に溶けたギーを注ぐ ネトラタルパナという療法が行われており、目にとてもよいようです。以前、私も目に異物が入って、調子が悪くなった時、このネトラタ ルパナを受けて回復したものです。よく私の会社で販売しているギーでネトラタルパナはできますかとご質問を受けますが、目はとて もデリケートな器官ですので、ネトラタルパナはご自身でされるのではなく、アーユルヴェーダのクリ ニックで受けましょう。 さて、人間にとって有用なギーは、哺乳動物のミルク、雌牛、水牛、ヤギ、羊、ラクダ、 ゾウ、雌馬、人間の女性の8種類のミルクからのギーであると考えられています。全て のギーにアーユルヴェーダでいうピッタ(火の質)を静める効果がありますが、各ギー にはそれぞれ別の価値もあるといわれています。 雌牛のミルクからのギーは、黄色で、体温で液体状、甘味のある冷やす効果の ある油で、次のような価値が知られています。知能を増大。記憶力アップ。肌の若 返りと輝きアップ。体力増強。ヴァータ(動きの質)とピッタを整える。声を良くする。解 毒、体内浄化。滋養増強効果。消化力アップ。食欲向上、精力増強。目の不調改 善。 水牛のミルクから作られるギーは、乳白色で、体温くらいでも一部固まっていて、 甘味があり、冷やす効果のより強い油で、雌牛のミルクからのギーに比べて消化に 時間がかかりますが、次のような価値があります。体の強化。健康感のアップ。肌の 輝きアップ。カパ(結合力)の安定化とヴァータとピッタを整える。腸内ガスを減らしお腹の調子を整える。血液の浄化に役立ち、痔に 有効。目の不調改善。精力増強。 山羊、ラクダ、雌馬、ゾウなどのミルクから作られるギーもそれぞれアーユルヴェーダの古典文献に具体的に書かれているのです が、また別の機会にご紹介します。 インドの不思議な油、ギーを知って不思議の国のインドともっと親しくなりませんか。 

www.batj.org

Durga Puja 2014

71


インド~そして~宙そら - 山田 さくら 7月の初めに、わっこひろば宙の開園記念イベントが自然豊かな森で行われました。今年で4回目になります。ネイチャーガイドの 方と一緒に親子で森の中を探検。ツリーハウスもあちこちに作られていて、子ども達の良い遊び場にもなります。 昼食のメニューは、キーマカレー・野菜カレー・ナン。まきで作る野外料理です。毎年好評で、「また食べた~い!」という嬉しい 声が励みです。 わっこひろば宙のある長野県大町市は、北アルプスが一望でき、自然が身近で、子ども達にとってまだまだ恵まれている環境なの かもしれません。

わっこひろば宙を起ち上げて今年で4年目になりました。もし、日本の外に出てインドという国に息子達と住むチャンスを与えてもら っていなかったら、わっこひろば宙を起ち上げることはなかったかもしれません。 帰国後保育園で働き始めた頃、保育園の子ども達の顔つき・目の輝きがインドの子ども達とあまりにも違うことに衝撃を受け、何年 か働いてみて規則通りに動かなければならない息苦しさに疑問を持たざるを得ませんでした。大人達の管理下で子ども達は、どん どん型にはめられ管理社会に適応できる人間に育っていくのです。幼児教育は、社会にとって未来の基盤づくりのはずなのに、そこ を疎かにしている日本社会を目の当たりにして、いてもたってもいられず何とかしなければという思いに駆られたわけです。

∞ ∞ ∞ ∞ ∞ 私達家族のインドの旅は、ネパールから陸路で入ったバラナシから始まりました。夜の7時過ぎに着いたのですが、バンバンバン バンあちこちで爆竹が鳴り響いていました。 宿に着いて、疲れを癒そうとみんなで早めに横になったのに、デワーリーで夜中も騒々しく爆竹も鳴りやむ気配がなく、さんざんの インド初日になった・・・と、その時は悲観的になりましたが、後から思うとインド中を学校さがしのために移動せざるを得なかった数年 間、大きな事故もなく病気をしても大事にも至らず、いろんな人たちとの良い出会いがあり、そのお陰で息子達に適った学校が見つ かったのは、このインド初日のデワーリーが私達家族を歓迎してくれていたのかもしれない・・・などと思えたりもします。 インドでの移動中、さまざまなお祭りに出会いました。お祭りの規模や賑わいが大きいことに驚いたことはもちろんですが、インドの 人達の神々への畏敬とプジャの姿勢に自分の国の「信仰」というものがどんなに希薄になっているか、ということに気づかされもしまし た。 息子達が通ったヴィシュワ・バーラティのあるシャンティニケタンでは、お祭りを身近なものとして本当に楽しませてもらいました。 お祭りの名前は忘れてしまったのですが、子ども達が自分達で山車を 作り、それを引いて近所を回り、お菓子やお布施をもらって歩くのです。 みんな楽しみながら元気に小さな手作り山車を引いて回っていました。 それも小学生のころまでで、大きくなってからはやらないようでしたが・・

ドゥルガープジャ

72

Anjali

www.batj.org


インド~そして~宙そら 夜、家の周りのろうそくの明かりが暗い夜に美しく揺れ、幻想的な夜の世界が楽しめました。

ホーリープジャ ホーリー(3月の満月の日)は、インドを旅している間に何回か体験。初めての時は、いきなり 色水をかけられて驚いたけれど、クリシュナのお祭りで色水をかけ合うことでインド人達がかなり 盛り上がっているのを見て、色水をかけられても気にならなくなりました。かけられることが、祝福 でもあるのですから。 シャンティニケタンでは、色水は禁止で色粉をみんなで年齢に関係なくかけ合っていました。 頭から足の先まで赤で彩られ祝福された人達が行き交う楽しい楽しいホーリープジャの日が思 い出されます。 1ヶ月ほどのプジャ休み(ドゥルガープジャ→ラクシュミプジ ャ→カリープジャ)というのがあるくらい、神々のお祭りが多く 神へのworshipのチャンスがたくさんあります。それは、本当 にすばらしくうらやましい限りです。 日本では、お祭りがあってもなかなかそういうチャンスに 恵まれず、神さまが身近ではなくなってきているのが現状で す。 そんな中で幸運なことにわっこひろば宙は、たまたま神社(大町市の中でも大きい)のそばにあ り、ほとんど毎日のようにお参りに行き境内で遊ばせてもらっています。神社の森を通ると、カエ ルやセミ、セミの抜け殻さがしに大忙しの子ども達。神社の近くだったことに感謝です。 神社通いが日常の宙の子ども達にとって、神様が身近になるチャンスになればと願っていま す。

∞ ∞ ∞ ∞ ∞ シャンティニケタンのラビンドラナート・タゴール創設のヴィシュワ・バーラティに出会うまで、いろいろな学校を見て回りました。中に は、大きな学校から離脱した何人かの教師が自分達の手でより良い学校を創ろうと頑張っている姿やある母親が自宅を開放して教 室にし勉強を教えているところを垣間見せてもらったこともありました。真剣に子ども達のことを考えている人達に出会えて感動を覚 えたものの外国人である息子達にとって、このような認可されていない学校では、Student Visaをもらえる可能性はなく見学だけに 終わりました。それでも、自分達で学校を起ち上げている人達に出会えたことが、無意識のうちに常に心のどこかに印象を留めてい た気がします。 ラヴィンドラナート・タゴールは言っています、「我々の新しい学校は大地から成長するのであって、外国樫の寄食者になるのでは ない」と。ヴィシュワ・バーラティも今でこそ国立の大規模な学校ですが、当時イギリス領下だったインドの教育に疑問を抱いたラビン ドラナート・タゴールがたった5人の生徒から始めた学校なのです。 インドでのこういった出会いが、より良い子ども達の場を目指し起ち上げようとした時、私の背中をかなり後押ししてくれた気がしま す。その国その社会の実情に合った教育・子育てが大事なのであって、現在の日本の教育現場は、管理的偏狭な環境からの大き な転換が求められているはずなのです。止めどなく悪化の一途をたどっている日本の教育・子育ての現場を個人の思いだけで、変 えていくのは不可能に近いけれど、タゴールさんのように小さな種を植えることから始めること、一歩を踏み出すことが大切なのだと 思うのです。一歩を踏み出さなければ、何も始まらないのですから。 わっこひろば宙の子ども達は、少人数ですがほとんど人見知りがなく、とてもフレンドリー。 インドやアフリカから友人家族が宙に訪ねてきた時も、いつもと変わらず彼らと接していました。近所のおじさんやおばさん達にも 自然に声をかけておしゃべりをしています。 先日、こんなことがありました。 宙の隣に住んでいる高齢のおばさんが、気分が悪くなって倒れ救急車が呼ばれました。目の前に救急車が止まり子ども達は大興 奮。救急隊のおじさん達に「おばちゃんのこと、お願いしま~す!」と声をかけると、救急隊の方達も「大丈夫だよ~」と、笑顔で答え てくれていました。幸いおばさん、その日のうちに家に戻れたようです。 その社会の実情・・文化や環境に合ったマスメディアに振り回されない、子ども目線に立った子育てが大切なのだと改めて学ばさ れる日々が、宙の子ども達によって続いています。 種から芽が出て花が咲いて、たんぽぽのように綿毛があちこちに飛んでいけば、少しずつ少しずつその社会の実情に合った肩ひ じを張らない子育てが花開いていくと信じています。 

神社のお祭り「万灯祭」

www.batj.org

Durga Puja 2014

七夕まつり

73


アートオブリビング - アミト・カナスカル アートオブリビング財団は、人道・教育支援を行う非営利の国際NGOです。 1981年、シュリ・シュリ・ラヴィ・シャンカールによって創設され、今ではアートオブリビングは世界最大規模のボランティア組織とな っています。151カ国において、主に各地のボランティアが中心となり、「必要とされるところへ、必要なものを届ける」ため活動してい ます。 活動は主に、「教育的活動」と「人道的支援活動」から成ります。 ●教育:呼吸法・ヨガ・瞑想ワークショップの実施 など ●人道支援:災害支援、地域開発援助、環境保護、女性の自立支援 など 日本では一般社団法人として活動しています。呼吸法、ヨガ、瞑想プログラムの実施を主とし、近年は東日本大震災への支援活 動も行っています。 ●精神的支援:ストレスやトラウマ軽減のための特別ワークショップ(無料)の実施 ●物資支援:岩手県、宮城県など ●人的支援:宮城県など現地における復旧作業 ●自立支援:福島県南相馬市の福祉作業所への缶バッチ作成業務委託

呼吸を使って心と身体のバージョンアップを! 私たちの呼吸と感情がつながっています。例えば、うれしいことがあったとき、私たちはどんな呼吸をしているでしょう?怒っている ときやリラックスしているときは? 私たちは普段、あまり「呼吸」を意識することがありません。しかしよくよく観察してみると、抱く感情によって、呼吸のパターンが違う ことに気づきます。心の状態は、呼吸のパターンにあらわれます。 心と呼吸は密接に関係しているからです。 ですから、呼吸のパターンを利用することで、心や感情の状態をコントロールできるのです。感情の波がやってきても、自分を見失 うことなく対処できるようになります。

ストレスを解消するスダルシャン・クリヤ呼吸法 スダルシャン・クリヤ呼吸法は、現代生活において乱れがちな心や体のリズムを回復させる効果的なテクニックで、国際的に活動 する人道活動シュリ・シュリ・ラヴィ・シャンカールによって生みだされました。 季節や動植物など、自然界のあらゆるものはリズムで動いています。同様に、私たちの身体、頭、心にも、生物学的なリズムがあ ります。これらのリズムが同調しているとき、私たちは健康であると感じます。リズムが乱れると、ストレスを感じたり病気になったりしま す。 特定のリズムにそって行うこの呼吸法は、肉体、思考、感情のリズムを自然のリズムに同調させ、心身の働きをスムーズにします。 すると、私たちが本来持っている力をさらに発揮できるようになります。 呼吸は、心と体のエネルギーレベルを底上げする安全な活力剤です。 スダルシャン・クリヤ呼吸法習得コース、呼吸法体験コース日本全国で随時開催しています。 詳細は ホームページ: www.artofliving.orgをご覧ください。tel:03-6386-6324

74

Anjali

www.batj.org


नवरात्रि : स्रोत की ओर एक

- परु ्निमा शा “श्री श्री रवि शंकर”

वरात्रि का त्यौहार अश्विन (शरद) या चैत्र (बसंत)

की शुरुआत में प्रार्थना और उल्लास के साथ मनाया जाता है । यह काल आत्म निरीक्षण और अपने स्रोत

की ओर वापस जाने का समय है । परिवर्तन के इस

काल के दौरान, प्रकृति भी पुराने को झाड़ कर नवीन हो जाती है ;

जानवर सीतनिद्रा में चले जाते हैं और बसंत के मौसम में जीवन वापस नए सिरे से खिल उठता है ।

वैदिक विज्ञान के अनुसार, पदार्थ अपने मूल रूप में वापस

आकर फिर से बार बार अपनी रचना करता है । यह सषृ ्टि सीधी रे खा में नहीं चल रही है बल्कि वह चक्रीय है , प्रकृति के द्वारा सभी

कुछ का पन ु र्नवीनीकरण हो रहा है - कायाकल्प की यह एक सतत प्रक्रिया है । तथापि सषृ ्टि के इस नियमित चक्र से मनुष्य का मन पीछे छूटा हुआ है । नवरात्रि का त्यौहार अपने मन को वापस अपने स्रोत की ओर ले जाने के लिए है ।

उपवास, प्रार्थना, मौन और ध्यान के माध्यम से जिज्ञासु

अपने सच्चे स्रोत की ओर यात्रा करता है । रात को भी रात्रि कहते हैं

क्योंकि वह भी नवीनता और ताजगी लाती है । वह हमारे अस्तित्व

के तीन स्तरों पर राहत दे ती है - स्थूल शरीर को, सूक्ष्म शरीर को, और कारण शरीर को। उपवास के द्वारा शरीर विषाक्त पदार्थ से मुक्त हो जाता है , मौन के द्वारा हमारे वचनों में शुद्धता आती है

और बातूनी मन शांत होता है , और ध्यान के द्वारा अपने अस्तित्व की गहराइयों में डूबकर हमें आत्मसाक्षात्कार मिलता है ।

यह आंतरिक यात्रा हमारे बुरे कर्मों को समाप्त करती है ।

नवरात्रि आत्मा अथवा प्राण का उत्सव है । जिसके द्वारा ही महिषासुर (अर्थात जड़ता), शुम्भ-निशुम्भ (गर्व और शर्म) और मधु-कैटभ (अत्यधिक राग-द्वेष) को नष्ट किया जा सकता है ।

वे एक-दस ू रे से पूर्णत: विपरीत हैं, फिर भी एक-दस ू रे के पूरक हैं। जड़ता, गहरी नकारात्मकता और मनोग्रस्तियाँ (रक्तबीजासुर),

बेमतलब का वितर्क (चंड-मुंड) और धध ुँ ली दृष्टि (धूम्रलोचन ्) को केवल प्राण और जीवन शक्ति ऊर्जा के स्तर को ऊपर उठाकर ही दरू किया जा सकता है ।

नवरात्रि के नौ दिन तीन मौलिक गुणों से बने इस ब्रह्मांड

में आनन्दित रहने का भी एक अवसर है । यद्यपि हमारा जीवन इन तीन गुणों के द्वारा ही संचालित है , हम उन्हें कम ही पहचान पाते हैं या उनके बारे में विचार करते हैं। नवरात्रि के पहले तीन

दिन तमोगुण के हैं, दस ू रे तीन दिन रजोगुण के और आखिरी तीन दिन सत्त्व के लिए हैं। हमारी चेतना इन तमोगुण और रजोगुण के

बीच बहती हुई सतोगुण के आखिरी तीन दिनों में खिल उठती है । जब भी जीवन में सत्व बढ़ता है , तब हमें विजय मिलती है । इस

ज्ञान का सारतत्व जश्न के रूप में दसवें दिन विजयादशमी द्वारा मनाया जाता है ।

www.batj.org

यह तीन मौलिक गुण हमारे भव्य ब्रह्मांड की स्त्री शक्ति

माने गए हैं। नवरात्रि के दौरान दे वी माँ की पूजा करके, हम त्रिगुणों

में सामंजस्य लाते हैं और वातावरण में सत्व के स्तर को बढ़ाते हैं। हालाँकि नवरात्रि बरु ाई पर अच्छाई की विजय के रूप में मनाई

जाती है , परं तु वास्तविकता में यह लड़ाई अच्छे और बुरे के बीच में नहीं है । वेदांत की दृष्टि से यह द्वैत पर अद्वैत की जीत है । जैसा अष्टावक्र ने कहा था, बेचारी लहर अपनी पहचान को समुद्र से

अलग रखने की लाख कोशिश करती है , लेकिन कोई लाभ नहीं होता।

हालाँकि इस स्थूल संसार के भीतर ही सूक्ष्म संसार समाया

हुआ है , लेकिन उनके बीच भासता अलगाव की भावना ही द्वंद का कारण है । एक ज्ञानी के लिए परू ी सषृ ्टि जीवंत है जैसे बच्चों को सबमें जीवन भासता है ठीक उसी प्रकार उसे भी सब में जीवन दिखता है । दे वी माँ या शुद्ध चेतना ही सब नाम और रूप में

व्याप्त हैं। हर नाम और हर रूप में एक ही दे वत्व को जानना ही नवरात्रि का उत्सव है । अतः आखिर के तीन दिनों के दौरान विशेष

पज ू ाओं के द्वारा जीवन और प्रकृति के सभी पहलओ ु ं का सम्मान किया जाता है ।

काली माँ प्रकृति की सबसे भयानक अभिव्यक्ति हैं। प्रकृति

सौंदर्य का प्रतीक है , फिर भी उसका एक भयानक रूप भी है । इस

द्वैत यथार्थ को मानकर मन में एक स्वीकृति आ जाती है और मन को आराम मिलता है ।

दे वी माँ को सिर्फ बद ु ्धि के रूप में ही नहीं जाना जाता, बल्कि

भ्राँति के रूप में भी; वह न सिर्फ लक्ष्मी (समद ृ ्धि) हैं, वह भूख (क्षुधा) भी हैं और प्यास (तष्णा ृ ) भी हैं। सम्पूर्ण सषृ ्टि में दे वी माँ

के इस दोहरे पहलू को पहचान कर एक गहरी समाधि लग जाती है । यह पच्छम की सदियों पुरानी चली आ रही धार्मिक संघर्ष का भी एक उत्तर है । ज्ञान, भक्ति और निष्काम कर्म के द्वारा अद्वैत

सिद्धि प्राप्त की जा सकती है अथवा इस अद्वैत चेतना में पर्ण ू ता की स्थिति प्राप्त की जा सकती है ।

Durga Puja 2014

75


बटे र की दम ु क्यों नहीं हो जापानी लोककथा “उज़रु ा तो तनकु ि” का हिंदी में अनुवाद – सुरेश ऋतुपर एक जंगल में एक बिज्जू और बटे र रहते थे। वे दोनों दोस्त

सवारी के आगे-आगे बैण्ड चल रहा था। उसके संगीत पर लोग

कभी-कभी रास्ते में आते-जाते दआ ु -सलाम हो जाया करती थी। ऐसे

राजा अपनी पालकी में बैठकर दोनों ओर खड़े लोगों को अभिवादन

तो नहीं थे लेकिन पड़ोसी होने के नाते एक दस ू रे से परिचित थे। ही एक दिन बटे र दाने-पानी की तलाश में निकली तो उसने सड़क

किनारे बड़ी चहल पहल दे खी। उसे बड़ा आश्चर्य हुआ कि आज क्या बात है कि बाज़ार में इतनी भीड़ दिखाई दे रही है । उसने पास से

गज़ ु रती चिड़िया से पछ ू ा– “सन ु ो! आज यहाँ इतनी चहल पहल क्यों है ?” चिड़िया ने ज़रा इतराते हुए कहा– “अरे ! तुम्हें इतना भी नहीं मालूम। आज राजा की सवारी निकलने वाली है । सब लोग उसे

दे खने के लिये इकट्ठे हो रहे हैं। मैं तो पेड़ के ऊपर बैठ कर राजा की सवारी दे खने का आनन्द लँ ग ू ी।” इतना कह्कर वह चिड़िया उड़ गई और पेड़ की सबसे ऊँची फुनगी पर जाकर बैठ गई। बटे र ने

सोचा कि वह तो इतनी ऊँचाई पर कभी जा ही नहीं सकती। इसलिए राजा की सवारी वह नहीं दे ख पाएगी। वह कुछ मायूस-सी हो गई। तभी उसे ख्याल आया कि उसका पड़ोसी बिज्जू बड़ा उस्ताद

है । उसे जाकर यह खबर सुनाती हूँ। वह भेष बदलने में भी माहिर है । वह दौड़ी-दौड़ी बिज्जू के पास गई। दौड़ने के कारण उसकी साँस भी फूलने लगी थी। जैसे तैसे साँस को काबू में करके वह बोली-

“अरे भाई बिज्!जू तम ु ्हें एक बढ़िया ख‌बर सन ु ानी है । शहर में एक

नाच गा रहे थे। फिर हाथी-घोड़ों का समूह निकला। उसके पीछे

स्वीकार कर रहे थे। फूलों की वर्षा हो रही थी और राजा की जयजयकार के नारे लग रहे थे।

पालकी के आगे-आगे लाल रं ग की पोशक में सजे कई चोबदार

भी चल रहे थे। उनका काम राजा की सरु क्षा के अलावा यह भी दे खना था कि सब लोग राजा को सम्मान दे रहें हैं या नहीं। सब

लोग झुक झुककर राजा का अभिवादन कर रहे थे और चोबदार

अपने हाथ की बड़ी-सी लाठी घुमाते हुए आगे बढ़ रहे थे। जब जलस ू बिज्जू और बटे र के पास पहूँचा तो बटे र राजा का ताम-झाम दे खती रह गई और वह राजा का अभिवादन करना ही भूल गई। यह दे खकर आगे-आगे चल रहे एक चोबदार को बहुत गुस्सा आया। वह बोला- “अरे दे खो तो, ये बटे र कितनी घमण्डी, निर्लज्ज और ढीठ है । इसने राजा का अभिवादन भी नहीं किया। इसको सजा तो मिलनी ही चाहिए।”

ऐसा कहते हुए चोबदार ने अपनी लाठी घुमायी और बटे र को निशाना बनाते हुए ज़ोर से मार दी। उधर बटे र लाठी को दे खते ही

राजा की सवारी निकलने वाली है । बड़ी रौनक हो रही है वहाँ। क्या

सतर्क हो गई थी। जैसे ही लाठी उसको चोट पहुँचाने वाली थी वह फुदककर एक ओर हो गई और ठहाका मारकर हँसने लगी। लाठी

बिज्जू ने आँखें मिचकाते हुए कहा -“वहाँ जाने का क्या फा‌यदा। भीड़ में लोग मझ ु े घस ु ने ही नहीं दें गे। ऊपर से डण्डे भी

उसे बटे र पर बहुत गुस्सा आया। वह उस पर नाराज़ होते हुए बोला- “तम ु ने तो कहा था कि यदि कोई खतरा होगा तो तम ु मझ ु े

तुम उसे दे खने नहीं जा रहे हो?”

पड़ सकते हैं। मैं तो यहीं भला।”

बटे र उसकी मरी-मरी-सी बातें सन ु कर निराश हो गई। पर तभी

उत्साह से बोली- “सुनो! मेरे पास एक उपाय है । हम दोनों आराम से

राजा की सवारी दे ख सकेंगे।” बिज्जू मन ही मन तो सवारी दे खना

चाहता था लेकिन ऊपर से उत्साह नहीं दिखा रहा था। बोला- “मैं भी सुनँ।ू ऐसा कौन-सा उपाय है तुम्हारे पास।”

बेचारे बिज्जू के सिर पर लगी। वह दर्द से कराह उठा।

पहले से ही बता दोगी ताकि मैं अपना बचाव कर सकँू । तुम तो

लाठी की मार खाने से बच गईं और मुझे बिना बात पिटवा दिया। अब मैं इसका बदला लँ ग ू ा”, और यह कह्ते-कहते बिज्जू ने बटे र पर झपट्टा मारा और उसे अपने मँह ु में भर लिया।

बेचारी बटे र चिल्लाने लगी। उसे लगा कि अब तो मौत आ

बटे र उसके कुछ नज़दीक आकर बोली- “तुम तो भेष बदलने

गई। पर उसने हिम्मत नहीं हारी। वह रोते हुए, बिज्जू से बोली“बिज्जू भाई! क्षमा करना। उस चौबदार ने इतना समय ही नहीं

समान ऊँचे होकर खड़े हो जाना। तुम्हारी तरफ किसी का ध्यान ही

बिज्जू ने गुस्से से कहा- “और जब मुझे मार पड़ रही थी तो

में माहिर हो। ऐसा करो तम ु वहाँ सड़क किनारे घास-फूस के ढे र के

दिया कि मैं तम ु ्हें बता पाती।”

नहीं जाएगा। और तब तुम आराम से राजा की सवारी दे ख सकोगे।”

तुम्हें मज़ा आ रहा था। तब तो खूब ठहठहा कर हँस रही थी। अब

सड़क किनारे घास फूस का ऊँचा-लम्बा-सा ढे र बन कर खड़ा हो

बटे र समझ गई की अब बचना मशु ्किल है । फिर कुछ सोचकर

बिज्जू को लगा कि यह तो बड़ा ही आसान-सा उपाय है । वह

गया। बटे र को भी इसी क्षण का इंतज़ार था। वह बोली- “यदि तुम्हें

एतराज़ ना हो तो मैं भी वहाँ तुम्हारे ऊपर बैठकर सवारी दे ख लँ ? ू ”

बिज्जू को यह प्रस्ताव बहुत अच्छा तो नहीं लगा पर फिर सोचा-एक से भले दो। वह बोला- “ठीक है , तम ु ऊपर बैठ जाना

मैं तुम्हें मज़ा चखाता हूँ।”

वह बोली- “बिज्जू भाई! मेरी माँ बहुत बीमार है । अब तो मेरी यही आखि‌ री इच्छा है कि उसे मरने से पहले एक बार दे ख लँ ।ू मेहरबानी करके एक बार उसे यहाँ बुला दो।”

बिज्जू को लगा कि माँ को बल ु ा दे ने में कोई हर्ज़ नहीं है

लेकिन यदि कोई खतरा हो तो मुझे पहले से बता दे ना ताकि मैं

तो उसने मँह ु खोलकर ज़ोर से आवाज़ लगाई- “ओ बटे र की माँ...

हुए बटे र बिज्जू के सिर के ऊपर जाकर बैठ गई। वहाँ ऊँचाई पर बैठते ही उसे, दरू से राजा की सवारी आती

वह अपनी बात परू ी करता, बटे र उसके मँह ु से निकलकर भागने

अपना बचाव कर सकँू ।” बटे र ने एकदम हामी मारते हुए कहा- “हाँ, हाँ क्यों नहीं। अच्छे मित्र का तो यह कर्तव्य ही है ।” यह कहते

दिखाई दी, वह अपनी समझदारी पर मन ही मन खुश हो रही थी। 76

माँ...माँ...।”

माँ कहते ही उसका पूरा मँह ु खुल गया और इससे पहले कि

लगी। लिकिन बिज्जू भी चौकन्ना था। उसने भागती बटे र की दम ु को कसकर पकड़ लिया। बटे र भागना चाहती थी लेकिन दम ु बिज्जू

Anjali

www.batj.org


ने पकड़ रखी थी इसलिए भाग नहीं पा रही थी। उसकी जान मस ु ीबत

बिना दम ु के ही सीधे भागती चली गई। उसने सोचा- “जान बची

में अचानक उसकी दम ु में रह गई और वह ु टूट कर बिज्जू के मँह

तरह तब से आज तक बटे र बिना दम ु की हो गई। 

में थी। बटे र ने भागने के लिये पूरी ताकत लगा दी। इस रस्साकसी

तो लाखोँ पाए। दम ु चली गई तो क्या, जान तो बच गई।” और इस

“प्रकाश मंत्र” - सन ु ील शर्मा जीवन तम में प्रकाश मंत्र फूंक गया है कोई। जाग्रत हो ज्ञान तिमिर में आत्मा है सोई।। ओढ़ लिए हैं क्यों अकारण मोह माया के बाह्यावरण है पिस रही वो कनक भांति सुप्त व लुप्त हो गई है कांति न धकेल स्वयं को अग्निकंु ड में जाग्रत हो ...... जाग्रत हो ....... जीवन तम में प्रकाश मंत्र फूंक गया है कोई। जाग्रत हो ज्ञान तिमिर में आत्मा है सोई।। आई थी तू विश्व में लेकर नया संदेश क्यों किया धूमिल स्वयं को दे ख नया परिवेश स्वयं न बदल दे ख कर विश्व की यह धारा स्वनिर्माण का दृढ़ बल लाएगा परिवर्तन सारा न धकेल स्वयं को दौर्बल्य में जाग्रत हो ...... जाग्रत हो ....... जीवन तम में प्रकाश मंत्र फंू क गया है कोई। जाग्रत हो ज्ञान तिमिर में आत्मा है सोई।। मंत्र है वशीभूत कर ले मन यह चंचल ज्ञान मार्ग पर अडिग निर्भीक बढ़े चल सत्य मार्ग की कठिनाइयों से न डर तू पाएगी इक दिन अपना लक्ष्य निकट तू न धकेल स्वयं को अस्मिता में जाग्रत हो ...... जाग्रत हो ....... जीवन तम में प्रकाश मंत्र फूंक गया है कोई। जाग्रत हो ज्ञान तिमिर में आत्मा है सोई।। www.batj.org

Durga Puja 2014

77


वो - नीलम मलकानिया यहाँ जापान में कहीँ भी चले जाओ लगभग हर एक किलोमीटर

क्या किसी अंजान के चेहरे पर मुस्कु राहट ला दे ना या उसे ये

पसंद है ऐसा लगता है कि बहता पानी चप ु चाप आपसे कुछ कहना

का आरक्षित होना है , परीकथा नहीं है ? ..... कुछ सोच कर उसे

पर कोई ना कोई नदी आ ही जाती है । मुझे नदी किनारे टहलना

चाहता हो। कई बार मन करता है कि नदी से पूछा जाए कि आज

तुमने क्या-क्या दे खा? क्या अच्छा लगा? जिस दिन मैं बहती हूँ ख़ुद को नदी मान लेती हूँ और अपने प्रवाह में बहुत कुछ जोड़ने की कोशिश करती हूँ जो आने वाले कुछ समय तक ड्रॉईंगरूम में

की गई नई सजावट जैसा मन पर दमकता रहता है और ऊर्जा दे ता

है । नदी से पूछना चाहती हूँ कि क्या बहते-बहते तुम कहीँ ठहरना चाहती हो? क्या दे खना चाहती हो पल भर रुककर? क्या तुम्हारी सहज प्रवत्ृ ति से उलट किया गया कोई काम तम ु में भी कुछ जोड़ सकता है ? बस ऐसे ही कुछ बेतुके से विचारों में खोई घर के पास वाली नदी के किनारे टहल रही थी तभी वो मिली मुझ।े वो, एक छोटा सा हल्के पीले रं ग का कढ़ाई वाला फ्रॉक पहने और लगभग

पाँच इंच की हील वाले मैचिंग सैंडल, बिल्ली के डिज़ाईन वाला पर्स हाथ में झूल रहा था और उसके ख़ूबसूरत चेहरे पर कुछ तैर रहा था। अब नदी लड़की बन गई थी और मेरा ध्यान उस पर चला

गया। अब बहते पानी को नहीं बल्कि उसे दे ख रही थी। वो भी बह रही थी, अपने विचारों में ।

खोई सी चली जा रही थी।

चेहरे पर

मेकअप सजाए, बड़ी-बड़ी काली घनी पलकें लगाए और गालों के

अहसास करवा दे ना कि उसका होना भी इस ब्रह्माण्ड में किसी कोने आवाज़ लगाई....“समि ु मासेन...”। जापानी में excuse me या sorry

को सुमिमासेन कहा जाता है । वो रुकी। पीछे मुड़कर दे खा। मैं बिना बोले चेहरे पर हल्की मुस्कान और एक परिचित ऊर्जा लिए उसकी

ओर बढ़ी। उसका इस तरह रुक जाना और फिर पीछे दे खना। ठीक

मेरी आँखों में दे खना और अपने आँसू छिपाने की कोई कोशिश ना करना इस बात का संकेत था कि मैं इस शरीर से पहले ही अपने विचारों से उस तक पहुँच गई थी और अब हम अजनबी नहीं रहे

थे। “समि ु मासेन... व्हाई आर यू क्राईंग.. व्हाट है पेन्ड... इफ़ यू फील कम्फर्टे बल , यू कैन शेयर इट विद मी” । ... मैंने धीरे -धीरे अपने

शब्दों और इशारों से उसे ये बता दिया कि वो जो कहना चाहती है ,

कह सकती है क्योंकि कोई है जो इस पल उसे सुनना चाहता है । उसने कुछ पल मुझे दे खा फिर कहा ... “सो काइंड ऑफ़ यू,

आरीगातो”। ... आरीगातो यानी धन्यवाद। मुझे लगा था कि वो कुछ और बोले बिना बस यही शब्द मेरे हवाले करके चली जाएगी।

जापानी समाज में लोग शर्मीले और साथ ही थोड़े औपचारिकता पसंद होते हैं। संकोची स्वभाव भी कई बार आड़े आता है । उसने

बाहरी हिस्सों पर लाल ब्लशर लगाए ताकि जब वो हँसे तो उसके

मुझे चौंकाते हुए पूछा “कैन वी सिट दे यर, दे यर ऑन द बैंच”? “ओह यस, कम... वड ु यू लाईक टू है व वॉटर”? मैंने पूछा। ... उसने

बल्कि तंदरु कहते हैं कि बच्चा ु ु स्त भी लगे। जैसे भारत में बड़े बज़ुर्ग

लगी। फिर से वही शब्द धीरे से दोहराया , “आरीगातो”। वो हिन्दी

चेहरे के दोनों तरफ़ उभरी नन्हीं गुलाबी उठान से वो सुंदर ही नहीं हँ सता है तो शरीर में लगता है । यानी अगर बच्चा ख़ुश है तो

तंदरु ु स्त भी रहे गा और खाया पिया शरीर में लगता रहे गा। गाल

गुलाबी हो जाएँ तो समझो कि शरीर में ख़ून का दौरा अच्छा हो रहा है । ये सोच कर पल भर को मैं मस ु ्कु रा दी कि खन ़ू और सेहत का ये रिश्ता, गुलाबी गाल और दे हाती बुज़ुर्गों का ये समीकरण कैसे मेकअप की एक छोटी सी गोल डिबिया और एक ब्रश में समा गया

गर्दन हिला कर मना किया और फिर मुस्कु राने की कोशिश करने

नहीं बोल सकती थी और मैं जापानी नहीं जानती थी। तो बची अंग्रेज़ी। उसी भाषा में दख ु -दर्द और दिलासे का आदान-प्रदान हुआ। बैंच पर बैठते ही मैंने उसका नाम पूछना चाहा तो उसने फिर से

आँसू लढ़ ु काते हुए नाम बताया ‘ बैड गर्ल’। फिर एक दो बार यही शब्द दोहराया। मैं समझ गई कि ये उपाधि किसी ख़ास की दी हुई

है । हिमोग्लोबिन चाहे जितना भी हो, ब्रश चलाओ और गाल गुलाबी

बनाओ। ये सब सोच ही रही थी कि वो मेरे पास से गज़ ु री और उसी पल मेकअप से बड़ी बनाई गई उसकी आँखों से छलकते आँसू

मैंने दे ख लिए। एक नया दे श, अजनबी लोग, आस-पास कोई तीसरा

व्यक्ति नहीं और फिर भाषाई बाधा। सहज बुद्धि ने कहा कि मैं बस ख़ामोश रहुँ और उसे ऐसे ही जाने दँ ।ू फिर अंदर जो एक क़लम रहती है वो सहसा जाग उठी। ... क्या है इन आँसुओं की कहानी

... क्यों रो रही है ये ... ज़ाहिर है कि सब ठीक तो नहीं है .... सहज बुद्धि --- प्यार व्यार और क्या। तोक्यो जैसी अत्याधुनिक जगह में तो ये मामल ू ी बात है । लोग अकेलेपन का शिकार हैं। कोई भी समस्या हो सकती है । क़लम—- फिर भी क्या ये इंसानियत है

कि वो लाचार सी, रोती हुई चली जाए और उसे ये भी अहसास ना करवाया जाए कि इस पल ये नदी और मैं उसके आँसुओं से पसीज

रहे हैं। बद ु ्धि--- हो सकता है उसे अच्छा ना लगे। उसकी मर्ज़ी है ,

जब चाहे रो सकती है । क़लम --- जब चाहे हँस भी तो सकती है । रोने से क्या होगा ? क्या परीकथा हमेशा परी से ही बनती है ? 78

Anjali

www.batj.org


वो है और संभव है कि जापानी भाषा में वो शब्द कुछ ज़्यादा ही “बैड”

अमरीका कुछ भी नहीं। शायद कुछ समय बाद फिर से वही व्यस्तता

... “ब्रेकअप”? वो फीकी मस ु ्कु राहट के साथ बोली.. “नो, पैचअप”।

थे। शायद वो मन से इस रिश्ते के लिए तैयार नहीं थी और इसे

रहा हो इसीलिए ये इतनी दख ु ी हुई। ये मुलाक़ात नाटकीय तो बन ही गई थी तो मैंने भी फिर बिना किसी लाग लपेट के पूछ ही लिया ... पैचअप... यानी कि बिछड़े साथी से फिर से मिलना। तो इसमें

रोने की क्या बात?... बिना कुछ पछ ू े सिर्फ़ उसके बोलने का इंतज़ार

करती रही और इस उधेड़बुन में रही कि उससे क्या कितना पूछा जाए ताकि वो असहज महसस ू ना करे । ये बिल्कु ल अलग अनभ ु व था और थोड़ा सा अविश्वसनीय भी क्योंकि यहाँ जापान में अक्सर

इस तरह किसी का भी बतियाने लगना बहुत अनोखी बात है । पर मेरे साथ भी अनोखा तो घटता ही रहता है तो ये एक कड़ी भी जुड़

गई। उसने मझ ु से पछ ू ा कि मैं कहाँ से हूँ और फिर खद ़ु ही कहा, इंडिया ? फिर थोड़ी सी औपचारिकता के बाद नमस्ते और सारी ( साड़ी ) शब्द से अपना परिचय बताने के बाद जो कहानी सुनाई वो

और वही मानसिक दबाव। उसने सधे हुए और गरिमामय शब्दों में ये कहानी बताई और जो नहीं बताया वो उसके आँसू बता ही चुके बस एक दबाव या हालात कहा जाना ही सही था। उसने अपना नाम बताया था और मैंने दो बार दोहराया भी पर अब भूल चुकी

हूँ। वो कहाँ से आ रही है , क्या उसी से मिलकर, क्या वो साथ रहते हैं, आगे क्या चाहती है , क्या फिर कोई झगड़ा हुआ था, क्या इस बार कुछ बदला है उन दोनों के बीच, गुड़िया सी लगने वाली लड़की

बैड गर्ल क्यों हैं ? ऐसे अनगिनत सवाल मन में पैदा होते रहे और मैं उसे जाते हुए दे खती रही। उसे एक अजनबी की ज़रूरत थी शायद उस समय। ऐसा अजनबी जिससे वो बातें कर सकें कुछ दे र। जिसके

सामने कुछ भी कह सके और ये डर ना हो कि कॉमन फ्रैंड बातों

कुछ इस तरह थी। ..वो तोरे यामा या तारायामा जगह से थी शायद

को पंख लगाकर उड़ा दें गे। उसके चले जाने के बाद फिर से बहुत दे र तक मैं अपने ही मन में गोते लगाती रही। बिना कोई तथ्यात्मक

की कंपनी है इसलिए उसने अंग्रेज़ी सीखी ताकी बाहरी लोगों से

वो बस बोलना चाहती थी, मेरे बहाने शायद अपने आप से बात

और यहाँ तोक्यो में किसी कंपनी में काम करती है । इलैक्ट्रोनिक्स बातचीत की जा सके। उसका दो साल पहले ब्रेकअप हुआ था क्योंकि जितना समय वो दोनों एक साथ बिताना चाहते थे उतना समय

उनके पास था ही नहीं और फिर इसी के साथ कुछ और बातों पर भी मनमुटाव शुरु हुआ। एक दिन लड़की को अहसास हुआ कि इस तरह हर समय नाराज़ रहना और एक दस ू रे को सिर्फ़ ढोते रहने से

अच्छा है कि अलग हो जाएँ। दोनों ने साथ बैठकर ये फ़ै सला किया, फिर वो अलग हो गए और अपने-अपने रास्ते अपना-अपना दिल

थामे चल दिए। फ़िल्मी कहानी की तरह फिर एक दस ू रे की याद आने लगी। लड़की ने अपने शौक़ से जी बहलाना चाहा और किसी डाँस क्लास में जाना शुरु कर दिया। ख़ुश रहने लगी। कुछ अलग कर रही थी और कंपनी के एक साथी को थोड़ा पसंद भी करने लगी

थी। कंपनी के ही काम से अमरीका जाने का सपना भी पालना शुरु

कर दिया था और उसके लिए मेहनत भी कर रही थी। यू टर्न लेकर

लड़का फिर उसके जीवन में आना चाहता था और परे शान रहते हुए कभी-कभी अपना मानसिक संतुलन खो बैठता था । लड़के के ऑफ़िस मे लोग उससे नाराज़ रहने लगे और उसके काम पर भी

असर पड़ने लगा जो कि जापान में एक ख़तरनाक बात है क्योंकि

बहुत सी जगह ऐसी हैं जहाँ आप अपने काम को चाहे पूरी निष्ठा से करें या मजबरू ी में करें , पर आपके काम का स्तर ज़रा ख़राब हुआ कि आपको दस ू रा मौक़ा कभी नहीं मिलता। अपने हालात को सुधारने की कोशिश में लड़का फिर से लौट आया उसके जीवन में

और वो जो उड़ना चाहती थी, फिर से एक ऐसे रिश्ते में क़ै द हो

जानकारी दिए उसका यूँ अपनी बातें कह जाना दिल को छू गया। कर रही थी। दोहरा रही थी बहुत कुछ। शायद कई बार घुटन के घेरे से निकलने का बस यही सबसे आसान तरीका होता है , अपनी बात बोल दे ना। फिर चाहे कुछ समाधान निकले आपकी समस्या

का या नहीं। वैसे ज़्यादातर तो हम ख़ुद ही सुलझाते हैं अपनी

उलझनें, सलाह दे ने वाले बस कुछ विकल्प हमारी झोली में डाल दे ते हैं। कौन सी परे शानी जीवन के कितने दिन निगल जाएगी ये

भी कुछ हद तक हम ही तय करते हैं। इसीलिए शायद वो समाधान

तो ख़ुद तलाशना चाहती थी लोकिन उस विशेष पल की ज़रूरत बस बात करना थी , तो उसने एक अजनबी से बात कर ली। यहाँ कुछ

दोस्त ऐसे ही मिले हैं मुझ,े अचानक। अब उनका फोन नंबर है मेरे पास और जब तब बातें भी होती रहती हैं। पर उनके बारे में कुछ

लिखा नहीं। ये लड़की इतनी जल्दी काग़ज़ पर उतर जाएगी पता नहीं था। अगर फोन नंबर्स या नेम कार्ड की अदला-बदली हुई होती तो शायद एक प्रक्रिया शुरु हो जाती और इसके बारे में भी कुछ ना लिख पाती। पर इससे तो दोबारा मिलने की कोई उम्मीद नहीं, कोई

अता-पता नहीं। वो चुपचाप चली जा रही थी, फिर से अपना झूलता

पर्स संभाले और ख़ुद को समेटते हुए। वो थोड़ी सी मुझ में बच गई थी और थोड़ी सी उस नदी में । नदी और मैं दोनों ठहर गए थे और

बस बहे जा रही थी ‘वो’। चाहती हूँ कि वो खश ़ु रहे , क्या पता कल फिर से हम कहीँ ऐसे ही अचानक मिल जाएँ। तब तक बस मैं उसे ऐसे ही याद रखना चाहती हूँ, इसी शब्द से `वो’।

रही थी जिसका आधार डाँवाडोल था। अब शायद डाँस क्लास और

www.batj.org

Durga Puja 2014

79


कुछ कहना चाह्ता है मन.. - सारिका अग्रव ख्वाब

आँसू

वो कदम बढ़ते रहे उन ऊँची ऊँची दिवारों की तरफ, कहीं खिड़की से एक रोशनी की किरण पर हम बढ़ चले.... विशालकाय उस कक्ष को दे खकर कुछ सिमटे , फिर नज़र पड़ी उन नौजवानों पर, हुए तल्लीन थे जो खेल में बढ़ी लगन से.... नतमस्तक हो गया सर उनका यह परिश्रम दे खकर, क्यों ना हो इस दे श का गौरव यह बच्चे... फिर उठे कदम और बढ़ने लगे अपने ही ख्यालों में .... छोड़ आये थे अपना दे श पीछे , पर आज भी थिड़कती हैं यादें , एक नया ख्वाब सजा लिया उन कुछ पलों में .... मात्रभूमी के उन नौजवानों के लिये, जो हमारे दे श को भी गौरवानवित करें गे कभी... कुछ ऐसे ही खेल परिक्षण मैदान होंगे, हर खेल की शिक्षा जहाँ सम्भव होगी, मेहनत की हर दिल को तमन्ना होगी, क्यों ना होगा मेरा दे श भी उस शिखर पर.... जहाँ नतमस्तक हर दे श होगा!!

तुमसे क्या बोलँ ू सखी.... और तम ु ्हें क्या समझाऊँ बस कुछ आँसू पलकोँ पर ले आऊँ.... यह आप बीती गहरी इतनी.... कुछ क्षण मौन हो जाऊँ.... यह सोचँ ू इन बेबस टपकते हुए आँसूओं को कैसे रोकँू ... तूम्हें पूछूँ या खुद को पूछूँ....

रिश्ते वो टूटते, वो सड़ते, वो रोंदे हुए रिश्ते, वो घिसटते हुए ज़मीन पर लहूलुहान हुए रिश्ते वो दिलों को चीरते, वो बिलखते, वो सिसकते वो है वान से यह रिश्ते वो समाज की बंदिशों में घिरे हुए वो डरते, सिमटते वो हारे हुए से रिश्ते, फिर भी रिश्ते कैसे कैसे हैं यह रिश्ते।

वो यादें बहुत कुछ लिखना चाहता था मन उन कोरे कागज़ों पर, पर समझ नहीं आया अपने जज़बातों को कैसे शब्द दें .... बहुत सिमटे थे उन यादों में , पर समझ नहीं आया उन्हें कैसे वर्तमान देँ.... दिल बहुत उदास था, कि अपनी आवाज़ को पह्चान पाना भी मशु ्किल था.... एक आवरन इतना गहरा था जीवन पर, कि अपना जीवन भी बोझ था ज़िंदगी पर।

बढ़ते रहो कुछ खराब लम्हों को अपने दिल से लगा कर क्या करोगे..... जो कुछ अच्छा हुआ उसे क्या भूल जाओगे.... ज़िंदगी में बढ़ते रहोगे तो मंज़िल पा जाओगे.... रुक गया कदम अगर तो बहुत पीछे रह जाओगे।

80

Anjali

www.batj.org


कवि मन्सूर की कलम से तेरी मुस्कराहट

गज़ल

फूल तो खिलते हैँ मुरझा जाते हैं, मगर हर पल खिलखिलाती है तेरी मस ु ्कराहट।

हाले दिल यूँ ब्यान नहीं होता, कभी मैं सब ु ह तू शाम नहीं होता।

नींद नहीं जब आती है लंबी काली रातों में , एक मीठी लोरी सी सन ु ाती है तेरी मस ु ्कराहट।

खुशी मेरे नसीब की जाने कहाँ है , जहाँ जाऊँ गम जद ु ा नहीं होता।

इन्तहां नफरत का मारा हो गर कोई, प्यार भी सिखा दे ती है तेरी मुस्कराहट।

दिन और रात अब बराबर हैं मेरे लिये, कोई ऐसी रात नहीं जब मैं जगा नहीं होता।

पोंछ दो अब आँसओ ु ं को और पक ु ार लो बहार को, हर वक्त ये एहसास दिलाती है तेरी मुस्कराहट।

आज तू खश ु है तेरे पास है वो, कल समझेगी कोई सदा नहीं होता।

हम तो आ चुके थे सनम मौत के कगार पर, गर ना वापस बल ु ाती ये तेरी मस ु ्कराहट।

हर शय दौलत के कब्ज़े में इस कदर, गरीब का तो अब खद ु ा भी नहीं होता।

इस जन्म में ही नहीं हर जन्म में , साथ निभायेगी ये तेरी मुस्कराहट।

खुदा की बंदगी से जन्नत मिले शायद, वो जन्नत ही क्या जहाँ तू नहीं होता।

रुबाई मैं जानता हूँ तेरे नैनों की प्यास कुछ कहने को बेताब है ,

मगर क्या करूँ की दिल पर ज़ख्म इस तरह बेहिसाब है , कि दिल कहता है कि इस दर्द का नहीं कोई सद्बाब है , फिर भी सोचता हूँ मैं, ऐ मेरी हमनफ्ज़

अगर कोई इलाज़ है , तो वो तू है सिर्फ तू है , और तू लाज़वाब है ।।

www.batj.org

Durga Puja 2014

81


मेरा शौक – घुड़सवारी - शन ु निशिमोतो, कक्षा 5 वैसे तो मेरे बहुत से शौक हैं, पर मुझे घुड़सवारी करना बहुत पसंद है । मैं केवल घुड़सवारी ही नहीं करता, ब्लकि उनकी दे खभाल भी करता हूँ।

उन्हें खाना खिलाता हूँ, उनका घर साफ करता हूँ। जब मैं घोड़े की सेवा करता हूँ, मैं उनके बारे में ज्ञान प्राप्त करता हूँ । घोड़े को भगाने के लिये मैं अपने एड़ी से उसके पेट में लात मारता हूँ, और रोकने के लिये लगाम खिंचता हूँ। घोड़े घास और गाजर खाते हैं। एक बार जब मैं

एक घोड़े की कंघी कर रहा था, वह अचानक

हिलकर मेरे पाँव पर चढ़ गया और मुझे बहुत दर्द हुआ। मैंने सुना है कि पुराने ज़माने में घोड़ों का जबाड़ा जुड़ा होता था इसलिए उनका चेहरा छोटा

दिखता था, परं तु आजकल उनके जबाड़े जुड़े नहीं होते इसलिए उनका चेहरा लम्बे दिखते हैं। मझ ु े लगता है कि घास खाने के लिए जब वे अपना चेहरा नीचे करते हैं, उनका चेहरा लम्बा हो जाता है ।

Adults are so strange - Akanksha Mukheree, Grade IV

A

t times I find adults to be a bit strange. They think that they know everything about children and always say, “do this, do that”, but that is not right. We children have our own thoughts and opinions that adults need to listen to.

There are many things about adults that I quite don’t understand. For example I read news about adults killing each other and fighting wars and I wonder why! If adults asked children, we would tell them to immediately stop these killings and make peace among themselves.

I find many adults smoking and drinking alcohol, which is bad for health. And then they tell children “ don’t eat this or you will fall sick.” They don’t let children do it. But they do it themselves. In some schools teachers punish and hit children, which I feel is strange and not a good thing to do. I feel that adults who humiliate children are very mean and I wonder why they do it! When children get bad scores in their exams, adults get very angry and scold them because they want children to get everything correct and not make a single mistake. But that is not right because if children don’t make mistakes they won’t learn anything. But adults don’t understand that failing is also very important.

Adults judge people by their clothes. If a person is shabbily dressed, adults will not believe the person. But if the person is wearing a suitable outfit, adults will believe him or her. Children know what they want. But adults just don’t understand the children’s feelings. So they don’t get it. The children are much more active than the adults are. 82

That is why I find most adults so strange! 

Anjali

www.batj.org


My trip to Shikine-jima Island - Anushka Mandal, Grade IV

M

y trip to Shikine-jima Island started when I went to the Yokohama Passenger terminal. It was my golden week holidays and my first overnight journey on a ship.

We went to the deck, we saw big waves of the ocean. At night we slept in the ship, and in the morning we saw sunrise from the ship. At 9’o clock we reached a beautiful island called the Shikine-jima Island.There I saw fishermen, pebble beach, blue and green sea water.

There are very few houses, and very few shops. It was very beautiful to see many types of wild plants, small gardens. I felt like a real adventure. One side of the island is protected by big boulder. We saw very steep rocky area. There lime stones are yellow and water is boiling. Some people were scuba diving to see big tortoise. We saw Shikine-jima sea life photo gallery.

There were sudden hot water streams very near to shore. We ate fresh seafood grilled fish and squid. Me and my sister collected shells. We explored the whole island by bicycle. We came back to Tokyo by a pink sea jet named Ai. 

Summer Camp – 2014 - Yui Nishimoto, Grade III

T

his year at the end of July, I went for the summer camp in Hakuba with my elder brother, Shun and some other friends. The camp was in a beautiful location. I was in the English camp that has some rules: If we speak Japanese for first time in the camp, the camp master will caution us. If we speak Japanese for the second time they will call our parents. If we speak Japanese for the third time in the camp, they will send us back to home. They’re very strict about that. The food there was very yummy! The activities in free

www.batj.org

time are making envelopes, balancing games and playing with my friends. Other fun activities which I enjoyed are rafting with kids, kayaking, swimming in the lake, and canoeing. I enjoyed the most was watching fireflies in the dark. I cried sometimes in the nighttime, missing my mom. When I come back I was very happy when I met my mom. This year summer camp was very fun!

Durga Puja 2014

83


Creation of Gravity

and Separation of Sun and Moon - Krish Kothari, Grade VI

N

ear the beginning when God had just finished creating the Earth, God was becoming very frustrated. When he created anything, it would fly away. Even the plants could not hold on. In his frustration, God caused a fire. He had forgot about the Earth having no gravity at the moment. The fire turned on him. God was burned very badly. He was knocked out cold. He managed to croak out these words,” Sun, Moon, please take care of everything.” Now, Sun and Moon were his first and favorite creation. They were very loyal and reliable, and are the best of friends. However, they are very forgetful. Days passed, and Sun and Moon got worried about God. They decide to try their powers. God had created them and said not to use their powers unless it was an emergency. They decide that they would say (if they would get caught) that they were just “practicing” for something terrible. They started by

creating many animals for fun and laughing when it flew off into space. Then they spent many days on a very big “project”, gravity. They planned that one of them would stay at the switch and the other would create animals and plants. Since the gravity switch was off, the animals and plants would fly about. Then they would turn the switch on, and the animals would fall and the other will flick them with a finger. They started arguing about who would do what. Sun said that since he was created first, he should try it. Moon said that his accuracy and timing was better, so he should do the “honors”. God had come back. He asked about the commotion. They didn’t hesitate and said the truth of everything they had done. God was very angry and decided that Sun and Moon will never met, thus the separation of the two. The gravity switch stayed on forever. 

My Travelogue of Last Summer - Sneha Pal, Grade VI

L

ast summer, my father and uncle planned to visit Amritsar, Dalhousie, Shimla and Manali. When I heard that news, my heart danced with joy. I was very happy that my friends, Rohan and Roshni would travel with us. On 16th May, 2014, we boarded the Jallianwalla Bagh Express from Durgapur Station. During the journey, we saw many peacocks and deer in Uttar Pradesh. Next day, we passed through Delhi and at last we reached Amritsar at 2:30PM as our train ran about 6 hours late. Next day we went to the world famous Golden Temple, the pilgrimage place for the Sikhs. We were amazed to see the temple in the middle of lake. We had our breakfast at the Langar (food) served there.

On 18th, we started for Dalhousie. Dalhousie is a hill station of Himachal Pradesh, situated at the height of 2100 m. It is known as Travelers’ Paradise. It was established in 1854 by the British Governor Lord Dalhousie. We reached our hotel Jaspreet, at around 5:30 PM. From the roof of our hotel, we enjoyed breathtaking view of the forest with a glow of the setting sun, and fresh air and cool breeze. It indeed, delighted our mind, relaxed our body, and made our soul to dance.

On 20th May, we went to the Dharamshala, the holy place of Tibetan and the living place of Dalai Lama, and then to our hotel Chamunda. In the morning, from our hotel, we saw spectacular awesome snowline of Dhauladhar range. We went to Chamunda Devi Temple and worshipped there. We also visited Jwalamukhi Temple where flakes of fire come out from the ground. From there, after a long journey through the zigzag roads, we reached our hotel, ‘Ocean Blue’ in Manali. The scenery of both sides of our hotel was beautiful. From our hotel balcony, we saw the nearby mountains covered with snow. Later, we went to Solang valley, Rohtang Pass , where my brother, my friends and I played in snow. We also did river rafting in the river Beas there. The water of the river Beas was very cold. In the evening, we shifted to ‘Gulmarg Regency’ in Shimla. There, we went to the Kali Bari, and worshipped Goddess Kali. We also visited a zoo at Kupri. In that zoo, we saw many birds and Himalayan animals like bears, leopards, deer etc.

Our stay at Himachal Pradesh was short but pleasant. Its clean climate and natural beauty made a very powerful impression in our minds. Therefore, we felt very bad when the time came to return. On 26th May, we got in at the Kalka Mail from Kalka Station for our home with hale and hearty.  www.batj.org Anjali

Next day, we trekked about two kilometers and reached Ma Pohalani Temple. The scenery along the trekking route was beautiful. My brother was also accompanied us with a great joy. On the same day, we went to Khajjiar, a beautiful green valley 84

surrounded by pine trees. There Rohan, Roshni, Rupak and I rode on horses. In the Kalatop sanctuary, we saw many kinds of trees and flowering plants.


The Unforgettable Journey - Sneha Kundu,

A

lice and Matilda were lost in the forest surrounded by hooting owls and darkness. It felt like creepy eyes were following and watching them as they took each step that brought them farther away from where they wanted to be, home. Ever since the storm had hit their boat and destroyed it, Alice and Matilda’s plan of moving to another island had been totally ruined. They surely were in an island, but it wasn’t as good as they would imagine. They thought it would be like paradise, with more freedom, but now they were free, to die of various reasons. Alice and Matilda decided it was going to be some time until they got out of here, so they would have to search for water. If they wanted water they probably shouldn’t have walked to the center of the forest because now they would have to walk back to the sea. But then they realized that the sea had salty water so they would have to find a stream with fresh water. Alice and Matilda decided that they would go separate ways and when they would find fresh water they would climb the tallest tree around them and blow a seashell so that it would make a sound that would be a signal that meant they found fresh water.

Grade VI

Matilda was going through the trees on the island until she found a river. She still wasn’t sure if that had freshwater so she took a sip. She waited for a while and realized that there was nothing wrong with the water so she climbed the tallest tree around her and blew a seashell, It was about three hours since she had blown the seashell, but Alice still didn’t show up. Matilda was wondering if Alice was in great danger, but she didn’t want to go and search for her because it was getting even darker. Soon, she fell asleep next to the river. The next morning, Matilda woke up to find Alice sleeping next to her. Matilda was so grateful that Alice was alive and she wasn’t the only person on the island. As soon as Alice woke up they started searching for food. Since there was a river they could just catch fish and eat it but they had a problem because Alice was vegetarian. But it took her a few hours of eating fruits and thinking to realize that eating fish was the only way to stay alive. After six months, Matilda and Alice decided to go to the coast of the island when they saw a ship coming towards the island to check if it was empty. And Alice and Matilda sailed on the ship to go back to their parents. 

I am From - Anika Sen Mitra, Grade VII I am from east and west, from the land of the rising sun and the nation’s capital, from rainy days, snowy mornings, and scorching, dry desert. I am from red, white, and blue, from watching sparkling fireworks on Fourth of July at the National Mall. I am from a house surrounded by dogwoods, cedar, and elm, a house by rolling hills, and everywhere in between. A room cluttered with stuffed animals and bookshelves of beloved, worn-out books. I am from the aroma of curry and fish cooked with bright colored spices, from luchi, aloobhaja, and tandoori chicken. I am from Thanksgiving dinners, from juicy turkeys, mashed potatoes and warm, crusty apple pie. I am from Sen and Mitra, from funny and warm, from Face Timing across the globe. I am from Hindu religion, temples, and festivals of light and color. I am from international trips to India and London, from baby pictures in Japan, Amsterdam, and Canada. I am from music, classical and jazz, from piano, saxophone, dance recitals, from packed after-school schedules full of fun! I am from hard courts, from serves, forehands and backhands, from hard won rallies played in weekend matches. I am from the land of cherry blossoms, from saris and bindis, and weekend dinners of sushi rolls and calamari. I am from nicknames thought after a Japanese orange, from high ponytails with red ribbons, from big hearty laughs. I am from different corners of the globe, from loving family and friends. I am from love, peace and hope.

www.batj.org

Durga Puja 2014

85


Maharana Pratap

- An Idol for Today’s Generation - Aashi Dwivedi, Grade IX

I

f you look around, role models of our youth today are music, movie or sports stars. Teenagers worship celebrities such as One direction, Ranbir Kapoor, or Beyoncé as their god, however I feel these icons lack substance. Many of us seem to have forgotten the real heroes of our past time, who sacrificed themselves for a noble cause and a peaceful future for us all. One of those unprecedented courageous freedom fighters who has inspired me and the rest of India, is the great warrior king of Mewar, Maharana Pratap Singh.

Around 500 years ago in West India, the ruler of Mewar, Rana Pratap, was born to a Sisodiya Rajput family in Chittor with loving parents who always encouraged him to fight for his motherland. He was a determined boy right from his early years who could go to any extent to protect his people, their pride, and the precious soil of Mewar. He never gave up the will power to fight against the many Mughals, Afghans and Turks that kept on trying to gain control over his country. His dedication and deeds helped pave the way for a victorious leader to his people and earned his title, “Maharana”. Being a true rajput, Maharana Pratap always followed his dharma and believed that “if our enemy invades our motherland, then we Indians will not turn our back; we will fight with spirit and give a befitting reply to the enemy”. This belief led him to being the emblem of his nation and generations learnt from his bold actions, words, and deeds.

86

The greatness of Maharana Pratap lies in his unique qualities. He was a compassionate soul who fought with fairness as he never invaded other countries, did not attack unarmed people and forgave those who surrendered. Rana Pratap was so determined that he took a lifelong vow to give away all luxuries and spent 21 years, almost half of his life in the jungle, away from his Palace till he threw out Mughals from his land. This symbolizes that he had a pure heart and sacrificed selflessly for the sake of his motherland. Additionally, Rana Pratap was known to be an inspiring leader who united his country and brought together alienated sections of society such as Bheels, who lived in jungles to fight with the enemies. Maharana Pratap is known best for his courage as he fought with Mughal armies twenty times the size of his troops and never surrendered till his death. I believe the learnings from Maharana Pratap’s life are still highly relevant today, and we should apply them in order to create a better world for us to live in. Today’s youth are not deriving values by worshipping celebrities. They need to build character by following the great heroes of yesteryears such as Maharana Pratap, Mahatma Gandhi, Martin Luther King and other such figures around the world. Get to know their inspirational story and think again about who you feel is the true hero you should follow. 

Anjali

www.batj.org


The Evolution of Football - Arunit Baidya, Grade IX

R

ight now as the 2014 FIFA world cup is being held in Brazil, I thought it was interesting to talk about the evolution of Football. At a time where everything is made in China, it turns out that even football was first played in China in the second and third centuries BC. This spread to Rome as the Romans dribbled leather balls and kicked into nets made out of threads of animal gut, and then the Greeks took it on and surprisingly as we are living in Japan, football had even been a fun sport for the Japanese in Kyoto. However, obviously football was nowhere to be as much advanced or played at such large scales at any point or place at history as it is played and enjoyed today.

However, recently in earth’s history 3,000 years ago, Football was played in a lot European countries especially in Great Britain, England. The seeds of modern soccer were planted in England where people were thought to be actually playing with some rules and regulations. They even had things like a hand ball. People were said to play for hours in a day as it was their primary source of leisure and pretty much the only time they would meet their friends was on the field. This really annoyed a few people and Football was actually banned by King Edward III in 1365. Now days if anyone tried to do that the person would be outnumbered greatly by his/her opponents and could get sued. After all those years of incubation of Football, finally in 1904 FIFA was established and after a few decades conducted the first ever FIFA world cup in Uruguay. This is when the seeds of football shot out of the ground and became a proper big tree. At the beginning, countries were still colonized and did not get independence and so not many countries participated in the Games however that changed dramatically. Now in 2014 World Cup, 204 countries participated with their teams, however only 32 teams qualified for the actual games being held in Brazil. Football now holds the title of the most popular and played sport around the world and as the game evolved, legends evolved as well from Pele to Maradona to Ronaldo and Messi. But it is not just the legends and the game, it is also the companies sponsoring and making the actual footwear and clothing required to play the game like Nike and Adidas. As you can see below, the huge difference in that as well below. Just like in movies, from black and white to colours! 

www.batj.org

Durga Puja 2014

87


THE NEFILIBATIC NOMAD - Utsho Bose, Grade IX The evening was vermilion, drenched in her memory. That memory, undaunted, the sun, not set. The Raven had set sail, it’s wings in motion. While they carried his mother into the darkness. Her scream sent shivers down his spine. Like a doe, brought at bay. His father had rushed, his sister soaking in scarlet elixir. Her eyes unfazed, towards the setting sun. Something lost, something gained, he wondered, As he blew bubbles through the blower. The pain of the hiraeth, the contemplation of loss, Seemed to be giving way to momentary bliss. Ignorance, overshadowed by acceptance crept back into its burrow. He turned to bid the radiant giver of life, goodbye. His father’s crutch, shining in the beautifully depressing memories. The stillness of the moment, the dying delirium, Mixed colour. The dogs pricked their ears, The boy raised his head, every cell awakened. Etched with the familiarity of the sound. His father erect, the air brought the smell of his sister’s blood. The die had been cast. The dogs of war unleashed, upon the final hiding place. There wasn’t a moment to run, no moment to face. Silence broken, metal on metal, blood on Earth. Fate, remorseless. The house lay watching, apparently, unmoved, While they faced destiny, with arms wide open. Each second lasted an eternity, The puppet masters had fallen, The puppets still on stage, possibly inert. The air pungent, with the echo of a nomad. A song unsung, a faded memory, Eroded footprints on Earth, The last bubble, not blown.

88

Anjali

www.batj.org


Genetic Mutations:

Are the X-men really possible? - Arunangsu Patra, Grade IX

I

n the mid 19th century, Czechoslovakian scientist Gregor Mendel discovered the secret code to our existence and who we are, simply through cross-breeding purple and white pea flowers. It is still used in various fields of study, such as biology or biochemistry. Genetics, the study of Deoxyribonucleic Acid, or DNA, has lead us to understanding natural human characteristics and discoveries that potentially save people’s lives, and can even enhance their physical abilities. On July 18, 2014, Fox released a new movie, X-men: Days of Future Past, that contributes to the X-men series, which is based on Marvel’s comics written by Stan Lee. In this movie series, the topic of Genetic Mutation (GM) is widely explored, and the term mutant is commonly used. A mutant is someone with some sort of genetic disorder, which will be discussed later. These mutants possess extraordinary powers and abilities due to their mutation. However, are these abilities truly because of GM? Or is it just used as an excuse to possess extra-terrestrial powers? Before we get into this, let’s skim through the topic of genetics and biology first.

First of all, what is DNA? Before we get into that, there are a few things we should familiarize ourselves with first.

Let’s start with perhaps one of the most abundant terminology in biology. An organism is any living being, ranging from humans to dogs, to insects to even trees. A living being is identified through the short phrase “MRS GREN”, which stands for:

M G

ovement

rowth

R

R

espiration ensitivity

S

eproduction xcretion

E

N

utrition

This means that an organism has to be able to move, respire, have sense, grow, reproduce, get rid of waste and consume energy and nutrition. For example, we Humans do it all; we can use most of our five senses, sight, hearing, smell, taste and touch, if not all. Take the great physicist Stephen Hawking, for example. Despite his condition that he cannot move, which is part of what defines a living being, he is still alive. There are some other examples to disprove this idea, but this phrase is still used to define a living being. Therefore, we are all living beings: organisms. Now, let’s go to a microscopic level. An organism is made of tiny cells. The dictionary tells us that a cell is “the smallest structural and functional unit of an organism, which is typically microscopic and consists of cytoplasm and a nucleus enclosed in a membrane.” The human body consists of about 100 trillion. These cells reproduce, which result in our growth.

will be focusing on is the nucleus. The nucleus can be considered the brain of a cell. This is the place where the entire DNA is located and stored. DNA is a molecule that contains the ‘code’ to shape any individual organism. They are well known for their double helix shaped structure.

Genes, as you may have heard, are different parts of the long strand of DNA. Each gene contains information about a different part of your body. Supposedly, one gene can have information about your hair while another gene has information about your eyes, even if they are on the same strand. Of course, it’s more complicated than that in real life. These strands of DNA are somewhat coiled and compressed together to make the shape of chromosomes, which are known for its X shaped structure. There are a different number of chromosomes in each cell for different organisms. In us, humans, there are 46, or 23 pairs, of chromosomes in each cell’s nucleus

Recalling that the human body consists of 100 trillion cells, there should be about 4.6 x 1015 chromosomes in our body. So how much actual DNA is in our If we were to uncoil every single chromosome into a long strand, the total length is about 20 billion meters, or 134 astronomical units (AU), enough to stretch from here to Pluto and back!

Why is this important? That is pretty much how much information and data there is to an individual human being, in this case. It can be considered as a manual on how to create an exact copy of you, or any living being. That is where the concept of ‘Cloning’ came in theory, and succeeded on an experiment conducted on a sheep named Dolly. More recently, scientists have been tinkering with DNA in many different ways, one of which is known as Genetic Engineering, or Genetic Modification, which is the process of modifying genes. The genes of fish, typically salmon, are modified to make them bigger and look better for marketing. There is a theory that, if they can fully understand the human DNA, there is a chance that a guaranteed cure can be found for cancer. Cancer isn’t the only issue relating to DNA. As mentioned earlier, a GM is when there is something wrong with a gene, whether it’s the structure of the DNA or it’s the order of chemicals.

DNA is made of hydrogen, oxygen, nitrogen, carbon and phosphorus. On a typical picture of DNA, you can see horizontal bars connecting the two spiraling helixes together. The truth is, it’s actually two different ‘bars’ bonded to make one single ‘bar’. Each bar is made of one of four chemicals: Adenine, Thymine, Guanine or Cytosine. In each gene, Guanine is bonded with Cytosine; and Adenine is bonded with Thymine. This is why, in many diagrams regarding DNA, it shows GC and AT, or vice versa, which represent the bonds of those chemicals. Most, if not all, of the information regarding our physical self is determined by the combination of these chemicals. For example, someone with a certain hair colour could have the combination GCATCGTAGCATCGTATA, while a person with a

Cells are a complicated topic, as there are so many different parts to an individual cell that all play a vital role to our function. However, in the context of DNA, the part of a cell we www.batj.org Durga Puja 2014

89


Genetic Mutations:

different colour of hair can have ATCGTACGCGTATAGCCG, both of which give different information.

However, it is when there is an error in the ordering, mismatching, or even inequalities in the number, of these chemicals that a GM occurs. Mutations are usually caused by exposure to radiation, certain chemicals, or errors when repairing DNA. Mutations commonly lead to genetic disorders, such as Sickle-cell anemia, Achondroplasia, and many others. The other main problem is that these genetic disorders are typically a dominant genotype. Genotypes are the genetic traits that one carries, which are passed down from your ancestors. On the contrary, a phenotype is the physical result of a certain genotype. For example, a genotype B can be a result for a phenotype of brown eyes. Genotypes are often categorized by two categories: dominant (B) and recessive (b) phenotypes. A dominant phenotype is a trait that is more likely to be passed down the next generation, and a recessive phenotype is a trait that is less likely to be passed down. A common example for a dominant phenotype is brown/black hair, and an example for a recessive trait is blond hair. If a person with black hair has an offspring with a person with blond hair, the offspring will have black hair. When Gregor Mendel first discovered this, he used pea plants. Back then, there were only pea plants with purple or white flowers, and the plants were always bred through flowers of the same colour. This means the plant’s genes were “pure”, so a purple flower had a genotype BB and the white flowers had genotype bb. Mendel then bred with a purple flower and a white flower, and its entire offspring turned out to be purple. At this point, the offspring all had genotype Bb.

In theory, we show this using what we call a Punnet Square. If we use the example above, we have a parent of BB, and a parent of bb. If we put this in our Punnet Square, we end up with this:

Each cell in the 2x2 grid represents one offspring, thus a Punnet Square only represents four offspring, with a maximum of four different possible genotypes. In this case, any offspring of this couple is guaranteed to have genotype Bb, a mix of the dominant and recessive trait. The phenotype of Bb will be the same as phenotype BB. This means that whenever a dominant genotype is mixed with a recessive genotype, the dominant phenotype, in this case purple flowers, will be shown, hence the term ‘dominant’.

The only difference between BB and Bb is that the genotypes of the resulting offspring will be different. If a person with genotype Bb has children with a person with genotype bb, in our Punnet Square it would look like this: The chance of there being a white flower plant now becomes 50%. This is why BB and Bb are classified differently, and are called homozygous and heterozygous respectively.

How is this related to GM? GM is a dominant genome and, when acquired, can either be BB or Bb. Whether its homozygous or heterozygous comes from how it is acquired, and there are numerous different ways. Now that we know a bit about GM, let’s see whether Marvel’s X-men mutants can actually be realistic or not. Since there are hundreds of different X-men, I will be looking at some of the main mutants in the movie X-Men: Days of Future Past. 90

Logan Howlett: Wolverine Wolverine, played by Hugh Jackman, is a mutant who has the power to regenerate his health in a short period of time and has an entire skeleton, including his claws, made of a metal called Adamantium.

For all this to be acquired through mutation would be extremely rare. However, it may be possible through genetic engineering. Everyone has a different rate of healing, and that is partially dependent in one of your genes. However, if that gene could be enhanced and can be used somewhat often, quicker health regeneration may be possible, although probably not as quick as Wolverine’s.

Wolverine’s claws were first made of just bone. Later on, he had his entire skeleton fused with adamantium, which was successful due to his healing factor. Again, this would be difficult to achieve through mutation. Wolverine’s claws resemble a three-toed sloth’s claws the most. Even if the claws would extend like normal nails, the subject would have claws visually similar to Wolverine’s. In conclusion, it may be possible for there to be a Wolverine in the real world, although not as accurate, and probably not through genetic mutation.

Charles Xavier: Professor X

Professor X, played by James McAvoy and Patrick Stewart, is a mutant who can read and control other people’s minds. He uses a device called Cerebro to expand his field of his mind reading and locate other mutants or people. However, due to a severe injury in his spine, he had lost the ability to walk, until he kept taking the cure, which subsided his ability to read minds.

The concept of telepathy is still not very clear, and is still unknown whether it really exists or not. A very common concept of telepathy, however, is known as twin telepathy, where twins have a link strong enough that they can share similar emotions and thoughts. Until telepathy is proven to be a phenomenon, and is understood to some extent, it is safe to say that there should not be a person with the ability to read people’s minds. In conclusion, at this stage it is not probable for another Professor X to exist in the real world.

Erik Lehnsherr: Magneto

Magneto, played by Michael Fassbender and Ian McKellen, is a mutant who can control all sorts of metal and can create magnetic fields at his will.

Magnetism can be conducted using magnets made of iron, and can only control iron or alloys of iron, like steel. However, since Magneto can control all sorts of metal, it would be impossible for an exact copy of him to exist. Typically,

Anjali

www.batj.org


magnetism through humans shouldn’t be possible. However, a type of bacteria called Magnetotactic Bacteria has a magnetic field of its own, and when free from a host, orients along Earth’s magnetic field. If these bacteria are injected into the human body, at a sufficient amount, it may be possible for that person to be attracted to ferric metals or magnets at the most. And even then, we still do not know whether the bacteria will cause any harm to the human body. In conclusion, it would be improbable for another Magneto to exist in the real world.

Raven Darkholme: Mystique

Mystique, played by Jennifer Lawrence, is a mutant who can shape-shift into other people at exact detail, and even copy they’re voice. She consists of a natural blue humanoid form.

By changing appearance, one would need to be able to rewrite every single piece of DNA containing information on one’s appearance, therefore re-writing every single outer cell in their body, in a matter of seconds. In theory, one would experience pain during this process, and it would take time and mechanical assistance. That being said, it has never been done successfully, and therefore, until more about shape shifting is discovered, this ability would remain improbable. In conclusion, it would be improbable for a copy of Mystique to exist.

Henry “Hank” McCoy: Beast B e a s t , played by Nicholas Hoult, is a mutant who takes the shape of blue carnivorous feline creature. In addition to his appearance, he possesses superhuman strength, allowing him to perform numerous aerobic movements.

While it may not be so challenging creating a hybrid animal of that sort, getting the ratio of human to feline animal would be crucial. However, his blue form would be more challenging to achieve through genetic mutation. Also, finding a creature strong enough satisfy that of Beast’s would not be very easy, unless if perhaps genes from a variety of feline animals were to be injected, and even then the question of whether they are compatible to the subject remains. In conclusion, a copy of Beast can be created, but would still not precisely satisfy the abilities of the comic book hero.

What you have read, related to genetics, is only a basic introduction to the very broad topic of the secret code that lies inside us. Which makes us who we are, and what we will be. Marvel introduces these topics in a very entertaining way, and in comic series other than the X-men. Despite all the knowledge we already know that about DNA, there is still much more to be discovered, and so much to do once discovered. 

It Works! - Nishant Chanda, Grade VIII

W

asting time; what all of you did at various points of your lives, its usually the hardest but yet the easiest thing to do. When you have nothing to do, suppose waiting in line, done with your work, when you don’t like the food etc. You find yourself in a state of subconsciousness, also known as day dreaming. Many times, you don’t even notice you are wasting time, it just happens. It’s a way of letting your brain off the leash, running wildly all around the world.

There are many ways to waste time, and they’re not that hard to do. The first way is the same as going to bed. Let your mind drift into whatever you are thinking about. You will see, you are slowly losing grasp of reality, far away from the ticking clock and you feel like you are meditating. It will feel like you are in vertigo. This is very easy to do when you are eating dinner alone or brushing your teeth. In the toilet is also a good place. When you are not in a hurry, breakfast works fine. Another way is to walk from one place to another. This is the one you see most often. People do it all the time without knowing. It is a sign of lack of concentration. It occurs most frequently when you have a lot to do, but you don’t know what to do first and you are not planned. If you want to waste time, this is not a bad thing. It is automatic. When you wake up in the morning at a time you are not used to, you will find yourself doing this. When you are in this state, external forces may find it hard to wake you up without reaching their threshold of anger. These ways work well for me; why don’t you try as well… that’s how to waste time, efficiently. 

www.batj.org

Durga Puja 2014

91


How the Theory of Gravity was discovered - Amartya Mukheree, Grade X

M

ost people assume that the Theory of Gravity was discovered by Isaac Newton because of the famous story about the apple falling beside him. This however, is not the entire story. It dates back to centuries earlier, involving great minds like Nicolaus Copernicus, Galileo Galilei and Johannes Kepler. Along with them, there is a person who made important contributions, however, the world has yet to hear his name: Tycho Brahe. The most important factor that led to the discovery of gravity was the realization that there is a force pulling the Earth towards the Sun. However, this statement was still far from being discovered, as it was believed by the Christian Church that the Earth is at the center of the Solar System, and all heavenly matter orbits it. This model of the universe was proposed by Aristotle, and viewed as something so sacred that questioning it was considered a crime. This model of the universe was believed for 2000 years until Copernicus (1473-1543) stated that the Earth is not at the center of the Solar System, and instead, the Sun is. This model of the universe – discovered in 1514 – otherwise known as the “Copernican model,” is considered as one of the greatest scientific theories discovered. Tycho Brahe (1546-1601) was born three years after Copernicus’s death, and was so inspired by the Copernican model that he decided to investigate the movement of the stars and planets to see if Copernicus was right. For a brief introduction, Brahe was a Danish astronomer and an inventor. He owned an island near Copenhagen, where he built his inventions. How did he investigate the movement of the stars and planets? He spent the entire night drawing every single detail of the stars and planets in the night sky. To draw the stars, Brahe invented several precise instruments that were accurately able to measure the distance between stars, and Brahe drew them out. He kept doing this for thirty-five years. This is how Brahe gathered all the data, which was crucial in the discovery of gravity. The thirty-five years he spent on observing the stars is what gives him one of the biggest roles in the discovery of gravity. This observation also makes Brahe one of the earliest experimental physicists, who believe in data collection. After Brahe’s death, his data came into the hands of his assistant Johannes Kepler (1571-1630). Kepler analyzed the data, using trial and error methods, and came up with the conclusion that Earth orbits the Sun. With Brahe’s data, he was able to successfully prove that the Earth orbits the Sun and prove Copernicus’s

92

statement right. Upon further analysis, Kepler was also able to prove that the planets moved around the Sun in an elliptical pattern. Alongside the movement of the planets, he was also able to discover that as the planets move closer to the Sun, they move faster, when compared to their speed when they are the furthest from the Sun. Meanwhile, Galileo Galilei (1564-1642) published his Theory of Inertia, which explained how if we roll a ball, it would keep rolling at constant speed in a straight line, unless external force acts on it. This Theory of Inertia is considered as one of the greatest discoveries in science. Finally, Isaac Newton (1642-1727) was able to combine all the theories discovered by the great scientists. The planets are moving in an elliptical pattern, and they are not moving in a constant speed. Since this contradicts Galileo’s laws of inertia, there must be some force acting on these planets. And this force gets greater as the planets get closer to the Sun, which is what makes them move faster than when they are away from the Sun. After some analysis, this force that moved the planets around the Sun was the same force that made the apple fall down to the ground. He decided to call this force “gravity”, from the Latin word “gravitas”, meaning “heavy”. Thus, the Theory of Gravity was born. The Theory of Gravity is considered to be one of the greatest discoveries of mankind. It all started with the Copernican model that stated that the Sun is at the center of the Solar System, which inspired Brahe to begin his investigation of the movement of stars. Brahe’s drawings were then handed over to his assistant, Kepler, who proved that the Earth moves around the sun in an elliptical pattern and the speed of the planet’s movement changes with respect to its location. Finally, Isaac Newton combined Kepler’s and Galileo’s laws and discovered that there is a force moving all these planets around the Sun, which he called “gravity”. All the five scientists played a huge role in the discovery of gravity. However, not many people know about Tycho Brahe. This is very unfortunate given the fact that Brahe devoted a great deal of time to draw the stars in the night sky and gather data; his work ultimately helped Kepler and Newton make their discoveries. Brahe was simply the giant whose shoulders Kepler and Newton stood on. Along with that, Brahe was one of the earliest experimental physicists, who believed in data collection, which is how modern scientists normally carry out their investigation. Therefore, Brahe also deserves to be considered as one of the greatest minds in science history, which is why we should respect him, and not forget his name. 

Anjali

www.batj.org


Overthinking - Aakriti Naarang, Grade XII To think about a life, Where everything was for best Too long a happiness, Outlasting all the rest.

Such seems really surreal, I’m torn between two sides One which echoes: don’t complain The other: it’s alright. The days keep tumbling by Aspirations cannot end Be hopeful, they said And all else will surrend-er.

To feel or not to feel Even the closest don’t understand Change, oh how to change When what I feel is: strand-ed?

www.batj.org

Durga Puja 2014

93


Birds, Ashmita Pal 7yrs

Flamingo Dancer, Zinniya Maya Dhar 5yrs

Craft flower, Manav Ghose 7yrs If you can Dream it ... you can Do it, Auyona Gupta 6yrs

94

Anjali

www.batj.org


Elsa from Frozen, Spurti Unnamatla Gr IX

Sai Ram, Aaryan Sharma Gr V

Fishing, Koji Togawa 9yrs

Monkey D. Luffy, Shubhankar Vakde Gr95 VII


Krishna, Kavya Sharma Gr IX

Ganesha, Kirti Unnamatla Gr V

Krishna, Ayushi Baidya Gr IX

96

Anjali

Ganesha, Ushrita Gr VI

www.batj.org


Family Portrait, Arnab Karmokar 7yrs

Out of this World, Nimisha Anand Gr VII

www.batj.org

Craft ship, Maya Ghose 10yrs

97


Scenery, Kenta Bhowmik Gr VI

Woods - Dark & Deep, Debkanya Sengupta Gr X 98

Anjali

www.batj.org


Spiritual Beauty, by Goutam Mitra

Aagneyi Gupta Parents:- Ahona & Arka Gupta


Reflections, by Sanjib Chanda

Sunset at Sado, by Sudeb Chattopadhyay

100

Anjali

www.batj.org


Life at 90, by Seema Ghosh (Ukil), Age 90

Bird, by Sanchita Ghosh www.batj.org


Praying for New Life, by Jyotirmoy Roy

Source of life-2023, by Madhab Ghose 102

www.batj.org


Fuji-Sunflower, by Arakawa Saburo Tidal Waves, by Mimi Dhar

www.batj.org

Durga Puja 2014

103


Jai Radha Krishna, by Bipasa Roy Tokyo Salaryman at Peace, by Stephen Cotton Buddha-Nihonga, by Meeta Chanda

104

Anjali

www.batj.org


Shakuntala, by Sushmita and Amrita Pal

Goddess of Wealth-Madhubani, by Vijayalakshmi Vaidyanathan

www.batj.org

105


STATEMENT OF ACCOUNT FOR 2013-2014 INCOME

ITEM

Opening Balance on July 11, 2013 from 2012-2013 • In bank a/c • Cash in hand

Collection by Subscriptions, pronami, advertisements in Anjali etc.

TOTAL

AMOUNT

EXPENDITURE

ITEM

Yen 121,844 Expenses for Durga Puja, Anjali printing, Saraswati Puja, Poila Boisakh Celebration, Community Break up meetings, Storage of Durga Yen 107,491 Pratima, Hall rentals, rehearsals, Yen 14,353 Prof Nara’s condolence meeting etc. Yen 1,951,997 Closing balance on July 11, 2014 (carried forward to 2014 – 2015) • In bank a/c • Cash in hand Yen 2,073,841

TOTAL

Anjali Editorial Team

AMOUNT Yen 1,750,989

Yen 322,852 Break up – Yen 163,054 Yen 159,798 Yen 2,073,841


May Maa Durga’s Blessings Bring Peace and Harmony to All - A well wisher Carica Celapi PS-501 Carica is a powerful and delicious food supplement made of fermented papaya. Papaya has been called “golden tree of life” and has been a favourite substance from ancient times. Carica is produced from papaya by excellent world renowned Japanese fermentation technology. Carica Celapi PS501 is made from unripened papayas which have been selected carefully. After taking the skin, seed and juice from the fruit without oxidation, they are fermented and ripened, then dried naturally. There is no process of extracting just one component or chemical treatment. Also there are no additives such as vitamins or calcium. The manufacturing process is natural and holistic. a. b.

“Carica Celapi PS-501” , 100 sachets (3grams each) 25,000yen “Carica Celapi PS-501” , 40 sachets (3grams each) 12,000yen

For more information or order 0120-65-8631(free call)

Free catalogs (in Japanese) is available

Amrit, Inc. ( 有限会社アムリット )

Ayurveda, Jyotish, Gandharva-veda, Amrit Kalash

〒510-0815 三重県四日市市野田1-2-23 TEL 059-340-5139 FAX 059-340-5175 E-mail: info@amrit.jp URL: http://www.amrit.jp

アーユルヴェーダ インド占星術 太古インド音楽 ヴェーダ天文台

Amrit, Ghee, Incenses, Aroma oils, Herbal teas, Spices, Ancient Indian Music CD, Books, Indian Astrology, Ayurveda, 本物研究所代理店


Best Wishes

Rokko Sarees & Fabrics Co., Ltd 六甲サリーズアンドファブリックス サリー・パンジャビースーツ・ブラウス・小物他 います。 〒150-0012 東京都渋谷区広尾1-7-3 パインクレスト107号 Pine Crest 1st Fl., 1-7-3 Hiro-o, Shibuya-ku, Tokyo 150-0012, JAPAN Tel: +813-3400-6887 Fax: +813-3400-6889 Cell: 090-9848-4373 e-mail: rokko_sarees@f02.itscom.net 営業時間 10:30AM~06:30 PM 最寄駅東京メトロ日比谷線広尾駅 2番出口

Best Wishes

Batra Insurance Agents for The New India Assurance Company Limited Offering underwriting of the following Insurance Products for our Individual and Corporate Customers: Comprehensive Fire, Comprehensive Automobile, Personal and Public Liability, Overseas Travel Personal Accident Insurace, and Reverse OTPA for short term medical needs for your relatives visiting Japan and other products.

Address: Pine Crest No. 107, 1-Chome, 7-3, Hiro-o, Shibuya-ku, Tokyo 150-0012 Tel: 03-3400-6887 Fax: 03-3400-6889 e-mail: batra-insurance@f02.itscom.ne.jp


In fond memory of

Mr. Tanmoy Banerji and

Prof. Tsuyoshi Nara who were active contributors to the Anjali magazine and left for heavenly abode


MOST AUTHENTIC INDIAN FOOD IN TOWN OPEN DAILY: 11:30 a.m.-11 p.m. (LAST ORDER 10 p.m.)

AKASAKA, near T.B.S. ROPPONGI FUTAKO TAMAGAWA CENTER MINAMI, CENTERMINAMI,YOKOHAMA YOKOHAMA

TEL (03) 3584-6640, 6649 TEL (03) 3479-1939, 1955 TEL (03) 6431-0782 (Rise Dog Wood Plaza 706) TEL (045) 944-5180

KAMIOOKA, YOKOHAMA

TEL (045) 848-7351 (Keikyu Dept. Store 10F)

5F, Kouhoku Tokyu Dept. Store S.C.

TRY OUR SOUTH INDIAN SPECIALITIES IN AKASAKA BRANCH NEAR T.B.S


Heartiest Felicitations

On Durga Mata Puja Celebration

(Former name ‒ INDIAN MERCHANTS ASSOCIATION OF YOKOHAMA)

Hon. President Ryuko Hira

Office: #306 Maison du Ora

24-2, Yamashita-cho, Naka-ku, Yokohama 231-0023 Tel: 045-662-1905 Fax: 045-263-8109 www.icij.jp

E. Mail: info@icij.jp

Diwali in Yokohama ‒ 2014 Celebrating 12th Happy Diwali at Yamashita Park ‒ Yokohama Oct. 18th (Sat) from 10:00 A.M. to 7:00 P.M. & Oct. 19th (Sun) from 10:00 A.M. to 7:00 P.M. E. Mail: info@icij.jp / diwaliyokohama@icij.jp



With Best Wishes

Please contact us for: 1) Remittance Services 2) Deposit Services 3) Trade-related Services

Tokyo

and

4) Foreign Exchange

Marunouchi Nakadori Bldg. 2-2-3, Marunouchi Chiyoda-ku, Tokyo 100-0005 Phone: 03-3212-0911 e-mail: boitok@gol.com

Osaka

Nihon Seimei Sakaisuji Honmachi Bldg. 1-8-12, Honmachi Chuo-Ku, Osaka 541-0053 Phone: 06-6261-4035 e-mail: boi.osaka@bankofindia.co.in

Please visit us at http:///www/boijapan.com




WE ARE PLEASED TO ANNOUNCE THAT THIS YEAR'S LUNCH HAS BEEN SPONSORED BY MR. BYOMKESH PANDA AND MRS. CHANDRALEKHA PANDA OF PRIYA RESTAURANT, TOKYO.

BATJ THANKS THEM FOR THEIR GESTURE

Priya

The Indian Restaurant

Priya signifies extreme care, dedication and love, emotions that arise from the well of our heart. Violent in passion, yet remarkably restrained in manifestation. Priya sums up Indian Hospitality - Athithi Deva Bhavo (the guest is our God). At Priya, we are guided solely by the traditional Indian Philosophy. Yes, God is our guest tonight.

अितथी दवेो भवः 5-2-25 Hiroo Hongoku Building 3rd Floor Shibuya-ku Tokyo 東京都渋谷区広尾 5-2-25 本国ビル 3F Telephone: 03-5941-6996


Wishing All A Very Joyous Durga Puja - Amitava From: Amitava Ghosh (080 3177 6563)


Indian Grocery Store

(Imported as per Japanese Health Authority rules) 100%VEG

Everyday Between 11AM to 8PM

Healthy Food for Life Tel No : 03-6908-8077

Visit online shop : www.ambikajapan.com * Call for more details



INDIAN RESTAURANT

Heartiest Bijoya Greetings

ラージマハール URL http://www.rajmahal.gr.jp E-mail: rajmahal@saera.co.jp 銀座本店 〒104-0061 東京都中央区銀座8-8-5 太郎ビル4F☎03-5568-8080・8081 G I N Z A Taiyo Bldg. 4F, 8-8-5 Ginza, Chuo-ku, Tokyo: 104-0061 Japan

渋谷店 〒150-0042 東京都渋谷区宇田川町30-5 JOWビル5F☎03-3770-7677・7680 SHIBUYA Jow Bldg. 5F, 30-5 Udagwa-cho, Shibuya-ku, Tokyo: 150-0042 Japan

ラージ RAJ

FAX 新丸ビル店 〒100-6505 東京都千代田区丸の内1-5-1 新丸ビル5F ☎03-5224-8080・8081 SHINMARUBIRU Shinmarunouchi Bldg. 5F, 1-5-1 Marunouchi, Chiyouda-ku, Tokyo:100-6505 Japan

オリエンタルラージ ORIENTAL RAJ

FAX 銀座マロニエゲート店 〒104-0061 東京都中央区銀座2-2-14 マリニエゲート11F ☎03-3538-2525-2526 MARRONIER GATE Marronier Gate 11F, 2-2-14 Ginza, Chuo-ku, Tokyo:104-0061 Japan

SINCERE THANKS FROM

Bengali Association of Tokyo, Japan www.batj.org

For assistance on the occasion of Durga Puja on October 12, 2013 - Mr. and Mrs. Ranjan Das for providing sweets for the Puja - Mr. and Mrs. Partha Kumar for providing flowers for the Puja - Mr. and Mrs. Biswanath Paul for providing fruits and flowers for the Puja For assistance on the occasion of Saraswati Puja on February 1, 2014 - Mr. and Mrs. Biswanath Paul for providing fruits and flowers for the Puja - Mr. and Mrs. Lakshman Hazra for providing fruits and flowers for the Puja - Mr. and Mrs. Ranjan Das for providing sweets for the Puja



HEARTIEST GREETINGS

FROM VAISHALI TRAVELS PLEASE CONTACT US FOR ANY TRAVEL ASSISTANCE FOR

INDIA SUCH AS AIR TICKETS, HOTELS, TRANSPORT, GUIDES Visit our website : www.vaishalitravels.com Tokyo Office 501, Dai2 Toei Bldg., 1-17-1 Nishi Gotanda, Shinagawa-ku, Tokyo 141-0031 Tel. 03-3495-2829 Fax. 03-3495-2890 info@vaishalitravels.com

New Delhi Office 303-304, Padma Tower 01, Rajendera Place New Delhi 110018, India Tel. 011-4126-4126 Fax. 011-4153-9276 vaishalitravels@gmail.com

5


Heartiest Bijoya Greetings


Heartiest Greetings from

The New India Assurance Co. Ltd. (A GOVT. OF INDIA UNDERTAKING) 1-24-1, Nishi-Shinjuku, Shinjuku-Ku TOKYO 160-0023

Services : ☆ Fire Insurance ☆ Householder’s Insurance ☆ Shop Keeper’s Insurance ☆ Earthquake Insurance ☆ Automobile Insurance

☆ Movable All Risks ☆ Personal Accident ☆ Overseas Travel PA ☆ Liability Insurance ☆ Marine Cargo Insurance

NEW INDIA ASSURANCE YOUR RELIABLE INSURER IN JAPAN FROM 1950 AN INDIAN MULTI-NATIONAL SINCE 1920 WITH PRESENCE IN 27 COUNTRIES ENSURES LASTING CUSTOMER RELATIONSHIP RESOURCE PERSONS FOR RELATIONSHIP

N. Seshagiri Dy .CEO , Japan 03-5326-7603 dy.ceo-hor@newindia.co.jp

S.Pradhan CEO , Japan 03-5326-7587 ceo@newindia.co.jp

Babu Rajan U.V. BM, Osaka 06-6262-5471 Osaka-hor@newindia.co.jp

Branches: Tokyo, Osaka, Nagoya, Hiroshima, Sapporo, Okayama Sub Branches : Fukuyama, Iwakuni, Shiimonoseki, Gifu, Himeji Please visit us at www.newindia.co.jp

124

Anjali

www.batj.org


www.batj.org

Durga Puja 2014

125





Turn static files into dynamic content formats.

Create a flipbook
Issuu converts static files into: digital portfolios, online yearbooks, online catalogs, digital photo albums and more. Sign up and create your flipbook.